সংখ্যাগুরুর পোদে বাঁশ! সংখ্যালঘু রক্ষায় নিয়োজিত মিডিয়া, প্রশাসন
লিখেছেন লিখেছেন নয়ন কুষ্টিয়া ১৯ নভেম্বর, ২০১৩, ০২:৫০:৪০ দুপুর
বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের কালিখোলা গ্রামের সেলিম গাজির কলেজ পড়ুয়া ছেলে পারভেজ সেদিন ব্যাডমিন্টন খেলছিলেন ভাই শামীম গাজী ও বন্ধু জহিরুল ইসলামদের সঙ্গে। খেলার মাঝে পীযূষ, শান্ত, শ্যামল, ধীমানরা এসে পারভেজকে শাসাতে থাকে। কারন কিছুদিন আগে পীযূষ, শান্ত, শ্যামল, ধীমানসহ কয়েকজনের সঙ্গে পারভেজের ক্রিকেট খেলা নিয়ে হাতাহাতি হয়েছিল। তর্কা তর্কির এক পর্যায় পীযূষরা ধারালো অস্ত্র বের করে কোপাতে উদ্ধত হয়। বাধা দিতে গেলে শামীম গাজী ও জহিরুল ইসলামসহ আরো দুজনকে কোপানো হয় যাদের অবস্থা আশংকাজনক এবং পারভেজকে ধরে মন্দিরের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেখানে গাছে বেধে পারভেজকে জবাই করে হত্যা করা হয়। ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় হিন্দুপাড়ায় কিছু বাড়িঘর পোড়ানো হয়, দুটি গরু পুড়ে অঙ্গার হলেও কোন মানুষ হতাহত হয়নি।
এই যখন অবস্থা বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় খবর বেরুয় এবং সেখানে আধিক্য পায় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর পুড়ানোর বিষয়টি। এ ঘটনা নিয়ে প্রথম আলোর রিপোর্ট- ”খেলা নিয়ে খুন, তারপর হিন্দুদের বাড়িঘরে আগুন।” প্রতিবেদনটি শুরু হয়েছে মর্মস্পর্শী আবেগ দিয়ে-পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে গলায় রশি বাঁধা দুটি গরু। ধান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এখানে-সেখানে পড়ে আছে গৃহস্থালি নানা সামগ্রী—সব পোড়া। ঘরের আশপাশে থাকা গাছের নারকেলগুলো পর্যন্ত পুড়ে গেছে। ভস্মীভূত ঘরগুলোর নানা জায়গা থেকে (ঘটনার ২৭ ঘণ্টা পর) ধোঁয়া বেরোচ্ছে। এই চিত্র বরিশালের চর কাউয়ার কালীখোলা গ্রামের পণ্ডিতবাড়ির।
মামলা করা হয় নিহত পারভেজের পরিবার থেকে। বাবা সেলিম গাজী ৯ জনের নাম সহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা দেড় হাজারের অধিক অজ্ঞাত পুরুষ মহিলাদের নামে মামলা করে।
হিন্দুদের আক্রমনে পারভেজ গাজীর মা পারভীন বেগম বুকফাটা আর্তনাদ করে বলেন, “পত্রিকা ও টিভিতে অপনারা শুধু একতরফাভাবে আগুনে পোড়া বাড়িঘরের ছবি দেখাচ্ছেন; কিন্তু আমার পারভেজকে যে মন্দিরের সামনে গাছের সাথে বেঁধে ঝুলিয়ে এবং রাস্তার ওপর ফেলে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে, সেই রক্তের ছবি কি আপনাদের চোখে পড়ে না? আমি আমার জায়গা-জমি সব বিক্রি করে হিন্দুদের বাড়িঘর পোড়ানোর ক্ষতিপূরণ দেবো, তবে আপনারা আমার পারভেজকে এনে দেন!”
ঘটনার শেষ এখানেই নয়। হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর পুড়ানোর জের ধরে নয়ন বালা নামের একজন ছেলের নেতৃত্বে আলমগীর সরদার এর পরিবারের বড় কন্যা হাসি (১৮), তানিয়া (১০) ও তার ৬ মাস বয়সী শিশু কন্যা মারিয়া সহ আব্দুল হকের ছেলে মনিরকে (৭) জবাই করা হয়। তানিয়া (১০) ঘটনাস্থলে নিহত হয় এবং বাকিদের অবস্থা সংকটাপন্ন।
সংবাদপত্রে আসে নয়ন বালা যে ৩ জন মুসলিম শিশু ও মেয়েকে জবাই করলো সে নাকি মাদকাশক্ত।স্থানীয় প্রশাসন নয়ন বালাকে রক্ষার্থে জানায়, ওই গ্রামের অমল বালার পুত্র ও সরকারি গৌরনদী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র নয়ন বালা অতিরিক্ত মাদক সেবন করে এ বর্বর হামলা চালিয়েছে।
বিষয়: বিবিধ
১৯১৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন