সাহাবীর মর্যাদা-

লিখেছেন লিখেছেন আনোয়ার আলী ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০২:৫২:৫০ দুপুর

ইসলামে সাহাবীর মর্যাদা অপরিসীম। সাহাবীরা চিরকালই মুসলমানদের শ্রদ্ধার পাত্র-এতে কেনই দ্বিমত নেই। বিশিষ্ট সাহাবী হযরত মুয়াবীয়ার কিছু ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলা হলে, সাহাবীর মর্যাদার প্রশ্নটা সামনে এসে যায়। অনেক আলেমনামধারী ফতোয়া দিয়ে বলেন, সাহাবীদের ভুল ধরা যাবে না। অথচ মুয়াবীয়ার রাজত্বকালেই তিনি অনেক সাহাবীকে হত্যা করেছেন। তার পুত্র ইয়াযীদ ইমাম হুসাইনসহ অনেক সাহাবীকে হত্যা করেছেন। এখানে হত্যাকান্ডের চেয়েও ‘মযার্দা’-এর বিয়ষটাকে গুরুত্ব দেয়ার উদ্দেশ্যটা সহজেই অনুমেয়। সহজ কথায় বললে, যারা রাজতন্ত্রের নিয়োজিত দরবারী আলেম, তারা অবশ্যই এটাই করবেন। মুয়াবীয়ার সিদ্ধান্ত এবং ইয়াযীদের রাজত্ব বৈধ হলে রাজতন্ত্রকে ‘ইসলামী’ বলেই মানতে হয়। আর সে চেষ্টাই হয়ে আসছে সেই সুদূর অতীত থেকেই। ইনিয়ে বিনিয়ে বলা হয়, হুসাইনকে হত্যার জন্যে ইয়াযীদ দায়ী ছিলেন না। প্রকারান্তরে নাকি দোষ ছিল হুসাইনেরই। যেহেতু ইয়াযীদকে সাহাবী মুয়াবিয়াই মুসলিম বিশ্বের আমীর নিযুক্ত করেছেন, সে কারনে তার আমিরত্ব নিয়ে কোন প্রশ্ন তোলা অনৈসলামিক। মুয়াবিয়ার নিযুক্ত আমীর ইয়াযীদ হুসাইনকে হত্যা করুক আর যা-ই করুক, তার কোন ভুল ধরা যাবে না, সমালোচনা করা যাবে না। সাহাবীর মর্যাদা বলে কথা!

রাজতন্ত্রের আলেমরা এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে হাজার হাজার কিতাব রচনা করেছেন সাহাবীর মর্যাদা সংক্রান্তে। একটু সাবধানতার সাথে পড়লেই তাদের উদ্দেশ্যটা পরিস্কার হয়ে যায়। সুন্নী ধর্মমত প্রচারে কোরআনের চাইতেও হাদীসকে বেশী গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। হাদীসে যেহেতু সাহাবীদের কথাকে মানতে বলা হয়েছে, সে কারনেই ‘মর্যাদার’ বিষয়টার এমন আগপিছ হয়েছে। সম্প্রতি একজন অতি জনপ্রিয় ইসলামী ব্যক্তিত্ব ইয়াযীদের নাম উচ্চারনের সময় ‘রাহমতুল্লাহি’ বলায় বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। কিন্তু তার মালিকানাধীন টিভি চ্যানেল চালাবার নিমিত্তে অর্থের দিকটাও অনেকে ভেবে দেখার বিষয়টা এর সাথে জুড়ে দিয়েছেন। যে খাবার খেলে পাখি ডানা মেলে উড়তে পারে না, সে খাবার না খাওয়াই উত্তম নয় কি? যারা ইমাম হুসাইনসহ অনেক সাহাবীর হত্যাকারী-মক্কা-মদীনার আক্রমনকারী ইয়াযীদকে ‘রাহমতুল্লাহি’ বলে সম্বোধন করেন, তাদের ইসলামী জ্ঞান আর পান্ডিত্য জানার আগ্রহ মুসলমানদের থাকে কি? এদের রোজহাশর নিশ্চয়ই ইয়াযীদের সাথেই হবে।

বিষয়: বিবিধ

১২৯০ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

342832
২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৪:৩৩
জ্ঞানের কথা লিখেছেন : সাহাবী মুআবিয়া ও আয়েশা এর নামের শেষে কি রাদিয়াল্লাহু আনহু বা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলা যাবে?
২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৪:৩৫
284141
আনোয়ার আলী লিখেছেন : অবশ্যই যাবে।
342834
২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৪:৩৯
ইয়াফি লিখেছেন : এক্ষেত্রে দেওবন্দী উলামাগণ বেশ সেনসেটিভ। সাহাবীদের অনুসৃত নিয়মও সুন্নতের অন্তভূক্ত।
342884
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ১২:১২
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : সাহাবিদের মর্যদার বিষয়টি যদি আগে আসে সেক্ষেত্রে হযরত আলি (রাঃ) মর্যাদা আগে আসবে। মুয়াবিয়া(রাঃ) ইসলাম গ্রহন করেছিলেন মক্কা বিজয় এর পর। যারা মুয়াবিয়া(রাঃ) ও হযরত আলি (রাঃ) এর তুলনা করতে চান তারা ভুল করেন।
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ দুপুর ০৩:০১
284378
আনোয়ার আলী লিখেছেন : সুন্নী মতাদর্শীদের কাছে আলীর চেয়েও মুয়াবিয়ার গুরুত্ব অধিক। কেননা মুয়াবিয়াই রাজতন্ত্রের পত্তন করেছিলেন। আর তারাই এখনো মধ্যপ্রাচ্যের ক্ষমতায় আছে।
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৫৫
284396
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আপনি কিসের ভিত্তিতে এই কথা বললেন সেটাই বুঝলাম না!!! সুন্নি মাজহাবগুলির প্রধান ইমামদের সবাই ই শাসকদের দারা অত্যাচারিত হয়েছেন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File