চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর, টেনশনে ভারত !

লিখেছেন লিখেছেন Democratic Labor Party ২৫ মে, ২০১৬, ০৩:০১:৩৬ দুপুর

২৫ মে, ২০১৬



চলতি মাসের শেষের দিকে চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী চ্যাং ওয়ানকুয়ানের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে। তার এ সফরের বিষয়ে খুঁটিনাটি খোঁজ-খবর রাখতে শুরু করেছে ভারত। ইতিমধ্যেই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও দেশটির নিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে বলা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো এ তথ্য দিয়ে বলছে, বাংলাদেশ কোনো বিষয়ে চীনের দিকে বেশি ঝুঁকে যায় কি-না তাও পর্যবেক্ষণে রাখছে ভারত।

চীনা এই প্রতিরক্ষামন্ত্রী লাওস হয়ে বাংলাদেশ সফরে আসবেন বলে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। মঙ্গলবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী চ্যাং ওয়ানকুয়ানের নেতৃত্বে একটি দল চীনের বেইজিং থেকে রওয়ানা হয়েছেন লাওসের উদ্দেশ্যে।

বাংলাদেশের সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক বেইজিং সফর করেছিলেন। সে সফরের পরেই এ মাসের শেষে ঢাকা আসছেন চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী চ্যাং ওয়ানকুয়ান।

জেনারেল বেলালের সফরের পর দুই পক্ষই বাংলাদেশ ও চীনের সামরিক বাহিনীর চার দশকের সামরিক সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকারের কথা জানায়।

জেনারেল জিয়াউর রহমান ও এইচ এম এরশাদ সরকারের সময়ে ধীরে ধীরে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি স্থিতিশীল সম্পর্ক গড়ে তোলে চীন। বর্তমানে বাংলাদেশে সামরিক সরঞ্জামের সবচেয়ে বড় বিক্রেতা চীন।

স্টকহোমভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালের পর থেকে বেইজিং ঢাকার কাছে পাঁচটি মেরিটাইম পেট্রোল ভেসেল, দুটি করভেট, ৪৪টি ট্যাংক, ১৬টি জেট ফাইটার, ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রি করেছে।

এছাড়া চীন থেকে মিং ক্লাস সাবমেরিনও কিনছে বাংলাদেশ। চলতি বছরের শেষভাগে ওই সাবমেরিন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বহরে যুক্ত হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কেবল সমরাস্ত্র আমদানি নয়, বাংলাদেশ ও চীনের সামরিক সম্পর্ক এগিয়েছে প্রশিক্ষণ ও সামরিক যোগাযোগের দিক দিয়েও।

প্রতিবছর ভারতীয় সামরিক বাহিনীর যতজন বাংলাদেশ সফরে আসছেন, মোটামুটি সমান সংখ্যক প্রতিনিধি পাঠাচ্ছে চীনও।

গতবছর চীনা সামরিক বাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের ঢাকা সফরের সময় একটি চুক্তি হয়, যাতে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা বলা হয়।

জেনারেল বেলালের চীন সফরের সময় ওয়াং আশা প্রকাশ করেন, দুই দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সফর, সমরতাত্ত্বিক পর্যায়ে যোগাযোগ এবং প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ নিয়ে দুই দেশের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

বেলাল সে সময় বলেন, বাংলাদেশ সামরিক প্রশিক্ষণ ও শান্তিরক্ষার বিষয়ে চীনের সঙ্গে সহযোগিতা এগিয়ে নিতে আগ্রহী।

জাতিসংঘ শান্তি মিশনে অংশগ্রহণের দিক দিয়ে বাংলাদেশ, চীন ও ভারত- তিন দেশই শীর্ষ দশে রয়েছে।

অবশ্য ভারতের উদ্বেগের মূল কারণ চীনের ‘সিল্ক রোড ইকোনমিক বেল্ট’ পরিকল্পনায় বাংলাদেশের সম্ভাব্য অন্তর্ভুক্তি নিয়ে। বাংলাদেশ, চীন, ভারত, মিয়ানমার হয়ে সড়ক যোগাযাগ এবং সামুদ্রিক ‘সিল্ক রুট’ পরিকল্পনার আওতায় চীনের বন্দর নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা- এই দুই পরিকল্পনাতেই বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে।

বাংলাদেশের সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের চীনা প্রস্তাব নিয়েও ভারতের উদ্বেগ ছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সেই প্রস্তাব অনেকটাই ঝুলে গেছে।

ভারতীয় কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, দেশটির সামরিক বাহিনী এখন নজর রাখছে চীন ও বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর সম্পর্কের অগ্রগতির দিকে, বিশেষ করে নৌবাহিনীর বিষয়ে।

সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনের সাবমেরিন বিক্রির পরিকল্পনায় বাংলাদেশে একটি সাবমেরিন ঘাঁটি তৈরির বিষয় থাকতে পারে, যা হয়তো পরে চীনা সাবমেরিনও ব্যবহার করবে; যেমনটি শ্রীলঙ্কার কলম্বো বন্দরের ক্ষেত্রে হয়েছিল

ডিপ্লোম্যাট ম্যাগাজিন লিখেছে, বাংলাদেশ যাতে চীনের দিকে বেশি ঝুঁকে না যায়, তা নিশ্চিত করতে চাইছে ভারত

সোর্স্: শীর্ষ নিউজ

বিষয়: রাজনীতি

৪৭৪৯ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

370080
২৫ মে ২০১৬ সন্ধ্যা ০৬:১১
মোস্তাফিজুর রহমান লিখেছেন : সীমান্তবর্তী দেশের বিদ্রোহীদের প্রশিক্ষণ, আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া এবং সীমান্তবর্তী দেশ যাতে এগিয়ে যেতে না পারে এটাই সকল দেশের অলিখিত পররাষ্ট্রনীতি। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান সরকার নিজেদের পাশের দেশে অঙ্গরাজ্য মনে করে তাই তাদের এই নীতি বাদ।
370105
২৫ মে ২০১৬ রাত ১০:১৯
হতভাগা লিখেছেন : এটা যদি বিএনপির আমলে হত তাহলে না হয় একটা কথা ছিল । ২০০১-২০০৬ এ খালেদা জিয়ার পূর্বমুখী নীতি ভারতের না-পছন্দ ছিল ।

যতদিন হাসুবুর হাতে বাংলাদেশ

ভয় নেই তোমার , ভারতদেশ


মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File