চলতে ফিরতে বাকৃবি দেখা
লিখেছেন লিখেছেন এম আর রাসেল ০৩ এপ্রিল, ২০১৪, ১১:২২:৫৮ সকাল
চলতে ফিরতে অনেকের সাথেই পরিচয় হয়, অনেকের সাথেই গড়ে উঠে সম্পর্ক। এমনি করেই আমার সম্পর্ক গড়ে উঠেছে প্রিয় ক্যাম্পাস বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এর সাথে। অনেক কিছু থেকে দূরে রাখার পরও এই ক্যাম্পাসের প্রতি আমার ভালবাসার কোন কমতি আমার চোখে পড়ে না। ক্যাম্পাসের ভাল কিছুতে যেমন আমার মনে এক অন্য রকম ভাল লাগার অনুভূতি তৈরি হয়, ঠিক তেমনি খারপ কিছুতে আপনা থেকেই মনটা কেঁদে উঠে। কাল যেমন কেঁদে উঠেছিল এক সহপাঠীর মৃত্যুতে। মৃত্যু মানব জীবনের এক অতি সাধারণ পরিণতি। এই পরিণতির দায় কেউ এড়াতে পারেনা এবং এড়াতে পারবেও না । কিন্তু এই মৃত্যু যখন হয় আমারই অন্য কোন সহপাঠীর হাতে তুচ্ছ কোন কারনে তা মেনে নিতে সবারই কষ্ট হয়। শিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয়ে একজনের ছাত্রের যেখানে নিজেকে সর্ব দিক দিয়ে একজন দক্ষ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার কথা তা না হয়ে আমরা দেখছি যত সব বর্বরতা আর জংলী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ।আমাদের কাউকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয় শিক্ষার সংজ্ঞা কি আমরা প্রায় সব মানুষই জন মিল্টনের একটি উক্তি আওড়াই -Education is the harmonious development of body, mind and soul. এটা হয়তোবা শুধু জানার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে গেছে বাস্তবে এর প্রতিচ্ছবি দেখতে পাওয়া খুবই দুষ্কর। শিক্ষার উদ্দেশ্য হিসেবে আমরা অনেকেই বলে ত্থাকি নিজের আচরণের পরিবর্তন।এই আচরণের পরিবর্তন কি আমরা করতে পারছি? বর্তমান সময়ে অসুস্থ ধারার ছাত্র রাজনীতি ও ক্যাম্পাস প্রশাসনের দলীয় লেজুড় বৃত্তি সুন্দর পরিবেশ তৈরিতে এক মস্ত বড় প্রাচীর রুপে আবির্ভূত হয়েছে যা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দর পরিবেশ বিরাজ করুক এই প্রত্যাশা সবার থাকলেও সুন্দর পরিবেশের বিঘ্ন সৃষ্টি কারী ভাইরাস রুপী এইসব কীটদের তাড়ানোর জন্য কোন প্রতীকারমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয় না। সেদিন ক্লাসে আমার এক শ্রদ্ধেয় স্যার বললেন যে ৮০ দশকের ছাত্ররাজনীতির সোনালি ইতিহাসের কথা। সেই আশির দশকে যা সম্ভব ছিল একবিংশ শতাব্ধীতে এসে আমাদের কি এমন হল যে আমরা প্রতিনিয়ত বর্বরতার পরিচয় দিচ্ছি। আজ যে ঘটনা ঘটল তা নিয়ে হয়তোবা কয়েকদিন আমরা অনেকেই অনেক ধরণের কথা বলব, মিডিয়া ময় এই নিয়ে মাতামাতি চলবে বেশ কয়েকদিন তারপরেই সব হাওয়ায় মিশে যাবে। এ প্রসঙ্গে রাশোমন এর একটি কথা মনে পড়ছে তিনি বলেছিলেন- “এমন কেউ কি আছে যে আসলেই ভাল বা মহৎ? হয়তো দয়া বা মহত্ত্ব নিছক ভান। আসলে মানুষ খারাপ বিষয় গুলোকে ভুলে যেতে চায় ও কল্পনায় তৈরি ভাল কিছুকে বিশ্বাস করতে চায়। এ পথে সেটা সহজতর”। যতদিন দয়া মায়া, ভালবাসা ,নৈতিকতা নিছক ভানের ছোঁয়ায় প্রাণ খুঁজে পাবে ততদিন আমদের উন্নতি হবে না বলে আমার মনে হয়। আমরা সবাই মুখে অনেক কথা বললেও বাস্তবে টিক তাঁর উল্টো পথটাকেই বেঁচে নিতে স্বা চ্ছ্যন্দবোধ করি। আমার ক্যাম্পাসের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক কর্মকর্তা কে উদ্দেশ্য করে নিচের কয়েকটি লাইন উচ্চারন করাই যায় -
দেখতে শুনতে কেটে যায় বেলা
হয় না কো তার প্রতিকার,
আমি মুখে বলি নীতির কথা, শুনাই আমার বীরত্ব গাঁথা
আমি লড়েছি দেশের জন্য, করেছি স্বাধীন এ মাটি,
পারিনি কো করতে স্বাধীন আমার এ ক্যাম্পাসকে
পারিনি আমি করতে দূর এ ক্যাম্পাসের সন্ত্রাস,
যা প্রতিনিয়ত করছে আমার সোনার মানিকরা
আমি করছি তাদের আদর,করছি তাদের রক্ষা
যতক্ষন আছে দেহে প্রাণ করেছি আমি পণ
এই ক্যাম্পাসের সুনাম যত করব আমি বিস্তার
হোক না সেটা করে রক্ত পান//////////
হায়েনা হয়ে নয় বর্বর জাতি হিসেবে নয় আমরা বীরের জাতি হিসেবে বাঁচতে চাই।ভাল ও মন্দের বিচার করার ক্ষমতাই মানব জাতিকে অন্য সবার থেকে আলাদা করেছে। নীতি ও নৈতিকতার কথা শুধু মুখে বললেই হবে না নৈতিকতার দিক দিয়ে যারা উন্নতি করার চেষ্টা করে না কুরআন তাদের সম্পর্কে বলছে –‘ তারা পশুর ন্যায় বরং পশুর চেয়ে নিকৃষ্ট’। বর্তমানে আমাদের চারপাশ মানুষরূপী পশু দিয়ে ভরপুর হয়ে গেছে। এই মানুষরূপী পশু গুলোকে হয় সত্যিকারের মানুষ রুপে গড়ে তুলতে হবে, নয় এদেরকে বিতাড়িত করতে হবে তবেই আসবে শান্তি। চারপাশের পরিবেশ এখন আমাকে স্বপ্ন দেখতে সাহায্য করে না , তারপরও আমি স্বপ্ন দেখি, আশায় বাঁধি বুক আসবে একদিন সুদিন । সব আশা যখন শেষ হয়ে যায় তারপরও আমি নিরাশার মাঝে আশাকে অবলম্বন করেই স্বপ্ন আঁকি আগামীর। শেষ করতে চাই আমার এক ভাইয়ের প্রিয় একটি উক্তি দিয়ে- ‘Let’s work together for better tomorrow’
বিষয়: বিবিধ
১৫৩৫ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন