বাংলাদেশের রাজনীতি ও আমার ভাবনা
লিখেছেন লিখেছেন এম আর রাসেল ১১ নভেম্বর, ২০১৩, ০৫:৩৮:৩৩ বিকাল
বাংলাদেশের রাজনীতির নোংরা কালচারের মধ্যে হরতাল হল একটি নাম যা কারও কাছে অপরিচিত নয়। হরতাল গুজরাটি শব্দ যার উৎপত্তি অহিংস আন্দোলনের জনক মহাত্মা গান্দির মাধ্যমে।তিনি ব্রিটিশদের কাছ থেকে দাবি দাওয়া আদায়ের জন্য হরতাল পালন করতেন কিন্তু তখন তা ছিলনা কোন আতংকের নাম বর্তমানে যেমনটি শোনা যায়। আমাদের দেশের রাজনীতিবিদদের অদূরদর্শিতা আর হিংসাত্মক মনোভাবের কারনে দেশের সবকিছুই আজ ধবংসের সম্মুখীন। বিশ্বের অন্যান্য দেশ যখন সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রতিযোগিতায় লিপ্ত তখন আমার দেশ ক্রমাগত অবনতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। এর দায়ভার এককভাবে কোন রাজনৈতিক দলের উপর বর্তানো সমীচীন হবে না বলে আমার ধারণা। কেননা আমাদের দেশের রাজনিতিবিদেদের একটি সাধারন সমস্যা হল অতীত ইতিহাস ভুলে যাওয়া। যেমন আজ যারা ক্ষমতাসীন দল তারা যেমন ভুলে গেছে তাদের ইতিহাস, তারা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যে যত প্রকার মিথ্যার আশ্রয় অবলম্বন করছেন তা কোন কিছুর সাথেই তুলনার দাবি রাখেনা।যারা হরতালের বিপক্ষে এত ছাফাই গাইছেন তারাও এক সময় দাবি আদায়ের জন্যে হরতালকেই বেছে নিয়েছিলে, তাদের হরতাল যে কত ধ্বংসাত্মক ছিল তা একটু পিছনে ফিরে তাকালেই পরিস্কার হয়ে উঠবে , মানুষকে মেরে তার উপর নৃত্য করেছিল কারা, কারা প্রকাশ্যে লগি বৈঠা নিয়ে রাজপথে মানুষ মেরেছে, সচেতন নাগরিক মাত্রই তা উপলব্ধি করতে পারবেন।মিথ্যা কথা আর মিথ্যা প্রতিশ্রুতির এত বেশি ছড়াছড়ি অন্য কোন দেশের রাজনিতিতে আছে কিনা তা আমার জানা নেই কিন্তু কেন যেন মনে হয় এই দিক থেকে আমার দেশ সবার প্রথম কাতারে থাকবে। নেতৃত্ব গ্রহনের জন্য আমাদের রাজনীতিবিদরা সব সময় উম্মুখ হয়ে বসে থাকে । জাতির নেতৃত্বের ব্যাপারে মেজর আব্দুল জলিল বলেছিলেন “জাতির নেতৃত্ব গ্রহন কোন শখের বিষয় বস্তু নয়, নয় কোন ভোগ বিলাস কিংবা স্বাদ পূরণের মাধ্যম। জাতির নেতৃত্ব গ্রহনের অর্থই হচ্ছে সততা, নিষ্ঠা এবং যোগ্যতার সাথে দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে জাতিকে সুন্দর ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতিনিয়ত তৎপরতা”। আমাদের দেশের নেতাদের মধ্যে আদৌ এরকম কোন তৎপরতা লক্ষ করা যায় কিনা তা সাধারন মানুষের কাছেই প্রশ্ন রেখে গেলাম। এত কিছুর পরও আমি কোন এক মনীষীর সুরে বলতে চাই মানুষ তার আশার সমান বড়, স্বপ্নের সমান উঁচু ।আশা আমদেরও আছে, আছে স্বপ্ন। আমি প্রতিদিন একটা স্বপ্ন দেখি, প্রতিদিন কোন একদিন নতুন সকালের উদয় হবেই হবে। আর এ নতুন সকালকে বরন করতে হলে তরুণদেরকেই নিতে হবে উদ্যোগ, যুগের স্রোতে ভেসে না গিয়ে সেই স্রোতকে ঘুরিয়ে দেয়ার শক্তি অর্জন করতে হবে। পরিশেষে কবি আকবর ইলাহবাদীর একটি কথা দিয়েই শেষ করতে চাইঃ “যুগের স্রোতে ভেসে চলেছে, এ নয় গৌরব আপনার; কালের প্রবাহ রুখে দেয় যে পুরুষ , তারই মাথায় পরাও গৌরব মুকুট” ।অর্থাৎ গড্ডালিকা প্রবাহে ভেসে চলা গর্ব ও গৌরবের বিষয় নয়। যুগধারাকে নিয়ন্ত্রিত করে মানব কল্যানে প্রবাহিত করাই পৌরুষ দীপ্ত তরুনের অবদান।
বিষয়: রাজনীতি
৯৯৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন