যোগ দিবসে ‘ওম’ উচ্চারণ বাধ্যতামূলক করায় মুসলিম নেতারা ক্ষুব্ধ
লিখেছেন লিখেছেন Democratic Labor Party ১৮ মে, ২০১৬, ০৩:০০:৪২ দুপুর
পার্স্টুডে , মে ১৮, ২০১৬ ,১১:১৬ , এশিয়া/ঢাকা :- ভারতে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালন উপলক্ষে আয়ুষ মন্ত্রকের তৈরি নয়া প্রোটোকল নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। এ নিয়ে মুসলিম ধর্মীয় নেতারা তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে ২১ জুন গণযোগব্যায়াম অনুষ্ঠানের সময় ‘ওম’ মন্ত্র উচ্চারণ বাধ্যতামূলক করার কথা বলা হয়েছে।
মুসলিম ধর্মীয় নেতা মাওলানা শফিক কাজমী বলেছেন, ‘এই সিদ্ধান্ত সেক্যুলারিজমের বিরোধী। এটা ক্ষমতার অপব্যবহার এবং আমাদের বিশ্বাসের বিরুদ্ধ বিষয়।’
মাওলানা খালিদ রশিদ ফিরঙ্গিমাহলি’র অভিযোগ, ‘যোগ দিবসে ‘ওম’ উচ্চারণ বাধ্যতামূলক করা অসাংবিধানিক। এর ফলে সংখ্যালঘুদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি হবে।’
এ নিয়ে জেডিইউ নেতা কে সি ত্যাগী, কংগ্রেস নেতা সন্দীপ দীক্ষিত এবং পি এল পুনিয়াসহ অন্য নেতারা কেন্দ্রীয় মোদি সরকারের বিরুদ্ধে হিন্দুত্বের এজেন্ডাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন। তারা সরকারের বিরুদ্ধে আরএসএসের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন।
জেডিইউ নেতা কে সি ত্যাগী বলেছেন, ‘এটা শিখ, ইসলাম এবং বৌদ্ধ ধর্মে একটি হস্তক্ষেপ। একে বাধ্যতামূলক করা উচিত নয়"।
যোগ দিবসের অনুষ্ঠানে ইন্ডিয়ার প্রধানমন্ত্রী (ফাইল ফটো)
অন্যদিকে, বিজেপিপন্থি অভিনেতা অনুপম খের ওই সিদ্ধান্তকে জোরালাভাবে সমর্থন করে বলেছেন যারা ‘ওম’ উচ্চারণ করতে চান না, তারা অন্য কিছু বলুক। কিছু মানুষ সব বিষয়কেই রাজনীতিকরণ করতে চায়।
আরএসএস চিন্তাবিদ রাকেশ সিনহার দাবি, ‘বিশ্বজুড়ে যোগকে ভারতের অবদান হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। এটা ধর্মীয় বিষয় নয়। ‘জিরো’র মতো এটাও বিশ্বকে দেয়া ভারতের পক্ষ থেকে উপহার। ‘ওম’–এর উচ্চারণ যোগ ব্যায়াম কার্যক্রমের অংশ।’
গণমাধ্যমে প্রকাশ, আয়ুষ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে যোগ ব্যায়ামের জন্য ৪৫ মিনিটের যে কর্মসূচি তৈরি করা হয়েছে তাতে শুরুতেই ২ মিনিট ধরে ‘ওম’ উচ্চারণ এবং পরে ‘ওম শান্তি’, ‘শান্তি’, ‘শান্তি’ দিয়ে শেষ করার কথা বলা হয়েছে। এরমধ্যে বিভিন্ন ধরণের যোগ ব্যায়ামের পাশাপাশি ৯ মিনিট ধরে মেডিটেশন এবং শেষ পর্বে ‘ওম’ উচ্চারণের সঙ্গে শান্তি পাঠের কথা বলা হয়েছে। সরকারিভাবে সমস্ত স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ ব্যায়াম কর্মসূচি পালন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে, এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ায় আয়ুষ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার বলা হয়েছে, ওম এবং অন্যান্য বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণ বাধ্যতামূলক নয়, বরং ঐচ্ছিক।
আয়ুষ মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব অনিল কুমার গনেরিওয়ালা বলেন, ‘যোগ অনুষ্ঠানের শুরুতে ওম উচ্চারণ করা বাধ্যতামূলক নয়, বরং সম্পূর্ণ ঐচ্ছিক। কেউ এ সময় চুপ থাকতে পারে। এ নিয়ে কেউ আপত্তি করবে না।’
তিনি অবশ্য বলেন, ‘ওম উচ্চারণ যোগের অভিন্ন অংশ। কিন্তু একে বাধ্যতামূলক করার কোনো নিয়ম নেই।’ কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞপ্তির পরে তার এ ধরণের বিবৃতি প্রকাশ্যে এল। যদিও এ নিয়ে নতুন করে কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে আসেনি।
বেদ, উপনিষদ, গীতা ও অন্যান্য হিন্দুশাস্ত্রে সর্বত্রই ওঁ-কারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এটি হিন্দুধর্মের পবিত্রতম ও সর্বজনীন প্রতীক এবং হিন্দু দর্শনের সর্বোচ্চ ঈশ্বর ব্রহ্মের বাচক।
২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালন উপলক্ষে গত বছর ‘সূর্য নমস্কার’ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়। চলতি বছরে দ্বিতীয় বর্ষের যোগ দিবস পালনের প্রাক্কালে ‘ওম’ উচ্চারণ নিয়ে নয়া বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/এআর/১৮
সোর্স্:http://parstoday.com/bn/news/india-i9628
বিষয়: আন্তর্জাতিক
৯৫২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
পালন করা কি মুসলমানদের জন্য হজের মত ফরজ টাইপ কিছু ?
মন্তব্য করতে লগইন করুন