রাজকোষ কেলেঙ্কারি, সিসিটিভি ফুটেজ গেল কই!
লিখেছেন লিখেছেন Democratic Labor Party ১৬ মার্চ, ২০১৬, ০৯:৩৫:৪৩ সকাল
http://mzamin.com/article.php?mzamin=5795 | ১৬ মার্চ ২০১৬, বুধবার :
বাংলাদেশের রাজকোষের টাকা চুরি নিয়ে ফিলিপাইনে ক্রমশ রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে। একের পর এক বেরিয়ে আসছে নানা তথ্য। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরেক রহস্য। তাহলো যেদিন আরসিবিসি ব্যাংকের জুপিটার শাখা থেকে বাংলাদেশের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার স্থানান্তরিত হয় সেদিন ওই ব্যাংকের সিসিটিভি ক্যামেরা রহস্যজনকভাবে নষ্ট ছিল।
তদন্তে দেখা গেছে, ওই সিসিটিভি এ বছরের ২৬-২৭শে জানুয়ারি মেরামত করেন টেকনিশিয়ানরা। কিন্তু যেদিন ওই টাকা স্থানান্তরিত হয় তার আগের দিন ৪ঠা ফেব্রুয়ারি আবার নষ্ট হয়ে যায় সিসিটিভি ক্যামেরা। সন্ধ্যা ৬টার দিকে আরসিবিসি শাখার কাস্টমার সার্ভিস প্রধান এ রিপোর্ট করেন।
এ বিষয়ে একটি ইমেইল পায় নিরাপত্তা বিভাগ। তারা সিসিটিভি বিক্রেতাদের কাছে এটি মেরামত করার আহ্বান জানান। কিন্তু বিক্রেতা তা দেখতে যান ৯ই ফেব্রুয়ারি বিকাল ২টায়। তারা পরীক্ষা করে দেখতে পান সিসিটিভি নয়, কাজ করছে না ইউপিএস। আরসিবিসি ব্যাংকের অর্থ পাচারবিরোধী বিভাগের প্রধান লরিন্দা রোজারো বলেছেন, সিসিটিভি নষ্ট হওয়ার সময়কাল নিয়ে আমরা খুবই সন্দিহান। তাই আরও তদন্তের জন্য আমরা সিসিটিভি বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলবো। কারণ, আমাদের মনে হচ্ছে উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
ইউপিএস নষ্ট থাকায় সিসিটিভি সিস্টেম কাজ করেনি। আরসিবিসির এমন রিপোর্টে সন্দেহ ঘনীভূত হচ্ছে যে, সিসিটিভিতে শক্তির যোগানদাতা ইউপিএস, টাকা স্থানান্তরের দিনগুলোতে ইচ্ছে করে নষ্ট করে দেয়া হয়েছিল ব্যাংকটির ভেতর থেকেই। টাকা স্থানান্তরের ওই দিনের সিসিটিভি ফুটেজ খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে এ তথ্য।
তবে কি কোনো গোপন উদ্দেশ্যে সেদিন সিসিটিভি অচল করে দেয়া হয়েছিল? এমন প্রশ্ন এখন সবার মনে। সিনেট ব্লু রিবন কমিটির চেয়ারম্যান সিনেটর তিওফিস্তো গুইঙ্গোনা তৃতীয় সিসিটিভির এ ঘটনাটিকে সুনির্দিষ্টভাবে সন্দেহজনক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
সিসিটিভির এ বিষয়টি সিনেট কমিটিকে সরবরাহ করেছে এন্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিল (এএমএলসি)। গত ৫ই ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার আরসিবিসির জুপিটার শাখার মাধ্যমে চারটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত হয়।
ব্যাংকের ওই দিনের ওই শাখার সিসিটিভি ফুটেজ চেয়ে এএমএলসি নির্দেশ দিয়েছে আরসিবিসিকে। আরসিবিসি ব্যাংকের অর্থ পাচারবিরোধী বিভাগের প্রধান লরিন্দা রোজারোকে এ বিষয়ে ১৫ই ফেব্রুয়ারি চিঠি লেখেন এএমএলসি অফিসের ইনচার্জ ভিনসেন্ট স্যালিডো।
ওদিকে ৫ই ফেব্রুয়ারি ওই ব্যাংকের মাধ্যমে মাইকেল ক্রুজ, জেসি ক্রিস্টোফার ল্যাগ্রোসা, আলফ্রেড ভারগারা, এনরিকো ভাসকুয়েজ ও উইলিয়াম সো গোর অ্যাকাউন্টে যে লেনদেন হয়েছে তাও দেখতে চেয়েছে এএমএলসি।
প্রথম দিকে এএমএলসির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কোর্ট অব আপিলস যে ছয় ব্যক্তির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছিল, এরা তাদের ৫ জন। এরই মধ্যে প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন (আরসিবিসি)-এর প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লরেঞ্জো টান ও একই ব্যাংকের জুপিটার শাখার ম্যানেজার মাইয়া সান্তোষ দিগুইতোকে। গতকাল তাদের সিনেট রিবন কমিটিতে তলব করা হয়। তদন্তকারীদের দেয়া তথ্য মতে, নিজের শাখায় ৫টি অ্যাকাউন্টে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার স্থানান্তর করে সুবিধা নিয়েছেন দিগুইতো।
কিন্তু জবাবে দিগুইতো বলেছেন, ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লরেঞ্জো টান তাকে এ অর্থ ৫টি অ্যাকাউন্টে ছাড় করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
তার এ দাবিকে ডাহা মিথ্যা বলে আখ্যায়িত করেছেন টান।
গুউঙ্গোনা বলেছেন, এ অবস্থায় আমরা নিশ্চিত হতে চেষ্টা করবো কে সত্য বলছেন ব্যাংক ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ নাকি শাখা ম্যানেজার।
বিষয়: বিবিধ
১০৩৭ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন