নাস্তিকদের কিছু গঁৎবাধা বুলি- [পর্ব-৪]
লিখেছেন লিখেছেন আনোয়ার আলী ২০ জুন, ২০১৫, ০৯:৫৫:৫৪ রাত
পর্ব -২-এ ব্লগার নীলাঞ্জনা লিখেছেন : আল্লা সাধারণ যোগ বিয়োগ ভাল পারেন না। এই রকম ভুল আল্লাহ দুনিয়াদারি সৃষ্টির ৬দিন/৮দিনে এর ক্ষেত্রেও তালগোল পাকিয়েছেন। আপনারা কোরানের ভুল নিয়ে যে গোঁজামিল দেয়ার চেষ্টা করেছেন, সেটা দেখে মজা পেলাম। কোরানের সুরা ৪১:৯ থেকে ৪১:১২ পড়েন।–
Quran 41: 9 Is it that ye deny Him who created the earth in Two Days ?
Quran 41: 10 He set on the (earth) Mountains standing firm high above it, and bestowed blessing on the earth, and measured therein all things to give them nourishment in due proportion, in FOUR DAYS?
Quran 41: 12 So He completed them (heavens) as seven firmaments in Two days and ? এইবার যোগ করেন - Two Days + FOUR DAYS + Two days । কত হইল? ৮ দিন। এখন আপনি তালিবালি আরবী শব্দ আমদানী করে জোরাতালি দিয়ে যত ইচ্ছা ৬ আর ৮ মিলান - but fact does not change.
জবাব:
ছয় আর আটের তালগোল পাকানোর কোন প্রশ্নই আসে না। আর জোড়াতালির প্রশ্ন আসে গোঁজামিল দিতে গেলে। আল-কোরআনের ক্ষেত্রে এর কোনটাই খাটবে না। আপনার উত্তরের জন্যে কেবল আয়াতগুলো আপনাকে মনোযোগ দিয়ে অনুধাবন করতে হবে। খেয়াল করুন, এখানে জমিন এবং আসমান দুই পৃথক সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে। ৪১ নং সুরার ৯ নং আয়াতে ২টি সময়কালে পৃথিবী সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে। ১০ নং আয়াতে পাহাড়গুলোকে অন্তর্ভূক্ত করে ছয়টি সময়কালে জমিন সৃষ্টির কথা আছে। ১১ নং আয়াতটি আপনি তুলে ধরেননি। ১১নং আয়াতে ‘এটা ব্যতীত’ অথবা সাথে সাথে কথা যুক্ত আছে। ইংরেজীতে যা Moreover মোরওভার। যাতে এটা পরিস্কার হয়ে যায় যে, ছয়টি পর্যায়ে সব কিছুর সৃষ্টি হয়েছে। তবে একই সময়ে দুটি পর্যায়ে আসমানগুলো সৃষ্টি করা হয়েছে। খেয়াল করুন, সবকিছুর সৃষ্টি আটটি সময়কালে নয়, বরং ছয়টি সময়কালে। ছয়টি সময়কালের কথা আরো একাধিক আয়াতে আছে। আপনাকে একটা বাংলা উদাহরন দেই, কোন রাজমিস্ত্রী যখন বলে একটি বিল্ডিং সে মোট ছয়মাসে তৈরী করেছে। তার মধ্যে দুমাসে বিল্ডিং-এর মুল কাঠামো হয়েছে, চার মাসে পুরো দশ তলার কাঠামো তৈরী করেছে, আর এর মধ্যে পুরো দুমাস লেগেছে ফিনিশিং-এর কাজে। হিসাবটা ভাগ ভাগ করে বলায় ৮ মাস হয়ে গেলো নয় কি? আসলে সে তো আগেই বলেছে পুরো বিল্ডিংটা ছয় মাসেই তৈরী করেছে। এতে হিসাবের গড়মিল বা বৈপরীত্য কোথায় খুঁজে পেলেন?
বিষয়: বিবিধ
১১৬৪ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তো ভাইজান- (২টি সময়কাল!?, ৬টি সময়কাল!?) কোরাণে এসব শব্দ আল্লা কবে প্রশব করলেন? নাকি কাকের বাসায় ময়নার ডিম ফুটানোর তালে আছেন। যাক সে কথা।
কোরাণের বিষয় গুলো একত্রিত করলে কারো পক্ষে বুঝতে অসুবিধা হয় না যে আবল/তাবল/ভুল/ভাল "ছুঁ মন্তর ছুঁ" পুথি পাঠ করে চতুর মোহাম্মদ ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চেয়ে ছিলেন।
আসমান-জমিন তৈরি করতে আল্লাহ সময় নিয়েছেন ছয় দিন (৭:৫৪, ১০:৩, ১১:৭, ৫০:৩৮, ৫৭:৪ ইত্যাদি) কিন্তু ৪১:৯-১২ থেকে জানা যায়, তিনি পৃথিবী তৈরি করতে ২ দিন সময় নিয়েছিলেন, এর পর এর মধ্যে পাহাড়-পর্বত বসাতে আর অন্যান্য আনুষঙ্গিক ইমারত তৈরী করতে আরো চার দিন, সবশেষে সাত আসমান বানাতে সময় নিয়েছেন আরো দু-দিন। সব মিলিয়ে সময় লেগেছে মোট আট দিন। কাজেই কারো মাথায় প্রশ্ন আসতেই পারে কোরান অনুযায়ী আল্লাহ মহাবিশ্ব বানিয়েছেন কয় দিনে– ছয় দিনে নাকি আট দিনে?
প্রশ্ন হচ্ছে- এত বুদ্ধিমান আল্লা কেন তালগোল মারা পরস্পর বিরোধী কথা বলবেন! আল্লার কথা হতে হবে "নিট এবং ক্লিন" যাতে কোন প্রশ্নের অবকাশ থাকবে না। অথচ আল্লার ভুল ভ্রান্তি ধামাচাপা দেয়ার জন্য আপনার মত জাকির পন্ডিত'দের রাতের ঘুম এখন হারাম হয়ে গেছে।
পরস্পরবিরোধিতার শতশত নমুনা রয়েছে কোরাণের পাতা জুড়ে । কোনটি রেখে কোনটির সাফাই গাইবেন জনাব??
সুরা ৭৯:২৭-৩০ অনুযায়ী আল্লাহ ‘হেভেন’ বানিয়েছিলেন আগে, তারপর বানিয়েছিলেন পৃথিবী, কিন্তু অন্য কিছু আয়াতে আল্লাহ বলেছেন একেবারে উলটো কথা – অর্থাৎ, আগে পৃথিবী, পরে হেভেন (২:২৯ এবং ৪১: ৯-১২ দ্রঃ)। কখনো বলা হয়েছে আল্লাহ সব কিছু ক্ষমা করে দেন (৪: ১১০, ৩৯: ১৫৩) কিন্তু আবার অন্যত্র বলা হয়েছে, তিনি সব কিছু ক্ষমা করেন না (৪:৪৮, ৪:১১৬, ৪:১৩৭, ৪:১৬৮)। সুরা ৩: ৮৫ এবং ৫:৭২ অনুযায়ী ইসলাম ধর্মে যারা নিজেদের সমর্পন করেনি তারা সবাই দোজখে যাবে তা সে খ্রীষ্টান, ইহুদী, প্যাগান যেই হোক না কেন, কিন্তু আবার ২:৬২ এবং ৫:৬৯ অনুযায়ী, ইহুদী এবং খ্রীষ্টানদের সবাই দোজখে যাবে না। কখনো বলা হয়েছে মুহম্মদকে সাহায্যের জন্য প্রস্তুত আছেন একহাজার জন ফেরেস্তা (৮:৯-১০) কখনোবা বলেছেন এই সাহায্যকারী ফেরেস্তাদের সংখ্যা আসলে তিনহাজার (৩: ১২৪, ১২৬)। কখনো আল্লাহ বলেছেন তার একটি দিন পার্থিব এক হাজার বছরের সমান (২২:৪৭, ৩২:৫), কখনোবা বলেছেন, তার দিন পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান (৭০:৪)। মানব সৃষ্টি নিয়েও আছে পরস্পর-বিরোধী তথ্য। আল্লাহ কোরাণে কখনো বলেছেন তিনি মানুষ বানিয়েছেন পানি থেকে (২৫: ৫৪, ২৪:৪৫), কখনোবা জমাট রক্ত বা ‘ক্লট’ থেকে (৯৬: ১-২), কখনোবা কাদামাটি থেকে (১৫:২৬, ৩২:৭, ৩৮:৭১, ৫৫:১৪) আবার কখনোবা ‘ডাস্ট’ বা ধূলা থেকে (৩০:২০, ৩৫:১১) ইত্যাদি। একটি ‘পার্ফেক্ট গ্রন্থে’ একই সাথে এত ধরণের পরষ্পর-বিরোধী তথ্য সত্য হতে পারে না। কাজেই এ ধরণের বই তৈরির চ্যালেঞ্জ করার আগে বিষয়গুলো মাথায় রাখলে বোধ হয় ভাল হয়।
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন