হযরত মুয়াবিয়া (রাঃ) কর্তৃক ইয়াজিদকে খলিফা মনোনয়ন ছিল ইসলামী শাসন ব্যবস্থা মুলে কুঠারাঘাত:

লিখেছেন লিখেছেন আনোয়ার আলী ০২ নভেম্বর, ২০১৪, ০৫:২৩:২৪ বিকাল



মহানবী(দঃ) ইন্তেকালের পূর্বে কাউকে তার উত্তরাধিকারী মনোনীত করে যাননি। তিনি জনগনের উপর তার উত্তরাধিকারী নির্বাচনের ভার ছেড়ে দিয়ে যান। সেইমতে প্রথম চারজন উত্তরাধিকারী তথা খোলাফায়ে রাশেদীন গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে জনগন কর্তৃক নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু উমাইয়া রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা হযরত মুয়াবিয়া খিলাফত লাভের সাথে সাথে বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা করেন। ৬৭৬ খ্রীষ্টাব্দে বসরার শাসনকর্তা হযরত মুগিরার প্ররোচনায় তিনি তার জ্যৈষ্ট পুত্র ইয়াজিদকে তার উত্তরাধিকারী মনোনীত করে ইসলামী শাসন ব্যবস্থার মর্মমুলে চরম কুঠারাঘাত করেন। হযরত মুয়াবিয়া এবং হযরত মুগীরা উভয়েই সম্মানিত সাহাবী ছিলেন। যেহেতু তারা কোন নবী বা রসুল ছিলেন না, স্বাভাবিক কারনেই তারা ভুলের উর্ধ্বে ছিলেন না। কিন্তু তাদের এই ভুল ইসলামের ইতিহাসকে ক্ষত বিক্ষত, রক্তাক্ত ও কলঙ্কিত করে। ইসলামের শাসন পদ্ধতির মুলে চরম কুঠারাঘাত করে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে হযরত মুয়াবিয়া (রাঃ)-এর পুত্র ইয়াজিদ ছিল নিষ্ঠুর, বিশ্বাসঘাতক, অধার্মিক ও মদ্যপায়ী। হযরত মুয়াবিয়ার সম্মানার্থে অনেকেই বলেন তিনি যখন তার পুত্রকে উত্তরাধিকারী নিযুক্ত করেন, তখন ইয়াজিদ নাকি এমন দুরাচারী ছিল না। মুয়াবিয়া মৃত্যুর পরই নাকি সে এমন হয়েছে। হতে পারে, আল্লাহই ভাল জানেন।

ঐতিহাসিক আল-ফাখরী, ফন ক্রেমার এবং ইবনুত তিকতাকার মতে ইয়াজিদের রাজত্বকাল তিনটি দুষ্কর্মের জন্য বিখ্যাত-প্রথম বছরে সে মহানবীর আদরের দৌহিত্র হযরত ইমাম হুসাইনকে হত্যা করে, দ্বিতীয় বছরে মদীনাকে লুন্ঠন করে এবং তৃতীয় বছরে সে কাবার উপর হামলা করে।

এই পাপাচারী ইয়াজিদ-এর খলিফা হিসাবে মনোনয়ন অন্যরা মেনে নিলেও, ইসলামের ব্যত্যয় মহানবীর দৌহিত্র ইমাম হুসাইন মেনে নিলেন না। হুসাইনের এই ন্যায্য দাবীকে আবদুল্লাহ-ইবনে যুবাইর, আবদুল্লাহ-ইবনে ওমর, আবদুর রহমান-ইবনে আবু বকর সমর্থন করেন। অবশ্য কিছুদিন পর শেষোক্ত দুজন ইয়াজিদের প্রলোভনে পড়ে তার বশ্যতা স্বীকার করে নেন। ইয়াজিদের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে হুসাইন এবং আবদুল্লাহ-ইবনে যুবাইর মক্কায় চলে যান।

বিষয়: বিবিধ

৪৩৭৬ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

280596
০২ নভেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৫:৫১
রাজাকারের বেয়াই লিখেছেন : ভাই, আপনার ভিতরে যে অনুভুতি কাজ করছে সেটা আমার ভিতর ও ছিল। কারন আমাদের সামনে সত্যের চাইতে মিথ্যাকেই বেশী প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু যদি আপনি কোরান,হাদীস, সঠিক ইতিহাস ও আকাবিরদের দৃষ্টিভংগেকে পরিপুর্ন অধ্যন করতে পারেন তবে আশা করি সত্যটা বুঝতে পারবেন। আমার আজকের পোস্ট আপনি পড়তে পারেন। তাছাড়া সাহাবাদের ব্যাপারে কলম ধরার সময় কোরান হাদীসের বর্নিত তাদের মর্যাদার ব্যাপারটা দেখতে পারেন। ধন্যবাদ
০২ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০৯:২১
224273
আনোয়ার আলী লিখেছেন : রাজতন্ত্র ভাল, ইয়াজিদ ভাল, ইমাম হোসেন হকের পক্ষে ছিলেন না-এসব আপনি আমাকে কোনভাবেই বিশ্বাস করাতে পারবেন না। আপনি সালাফিদের অপপ্রচারের শিকার। ধন্যবাদ।
280634
০২ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০৯:১৫
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : এই বিষয়ে লিখার জন্যই মাওলানা মওদুদিকে সবচেয়ে বেশি দুর্ণাম এর মুখোমুখি হতে হয়েছিল। আমাদের সালাফি এবং সাবেকি উভয় দৃষ্টিভঙ্গির মানুষের মধ্যে পুর্বতনদের প্রতি বা মুরুব্বিদের শ্রদ্ধার নামে তাকলিদ তথা অন্ধ অনুসরন এর মানসিকতা আছে। খিলাফত কে রাজতন্ত্রে পরিনিত করা হয়েছিল। এটির পক্ষে যুক্তি কেন খোজা হয় সেটা আমি বুঝতে পারিনা। শিয়াদের দাবি যে রাসুল(সাঃ) এর ইন্তেকালের প্ররে হযরত আলি (রাঃ) ই তার বৈধ উত্তরাধিকারি ছিলেন সেই ভুল কে মুকাবিলা করতে গিয়ে আরো ভুল করা হচ্ছে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File