মিশরের নব্য ফেরাউন সিসি-কে সৌদির এজিদ আবদুল্লাহর সর্বাত্মক সমর্থন
লিখেছেন লিখেছেন আনোয়ার আলী ০৮ জুন, ২০১৪, ১০:৫৮:৫৭ রাত
মিসরের প্রেসিডেন্ট হিসেবে আজ রোববার শপথ নিচ্ছেন সাবেক সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি৷ ইতিমধ্যে সৌদি আরব তাঁর প্রতি অফুরন্ত সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে৷ আর সিসি-বিরোধীদের প্রতি উচ্চারণ করেছে হুঁশিয়ারি৷ খবর রয়টার্সের৷
গত মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়ী সিসিকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে গ্রহণ করতে মিসরীয়দের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বার্তা দিয়েছেন সৌদি বাদশা আবদুল্লাহ৷ মিসরে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট ইসলামপন্থী মোহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করা সিসির প্রতি সৌদি আরবের পুরোদস্তুর সমর্থনের এটাই সবচেয়ে সুস্পষ্ট বার্তা বলে মনে করা হচ্ছে৷
আরব বসন্তে মিসরসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটে৷ মিসরে নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে মুরসির সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুড৷ ব্রাদারহুডের উত্থানে ভীত সৌদি আরব সিসির জয়কে ইতিবাচকভাবে দেখছে৷ দেশটি মনে করে, আরব বসন্তে ভর করে মিসরে ব্রাদারহুডের মতো ইসলামপন্থী সংগঠনের ক্ষমতায় আসার বিষয়টি ওই অঞ্চলে রাজপরিবার ও পারিবারিক শাসনের পথে একটা বড় হুমকি৷ সে ক্ষেত্রে সিসির শক্ত শাসনই মিসরে ব্রাদারহুডের উত্থানকে ঠেকাতে পারে৷
মরোক্কোয় অবকাশযাপনকালে বাদশা আবদুল্লাহর দেওয়া ওই বার্তার ভাষা একেবারে খোলাখুলি৷ তিনি মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে সমস্যা সৃষ্টিকারীদের ‘শয়তানের সাহায্যকারী’ বলে উল্লেখ করেন৷
সিসির আজকের শপথ অনুষ্ঠানে সৌদি ও উপসাগরীয় বিভিন্ন দেশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত হতে পারেন৷ এর মাধ্যমে দেখানো হবে, মিসরের সেনাবাহিনীর সাবেক এই ফিল্ড মার্শালের পক্ষে ব্যাপক আঞ্চলিক সমর্থন রয়েছে৷ বিশেষ করে আঞ্চলিক ক্ষমতার দৌড়ে ব্রাদারহুড ও তাঁদের সমর্থনকারী কাতার ও তুরস্ককে রুখতে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসর যে এককাট্টা, সেই বার্তা দেওয়া হবে৷
ব্রাদারহুডের এক বছরের শাসনামলে মিসরে শত শত কোটি ডলার ঢালা কাতারকে সিসির শপথ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণই জানানো হয়নি৷ আর মুরসিকে উৎখাতের পর থেকে মিসরের গণতন্ত্র নিয়ে পাশ্চাত্য বিশ্ব যে স্বস্তিতে নেই, সেই নিদর্শন হিসেবে তারা নিম্ন পর্যায়ের প্রতিনিধিদের পাঠাবে৷ আবার শপথ অনুষ্ঠানে কাতার আমন্ত্রণ না পেলেও ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি পেয়েছেন৷ অথচ, সিসি বা সৌদি বাদশা আবদুল্লাহ কেউই ইরানের শিয়াপন্থী শাসকদের ভক্ত নন৷ সম্ভবত সুন্নি ইসলামি আন্দোলন ব্রাদারহুডকে পছন্দ করে না বলেই আঞ্চলিক রাজনীতিতে নিজেদের ঘোর শত্রু শিয়া সম্প্রদায় সংখ্যাগরিষ্ঠ ইরানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে৷
বাদশা আবদুল্লাহর বার্তায় ব্রাদারহুড বা তাদের সমর্থক কাতারের নাম সরাসরি উল্লেখ না থাকলেও আকারে-ইঙ্গিতে তাদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘আমি শয়তানের কদর্যতার বিষয়ে আপনাদের সবাইকে সতর্ক করে দিচ্ছি৷ তাদের চেহারাটা খুবই কালো৷ তারা তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থে কাজ করে থাকে৷’
মিসর নিয়ে নাক গলানোর ব্যাপারেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বাদশা আবদুল্লাহ৷ মিসরের ব্যাপারে ‘অনধিকারচর্চাকে’ সৌদি আরবের ব্যাপারে ‘অনধিকারচর্চা’ হিসেবে দেখা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি৷ পাশাপাশি মিসরের অর্থনীতিকে সংকট থেকে উদ্ধারে একটি দাতা সম্মেলন করার ঘোষণা দিয়েছেন বাদশা আবদুল্লাহ৷ তিনি বলেন, ‘সিসিকে সহায়তায় যারা নিজেদের সম্পদ ব্যবহার করবে না, আমাদের মধ্যে তাদের কোনো জায়গা হবে না৷’
Click this link
বিষয়: বিবিধ
১২৮৫ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সৌদী বাদশাহ? এন্ড গং আল্লাহর আইন অনুসারে তাদের একজনে পর্যবসিত হয়েছেন সুতরাং গাইডেন্স পাবার কোন সম্ভাবনা দেখছি না।
ধণ্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন