বিচার নামের নাটক

লিখেছেন লিখেছেন এম আর রাসেল ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৫:১১:১১ বিকাল

দেশপ্রেম একটি মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। এটা কোন মানুষের মধ্যে আপনা আপনিই গড়ে উঠে। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের পরিস্থিতি এই প্রেমের বহিঃপ্রকাশ অনেকখানি বেশি মাত্রায় পরিলক্ষিত হচ্ছে। দেশ প্রেমের কথা আসলেই আমাদের দেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধের কথাই প্রথমেই চলে আসে। মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা স্মমুখ সমরে যোদ্ধা হিসেবে প্রাণ পন লড়াই করেছিলেন বাহ্যিক বিচারে তাদেরকেই আদর্শ দেশপ্রেমিক বলা চলে এতে কারও বিন্দু মাত্র চিন্তার অবকাশ নেই। বর্তমান সময়ের সবথেকে আলোচিত বিষয় হল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং এই বিচারের প্রথম রায় হিসেবে জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর । কোন দেশের ইতিহাসই নিরেপক্ষ ভাবে রচিত হয় না। সবাই নিজের প্রয়োজনেই ইতিহাসের একেক রকম ব্যাখা প্রদান করে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসও আমাদের কাছে পরিপূর্ণ না, সঠিক ইতিহাস থেকে এখনও আমরা বঞ্চিত এ কথা বললে ভুল হবে না। আমরা সবাই ছোট বেলা থেকেই এক ধরণের মিশ্র ইতিহাসের চর্চা করতে করতে বড় হয়ে উঠি । শৈশবকাল থেকেই কিছু জিনিস শুনতে শুনতে মনের মাঝে তা এমন ভাবে গেথে যায় পরে সেই বিষয় ভোলা অনেকের পক্ষে কঠিন হয়ে যায়।কিছু কিছু সময় সেই বিষয় নিয়ে পর্যালোচনার প্রয়োজন হয়ে পড়ে, কিন্তু এই কাজটাই আমরা অনেকে করতে নারাজ।আর আমাদের সমাজে এমন লোকের অভাব নাই যারা শোনা কথার উপর ভর করে খুব বেশি নাচানাচি করতে পছন্দ করে, বেশি নাচানাচি করতে যেয়ে অনেক সময় কোমরও ভেংগে ফেলে তারপরও তারা এই কাজটাই করতে বেশি ভালবাসে।নিজের বিবেককে আর কতকাল যে বিশ্রামে রাখবে তা বলা কঠিন আমার পক্ষে। শুধু এইটুকু বলতে চাই নিজের বিবেককে কাজে লাগান নিজেই অনুসন্ধান করুন ভাল আর মন্দের , জ্ঞান অর্জনের সাধনায় নিজেকে নিয়োজিত করুন দেখবেন জ্ঞানের আলোয় নিজের মনের ভিতরের বদ্ধমূল মরচে পড়া ধারনাগুলো আলোকিত হয়ে উঠবে। তখন ন্যায় আর অন্যায় এর পথ চিনতে আপনার কোন অসুবিধা হবে না। মুক্তযুদ্ধের সময়ে একটা দল কিছু কারনে সম্মলিত রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ফলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সমর্থন জানায়নি । এর ফলে তাদের উপর যেসব দোষ চাপিয়ে দেয়া হয়েছে সত্যিই যদি তারা এমন অপরাধ করে থাকে এত তাড়াতাড়ি এই লোকগুলো কিভাবে নিজেদের চরিত্রের পরিবর্তন করে ফেলল? সময়ের সাথে সাথে মানুষের মধ্যে অনেক পরিবর্তন আসে সত্য কিন্তু এত অপকর্ম করার পরে একজন মানুষ এত তাড়াতাড়ি তার ভোল পালটিয়ে ফেলবে এটা কেন জানি আমার বিশ্বাস করতে খুবি কষ্ট হয়। আমিও এই দেশেই জন্ম গ্রহণ করেছি অন্য সবার মত দেশের প্রতি ভালবাসা কোন অংশেই কম নেই। আমিও চাই মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা এদেশের নাগরিক হয়েও অপকর্ম করেছিল তাদের শাস্তি হোক । কিন্তু যখন দেখি যখন একটি বিশেষ দলকে টার্গেট করেই এই বিচার নামের নাটক সাজানো হয়েছে তখন তা মেনে নিতে আমার কষ্ট হয়। আমি দেখেছি এই লোকগুলোর জন্য হাজারো মানুষের চোখের পানি ঝরতে, তাদের মুক্তি কামনায় রোযা রাখতে, রাতের আধারে চোখের পানিতে জায়নামাজ ভিজাতে, দেখেছি অনেক লোকের বুকের রক্ত দিতে। ।মিথ্যার আবরণে সত্যকে ঢেকে দেয়া যায় না একদিন না একদিন সত্যের আলোয় সব উদ্ভাসিত হবেই হবে ।জাতিকে কলঙ্ক মুক্ত করতে নতুন কোন কলঙ্গের জন্ম দেয়ার খেসারত কাউকে না কাউকে দিতেই হবে ।ইসলামী আন্দোলন জাগতিক কোন আদর্শ নয়,এর অনুসারীরা একমাত্র আল্লাহ ও তার রাসূলের সন্তুষ্টির জন্য আন্দোলন করে ।মৃত্যুর ভয় কথনও তাদের এ পথ থেকে দূরে টেলে দেয় না ইতিহাস সাক্ষী ।পূর্বেও বহু ইসলামের সৈনিককে ফাসিকাষ্ঠে ঝুলানো হয়েছে ,তারপর তাদের অনুসারীর সংখ্যা না কমে বরং বেড়েছে দ্ধিগুণ হারে ।প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হোক এটা সবাই চায় ।একটি রাজনৈতিক ভুল সিদ্ধান্তের দায়ভার নিরাপরাধ কারও উপর চাপিয়ে দিয়ে তাকে শাস্তি দেয়া কতটা যৌক্তিক তা সবার কাছে প্রশ্ন রেখে গেলাম।তবে এতটুকু জানি "an idea preached by one person fades away after his death , but philosophy nurtured by an institution lasts forever "

বিষয়: বিবিধ

৯৯৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File