সালাফীদের পল্টি খাওয়া-
লিখেছেন লিখেছেন আনোয়ার আলী ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ১১:২৩:৪৪ রাত
মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্যতম পবিত্র স্থান হিসেবে পরিচিত মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর সমাধিক্ষেত্র ভেঙে তার দেহাবশেষ অজ্ঞাত স্থানে সরিয়ে নেয়ার একটি প্রস্তাব দেয়ার খবরটাকে প্রথমে শিয়াদের প্রপাগান্ডা বলে উড়িয়ে দিতে চেয়েছে আমাদের দেশের সালাফীপন্থীরা। আমরা সালাফীপন্থী বলতে এক কথায় বুঝি, যারা ইসলামের নামে ইয়াজীদকে এবং রাজতন্ত্রকে সর্মথন করে এবং সৌদি সরকারের খুত খেয়ে জীবনধারন করে তাদেরকে।
যুক্তরাজ্যের দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের বানানো প্রতিবেদনটি যখন সত্য বলে প্রতীয়মান হচ্ছিল, তখনি এদেশের সালাফীরা নানা কুযুক্তি দিয়ে মানুষকে এটা খাওয়ানোর চেষ্টা করলেন। মুহুর্ত যেতে দিলেন না নানা কুযুক্তি দিয়ে সৌদির সিদ্ধান্ত যথার্থ বলে প্রমানে লেগে গেলেন। এখন জানা যাচ্ছে, খবরটা আসলে পুরো সত্য নয়। এখন আবার তাদের সুর পাল্টে গেলো। গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরবের এক শিক্ষাবিদের সঙ্গে আলোচনার পর এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব এরই মধ্যে মদিনার ‘মসজিদে নববী’ পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের কাছে পাঠানো হয়েছে। গুরুত্বের দিক থেকে মুসলমানদের কেবলা কাবা শরিফের পরই মসজিদে নববীর স্থান। এখানেই রয়েছে মহানবীর (সাঃ) রওজা বা সমাধি। সৌদিরা কবর জেয়ারতকে কবর পুঁজা গন্য করে। উপরন্তু তারা শিয়াদের উপর ভীষনভাবে চটে আছে শিয়ারা মা ফাতেমার কবর জেয়ারত করে বলে। আল্লাহপাক পবিত্র কাবায় রক্তপাত নিষিদ্ধ ঘোষনা করলেও, সৌদির বাদশাহ বিদআতের অজুহাতে ১৯৮৭ সালে ৪০০ ইরানী হাজীকে গুলি করে হত্যা করতে কার্পণ্য করেনি। কাজেই সৌদিদের দ্বারা মহানবীর কবর সরানো অসম্ভব নয়। স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ মুসলমানেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়লেন। এখন জানা যাচ্ছে, খবরটা পুরো সত্য নয়। মহানবীর কবর ধ্বংস নয়, আলাদা করতে চাইছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। কবর জিয়ারতকে যথাসাধ্য কষ্টকর করে তুলতে চাইছে তারা। শিয়াদের একটা শিক্ষা দেওয়াও তাদের পরিকল্পনায় রয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
ঘটনা আংশিক হলেও প্রকাশিত হয়ে পড়ায় বেকায়দায় পড়ে যায় সালাফীরা। এতোকাল তারা নানা বিষয়ে শিরক শিরক বলে চিৎকার করলেও, এখন তাদের সেই চিৎকার আর মুসলমানদের কাছে কোন গুরুত্ব পাচ্ছে না। বরং মুসলমানেরা আশঙ্কা করছেন শিরকের অজুহাত তুলে কিম্বা পাথর পুঁজার অজুহাত তুলে মাকামে ইব্রাহিম এবং হাজরে আসওয়াত কিম্বা পুরো কাবাঘরকেও ক্রমে ধ্বংস করে দিতে পারে এই সালাফীরা।
উগ্রভাবে শিয়াদের বিরুদ্ধাচারন করা, ইসলামী আন্দোলনকে জঙ্গী হিসাবে তুলে ধরা আর সৌদির রাজতন্ত্র রক্ষা ছাড়া সালাফীদের আর বিশেষ কোন লক্ষ্য নেই। গোটা বিশ্বে তারা ইসলামকে একটা উগ্র ও বর্বর ধর্ম হিসাবে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। আফগানিস্থানের জঙ্গী আল-কায়দা, ইরাকের জঙ্গী আই,এস এই সালাফীদের সৃষ্ট ফ্রান্কেসটাইন। তাদেরই সৃষ্ট আইএস ও আল-কায়দা এখন তাদের বিরুদ্ধে লেগে পড়েছে। এটাই আল্লাহর গজব।
শিয়াদের গলা কাটা, অমুসলিম সাংবাদিকের গলা কেটে তার ভিডিও প্রচার করা কি রকমের ইসলাম সেটা সালাফীরাই বলতে পারবে। এটা নিশ্চয়ই মহানবী(দঃ)-এর ইসলাম যে নয়, তা বলাইবাহুল্য।
হামাস, হিজবুল্লাহ, মুসলিম ব্রাদারহুড এবং ইরানের শিয়া সম্প্রদায় সালাফীদের জানি দুশমন।
বিষয়: বিবিধ
১০৬২ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
গত দিন ২০০ মাইল পাড়ি দিয়ে বাসে বাসায় ফিরছি। বাসে একজন সালাফীর গল্প শুনচ্ছি। সাথে আরেক জন নও মুসলিম। আমি একটু আগিয়ে তার নিকটের সীটে গল্প শুনচ্ছি। ফাঁকে এক পর্যায়ে। গ্লোবাল অবস্থান যানতে চাইলাম। তার কাছ থেকে। সে বুঝে ফেললো, আমি আই, এস কথা বলতে চাচ্ছি। তিনি বলে ফেললো। আমরা আইসের বিরুদ্ধে। যখন বলে ফেললাম এই সালাফীরা নাস্তিদের সাথে নিয়ে এলাইন্স তৈরী করে, প্রেসিডেন্ট মুসরীকে ক্ষমতা থেকে নামিয়েছ।
তখন চুপ মেরে গেল। সালাফীদের মধ্যে অনেক গ্রুপ রয়েছে। আমি জানি না সে কোন গ্রুপের।
মন্তব্য করতে লগইন করুন