এরশাদের কথা দিয়ে কথা না রাখাটা ক্ষেত্র বিশেষে ভাল মানুষী !! সত্যি কি?

লিখেছেন লিখেছেন নয়ন কুষ্টিয়া ১৯ নভেম্বর, ২০১৩, ০৯:৫৭:২৮ রাত

মহাজোট ছেড়ে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দেয়ার পর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সর্বদলীয় সরকারে যোগ দেওয়ার ঘোষণার পরই সাংবাকিদের বিভিন্ন প্রশ্নে তোপের মুখে পড়েন।

প্রশ্ন : আপনি বলেছিলেন আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনে গেলে দালাল হয়ে মরবেন, শেষ জীবনে আর দালাল হতে চান না। তবে এখন কেন আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনে যাচ্ছেন। তাহলে কি আপনি দালাল?

সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের উত্তর এরশাদ সরাসরি না দিয়ে বলেন, নির্বাচনে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। নির্বাচনে না গেলে দেশ অন্ধকারের দিকে যাবে।

প্রশ্ন : সর্বদলীয় সরকারে যোগ দিবেন না বলেও ঘোষণা দিয়েছিলেন, কিন্তু এখন কেন যোগ দিচ্ছেন?

এরশাদ : আমি বলিনি ‘যোগ দিব না’। আমি বলেছি ‘নির্বাচনে না গেলে’ সরকারে যোগ দেব না। কিন্তু এখন তো নির্বাচনে যাচ্ছি।

প্রশ্ন : বিএনপি না এলে নির্বাচনে যাবেন না বলেছেন বহুবার, এখন যদি বিএনপি না আসে তাহলে কি নির্বাচনে যাবেন?

জবাবে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, আমি তো বিএনপিকে আহ্বান জানাচ্ছি সর্বদলীয় সরকারে যোগ দিতে। আমরা নির্বাচনমুখী দল। নির্বাচন না করলে দলের অস্তিত্ব থাকে না।

প্রশ্ন : এতদিন ধরে বলে আসছেন আওয়ামী লীগ অত্যাচারী দল, তাদের সঙ্গে আপনি ‘বেহেস্তেও যেতে রাজি নন’। এখন এমন কী ঘটল যে আপনি সেই অত্যাচারীদের মন্ত্রিসভায় যাচ্ছেন।

এরশাদ এবার চুপ মেরে যান। প্রশ্নেরও সরাসরি কোনো উত্তর দেননি তিনি।

প্রশ্ন : আপনি বলেছেন, নির্বাচনে গেলে জনগণ আপনার মুখে থুথু দিবে। এখন কি জনগণের থুথু নিয়েই আপনি নির্বাচনে যাচ্ছেন?

এবারও তিনি উত্তর দেননি।

শেষ পর্যন্ত এসব প্রশ্নের তোপে টিকতে পারেননি সাবেক এই রাষ্ট্রপতি। এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের থামিয়ে দিতে তার দলের নেতাকর্মীরা জোরেসোরে শ্লোগন দিতে থাকেন। পরে এরশাদ দ্রুত কনফারেন্স রুম ত্যাগ করেন।

দার্শনিকেরা বলেন, কথা দিয়ে কথা না রাখাটা ক্ষেত্র বিশেষে একধরনের ভাল মানুষীর লক্ষণ। অতি মহৎ লোকেরা না কি হরহামেশা এই কাজটি করে থাকে! সেটা আবার কেমন? তার ব্যাখাটাও দার্শনিকেরা দিয়েছেন। তাদের মতে, মহান ব্যক্তিগণ কাউকে ভদ্রতা বশতঃ না বলে তাদের মনে কষ্ট দিতে চান না। অন্যদিকে প্রতিনিয়ত লোকজন সেই সব দাবী নিয়ে তার কাছে আসে যা পুরুণ করা সম্ভব নয়। ফলে তিনি মুছকী হাসেন, মাথা নেড়ে সম্মতি জানান আবার কখনো কখনো মৌখিক আশ্বাসও প্রদান করেন। কিন্তু বাস্তব অবস্থার প্রেক্ষাপটে এগুলো পালন করা কখনোই সম্ভব হয় না।

দার্শনিকগণ একথাও বলেন যে, মহান ব্যক্তিরা আগবাড়িয়ে কোন প্রতিশ্রুতি দেন না। লোকজন তাদের নিকট গিয়ে জোর করে প্রতিশ্রুতি আদায় করে। এর বাইরে ভিন্ন চিত্রও আছে। কোন কোন লোক আগবাড়িয়ে এবং বিনা প্রয়োজনে এগিয়ে গিয়ে নানা রকম অপ্রয়োজনীয় প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে। এদেরকেই বলা হয় প্রতারক বা মানুষরুপী শয়তান।

বিষয়: বিবিধ

১৬৬৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File