ইসলামের দৃষ্টিতে হতাশা-
লিখেছেন লিখেছেন আনোয়ার আলী ১২ নভেম্বর, ২০১৩, ০৮:০৮:৩২ রাত
জীবনের নানা প্রাঙ্গনে আমরা হরহামেশাই নানা ধরনের হতাশায় ভুগে থাকি। এই হতাশার সৃষ্টি কিছু অজানা ভয় থেকে। বর্তমান যুগের এমন একটা মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না, যিনি জীবনের কখনো না কখনো হতাশায় ভুগেননি। অন্যভাবে বলতে গেলে আমরা বিশেষ কিছু সময়ে ঈমান হারিয়ে ফেলি। কেননা কোন মুসলমানই হতাশায় ভুগতে পারেন না। হতাশ হওয়া একটা কুফরী। একথা কেন বললাম তা বুঝতে হলে নিচের আয়াতটা পড়ুন। সুরা ইউসুফের ৮৭ নং আয়াতে স্পষ্টভাবেই আল্লাহপাক ঘোষনা করেছেন, يَا بَنِيَّ اذْهَبُواْ فَتَحَسَّسُواْ مِن يُوسُفَ وَأَخِيهِ وَلاَ تَيْأَسُواْ مِن رَّوْحِ اللّهِ إِنَّهُ لاَ يَيْأَسُ مِن رَّوْحِ اللّهِ إِلاَّ الْقَوْمُ الْكَافِرُونَ
এবং আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহর রহমত থেকে কাফের সম্প্রদায়, ব্যতীত অন্য কেউ নিরাশ হয় না। and never give up hope of Allâh’s Mercy. Certainly no one despairs of Allâh’s Mercy, except the people who disbelieve.” (সুরা ইউসুফ আয়াত ৮৭)
আল-কোরআনের সুরা যুমার ৫৩নং আয়াতে আল্লাহপাক আরো বলেন,
قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَى أَنفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِن رَّحْمَةِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
বলুন, হে আমার বান্দাগণ যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ( সুরা যুমার, আয়াত ৫৩)
আল-কোরআনের সুরা আনকাবুতের বলা হয়েছে,
وَالَّذِينَ كَفَرُوا بِآيَاتِ اللَّهِ وَلِقَائِهِ أُوْلَئِكَ يَئِسُوا مِن رَّحْمَتِي وَأُوْلَئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
(সুরা আনকাবুত, আয়াত ২৩)
যারা আল্লাহর আয়াত সমূহ ও তাঁর সাক্ষাত অস্বীকার করে, তারাই আমার রহমত থেকে নিরাশ হবে এবং তাদের জন্যেই যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে।
উপরোক্ত আয়াত সমূহ দ্বারা এটা সুষ্পষ্ট হয়েছে যে, হতাশ বা নিরাশ হওয়া আল্লাহর প্রতি ঈমান-এর বিপরীত।
অতীতে কি হয়েছিল, আর ভবিষ্যতে কি হবে, তার চিন্তা বাদ দিয়ে আজকের জন্যে বাঁচুন।
মানুষ বেশীরভাগ ক্ষেত্রে ভবিষ্যতের অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্যে উদ্বিগ্ন হয়ে থাকে। যদিও মানুষ ভবিষ্যতের যে খারাপ ঘটনার চিন্তা করে থাকে, বাস্তবে তার ৯০% ভাগই ঘটে না। কিম্বা ভিন্ন কিছু ঘটে থাকে, যা আল্লাহপাক তার জন্যে নির্ধারিত করে রেখেছেন। মানুষের এই উদ্বিগ্নকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেনীর মানুষ কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করছে আজকের পৃথিবীতে। সেই ব্যবসার নাম ইনস্যুরেন্স বা বীমা।
এক্ষেত্রে ইসলামের নির্দেশনা হচ্ছে, এই মুহুর্তে আল্লাহপাক আপনাকে যা দিয়েছেন, তা চিন্তা করুন। আল্লাহ যা দিয়েছেন তাতেই সন্তুষ্ট থাকা উচিত। আল্লাহপাক বলেন,
قَالَ يَا مُوسَى إِنِّي اصْطَفَيْتُكَ عَلَى النَّاسِ بِرِسَالاَتِي وَبِكَلاَمِي فَخُذْ مَا آتَيْتُكَ وَكُن مِّنَ الشَّاكِرِينَ (সুরা আল আ’রাফ, আয়াত ১৪৪) (পরওয়ারদেগার) বললেন, হে মূসা, আমি তোমাকে আমার বার্তা পাঠানোর এবং কথা বলার মাধ্যমে লোকদের উপর বিশিষ্টতা দান করেছি। সুতরাং যা কিছু আমি তোমাকে দান করলাম, গ্রহণ কর এবং কৃতজ্ঞ থাক। (Allâh) said: ”O Mûsa (Moses) I have chosen you above men by My Messages, and by My speaking (to you). So hold that which I have given you and be of the grateful.
অতীত নিয়ে দুঃখ করবেন না। যা গেছে তা আর ফিরে আসবে না।
আল্লাহপাক বলেন,
لِكَيْلَا تَأْسَوْا عَلَى مَا فَاتَكُمْ وَلَا تَفْرَحُوا بِمَا آتَاكُمْ وَاللَّهُ لَا يُحِبُّ كُلَّ مُخْتَالٍ فَخُورٍ যাতে তোমরা যা হারাও তজ্জন্যে দুঃখিত না হও এবং তিনি তোমাদেরকে যা দিয়েছেন, তজ্জন্যে উল্লসিত না হও। আল্লাহ কোন উদ্ধত অহংকারীকে পছন্দ করেন না, (সুরা আল হাদীদ, আয়াত ২৩) In order that you may not be sad over matters that you fail to get, nor rejoice because of that which has been given to you. And Allâh likes not prideful boasters.
فَسَتَذْكُرُونَ مَا أَقُولُ لَكُمْ وَأُفَوِّضُ أَمْرِي إِلَى اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ بَصِيرٌ بِالْعِبَادِ আমি তোমাদেরকে যা বলছি, তোমরা একদিন তা স্মরণ করবে। আমি আমার ব্যাপার আল্লাহর কাছে সমর্পণ করছি। নিশ্চয় বান্দারা আল্লাহর দৃষ্টিতে রয়েছে। (সুরা আল মু’মিন, আয়াত ৪৪) ”And you will remember what I am telling you, and my affair I leave it to Allâh. Verily, Allâh is the All-Seer of (His) slaves.”
فَوَقَاهُ اللَّهُ سَيِّئَاتِ مَا مَكَرُوا وَحَاقَ بِآلِ فِرْعَوْنَ سُوءُ الْعَذَابِ অতঃপর আল্লাহ তাকে তাদের চক্রান্তের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করলেন এবং ফেরাউন গোত্রকে শোচনীয় আযাব গ্রাস করল। (সুরা আল মু’মিন, আয়াত ৪৫) So Allâh saved him from the evils that they plotted (against him), while an evil torment encompassed Fir’aun’s (Pharaoh) people.
ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তা পরিহার করুন। ব্যতিব্যস্থ হওয়ার কোন কারণ নেই। আল্লাহর সাহায্য আসবেই।
أَتَى أَمْرُ اللّهِ فَلاَ تَسْتَعْجِلُوهُ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى عَمَّا يُشْرِكُونَ (সুরা আন নাহল, আয়াত ১) আল্লাহর নির্দেশ এসে গেছে। অতএব এর জন্যে তাড়াহুড়া করো না। ওরা যেসব শরীক সাব্যস্ত করছে সেসব থেকে তিনি পবিত্র ও বহু উর্ধ্বে। The Event (the Hour or the punishment of disbelievers and polytheists or the Islâmic laws or commandments), ordained by Allâh will come to pass, so seek not to hasten it. Glorified and Exalted be He above all that they associate as partners with Him.
হতাশ হওয়ার মতো কিছু এলে করণীয় কি?
জীবনের নানা বাঁকে মুমীনের জীবনে হতাশ হবার মতো পরিস্থিতি প্রতি পদে পদেই আসতে পারে। দুঃখ কষ্ট জীবনেই অংশ। এসব এলেই হতাশ হয়ে পড়া কোন মুমীনের লক্ষণ নয়। এগুলো এলে কি করতে হবে তা-ও আল্লাহপাক বাতলে দিয়েছেন। আল-কোরআনে বলা হয়েছে,
فَإِذَا مَسَّ الْإِنسَانَ ضُرٌّ دَعَانَا ثُمَّ إِذَا خَوَّلْنَاهُ نِعْمَةً مِّنَّا قَالَ إِنَّمَا أُوتِيتُهُ عَلَى عِلْمٍ بَلْ هِيَ فِتْنَةٌ وَلَكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ
মানুষকে যখন দুঃখ-কষ্ট স্পর্শ করে, তখন সে আমাকে ডাকতে শুরু করে, এরপর আমি যখন তাকে আমার পক্ষ থেকে নেয়ামত দান করি, তখন সে বলে, এটা তো আমি পূর্বের জানা মতেই প্রাপ্ত হয়েছি। অথচ এটা এক পরীক্ষা, কিন্তু তাদের অধিকাংশই বোঝে না। (সুরা আল জুমার, আয়াত: ৪৯)
সুরা মায়েদার ৭৪ নং আয়াতে বলা হয়েছে,
أَفَلاَ يَتُوبُونَ إِلَى اللّهِ وَيَسْتَغْفِرُونَهُ وَاللّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
তারা আল্লাহর কাছে তওবা করে না কেন এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে না কেন? আল্লাহ যে ক্ষমাশীল, দয়ালু। (সুরা ময়েদা, আয়াত ৭৪)
وَإِذَا مَسَّ الإِنسَانَ الضُّرُّ دَعَانَا لِجَنبِهِ أَوْ قَاعِدًا أَوْ قَآئِمًا فَلَمَّا كَشَفْنَا عَنْهُ ضُرَّهُ مَرَّ كَأَن لَّمْ يَدْعُنَا إِلَى ضُرٍّ مَّسَّهُ كَذَلِكَ زُيِّنَ لِلْمُسْرِفِينَ مَا كَانُواْ يَعْمَلُونَ
আর যখন মানুষ কষ্টের সম্মুখীন হয়, শুয়ে বসে, দাঁড়িয়ে আমাকে ডাকতে থাকে। তারপর আমি যখন তা থেকে মুক্ত করে দেই, সে কষ্ট যখন চলে যায় তখন মনে হয় কখনো কোন কষ্টেরই সম্মুখীন হয়ে যেন আমাকে ডাকেইনি। এমনিভাবে মনঃপুত হয়েছে নির্ভয় লোকদের যা তারা করেছে। (সুরা ইউনুছ, আয়াত ১২)
قُلِ ادْعُواْ الَّذِينَ زَعَمْتُم مِّن دُونِهِ فَلاَ يَمْلِكُونَ كَشْفَ الضُّرِّ عَنكُمْ وَلاَ تَحْوِيلاً
বলুনঃ আল্লাহ ব্যতীত যাদেরকে তোমরা উপাস্য মনে কর, তাদেরকে আহবান কর। অথচ ওরা তো তোমাদের কষ্ট দুর করার ক্ষমতা রাখে না এবং তা পরিবর্তনও করতে পারে না। (সুরা বণী ইসরাইল, আয়াত ৫৬)
وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ أُجِيبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ فَلْيَسْتَجِيبُواْ لِي وَلْيُؤْمِنُواْ بِي لَعَلَّهُمْ يَرْشُدُونَ
আর আমার বান্দারা যখন তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে আমার ব্যাপারে বস্তুতঃ আমি রয়েছি সন্নিকটে। যারা প্রার্থনা করে, তাদের প্রার্থনা কবুল করে নেই, যখন আমার কাছে প্রার্থনা করে। কাজেই আমার হুকুম মান্য করা এবং আমার প্রতি নিঃসংশয়ে বিশ্বাস করা তাদের একান্ত কর্তব্য। যাতে তারা সৎপথে আসতে পারে। ( সুরা বাকারাহ, আয়াত ১৮৬)
قُلِ اللّهُ يُنَجِّيكُم مِّنْهَا وَمِن كُلِّ كَرْبٍ ثُمَّ أَنتُمْ تُشْرِكُونَ
আপনি বলে দিনঃ আল্লাহ তোমাদেরকে তা থেকে মুক্তি দেন এব সব দুঃখ-বিপদ থেকে। তথাপি তোমরা শেরক কর। ( সূরা আল আন-আম, আয়াত ৬৪)
وَأَيُّوبَ إِذْ نَادَى رَبَّهُ أَنِّي مَسَّنِيَ الضُّرُّ وَأَنتَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ
এবং স্মরণ করুন আইয়্যুবের কথা, যখন তিনি তাঁর পালনকর্তাকে আহবান করে বলেছিলেনঃ আমি দুঃখকষ্টে পতিত হয়েছি এবং আপনি দয়াবানদের চাইতেও সর্বশ্রেষ্ট দয়াবান। (সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৮৩)
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اصْبِرُواْ وَصَابِرُواْ وَرَابِطُواْ وَاتَّقُواْ اللّهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
হে ঈমানদানগণ! ধৈর্য্য ধারণ কর এবং মোকাবেলায় দৃঢ়তা অবলম্বন কর। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক যাতে তোমরা তোমাদের উদ্দেশ্য লাভে সমর্থ হতে পার। (সুরা আল ইমরান, আয়াত: ২০০)
রাতের পর যেমন দিন, ঠিক তেমনি দুঃখের পর আছে সুখ। কবির এই আসলেই সত্যি, মেঘ দেখে তুই করিসনে ভয়, আড়ালে তার সূয্য হাসে। কাজেই কোন দুঃখে মুষড়ে পড়া কোন মুসলমানের সাজে না।
إِنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا নিশ্চয় কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে। (সুরা আনশিরাহ, আয়াত ৬) Verily, with the hardship, there is relief (i.e. there is one hardship with two reliefs, so one hardship cannot overcome two reliefs).
মানুষ যত বড় পাপীই হোক, আল্লাহকে ডাকলে আল্লাহ তার ডাকে সাড়া দেন। আপনি যত পাপীই হোন, আর যত দুঃখ কষ্টের মধ্যেই থাকুন না কেন, আল্লাহকে স্মরন করুন। আল্লাহ ওয়াদা করেছেন, তিনি নিশ্চয়ই আপনার ডাকে সাড়া দেবেন। আল্লাহপাক বলেন,
وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِي سَيَدْخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি সাড়া দেব। যারা আমার এবাদতে অহংকার করে তারা সত্বরই জাহান্নামে দাখিল হবে লাঞ্ছিত হয়ে। (সুরা আল মুমিন, আয়াত ৬০) And your Lord said: ”Invoke Me, [i.e. believe in My Oneness (Islâmic Monotheism)] (and ask Me for anything) I will respond to your (invocation). Verily! Those who scorn My worship [i.e. do not invoke Me, and do not believe in My Oneness, (Islâmic Monotheism)] they will surely enter Hell in humiliation!”
আল্লাহর প্রতি মুমিনের বিশ্বাস থাকে অটল। দুনিয়ার কোন সুখ দুখ এ বিশ্বাসে চিড় ধরাতে পারে না। আর যারা অবিশ্বাসী তারা সত্যি হতভাগা।
وَمَنْ أَعْرَضَ عَن ذِكْرِي فَإِنَّ لَهُ مَعِيشَةً ضَنكًا وَنَحْشُرُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَعْمَى এবং যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবিকা সংকীর্ণ হবে এবং আমি তাকে কেয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করব। সুরা ত্বাহা, আয়াত ১২৪) ”But whosoever turns away from My Reminder (i.e. neither believes in this Qur’ân nor acts on its orders, etc.) verily, for him is a life of hardship, and We shall raise him up blind on the Day of Resurrection.”
مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِّن ذَكَرٍ أَوْ أُنثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَجْرَهُم بِأَحْسَنِ مَا كَانُواْ يَعْمَلُونَ যে সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং সে ঈমাণদার, পুরুষ হোক কিংবা নারী আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং প্রতিদানে তাদেরকে তাদের উত্তম কাজের কারণে প্রাপ্য পুরষ্কার দেব যা তারা করত। (সুরা আন নাহল, আয়াত ৯৭) Whoever works righteousness, whether male or female, while he (or she) is a true believer (of Islâmic Monotheism) verily, to him We will give a good life (in this world with respect, contentment and lawful provision), and We shall pay them certainly a reward in proportion to the best of what they used to do (i.e. Paradise in the Hereafter).
মুমিনের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট-
যারা মুমিন তারা একমাত্র আল্লাহর উপরই ভরসা করবে। কোন মানুষ বস্তু বা পীর আউলিয়া কেউই তার উছিলা হতে পারে না। আল্লাহই তার জন্যে যথেষ্ট। যে আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখে আল্লাহই তার জন্যে যথেষ্ট। আল্লাহপাক বলেন,
وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ وَمَن يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ إِنَّ اللَّهَ بَالِغُ أَمْرِهِ قَدْ جَعَلَ اللَّهُ لِكُلِّ شَيْءٍ قَدْرًا এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিযিক দেবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট। আল্লাহ তার কাজ পূর্ণ করবেন। আল্লাহ সবকিছুর জন্যে একটি পরিমাণ স্থির করে রেখেছেন। (সুরা আত তালাক্ব, আয়াত ৩) And He will provide him from (sources) he never could imagine. And whosoever puts his trust in Allâh, then He will suffice him. Verily, Allâh will accomplish his purpose. Indeed Allâh has set a measure for all things.
الَّذِينَ قَالَ لَهُمُ النَّاسُ إِنَّ النَّاسَ قَدْ جَمَعُواْ لَكُمْ فَاخْشَوْهُمْ فَزَادَهُمْ إِيمَاناً وَقَالُواْ حَسْبُنَا اللّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ যাদেরকে লোকেরা বলেছে যে, তোমাদের সাথে মোকাবেলা করার জন্য লোকেরা সমাবেশ করেছে বহু সাজ-সরঞ্জাম; তাদের ভয় কর। তখন তাদের বিশ্বাস আরও দৃঢ়তর হয়ে যায় এবং তারা বলে, আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট; কতই না চমৎকার কামিয়াবীদানকারী। (সুরা আল ইমরান, আয়াত ১৭৩) Those (i.e. believers) unto whom the people (hypocrites) said, ”Verily, the people (pagans) have gathered against you (a great army), therefore, fear them.” But it (only) increased them in Faith, and they said: ”Allâh (Alone) is Sufficient for us, and He is the Best Disposer of affairs (for us).
فَانقَلَبُواْ بِنِعْمَةٍ مِّنَ اللّهِ وَفَضْلٍ لَّمْ يَمْسَسْهُمْ سُوءٌ وَاتَّبَعُواْ رِضْوَانَ اللّهِ وَاللّهُ ذُو فَضْلٍ عَ অতঃপর ফিরে এল মুসলমানরা আল্লাহর অনুগ্রহ নিয়ে, তদের কিছুই অনিষ্ট হলো না। তারপর তারা আল্লাহর ইচ্ছার অনুগত হল। বস্তুতঃ আল্লাহর অনুগ্রহ অতি বিরাট। (সুরা আল ইমরান, আয়াত ১৭৪) So they returned with Grace and Bounty from Allâh. No harm touched them; and they followed the good Pleasure of Allâh. And Allâh is the Owner of Great Bounty.
قَالَ رَبِّ إِنِّي لا أَمْلِكُ إِلاَّ نَفْسِي وَأَخِي فَافْرُقْ بَيْنَنَا وَبَيْنَ الْقَوْمِ الْفَاسِقِينَ মূসা বললঃ হে আমার পালনকর্তা, আমি শুধু নিজের উপর ও নিজের ভাইয়ের উপর ক্ষমতা রাখি। অতএব, আপনি আমাদের মধ্যে ও এ অবাধ্য সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ করুন। (সুরা আল মায়িদা, আয়াত ২৫) He [Mûsa (Moses)] said: ”O my Lord! I have power only over myself and my brother, so separate us from the people who are the Fâsiqûn (rebellious and disobedient to Allâh)!”
قَالَ رَجُلاَنِ مِنَ الَّذِينَ يَخَافُونَ أَنْعَمَ اللّهُ عَلَيْهِمَا ادْخُلُواْ عَلَيْهِمُ الْبَابَ فَإِذَا دَخَلْتُمُوهُ فَإِنَّكُمْ غَالِبُونَ وَعَلَى اللّهِ فَتَوَكَّلُواْ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ খোদাভীরুদের মধ্য থেকে দু’ব্যক্তি বলল, যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছিলেনঃ তোমরা তাদের উপর আক্রমণ করে দরজায় প্রবেশ কর। অতঃপর তোমরা যখন তাতে পবেশ করবে, তখন তোমরাই জয়ী হবে। আর আল্লাহর উপর ভরসা কর যদি তোমরা বিশ্বাসী হও। (সুরা আল মায়িদা, আয়াত ২৩) Two men of those who feared (Allâh and) on whom Allâh had bestowed His Grace [they were íæÔÚ æ ßÇáÈ Yûsha’ (Joshua) and Kâlab (Caleb)] said: ”Assault them through the gate, for when you are in, victory will be yours, and put your trust in Allâh if you are believers indeed.”
إِذْ هَمَّت طَّآئِفَتَانِ مِنكُمْ أَن تَفْشَلاَ وَاللّهُ وَلِيُّهُمَا وَعَلَى اللّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُونَ যখন তোমাদের দুটি দল সাহস হারাবার উপক্রম হলো, অথচ আল্লাহ তাদের সাহায্যকারী ছিলেন, আর আল্লাহর উপরই ভরসা করা মুমিনদের উচিত। (সুরা আল ইমরান, আয়াত ১২২) When two parties from among you were about to lose heart, but Allâh was their Walî (Supporter and Protector). And in Allâh should the believers put their trust.
আল্লাহ্ই ক্ষমাকারীঃ
বান্দা যতবড় অপরাধ করুক, যত বেশী গুনাহ করুক, আল্লাহর রহমতের চাইতে তো বড় নয়। বান্দা সরাসরিই তার প্রভুর কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করতে পারে। এর জন্যে কোন মাধ্যমের প্রয়োজন নেই। কোন পীর আউলিয়ার প্রয়োজন নেই। আল্লাহ তার বান্দার কথা সরাসরিই শুনেন। কোন মাধ্যমে নয়। বান্দা যত পাপীই হোক, তাকে ডাকলেই তিনি তার ডাকে সাড়া দেবার অঙ্গিকার করেছেন। তিনি এরশাদ করেনঃ
وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِي سَيَدْخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ
“তোমাদের পালনকর্তা বলেছেন, তোমরা আমাকে ডাক আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব। নিশ্চয় যারা আমার কাছে দুআ করে না- দুআ করতে অহংকার করে- তারা অচিরেই লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।” (সূরা মু'মেনঃ ৬০)
তিনি আরো বলেনঃ
وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ أُجِيبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ فَلْيَسْتَجِيبُوا لِي وَلْيُؤْمِنُوا بِي لَعَلَّهُمْ يَرْشُدُونَ
“এবং যখন আমার বান্দাগণ আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞেস করে, তখন তাদেরকে বলে দিনঃ নিশ্চয় আমি তাদের সন্নিকটেই। কোন ব্যক্তি যখনই আমাকে আহ্বান করে, তখনই আমি তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে থাকি; সুতরাং তারাও যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় এবং আমাকে বিশ্বাস করে, তাহলেই তারা সঠিক পথে চলতে পারবে।” (সূরা বাকারাঃ ১৮৬)
আল্লাহ্ আরো বলেনঃ
وَهُوَ الَّذِي يَقْبَلُ التَّوْبَةَ عَنْ عِبَادِهِ وَيَعْفُو عَنِ السَّيِّئَاتِ وَيَعْلَمُ مَا تَفْعَلُونَ
তিনিই তাঁর বান্দাদের তওবা কবুল করেন এবং পাপরাশী ক্ষমা করেন, আর তোমরা যা কর তিনি তা জানেন।” (সূরা শূরাঃ ২৫)
আল্লাহ্ পাক আরো এরশাদ করেনঃ
وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَا الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
“হে মুমিন সমপ্রদায় তোমরা সবাই আল্লাহর নিকট তওবা কর, যাতে তোমরা সফল হতে পার।” (সূরা নূরঃ ৩১)
ভ্রমন করুন, এবং দেখুন দুনিয়ার অবস্থা, আল্লাহর সৃষ্টিকে অবলোকন করুন, এর সামনে আপনার আমার দুঃখ-কষ্ট কতই না ক্ষুদ্র। আল্লাহপাক বলেন,
قُلْ سِيرُواْ فِي الأَرْضِ ثُمَّ انظُرُواْ كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُكَذِّبِينَ তোমরা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ কর, অতপর দেখ, মিথ্যারোপ কারীদের পরিণাম কি হয়েছে? (সুরা আল আন’আম, আয়াত ১১) Say (O Muhammad SAW): ”Travel in the land and see what was the end of those who rejected truth.”
انْفِرُواْ خِفَافًا وَثِقَالاً وَجَاهِدُواْ بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنفُسِكُمْ فِي سَبِيلِ اللّهِ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ তোমরা বের হয়ে পড় স্বল্প বা প্রচুর সরঞ্জামের সাথে এবং জেহাদ কর আল্লাহর পথে নিজেদের মাল ও জান দিয়ে, এটি তোমাদের জন্যে অতি উত্তম, যদি তোমরা বুঝতে পার। (সুরা তাওবা, আয়াত ৪১) March forth, whether you are light (being healthy, young and wealthy) or heavy (being ill, old and poor), strive hard with your wealth and your lives in the Cause of Allâh. This is better for you, if you but knew.
,
প্রতিটি কাজের পরিনাম আল্লাহ স্থির করে রেখেছেন।কাজেই মুমিনের চিন্তিত হবার কোনই কারণ নেই।
وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ وَمَن يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ إِنَّ اللَّهَ بَالِغُ أَمْرِهِ قَدْ جَعَلَ اللَّهُ لِكُلِّ شَيْءٍ قَدْرًا এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিযিক দেবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট। আল্লাহ তার কাজ পূর্ণ করবেন। আল্লাহ সবকিছুর জন্যে একটি পরিমাণ স্থির করে রেখেছেন। (সুরা আত তালাক্ব, আয়াত ৩) And He will provide him from (sources) he never could imagine. And whosoever puts his trust in Allâh, then He will suffice him. Verily, Allâh will accomplish his purpose. Indeed Allâh has set a measure for all things.
জান্নাতের কথা স্মরণ করুন। জান্নাতের অনন্ত সময়ের তুলনায় এ পৃথিবী কিছুক্ষণ সময় মাত্র। মুমিন তো বটেই দুনিয়ার সকল প্রানীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতে হবে। সেই অনন্ত সময়ের জন্যে জান্নাতের কথা স্মরণ করুন। আখেরাতের তুলনায় দুনিয়াবী জীবন মুমিনের কাছে কিছুই নয়।
মহান রাব্বুল আলামিন বলেন,
سَلاَمٌ عَلَيْكُم بِمَا صَبَرْتُمْ فَنِعْمَ عُقْبَى الدَّارِ তোমাদের সবরের কারণে তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। আর তোমাদের এ পরিণাম-গৃহ কতই না চমৎকার। (সুরা রা’আদ, আয়াত ২৪) ”Salâmun ’Alaikum (peace be upon you) for that you persevered in patience! Excellent indeed is the final home!”
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ مَا لَكُمْ إِذَا قِيلَ لَكُمُ انفِرُواْ فِي سَبِيلِ اللّهِ اثَّاقَلْتُمْ إِلَى الأَرْضِ أَرَضِيتُم بِالْحَيَاةِ الدُّنْيَا مِنَ الآخِرَةِ فَمَا مَتَاعُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فِي الآخِرَةِ إِلاَّ قَلِيلٌ হে ঈমানদারগণ, তোমাদের কি হল, যখন আল্লাহর পথে বের হবার জন্যে তোমাদের বলা হয়, তখন মাটি জড়িয়ে ধর, তোমরা কি আখেরাতের পরিবর্তে দুনিয়ার জীবনে পরিতুষ্ট হয়ে গেলে? অথচ আখেরাতের তুলনায় দুনিয়ার জীবনের উপকরণ অতি অল্প। (সুরা আত তাওবা, আয়াত ৩৮) O you who believe! What is the matter with you, that when you are asked to march forth in the Cause of Allâh (i.e. Jihâd) you cling heavily to the earth? Are you pleased with the life of this world rather than the Hereafter? But little is the enjoyment of the life of this world as compared with the Hereafter.
মুমিন হলে নিরাশ হবেন না:
وَلاَ تَهِنُوا وَلاَ تَحْزَنُوا وَأَنتُمُ الأَعْلَوْنَ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ তোমরা নিরাশ হয়ো না এবং দুঃখ করো না। যদি তোমরা মুমিন হও তবে, তোমরাই জয়ী হবে। সুরা আল ইমরান, আয়াত ১৩৯) So do not become weak (against your enemy), nor be sad, and you will be superior (in victory) if you are indeed (true) believers.
দুঃখে ধৈর্য্য ধারন করা মুমিনের লক্ষণ:
وَاصْبِرْ وَمَا صَبْرُكَ إِلاَّ بِاللّهِ وَلاَ تَحْزَنْ عَلَيْهِمْ وَلاَ تَكُ فِي ضَيْقٍ مِّمَّا يَمْكُرُونَ আপনি সবর করবেন। আপনার সবর আল্লাহর জন্য ব্যতীত নয়, তাদের জন্যে দুঃখ করবেন না এবং তাদের চক্রান্তের কারণে মন ছোট করবেন না। (সুরা আন নাহল, আয়াত ১২৭) And endure you patiently (O Muhammad SAW), your patience is not but from Allâh. And grieve not over them (polytheists and pagans, etc.), and be not distressed because of what they plot.
قُلْنَا اهْبِطُواْ مِنْهَا جَمِيعاً فَإِمَّا يَأْتِيَنَّكُم مِّنِّي هُدًى فَمَن تَبِعَ هُدَايَ فَلاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ (38 আমি হুকুম করলাম, তোমরা সবাই নীচে নেমে যাও। অতঃপর যদি তোমাদের নিকট আমার পক্ষ থেকে কোন হেদায়েত পৌঁছে, তবে যে ব্যক্তি আমার সে হেদায়েত অনুসারে চলবে, তার উপর না কোন ভয় আসবে, না (কোন কারণে) তারা চিন্তাগ্রস্ত ও সন্তপ্ত হবে। (সুরা বাকারা, আয়াত ৩৮) We said: ”Get down all of you from this place (the Paradise), then whenever there comes to you Guidance from Me, and whoever follows My Guidance, there shall be no fear on them, nor shall they grieve.
আল্লাহ মানুষের অন্তর পরীক্ষা করেন। ধৈর্য্য ধারন করায় আল্লাহপাক মুমিনদের উপর সন্তষ্ট হন। পরিনামে প্রশান্তি নাযিল করেন এবং বিজয় দান করেন।আল্লাহপাক বলেন,
لَقَدْ رَضِيَ اللَّهُ عَنِ الْمُؤْمِنِينَ إِذْ يُبَايِعُونَكَ تَحْتَ الشَّجَرَةِ فَعَلِمَ مَا فِي قُلُوبِهِمْ فَأَنزَلَ السَّكِينَةَ عَلَيْهِمْ وَأَثَابَهُمْ فَتْحًا قَرِيبًا আল্লাহ মুমিনদের প্রতি সন্তুষ্ট হলেন, যখন তারা বৃক্ষের নীচে আপনার কাছে শপথ করল। আল্লাহ অবগত ছিলেন যা তাদের অন্তরে ছিল। অতঃপর তিনি তাদের প্রতি প্রশান্তি নাযিল করলেন এবং তাদেরকে আসন্ন বিজয় পুরস্কার দিলেন। (সুরা আল ফাতাহ, আয়াত ১৮) Indeed, Allâh was pleased with the believers when they gave their Bai’â (pledge) to you (O Muhammad SAW) under the tree, He knew what was in their hearts, and He sent down As-Sakinah (calmness and tranquillity) upon them, and He rewarded them with a near victory,
মানুষকে দুঃখ কষ্ট দিয়েই সৃষ্টি করা হয়েছে। এ জীবনে দুঃখ কষ্ট থাকবেই।
لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنسَانَ فِي كَبَدٍ নিশ্চয় আমি মানুষকে শ্রমনির্ভররূপে তথা কষ্ট-ক্লেশের মধ্যে সৃষ্টি করেছি। (সুরা আল বালাদ, আয়াত ৪) Verily, We have created man in toil.
আল্লাহ তা'আলা যেমন ইরশাদ করেন,
وَنَبْلُوكُمْ بِالشَّرِّ وَالْخَيْرِ فِتْنَةً وَإِلَيْنَا تُرْجَعُونَ
'আর ভালো ও মন্দ দ্বারা আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করে থাকি এবং আমার কাছেই তোমাদেরকে ফিরে আসতে হবে। (সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত : ৩৫)
অন্যত্র ইরশাদ করেন,
إِنْ يَمْسَسْكُمْ قَرْحٌ فَقَدْ مَسَّ الْقَوْمَ قَرْحٌ مِثْلُهُ وَتِلْكَ الْأَيَّامُ نُدَاوِلُهَا بَيْنَ النَّاسِ وَلِيَعْلَمَ اللَّهُ الَّذِينَ آَمَنُوا وَيَتَّخِذَ مِنْكُمْ شُهَدَاءَ وَاللَّهُ لَا يُحِبُّ الظَّالِمِينَ
'যদি তোমাদেরকে কোনো আঘাত স্পর্শ করে থাকে তবে তার অনুরূপ আঘাত উক্ত কওমকেও স্পর্শ করেছে। আর এইসব দিন আমি মানুষের মধ্যে পালাক্রমে আবর্তন করি এবং যাতে আল্লাহ ঈমানদারদেরকে জেনে নেন এবং তোমাদের মধ্য থেকে শহীদদেরকে গ্রহণ করেন। আর আল্লাহ যালিমদেরকে ভালোবাসেন না।‘ সূরা আলে-ইমরান, আয়াত : ১৪০।
আল্লাহ তা'আলা আরও সুনির্দষ্ট করে বলেন,
إِنَّمَا أَمْوَالُكُمْ وَأَوْلَادُكُمْ فِتْنَةٌ وَاللَّهُ عِنْدَهُ أَجْرٌ عَظِيمٌ
'তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তো কেবল পরীক্ষা বিশেষ। আর আল্লাহর নিকটই মহান প্রতিদান।' সূরা আত-তাগাবুন, আয়াত : ১৫।
নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করুন। যা হারিয়েছেন, তার জন্যে দুঃখিত হবেন না। আর যা পেয়েছেন তার জন্যে উল্লাসিত হবারও কিছু নেই।মহান রাব্বুল আলামিন বলেন,
لِكَيْلَا تَأْسَوْا عَلَى مَا فَاتَكُمْ وَلَا تَفْرَحُوا بِمَا آتَاكُمْ وَاللَّهُ لَا يُحِبُّ كُلَّ مُخْتَالٍ فَخُورٍ এটা এজন্যে বলা হয়, যাতে তোমরা যা হারাও তজ্জন্যে দুঃখিত না হও এবং তিনি তোমাদেরকে যা দিয়েছেন, তজ্জন্যে উল্লসিত না হও। আল্লাহ কোন উদ্ধত অহংকারীকে পছন্দ করেন না, (সুরা আল হাদীদ, আয়াত ২৩) In order that you may not be sad over matters that you fail to get, nor rejoice because of that which has been given to you. And Allâh likes not prideful boasters.
কঠিন সময়ে আল্লাহর সাহায্য আসবেই। আল-কোরআনে আল্লাহপাক তেমন ঘটনার উল্লেখ করেছেন। কাজেই মুমিন হয়ে থাকলে দুশ্চিন্তা পরিহার করুন।
إِلاَّ تَنصُرُوهُ فَقَدْ نَصَرَهُ اللّهُ إِذْ أَخْرَجَهُ الَّذِينَ كَفَرُواْ ثَانِيَ اثْنَيْنِ إِذْ هُمَا فِي الْغَارِ إِذْ يَقُولُ لِصَاحِبِهِ لاَ تَحْزَنْ إِنَّ اللّهَ مَعَنَا فَأَنزَلَ اللّهُ سَكِينَتَهُ عَلَيْهِ وَأَيَّدَهُ بِجُنُودٍ لَّمْ تَرَوْهَا وَجَعَلَ كَلِمَةَ الَّذِينَ كَفَرُواْ السُّفْلَى وَكَلِمَةُ اللّهِ هِيَ الْعُلْيَا وَاللّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌ যদি তোমরা তাকে (রসূলকে) সাহায্য না কর, তবে মনে রেখো, আল্লাহ তার সাহায্য করেছিলেন, যখন তাকে কাফেররা বহিষ্কার করেছিল, তিনি ছিলেন দু’জনের একজন, যখন তারা গুহার মধ্যে ছিলেন। তখন তিনি আপন সঙ্গীকে বললেন বিষন্ন হয়ো না, আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন। অতঃপর আল্লাহ তার প্রতি স্বীয় সান্তনা নাযিল করলেন এবং তাঁর সাহায্যে এমন বাহিনী পাঠালেন, যা তোমরা দেখনি। বস্তুতঃ আল্লাহ কাফেরদের মাথা নীচু করে দিলেন আর আল্লাহর কথাই সদা সমুন্নত এবং আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (সুরা তাওবা, আয়াত ৪০)
If you help him (Muhammad SAW) not (it does not matter), for Allâh did indeed help him when the disbelievers drove him out, the second of two, when they (Muhammad SAW and Abu Bakr ÑÖì ) were in the cave, and he (SAW) said to his companion (Abu Bakr ÑÖì ): ”Be not sad (or afraid), surely Allâh is with us.” Then Allâh sent down His Sakînah (calmness, tranquillity, peace, etc.) upon him, and strengthened him with forces (angels) which you saw not, and made the word of those who disbelieved the lowermost, while it was the Word of Allâh that became the uppermost, and Allâh is All-Mighty, All-Wise.
বিপদে ধৈর্য্য ধারন করার কথা বারংবার বলা হয়েছে। অন্যের দেয়া কষ্ট থেকে আল্লাহ তার মুমিন বান্দাকে অবশ্যই রক্ষা করেন। মুমিনের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র তিনি নস্যাত করে দেন।
وَاصْبِرْ وَمَا صَبْرُكَ إِلاَّ بِاللّهِ وَلاَ تَحْزَنْ عَلَيْهِمْ وَلاَ تَكُ فِي ضَيْقٍ مِّمَّا يَمْكُرُونَ আপনি সবর করবেন। আপনার সবর আল্লাহর জন্য ব্যতীত নয়, তাদের জন্যে দুঃখ করবেন না এবং তাদের চক্রান্তের কারণে মন ছোট করবেন না। (সুরা আন নাহল, আয়াত ১২৭) And endure you patiently (O Muhammad SAW), your patience is not but from Allâh. And grieve not over them (polytheists and pagans, etc.), and be not distressed because of what they plot.
إِنَّ اللّهَ مَعَ الَّذِينَ اتَّقَواْ وَّالَّذِينَ هُم مُّحْسِنُونَ নিশ্চয় আল্লাহ তাদের সঙ্গে আছেন, যারা পরহেযগার এবং যারা সৎকর্ম করে। (সুরা আন নাহল, আয়াত ১২৮) Truly, Allâh is with those who fear Him (keep their duty unto Him), and those who are Muhsinûn (good-doers, - see the footnote of V.9:120).
ঈমান আনলেই ক্ষমা আছে।
وَإِنِّي لَغَفَّارٌ لِّمَن تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ صَالِحًا ثُمَّ اهْتَدَى আর যে তওবা করে, ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে অতঃপর সৎপথে অটল থাকে, আমি তার প্রতি অবশ্যই ক্ষমাশীল। সুরা ত্বাহা, আয়াত ৮২)
And verily, I am indeed Forgiving to him who repents, believes (in My Oneness, and associates none in worship with Me) and does righteous good deeds, and then remains constant in doing them, (till his death).
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿ وَمَن يُطِعِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ فَقَدۡ فَازَ فَوۡزًا عَظِيمًا ﴾ [الأحزاب:
“আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে, তারা অবশ্যই মহাসাফল্য অর্জন করবে। — (সূরা আল-আহযাব: ৭১)
বিপদ আপদ ভাগ্যানুসারেই আসে। চিন্তিত হবার কারণ নেই।
مَا أَصَابَ مِن مُّصِيبَةٍ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي أَنفُسِكُمْ إِلَّا فِي كِتَابٍ مِّن قَبْلِ أَن نَّبْرَأَهَا إِنَّ ذَلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرٌ পৃথিবীতে এবং ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর কোন বিপদ আসে না; কিন্তু তা জগত সৃষ্টির পূর্বেই কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে। নিশ্চয় এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ। (সুরা আল হাদীদ, আয়াত ২২) No calamity befalls on the earth or in yourselves but is inscribed in the Book of Decrees (Al-Lauh Al-Mahfûz), before We bring it into existence. Verily, that is easy for Allâh.
وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ بِشَيْءٍ مِّنَ الْخَوفْ وَالْجُوعِ وَنَقْصٍ مِّنَ الأَمَوَالِ وَالأنفُسِ وَالثَّمَرَاتِ وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ অবশ্যই আমি তোমাদিগকে পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও সবরকারীদের। (সুরা বাকারা, আয়াত ১৫৫) And certainly, We shall test you with something of fear, hunger, loss of wealth, lives and fruits, but give glad tidings to As-Sâbirin (the patient ones, etc.).
الَّذِينَ إِذَا أَصَابَتْهُم مُّصِيبَةٌ قَالُواْ إِنَّا لِلّهِ وَإِنَّـا إِلَيْهِ رَاجِعونَ যখন তারা বিপদে পতিত হয়, তখন বলে, নিশ্চয় আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তাঁরই সান্নিধ্যে ফিরে যাবো। (সুরা বাকারা, আয়াত ১৫৬) Who, when afflicted with calamity, say: ”Truly! To Allâh we belong and truly, to Him we shall return.”
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اسْتَعِينُواْ بِالصَّبْرِ وَالصَّلاَةِ إِنَّ اللّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ
হে মুমিন গন! তোমরা ধৈর্য্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চিতই আল্লাহ ধৈর্য্যশীলদের সাথে রয়েছেন। (সুরা বাকারা, আয়াত ১৫৩) O you who believe! Seek help in patience and As-Salât (the prayer). Truly! Allâh is with As-Sâbirin (the patient ones, etc.).
যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার কাজ সহজ করে দেন। তার দুঃখ-কষ্ট লাঘব করে দেন।
وَاللَّائِي يَئِسْنَ مِنَ الْمَحِيضِ مِن نِّسَائِكُمْ إِنِ ارْتَبْتُمْ فَعِدَّتُهُنَّ ثَلَاثَةُ أَشْهُرٍ وَاللَّائِي لَمْ يَحِضْنَ وَأُوْلَاتُ الْأَحْمَالِ أَجَلُهُنَّ أَن يَضَعْنَ حَمْلَهُنَّ وَمَن يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَل لَّهُ مِنْ أَمْرِهِ يُسْرًا (… যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার কাজ সহজ করে দেন। (সুরা আত তালাক্ব, আয়াত ৪)….. and whosoever fears Allâh and keeps his duty to Him, He will make his matter easy for him.
فَاسْتَجَبْنَا لَهُ وَنَجَّيْنَاهُ مِنَ الْغَمِّ وَكَذَلِكَ نُنجِي الْمُؤْمِنِينَ অতঃপর আমি তাঁর আহবানে সাড়া দিলাম এবং তাঁকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিলাম। আমি এমনি ভাবে বিশ্ববাসীদেরকে মুক্তি দিয়ে থাকি। (সুরা আল আম্বিয়া, আয়াত ৮৮) So We answered his call, and delivered him from the distress. And thus We do deliver the believers (who believe in the Oneness of Allâh, abstain from evil and work righteousness).
শত্রুরা সাময়িকভাবে মুমিনের কষ্টের কারণ হয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মুমিনের কোন ক্ষতি তারা করতে পারে না।
لَن يَضُرُّوكُمْ إِلاَّ أَذًى وَإِن يُقَاتِلُوكُمْ يُوَلُّوكُمُ الأَدُبَارَ ثُمَّ لاَ يُنصَرُونَ যৎসামান্য কষ্ট দেয়া ছাড়া তারা তোমাদের কোনই ক্ষতি করতে পারবে না। আর যদি তারা তোমাদের সাথে লড়াই করে, তাহলে তারা পশ্চাদপসরণ করবে। অতঃপর তাদের সাহায্য করা হবে না। (সুরা আল ইমরান, আয়াত ১১১) They will do you no harm, barring a trifling annoyance; and if they fight against you, they will show you their backs, and they will not be helped.
وَاصْبِرْ وَمَا صَبْرُكَ إِلاَّ بِاللّهِ وَلاَ تَحْزَنْ عَلَيْهِمْ وَلاَ تَكُ فِي ضَيْقٍ مِّمَّا يَمْكُرُونَ আপনি সবর করবেন। আপনার সবর আল্লাহর জন্য ব্যতীত নয়, তাদের জন্যে দুঃখ করবেন না এবং তাদের চক্রান্তের কারণে মন ছোট করবেন না। (সুরা আন নাহল, আয়াত ১২৭) And endure you patiently (O Muhammad SAW), your patience is not but from Allâh. And grieve not over them (polytheists and pagans, etc.), and be not distressed because of what they plot.
বান্দার সব কিছুই আল্লাহর দৃষ্টিতে রয়েছে। শত্রুরা যত চক্রান্তই করুক, আল্লাহর বান্দার ক্ষতি করতে তারা সক্ষম হবে না।
فَسَتَذْكُرُونَ مَا أَقُولُ لَكُمْ وَأُفَوِّضُ أَمْرِي إِلَى اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ بَصِيرٌ بِالْعِبَادِ আমি তোমাদেরকে যা বলছি, তোমরা একদিন তা স্মরণ করবে। আমি আমার ব্যাপার আল্লাহর কাছে সমর্পণ করছি। নিশ্চয় বান্দারা আল্লাহর দৃষ্টিতে রয়েছে। (সুরা আল মু’মিন, আয়াত ৪৪) ”And you will remember what I am telling you, and my affair I leave it to Allâh. Verily, Allâh is the All-Seer of (His) slaves.”
فَوَقَاهُ اللَّهُ سَيِّئَاتِ مَا مَكَرُوا وَحَاقَ بِآلِ فِرْعَوْنَ سُوءُ الْعَذَابِ অতঃপর আল্লাহ তাকে তাদের চক্রান্তের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করলেন এবং ফেরাউন গোত্রকে শোচনীয় আযাব গ্রাস করল। (সুরা আল মু’মিন, আয়াত ৪৫) So Allâh saved him from the evils that they plotted (against him), while an evil torment encompassed Fir’aun’s (Pharaoh) people.
وَمَا كَانَ لِنَفْسٍ أَنْ تَمُوتَ إِلاَّ بِإِذْنِ الله كِتَابًا مُّؤَجَّلاً وَمَن يُرِدْ ثَوَابَ الدُّنْيَا نُؤْتِهِ مِنْهَا وَمَن يُرِدْ ثَوَابَ الآخِرَةِ نُؤْتِهِ مِنْهَا وَسَنَجْزِي الشَّاكِرِينَ আর আল্লাহর হুকুম ছাড়া কেউ মরতে পারে না-সেজন্য একটা সময় নির্ধারিত রয়েছে। বস্তুতঃ যে লোক দুনিয়ায় বিনিময় কামনা করবে, আমি তাকে তা দুনিয়াতেই দান করব। পক্ষান্তরে-যে লোক আখেরাতে বিনিময় কামনা করবে, তা থেকে আমি তাকে তাই দেবো। আর যারা কৃতজ্ঞ তাদেরকে আমি প্রতিদান দেবো (সুরা আল ইমরান, আয়াত ১৪৫) And no person can ever die except by Allâh’s Leave and at an appointed term. And whoever desires a reward in (this) world, We shall give him of it; and whoever desires a reward in the Hereafter, We shall give him thereof. And We shall reward the grateful.
সব কিছুর দায়িত্ব আল্লাহর
وَمَا مِن دَآبَّةٍ فِي الأَرْضِ إِلاَّ عَلَى اللّهِ رِزْقُهَا وَيَعْلَمُ مُسْتَقَرَّهَا وَمُسْتَوْدَعَهَا كُلٌّ فِي كِتَابٍ مُّبِينٍ (6 আর পৃথিবীতে কোন বিচরণশীল নেই, তবে সবার জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহ নিয়েছেন তিনি জানেন তারা কোথায় থাকে এবং কোথায় সমাপিত হয়। সবকিছুই এক সুবিন্যস্ত কিতাবে রয়েছে। (সুরা হুদ, আয়াত ৬) And no (moving) living creature is there on earth but its provision is due from Allâh. And He knows its dwelling place and its deposit (in the uterous, grave, etc.). all is in a Clear Book (Al-Lauh Al-Mahfûz - the Book of Decrees with Allâh).
কোনটা কল্যাণকর তা আল্লাহই ভাল জানেন
كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِتَالُ وَهُوَ كُرْهٌ لَّكُمْ وَعَسَى أَن تَكْرَهُواْ شَيْئًا وَهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ وَعَسَى أَن تُحِبُّواْ شَيْئًا وَهُوَ شَرٌّ لَّكُمْ وَاللّهُ يَعْلَمُ وَأَنتُمْ لاَ تَعْلَمُونَ তোমাদের উপর যুদ্ধ ফরয করা হয়েছে, অথচ তা তোমাদের কাছে অপছন্দনীয়। পক্ষান্তরে তোমাদের কাছে হয়তো কোন একটা বিষয় পছন্দসই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হয়তোবা কোন একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তোমাদের জন্যে অকল্যাণকর। বস্তুতঃ আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না। (সুরা বাকারা, আয়াত ২১৬)
Jihâd (holy fighting in Allâh’s Cause) is ordained for you (Muslims) though you dislike it, and it may be that you dislike a thing which is good for you and that you like a thing which is bad for you. Allâh knows but you do not know. يَسْأَلُونَكَ عَنِ الشَّهْرِ الْحَرَامِ قِتَالٍ فِيهِ قُلْ قِتَالٌ فِيهِ كَبِيرٌ وَصَدٌّ عَن سَبِيلِ اللّهِ وَكُفْرٌ بِهِ وَ
সাধ্যের অতীত কোন কাজ আল্লাহ কারো উপর চাপান না।
لاَ يُكَلِّفُ اللّهُ نَفْسًا إِلاَّ وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ رَبَّنَا لاَ تُؤَاخِذْنَا إِن نَّسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا رَبَّنَا وَلاَ تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلاَ تُحَمِّلْنَا مَا لاَ طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَآ أَنتَ مَوْلاَنَا فَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না, সে তাই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তাই তার উপর বর্তায় যা সে করে। হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না। হে আমাদের পালনকর্তা! এবং আমাদের উপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করো না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর অর্পণ করেছ, হে আমাদের প্রভূ! এবং আমাদের দ্বারা ঐ বোঝা বহন করিও না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নাই। আমাদের পাপ মোচন কর। আমাদেরকে ক্ষমা কর এবং আমাদের প্রতি দয়া কর। তুমিই আমাদের প্রভু। সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের কে সাহায্যে কর। (সুরা বাকারা, আয়াত ২৮৬)
Allâh burdens not a person beyond his scope. He gets reward for that (good) which he has earned, and he is punished for that (evil) which he has earned. ”Our Lord! Punish us not if we forget or fall into error, our Lord! Lay not on us a burden like that which You did lay on those before us (Jews and Christians); our Lord! Put not on us a burden greater than we have strength to bear. Pardon us and grant us Forgiveness. Have mercy on us. You are our Maulâ (Patron, Suppor-ter and Protector, etc.) and give us victory over the disbelieving people.”
قَالَ إِنَّمَا أَشْكُو بَثِّي وَحُزْنِي إِلَى اللّهِ وَأَعْلَمُ مِنَ اللّهِ مَا لاَ تَعْلَمُونَ আমি তো আমার দুঃখ ও অস্থিরতা আল্লাহর সমীপেই নিবেদন করছি এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে আমি যা জানি, তা তোমরা জান না। (সুরা ইউসুফ, আয়াত ৮৬)
He said: ”I only complain of my grief and sorrow to Allâh, and I know from Allâh that which you know not.
يَا بَنِيَّ اذْهَبُواْ فَتَحَسَّسُواْ مِن يُوسُفَ وَأَخِيهِ وَلاَ تَيْأَسُواْ مِن رَّوْحِ اللّهِ إِنَّهُ لاَ يَيْأَسُ مِن رَّوْحِ اللّهِ إِلاَّ الْقَوْمُ الْكَافِرُونَ বৎসগণ! যাও, ইউসুফ ও তার ভাইকে তালাশ কর এবং আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহর রহমত থেকে কাফের সম্প্রদায়, ব্যতীত অন্য কেউ নিরাশ হয় না। (সুরা ইউসুফ, আয়াত ৮৭)
”O my sons! Go you and enquire about Yûsuf (Joseph) and his brother, and never give up hope of Allâh’s Mercy. Certainly no one despairs of Allâh’s Mercy, except the people who disbelieve.”
মুমিনদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে সুসংবাদ আছেই, যদি তারা নিরাশ না হয়।
قَالُواْ بَشَّرْنَاكَ بِالْحَقِّ فَلاَ تَكُن مِّنَ الْقَانِطِينَ আমরা আপনাকে সত্য সু-সংবাদ দিচ্ছি! অতএব আপনি নিরাশ হবেন না। (সুরা আল হিজর, আয়াত ৫৫) They (the angels) said: ”We give you glad tidings in truth. So be not of the despairing ones.”
ادْعُواْ رَبَّكُمْ تَضَرُّعًا وَخُفْيَةً إِنَّهُ لاَ يُحِبُّ الْمُعْتَدِينَ তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাক, কাকুতি-মিনতি করে এবং সংগোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদেরকে পছন্দ করেন না। (সুরা আল আ’রাফ, আয়াত ৫৫) Invoke your Lord with humility and in secret. He likes not the aggressors.
وَلاَ تُفْسِدُواْ فِي الأَرْضِ بَعْدَ إِصْلاَحِهَا وَادْعُوهُ خَوْفًا وَطَمَعًا إِنَّ رَحْمَتَ اللّهِ قَرِيبٌ مِّنَ الْمُحْسِنِينَ পৃথিবীকে কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে অনর্থ সৃষ্টি করো না। তাঁকে আহবান কর ভয় ও আশা সহকারে। নিশ্চয় আল্লাহর করুণা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী। (সুরা আল আ’রাফ, আয়াত ৫৬) And do not do mischief on the earth, after it has been set in order, and invoke Him with fear and hope; Surely, Allâh’s Mercy is (ever) near unto the good¬doers.
মুমিনের রিজিকের মালিক আল্লাহ। তিনিই তার বান্দাকে সবকিছু দান করেন।
اللَّهُ لَطِيفٌ بِعِبَادِهِ يَرْزُقُ مَن يَشَاء وَهُوَ الْقَوِيُّ العَزِيزُ আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি দয়ালু। তিনি যাকে ইচ্ছা, রিযিক দান করেন। তিনি প্রবল, পরাক্রমশালী। (সুরা আশ শুরা, আয়াত ১৯ Allâh is very Gracious and Kind to His slaves. He gives provisions to whom He wills. And He is the All-Strong, the All-Mighty.
وَهُوَ الَّذِي يُنَزِّلُ الْغَيْثَ مِن بَعْدِ مَا قَنَطُوا وَيَنشُرُ رَحْمَتَهُ وَهُوَ الْوَلِيُّ الْحَمِيدُ মানুষ নিরাশ হয়ে যাওয়ার পরে তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং স্বীয় রহমত ছড়িয়ে দেন। তিনিই কার্যনির্বাহী, প্রশংসিত। (সুরা আশ শুরা, আয়াত ২৮)
And He it is Who sends down the rain after they have despaired, and spreads abroad His Mercy. And He is the Walî (Helper, Supporter, Protector, etc.), Worthy of all Praise.
যে কোন লড়াইয়ে বা জীবনযুদ্ধে আল্লাহই কামিয়াবদানকারী।
الَّذِينَ قَالَ لَهُمُ النَّاسُ إِنَّ النَّاسَ قَدْ جَمَعُواْ لَكُمْ فَاخْشَوْهُمْ فَزَادَهُمْ إِيمَاناً وَقَالُواْ حَسْبُنَا اللّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ যাদেরকে লোকেরা বলেছে যে, তোমাদের সাথে মোকাবেলা করার জন্য লোকেরা সমাবেশ করেছে বহু সাজ-সরঞ্জাম; তাদের ভয় কর। তখন তাদের বিশ্বাস আরও দৃঢ়তর হয়ে যায় এবং তারা বলে, আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট; কতই না চমৎকার কামিয়াবীদানকারী। (সুরা আল ইমরান, আয়াত ১৭৩) Those (i.e. believers) unto whom the people (hypocrites) said, ”Verily, the people (pagans) have gathered against you (a great army), therefore, fear them.” But it (only) increased them in Faith, and they said: ”Allâh (Alone) is Sufficient for us, and He is the Best Disposer of affairs (for us).”
মুমিনকে পরীক্ষার পর তাকে নিয়ামত দেয়া হবে। মুলতঃ কষ্টের পরই আছে সুখ।আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছে শাস্তিও দান করেন।
لِيُنفِقْ ذُو سَعَةٍ مِّن سَعَتِهِ وَمَن قُدِرَ عَلَيْهِ رِزْقُهُ فَلْيُنفِقْ مِمَّا آتَاهُ اللَّهُ لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا مَا آتَاهَا سَيَجْعَلُ اللَّهُ بَعْدَ عُسْرٍ يُسْرًا বিত্তশালী ব্যক্তি তার বিত্ত অনুযায়ী ব্যয় করবে। যে ব্যক্তি সীমিত পরিমাণে রিযিকপ্রাপ্ত, সে আল্লাহ যা দিয়েছেন, তা থেকে ব্যয় করবে। আল্লাহ যাকে যা দিয়েছেন, তদপেক্ষা বেশী ব্যয় করার আদেশ কাউকে করেন না। আল্লাহ কষ্টের পর সুখ দেবেন। (সুরা আত তালাক্ব, আয়াত ৭) Let the rich man spend according to his means, and the man whose resources are restricted, let him spend according to what Allâh has given him. Allâh puts no burden on any person beyond what He has given him. Allâh will grant after hardship, ease. وَكَأَيِّن مِّن قَرْيَةٍ عَتَتْ عَنْ أَمْرِ رَبِّهَا وَرُسُلِهِ فَحَاسَبْنَاهَا حِسَابًا شَدِيدًا وَعَذَّبْنَاهَا عَذَابًا نُّكْرًا অনেক জনপদ তাদের পালনকর্তা ও তাঁর রসূলগণের আদেশ অমান্য করেছিল, অতঃপর আমি তাদেরকে কঠোর হিসাবে ধৃত করেছিলাম এবং তাদেরকে ভীষণ শাস্তি দিয়েছিলাম। (সুরা আত তালাক্ব, আয়াত ৮)
আখেরাতের অনন্ত কালের তুলনায় এ পৃথিবী কিছুই নয়। কাজেই মুমিনের দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
قَالَ كَمْ لَبِثْتُمْ فِي الْأَرْضِ عَدَدَ سِنِينَ আল্লাহ বলবেনঃ তোমরা পৃথিবীতে কতদিন অবস্থান করলে বছরের গণনায়? (সুরা আল মুমিনুন, আয়াত ১১২) He (Allâh) will say: ”What number of years did you stay on earth?” قَالُوا لَبِثْنَا يَوْمًا أَوْ بَعْضَ يَوْمٍ فَاسْأَلْ الْعَادِّينَ তারা বলবে, আমরা একদিন অথবা দিনের কিছু অংশ অবস্থান করেছি। অতএব আপনি গণনাকারীদেরকে জিজ্ঞেস করুন। (সুরা আল মুমিনুন, আয়াত ১১৩) They will say: ”We stayed a day or part of a day. Ask of those who keep account.” قَالَ إِن لَّبِثْتُمْ إِلَّا قَلِيلًا لَّوْ أَنَّكُمْ كُنتُمْ تَعْلَمُونَ আল্লাহ বলবেনঃ তোমরা তাতে অল্পদিনই অবস্থান করেছ, যদি তোমরা জানতে? (সুরা আল মুমিনুন, আয়াত ১১৪) He (Allâh) will say: ”You stayed not but a little, if you had only known! أَفَحَسِبْتُمْ أَنَّمَا خَلَقْنَاكُمْ عَبَثًا وَأَنَّكُمْ إِلَيْنَا لَا تُرْجَعُونَ তোমরা কি ধারণা কর যে, আমি তোমাদেরকে অনর্থক সৃষ্টি করেছি এবং তোমরা আমার কাছে ফিরে আসবে না? (সুরা আল মুমিনুন, আয়াত ১১৫) ”Did you think that We had created you in play (without any purpose), and that you would not be brought back to Us?” فَتَعَالَى اللَّهُ الْمَلِكُ الْحَقُّ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيمِ
কাজেই আখেরাতের নিমিত্তে আল্লাহর স্মরনে নিমগ্ন হওয়া উচিত।
وَمَنْ أَعْرَضَ عَن ذِكْرِي فَإِنَّ لَهُ مَعِيشَةً ضَنكًا وَنَحْشُرُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَعْمَى এবং যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবিকা সংকীর্ণ হবে এবং আমি তাকে কেয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করব। (সুরা ত্বাহা, আয়াত ১২৪) ”But whosoever turns away from My Reminder (i.e. neither believes in this Qur’ân nor acts on its orders, etc.) verily, for him is a life of hardship, and We shall raise him up blind on the Day of Resurrection.”
كَأَنَّهُمْ يَوْمَ يَرَوْنَهَا لَمْ يَلْبَثُوا إِلَّا عَشِيَّةً أَوْ ضُحَاهَا যেদিন তারা একে দেখবে, সেদিন মনে হবে যেন তারা দুনিয়াতে মাত্র এক সন্ধ্যা অথবা এক সকাল অবস্থান করেছে। (সুরা আন নাযি’আত, আয়াত ৪৬) The Day they see it, (it will be) as if they had not tarried (in this world) except an afternoon or a morning.
وَمَنْ أَرَادَ الآخِرَةَ وَسَعَى لَهَا سَعْيَهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَأُولَئِكَ كَانَ سَعْيُهُم مَّشْكُورًا আর যারা পরকাল কামনা করে এবং মুমিন অবস্থায় তার জন্য যথাযথ চেষ্টা-সাধনা করে, এমন লোকদের চেষ্টা স্বীকৃত হয়ে থাকে। (সুরা বণী ইসরাইল, আয়াত ১৯) And whoever desires the Hereafter and strives for it, with the necessary effort due for it (i.e. do righteous deeds of Allâh’s Obedience) while he is a believer (in the Oneness of Allâh Islâmic Monotheism), then such are the ones whose striving shall be appreciated, thanked and rewarded (by Allâh).
بَلْ تُؤْثِرُونَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا বস্তুতঃ তোমরা পার্থিব জীবনকে অগ্রাধিকার দাও, (সুরা আল আ’লা, আয়াত ১৬) Nay, you prefer the life of this world;
وَالْآخِرَةُ خَيْرٌ وَأَبْقَى অথচ পরকালের জীবন উৎকৃষ্ট ও স্থায়ী। (সুরা আল আ’লা, আয়াত ১৭) Although the Hereafter is better and more lasting.
আল্লাহর হুকুম ছাড়া মুমিনের জন্যে কোন বিপদ আসে না-
مَا أَصَابَ مِن مُّصِيبَةٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ وَمَن يُؤْمِن بِاللَّهِ يَهْدِ قَلْبَهُ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ আল্লাহর নির্দেশ ব্যতিরেকে কোন বিপদ আসে না এবং যে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস করে, তিনি তার অন্তরকে সৎপথ প্রদর্শন করেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত। (সুরা আত তাগাবুন, আয়াত ১১) No calamity befalls, but with the Leave [i.e. decision and Qadar (Divine Preordainments)] of Allâh, and whosoever believes in Allâh, He guides his heart [to the true Faith with certainty, i.e. what has befallen him was already written for him by Allâh from the Qadar (Divine Preordainments)], and Allâh is the All-Knower of everything.
وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ بِشَيْءٍ مِّنَ الْخَوفْ وَالْجُوعِ وَنَقْصٍ مِّنَ الأَمَوَالِ وَالأنفُسِ وَالثَّمَرَاتِ وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ এবং অবশ্যই আমি তোমাদিগকে পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও সবরকারীদের। (সুরা বাকারা, আয়াত ১৫৫) And certainly, We shall test you with something of fear, hunger, loss of wealth, lives and fruits, but give glad tidings to As-Sâbirin (the patient ones, etc.).
الَّذِينَ إِذَا أَصَابَتْهُم مُّصِيبَةٌ قَالُواْ إِنَّا لِلّهِ وَإِنَّـا إِلَيْهِ رَاجِعونَ যখন তারা বিপদে পতিত হয়, তখন বলে, নিশ্চয় আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তাঁরই সান্নিধ্যে ফিরে যাবো। (সুরা বাকারা, আয়াত ১৫৬) Who, when afflicted with calamity, say: ”Truly! To Allâh we belong and truly, to Him we shall return.”
قُل لَّن يُصِيبَنَا إِلاَّ مَا كَتَبَ اللّهُ لَنَا هُوَ مَوْلاَنَا وَعَلَى اللّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُونَ আপনি বলুন, আমাদের কাছে কিছুই পৌঁছবে না, কিন্তু যা আল্লাহ আমাদের জন্য রেখেছেন; তিনি আমাদের কার্যনির্বাহক। আল্লাহর উপরই মুমিনদের ভরসা করা উচিত। (সুরা তাওবা, আয়াত ৫১) Say: ”Nothing shall ever happen to us except what Allâh has ordained for us. He is our Maulâ (Lord, Helper and Protector).” And in Allâh let the believers put their trust.
শত্রুরা অনেক হুমকি ধমকিই প্রদান করে। মুমিনের পথকে কন্টকাকীণ করে। কিন্তু মুমিনের জন্যে না আছে ভয়, না আছে চিন্তা করার কোন কারণ।
أَلا إِنَّ أَوْلِيَاء اللّهِ لاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ মনে রেখো যারা আল্লাহর বন্ধু, তাদের না কোন ভয় ভীতি আছে, না তারা চিন্তান্বিত হবে। (সুরা ইউনুস,র আয়াত ৬২) No doubt! Verily, the Auliyâ’ of Allâh [i.e. those who believe in the Oneness of Allâh and fear Allâh much (abstain from all kinds of sins and evil deeds which he has forbidden), and love Allâh much (perform all kinds of good deeds which He has ordained)], no fear shall come upon them nor shall they grieve, -
الَّذِينَ آمَنُواْ وَكَانُواْ يَتَّقُونَ যারা ঈমান এনেছে এবং ভয় করতে রয়েছে। (সুরা ইউনুস, আয়াত ৬৩) Those who believed (in the Oneness of Allâh - Islâmic Monotheism), and used to fear Allâh much (by abstaining from evil deeds and sins and by doing righteous deeds).
لَهُمُ الْبُشْرَى فِي الْحَياةِ الدُّنْيَا وَفِي الآخِرَةِ لاَ تَبْدِيلَ لِكَلِمَاتِ اللّهِ ذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ তাদের জন্য সুসংবাদ পার্থিব জীবনে ও পরকালীন জীবনে। আল্লাহর কথার কখনো হের-ফের হয় না। এটাই হল মহা সফলতা। (সুরা ইউনুস, আয়াত ৬৪) For them are glad tidings, in the life of the present world (i.e. righteous dream seen by the person himself or shown to others), and in the Hereafter. No change can there be in the Words of Allâh, this is indeed the supreme success. وَلاَ يَحْزُنكَ قَوْلُهُمْ إِنَّ الْعِزَّةَ لِلّهِ جَمِيعًا هُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ আর তাদের কথায় দুঃখ নিয়ো না। আসলে সমস্ত ক্ষমতা আল্লাহর। তিনিই শ্রবণকারী, সর্বজ্ঞ। (সুরা ইউনুস, আয়াত ৬৫) And let not their speech grieve you (O Muhammad SAW), for all power and honour belong to Allâh. He is the All-Hearer, the All-Knower.
আল্লাহর পথ অনুসরন করলে পথভ্রষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
. قَالَ اهْبِطَا مِنْهَا جَمِيعًا بَعْضُكُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّ فَإِمَّا يَأْتِيَنَّكُم مِّنِّي هُدًى فَمَنِ اتَّبَعَ هُدَايَ فَلَا يَضِلُّ وَلَا يَشْقَى তিনি বললেনঃ তোমরা উভয়েই এখান থেকে এক সঙ্গে নেমে যাও। তোমরা একে অপরের শত্রু। এরপর যদি আমার পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে হেদায়েত আসে, তখন যে আমার বর্ণিত পথ অনুসরণ করবে, সে পথভ্রষ্ঠ হবে না এবং কষ্টে পতিত হবে না। (সুরা ত্বাহা, আয়াত ১২৩) (Allâh) said:”Get you down (from the Paradise to the earth), both of you, together, some of you are an enemy to some others. Then if there comes to you guidance from Me, then whoever follows My Guidance shall neither go astray, nor fall into distress and misery.
কার কখন কি হবে তা একমাত্র আল্লাহ ব্যতীত আর কেউ জানে না।
إِنَّ اللَّهَ عِندَهُ عِلْمُ السَّاعَةِ وَيُنَزِّلُ الْغَيْثَ وَيَعْلَمُ مَا فِي الْأَرْحَامِ وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ مَّاذَا تَكْسِبُ غَدًا وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ بِأَيِّ أَرْضٍ تَمُوتُ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ নিশ্চয় আল্লাহর কাছেই কেয়ামতের জ্ঞান রয়েছে। তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং গর্ভাশয়ে যা থাকে, তিনি তা জানেন। কেউ জানে না আগামীকল্য সে কি উপার্জন করবে এবং কেউ জানে না কোন দেশে সে মৃত্যুবরণ করবে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত। (সুরা লোক্বমান, আয়াত ৩৪) Verily, Allâh! With Him (Alone) is the knowledge of the Hour, He sends down the rain, and knows that which is in the wombs. No person knows what he will earn tomorrow, and no person knows in what land he will die. Verily, Allâh is All¬Knower, All¬Aware (of things).
আল্লাহ তার বান্দাকে পরীক্ষা করেন জান, মাল সবকিছুর মাধ্যমে, তার ইচ্ছেতেই সবকিছু হয়।
وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ بِشَيْءٍ مِّنَ الْخَوفْ وَالْجُوعِ وَنَقْصٍ مِّنَ الأَمَوَالِ وَالأنفُسِ وَالثَّمَرَاتِ وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ এবং অবশ্যই আমি তোমাদিগকে পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও সবরকারীদের। (সুরা বাকারা, আয়াত ১৫৫) And certainly, We shall test you with something of fear, hunger, loss of wealth, lives and fruits, but give glad tidings to As-Sâbirin (the patient ones, etc.).
وَأَنَّهُ هُوَ أَضْحَكَ وَأَبْكَى এবং তিনিই হাসান ও কাঁদান (সুরা আন নাজম, আয়াত ৪৩) And that it is He (Allâh) Who makes (whom He wills) laugh, and makes (whom He wills) weep; وَأَنَّهُ هُوَ أَمَاتَ وَأَحْيَا এবং তিনিই মারেন ও বাঁচান, (সুরা আন নাজম, আয়াত ৪৪) And that it is He (Allâh) Who causes death and gives life;
اللَّهُ لَطِيفٌ بِعِبَادِهِ يَرْزُقُ مَن يَشَاء وَهُوَ الْقَوِيُّ العَزِيزُ আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি দয়ালু। তিনি যাকে ইচ্ছা, রিযিক দান করেন। তিনি প্রবল, পরাক্রমশালী। (সুরা আশ শুরা, আয়াত ১৯) Allâh is very Gracious and Kind to His slaves. He gives provisions to whom He wills. And He is the All-Strong, the All-Mighty.
قَالَ رَجُلاَنِ مِنَ الَّذِينَ يَخَافُونَ أَنْعَمَ اللّهُ عَلَيْهِمَا ادْخُلُواْ عَلَيْهِمُ الْبَابَ فَإِذَا دَخَلْتُمُوهُ فَإِنَّكُمْ غَالِبُونَ وَعَلَى اللّهِ فَتَوَكَّلُواْ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ খোদাভীরুদের মধ্য থেকে দু’ব্যক্তি বলল, যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছিলেনঃ তোমরা তাদের উপর আক্রমণ করে দরজায় প্রবেশ কর। অতঃপর তোমরা যখন তাতে পবেশ করবে, তখন তোমরাই জয়ী হবে। আর আল্লাহর উপর ভরসা কর যদি তোমরা বিশ্বাসী হও। (সুরা মায়িদা, আয়াত ২৩) Two men of those who feared (Allâh and) on whom Allâh had bestowed His Grace [they were íæÔÚ æ ßÇáÈ Yûsha’ (Joshua) and Kâlab (Caleb)] said: ”Assault them through the gate, for when you are in, victory will be yours, and put your trust in Allâh if you are believers indeed.”
মানুষ বড়ই অকৃতজ্ঞ। বিপদের সময় আল্লাহকে ডাকে। আল্লাহ তার ডাকে সাড়া দেন। আর বিপদ থেকে উদ্ধার হয়েই মানুষ আল্লাহকে ভুলে যায়। মুমিনের জীবনে বিপদ আপদ আসবে যাবে, কিন্তু কোন অবস্থাতেই অকৃতজ্ঞ হওয়া চলবে না।
وَإِذَا مَسَّ الإِنسَانَ الضُّرُّ دَعَانَا لِجَنبِهِ أَوْ قَاعِدًا أَوْ قَآئِمًا فَلَمَّا كَشَفْنَا عَنْهُ ضُرَّهُ مَرَّ كَأَن لَّمْ يَدْعُنَا إِلَى ضُرٍّ مَّسَّهُ كَذَلِكَ زُيِّنَ لِلْمُسْرِفِينَ مَا كَانُواْ يَعْمَلُونَ আর যখন মানুষ কষ্টের সম্মুখীন হয়, শুয়ে বসে, দাঁড়িয়ে আমাকে ডাকতে থাকে। তারপর আমি যখন তা থেকে মুক্ত করে দেই, সে কষ্ট যখন চলে যায় তখন মনে হয় কখনো কোন কষ্টেরই সম্মুখীন হয়ে যেন আমাকে ডাকেইনি। এমনিভাবে মনঃপুত হয়েছে নির্ভয় লোকদের যা তারা করেছে। (সুরা ইউনুছ, আয়াত ১২) And when harm touches man, he invokes Us, lying down on his side, or sitting or standing. But when We have removed his harm from him, he passes on his way as if he had never invoked Us for a harm that touched him! Thus it seems fair to the Musrifûn that which they used to do.
وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِي سَيَدْخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি সাড়া দেব। যারা আমার এবাদতে অহংকার করে তারা সত্বরই জাহান্নামে দাখিল হবে লাঞ্ছিত হয়ে। (সুরা আল মু’মিন, আয়াত ৬০) And your Lord said: ”Invoke Me, [i.e. believe in My Oneness (Islâmic Monotheism)] (and ask Me for anything) I will respond to your (invocation). Verily! Those who scorn My worship [i.e. do not invoke Me, and do not believe in My Oneness, (Islâmic Monotheism)] they will surely enter Hell in humiliation!”
হাদীস শরীফে বলা হয়েছে,
তোমাদের মধ্যে কেউ বিপদগ্রস্থ হলে সে বলবে, ‘নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্যে এবং তারই নিকট আমাদের প্রত্যাবর্তন। হে আল্লাহ, তোমার নিকট আমার দুঃখের যোগ্য পুরস্কার আছে; অতএব আমাকে তা থেকে মুক্ত কর এবং উত্তম কিছু দান কর।’’---তিরমিজি ও ইবনে মাযা।
আল্লাহ যার কল্যাণ কামনা করেন, তাকে বিপদে জড়িত করেন।---বুখারী।
মুমেন এমন কোন দুঃখ, যন্ত্রনা, রোগ এবং শোক ভোগ করে না বা সে সম্বন্ধে চিন্তা করে না যার জন্যে আল্লাহ তার পাপ মার্জনা না করেন।-তিরমিজি।
মুমীন ব্যধিগ্রস্থ হলে মহিমাময় আল্লাহ যখন তাকে মুক্তি দেন, তখন তা তার অতীত পাপের বিনিময় এবং ভবিষ্যতের জন্যে উপদেশ স্বরুপ হয় এবং মুনাফেক পীড়িত হয়ে আরোগ্য লাভ করলে তার তুলনা সেই উটের তল্য, যাকে তার প্রভূ বন্ধন করে রেখে পরে মুক্তি দিয়েছিল। কিন্তু সে জানতো না কেনই বা তাকে বন্ধন করা হয়েছিল এবং কেনই বা তাকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।------আবু দাউদ।
আমার প্রভূ বলেন, আমার সম্মান ও শ্রেষ্টত্বের শপথ যাকে আমি ক্ষমা করতে ইচ্ছে করি, তাকে কখনো এ পৃথিবী হতে অপসারিত করি না যে পর্যন্ত আমি দৈহিক পীড়া এবং জীবিকার কৃচ্ছতা দ্বারা তার গ্রীবাকে পাপমুক্ত না করি।----মিশকাত।
বান্দা অত্যধিক পাপাসক্ত হয় এবং এমন কোন পূণ্য থাকে না যদ্বারা তা খন্ডিত হতে পারে, আল্লাহ তখন তাকে মুক্তি দেবার উদ্দেশ্যে দুঃখ কষ্টে জড়িত করেন।----মিশকাত।
আল্লাহ বলেন, যখন তোমাদের মধ্যে কেউ বিপদগ্রস্থ হয় সে তখন তা আমার নিকট উল্লেখ করুক।----সগির।
ধন সম্পত্তির প্রাচুর্য্যই মানুষকে ধনী করে না, বরং হৃদয়ের প্রফুল্লতাই মানুষকে প্রকৃত ধনী করে।---শায়খান।
সেই ব্যক্তিই সুখী যে খোদার বাধ্য হয় এবং তার জীবিকাকে যথেষ্ট মনে করে এবং তাতেই সন্তুষ্ট থাকে।----মুসলিম।
পার্থিব বিষয়ে সংযম আত্মা ও দেহের সৌরভ বিস্তার করে এবং পার্থিব বিষয়ে মোহ দুঃখ ও বিপদ বৃদ্ধি করে।----সগির।
(উপরোক্ত হাদীস সমুহের তথ্যসুত্র: হাদীসের আলো, বাংলা একাডেমীর পক্ষে আহমদ পাবলিশিং হাউজ, পৃষ্ঠা-২৮৭-২৯০)
এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, ঈমানের দাবিদার হলে, অবশ্যই হতাশা বা নিরাশা নামের কিছু আপনার মধ্যে থাকতে পারবে না। থাকলে ঈমান থাকবে না। এটা অবশ্যই কুফরী। আল্লাহপাক আমাদের সকলকে এ মারাত্মক কুফরী থেকে বেঁচে থাকার তওফিক দান করুন।
বিপদ মুসিবতের সময় মুসলমানের করনীয়:
ইতিপূর্বেই জেনেছেন, হতাশ হওয়া মুসলমানের লক্ষণ নয়। মানুষের জীবনে বিপদ মুসিবত থাকবেই। বিপদ মুসিবত এলে কি করতে হবে তার দিক নির্দেশনা ইসলামে দেয়া আছে। আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (দঃ) এর পুরা জীবনটাই নানা চড়াই উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে কেটেছে। ধৈর্য্য এবং ত্যাগের দীপ্ত উপমা তিনি নিজে। বাল্যকালে এতিম হওয়া, স্বল্প সময়ের মধ্যে চাচা আবু তালিব ইন্তেকাল করা, এই আবু তালিবই তাকে কাফেরদের নির্যাতন থেকে বাঁচিয়েছিলেন। বিশ্বস্ত সহধর্মিনী খাদিজা মৃত্যুবরন করা, কয়েকজন ঐরশজাত ছেলে ও মেয়ে ইন্তেকাল করা, কাফেরদের নানামুখী অত্যাচার নির্যাতন, কোন বিপদই তার পথ ছাড়েনি। এরপরও তিনি চরম ধৈর্য্য ধারন করেছেন এবং আল্লাহর উপর বিশ্বাস রেখে তার মিশন চালিয়ে গেছেন।
আল্লাহপাক বলেন,
وَاسْتَعِينُواْ بِالصَّبْرِ وَالصَّلاَةِ وَإِنَّهَا لَكَبِيرَةٌ إِلاَّ عَلَى الْخَاشِعِينَ ধৈর্য্যর সাথে সাহায্য প্রার্থনা কর নামাযের মাধ্যমে। অবশ্য তা যথেষ্ট কঠিন। কিন্তু সে সমস্ত বিনয়ী লোকদের পক্ষেই তা সম্ভব। (সুরা বাকারা, আয়াত ৪৫) And seek help in patience and As-Salât (the prayer) and truly it is extremely heavy and hard except for Al-Khâshi’ûn [i.e. the true believers in Allâh - those who obey Allâh with full submission, fear much from His Punishment, and believe in His Promise (Paradise, etc.) and in His Warnings (Hell, etc.)].
وَأَطِيعُواْ اللّهَ وَالرَّسُولَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ আর তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহ ও রসূলের, যাতে তোমাদের উপর রহমত করা হয়। (সুরা আল ইমরান, আয়াত ১৩২) And obey Allâh and the Messenger (Muhammad SAW) that you may obtain mercy.
وَسَارِعُواْ إِلَى مَغْفِرَةٍ مِّن رَّبِّكُمْ وَجَنَّةٍ عَرْضُهَا السَّمَاوَاتُ وَالأَرْضُ أُعِدَّتْ لِلْمُتَّقِينَ তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা এবং জান্নাতের দিকে ছুটে যাও যার সীমানা হচ্ছে আসমান ও যমীন, যা তৈরী করা হয়েছে পরহেযগারদের জন্য। (সুরা আল ইমরান, আয়াত ১৩৩) And march forth in the way (which leads to) forgiveness from your Lord, and for Paradise as wide as are the heavens and the earth, prepared for Al-Muttaqûn (the pious - see V.2:2).
সহি বুখারীর ৬৭৫৬/ সহি মুসলিম-এর ৪৮২২ নং হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, সত্যিকারের মুমীন সর্বদা আপন প্রভূর করুণা ও রহমত কামনা করে। আর আল্লাহতালা তাদের সাথে সেরুপ ব্যবহারই করেন। এ সম্পর্কে হাদসে কুদসীতে আল্লাহপাক বলেন, ‘আমি আমার ব্যাপারে আমার বান্দার ধারনা অনুযায়ী তার সাথে ব্যবহার করি।’
মানুষের বালা মুসিবত দৃশ্যত অসহ্য কষ্টদায়ক হলেও, তা পরিণামে শেষ পর্যন্ত কল্যাণই বয়ে আনে। আল্লাহপাক ধৈর্য্যশীলদের এই মুসিবতের বদৌলতে উত্তম নিয়ামত দান করে থাকেন। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক বলেন, ‘এমন হতে পারে যে, কোন বিষয় তোমরা পছন্দ করছ না, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আবার এটাও হতে পারে যে, কোন বিষয় তোমরা পছন্দ করছ, অথচ তা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর।বস্তুত আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ১১৬)
নবী করিম (সঃ) বলেছেন, মুমীনের বিষয়টি চমৎকার, আল্লাহতালা তার জন্য (ভাল বা মন্দ) যা-ই ফয়সালা করেন, তা-ই তার জন্য কল্যাণকর হয়। (মুসনাদ-হাদসে আনাস ইবনে মালেক, হাদীস নং-২০২৮৩)
আল্লাহর নবী আরো বলেছেন, জেনে রাখো, সমস্ত মানুষ জড়ো হয়ে যদি তোমার উপকার করতে চায়, তারা কোন উপকার করতে পারবে না, তবে ততটুকু ব্যতীত যতটুকু আল্লাহ তোমার জন্য লিখে রেখেছেন। আবার তারা সকলে মিলে যদি তোমার ক্ষতি করতে চায়, তারা তোমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না, তবে ততটুকু ব্যতীত-যা আল্লাহ তোমার কপালে লিখে রেখেছেন। কলম উঠিয়ে নেয়া হয়েছে এবং কিতাব শুকিয়ে গেছে।’ (সুনানে তিরমিজী, হাদিস নং-২৪৪০)
তিনি আরো বলেন, পার্থিব জীবন ঐ পথিকের ন্যায়, যে গ্রীষ্মে রৌদ্রোজ্জ্বল তাপদগ্ধ দিনে যাত্রা আরম্ভ করল, অতঃপর দিনের ক্লান্তিময় কিছু সময় একটি গাছের নীচে বিশ্রাম নিল, এরপর ক্ষণিক পরেই তা ত্যাগ করে পুনরায় যাত্রা আরম্ভ করল।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং-২৭৪৪)
সুরা বাকারার ১৫৫নং আয়াতে বলা হয়েছে, আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব ভয়, ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফল-ফলাদির ক্ষতির মাধ্যমে। আর আপনি ধৈর্য্যশীলদের সুসংবাদ দিন। যখন তাদেরকে বিপদ আক্রান্ত করে, তখন তারা বলে, ইন্নাল্লিাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তাদের উপরই অবতীর্ণ হয় এবং তাদের রবের পক্ষ থেকে রহমত ও দয়া এবং তারাই হেদায়েতপ্রাপ্ত।
বিপদ মুসিবতের সময় গুনাহ থেকে বার বার তওবা করতে হবে। কারণ তওবা করলে আল্লাহ তালার রহমত বর্ষিত হয়। فَقُلْتُ اسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ إِنَّهُ كَانَ غَفَّارًا ﴿١٠﴾ يُرْسِلِ السَّمَاءَ عَلَيْكُم مِّدْرَارًا ﴿١١﴾وَيُمْدِدْكُم بِأَمْوَالٍ وَبَنِينَ وَيَجْعَل لَّكُمْ جَنَّاتٍ وَيَجْعَل لَّكُمْ أَنْهَارًا ﴿١٢﴾ অতঃপর বলেছিঃ তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের উপর অজস্র বৃষ্টিধারা ছেড়ে দিবেন তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি বাড়িয়ে দিবেন, তোমাদের জন্যে উদ্যান স্থাপন করবেন এবং তোমাদের জন্যে নদীনালা প্রবাহিত করবেন।( সুরা নূহ: ১০,১১,১২,)
বিষন্নতা, হতাশা আর দুঃশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে হলে-
আমরা অনেক সময় বিবেকের বিরুদ্ধে গিয়ে কিম্বা শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে নানাভাবে গুনাহ করে থাকি। পরে হয়তো অনুশোচনায় দগ্ধ হই। আবার অভাব অনটন বা নানা দুঃখকষ্টে পতিত হয়ে বা নানা অপ্রীতিকর পরিস্থিতির শিকার হয়ে হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে পড়ি। কিন্তু মুসলমানের তো আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া চলবে না। আল্লাহপাক বলেন, ‘‘ বলুন, হে আমার বান্দাগণ যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ( সুরা যুমার, আয়াত ৫৩)’’
আল্লাহর রহমত থেকে যারা নিরাশ হয় তারা আর মুসলমান থাকে না। যত বিপদ আপদ বা দুঃখ কষ্টই জীবনে আসুক না কেন, সর্বাবস্থায় আল্লাহর উপর অটুট ঈমান রাখতে হবে। আপনার জীবনে দুনিয়াতে বা আখেরাতে ভাল খারাপ যা-ই হবে, সব কিছুই আল্লাহর ইচ্ছেতে হবে। আপনার গুনাহ যত বড়ই হোক, আল্লাহর রহমতের চেয়ে নিশ্চয়ই তা বেশী নয়। মন খারাপ হলেই নামাজে দাড়িয়ে যান। হতাশা গ্রাস করতে চাইলে নামাজে দাড়িয়ে যান। বিষন্নতা দেখা দিলে কিম্বা মন খারাপ হলে নামাজে দাড়িয়ে যান। দেখুন, কেমন প্রশান্তি লাভ করছেন।
আগেই বলেছি, মুসলমান কখনো হতাশায় ভুগতে পারেন না। আর মুসলমান হতে হলে তো নামাজ অবশ্যই পড়তে হবে। নামাজ বিহীণ মুসলমান কেবল নামেই মুসলমান, প্রকৃত মুসলমান অবশ্যই নন। যে ব্যক্তি নামাজ ছেড়ে দিলো সে তখনই কাফেরদের দলভূক্ত হয়ে গেলো।
ঝড় ঝঞ্জা মুসলমানের জীবনেই বেশী আসে। আল কোরআনে বলা হয়েছে, ‘‘মানুষকে যখন দুঃখ-কষ্ট স্পর্শ করে, তখন সে আমাকে ডাকতে শুরু করে, এরপর আমি যখন তাকে আমার পক্ষ থেকে নেয়ামত দান করি, তখন সে বলে, এটা তো আমি পূর্বের জানা মতেই প্রাপ্ত হয়েছি। অথচ এটা এক পরীক্ষা, কিন্তু তাদের অধিকাংশই বোঝে না। (সুরা আল জুমার, আয়াত: ৪৯)’’
এ আয়াতের বিশদ ব্যাখ্যার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।
সবাই ভাল থাকুন। দুশ্চিন্তা মুক্ত, বিষন্নতা মুক্ত, হতাশা মুক্ত সুখী ঈমানী জীবন যাপন করুন। নিয়মিত নামাজ পড়ুন হতাশা এমনিতেই চলে যাবে। কোনমতেই ফরজ নামাজ ছেড়ে দেবেন না।
পাপ হয়ে গেলে তওবা করুন। তওবার কোন বিকল্প নেই। তওবায় পাপ মোচন হয়, বিপদ আপদ কেটে যায়।
হযরত আবু হুরায়রা (রা) বর্ণনা করেন, আমি রাসূলে আকরামকে বলতে শুনেছিঃ আল্লাহর কসম! আমি একদিনে সত্তর বারের চেয়েও বেশি তওবা করি এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই।
[বুখারী: ৮/৮৩(৬৩০৭)]
14- وعن الأَغَرِّ بنِ يسار المزنِيِّ رضي الله عنه ، قَالَ : قَالَ رَسُول الله صلى الله عليه وسلم : (( يَا أَيُّهَا النَّاسُ ، تُوبُوا إِلى اللهِ واسْتَغْفِرُوهُ ، فإنِّي أتُوبُ في اليَومِ مئةَ مَرَّةٍ ))
[رواه مسلم : مسلم 8/72 ( 2702 ) ( 41 ) و( 42 )]
হযরত আগার ইবনে ইয়াসার মুযান্নী (রা) বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ হে লোক সকল! তোমরা আল্লাহর কাছে তওবা কর এবং (গুনাহর জন্য) তাঁর কাছে ক্ষমা চাও। আমি প্রত্যহ একশো বার তওবা করি।
[মুসলিম: ৮/৭২(২৭০২), (৪১) ও (৪২)]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে জিজ্ঞেস করা হল, মানব জাতির মধ্যে কে সব চেয়ে বেশি পরীক্ষা ও বিপদাপদের সম্মুখীন হয়েছিলেন? তিনি বললেন, নবীগণ, তারপর আল্লাহর নেককার বান্দাগণ। তারপর অন্যদের মধ্যে যারা যে পরিমাণ ঈমান ও পরহেযগীতার অধিকারী তারা সে পরিমান পরীক্ষা সম্মুখীন হয়েছেন। মানুষ তার দীনদারী অনুযায়ী পরীক্ষার সম্মুখীন হয়। কেউ যদি মজবুত দ্বীনের অধিকারী হয় তবে সে বেশি পরিমান পরীক্ষার মুখোমুখি হয়। আর কারো দ্বীনদারীতে কমতি থাকলে তার বিপদাপদ কম আসে এবং পরীক্ষাও কম হয়। মুমিন বান্দা যতদিন পৃথিবীতে চলা ফেরা করে ততদিন তার উপর বিপদাপদ পতিত হতে থাকে এবং এভাবে তার আর কোন গুনাহ বাকী থাকে না।” (মুসনাদ আহমদ)
সহীহ বুখারীতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: যে মুসলিম বিপদ আপতিত হলে বলে: ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইল্লাইহি রাজিঊন, আল্লাহুম্মা আজিরনী ফী মুসীবাতী ওয়াখলুফ লাহু খাইরান মিনহা। অর্থাৎ নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য নিবেদিত এবং তার কাছেই ফিরে যাব। হে আল্লাহ, বিপদে আমাকে প্রতিদান দাও এবং এর থেকে উত্তম বিকল্প দান কর।” তাকে আল্লাহ তাকে তার বিপদে উত্তম প্রতিদান দিবেন এবং তদাপেক্ষা ভাল বিকল্প ব্যবস্থা করবেন।” (সহীহ মুসলিম, কিতাবুল জানাইয)
বিপদ, দুঃশ্চিন্তা এবং হতাশা দূর করার জন্যে আমাদের মহানবী (দঃ) যে দোয়াগুলো পড়তেন-
لا إِلَهَ إِلّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ
১) ‘লা-ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নী কুনতু মিনায্যালেমীন। (তিরমিযী)
لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ الْعَظِيمُ الْحَلِيمُ لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ رَبُّ السَّمَوَاتِ وَرَبُّ الْأَرْضِ وَرَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيمِ
২) ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লা-হুল্ আযীমুল্ হালীমু, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু রাব্বুল্ আরশিল্ আযীম, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু রাব্বুস্ সামাওয়াতি ওয়া রাব্বুল্ আরযি ওয়া রাব্বুল্ আরশিল্ কারীম।’ (বুখারী) অর্থঃ “আল্লাহ্ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই। তিনি সুমহান মহাসহিষ্ণু। আল্লাহ্ ব্যতীত সত্য কোন উপাস্য নেই। তিনি আকাশ ও যমীনের পালনকর্তা এবং সুমহান আরশের অধিপতি।”
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الْجُبْنِ وَالْبُخْلِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ غَلَبَةِ الدَّيْنِ وَقَهْرِ الرِّجَالِ
৩) আল্লাহুম্মা ইন্নী আঊযুবিকা মিনাল্ হাম্মি ওয়াল্ হুযনি ওয়া আঊযুবিকা মিনাল জুবনী ওয়াল্ বুখ্লি ওয়া আঊযুবিকা মিন গালাবাতিদ্ দায়নি ওয়া কাহর্রি রিজাল। (বুখারী) অর্থঃ “হে আল্লাহ্ আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুশ্চিন্তা ও দুর্ভাবনা থেকে, অপারগতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও কাপুরুষতা থেকে, ঋণের ভার ও মানুষের অত্যাচার থেকে।”
ياَ حَيُّ ياَ قَيُّومُ بِكَ أسْتَغِيْثُ فَأصْلِحْ لِيْ شَأنِيْ وَلاَ تَكِلْنِيْ إلَى نَفْسِيْ طَرْفَةَ عَيْنٍ
৪) উচ্চারণঃ ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুমু বিরাহমাতিকা আস্তাগীছ, ফা আসলেহ্ লী শা’নী, ওয়ালা তাকেলনী ইলা নাফসী ত্বারফাতা আইন্। (নাসাঈ) অর্থঃ হে মহান ও সকল কিছুর মালিক! তোমার কাছে আমি সাহায্য প্রর্থনা করছি, সুতরাং আমার সকল অবস্থা সংশোধন করে দাও, এবং এক পলকের জন্য হলেও আমাকে আমার নিজের উপর ছেড়ে দিও না।
মনের শক্তি ‘বিশ্বাস’
প্রত্যেক প্রাণীকে পরিচালিত করে তার মন। আর এই মন এক বিশাল শক্তির আধার। মানুষের মনকে ইতিবাচক পথে পরিচালিত করার জন্যে সারা পৃথিবী ব্যাপী মন নিয়ন্ত্রনের নানা কৌশল শেখার চেষ্টা চালাচ্ছে মানুষ যুগ যুগ ধরে। অতীতে সাধু সন্নাসীরা ধ্যানের মাধ্যমে মনকে নিয়ন্ত্রণ করে আপাত দৃষ্টিতে অসাধ্য এমন অনেক কাজ করে মানুষকে চমকে দিয়েছেন।
অটুট বিশ্বাস ছাড়া কোন কিছু অর্জন করা আসলেই সম্ভব নয়। মানুষের হাসি কান্না, সুখ দুখ সব অনুভূতিই মন থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়। মন মানুষকে যেমন ভাল বা ইতবাচক দিকে পরিচালিত করতে পারে, তেমনি নেতিবাচক দিকেও। মনের শক্তিতে বলিয়ান হয়ে মানুষ নানা অসাধ্য সাধন করে।আবার মনের শক্তি হারিয়ে পরাজয় স্বীকার করে আত্মহত্যাও করে বসে। মন আসলেই আল্লাহপাকের সৃষ্ট এক রহস্যেভরা মহাশক্তির আধার। মনকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে পারলে আমরা সরল ও সঠিক পথে থাকতে পারবো।
বিশ্বাস থেকে শক্তি পায় মন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মানুষের মনকে নিয়ন্ত্রনের নানা কৌশল প্রয়োগ হচ্ছে। আমাদের দেশেও কোয়ান্টাম মেথড, সিলভা মেথড, লীড সহ আরো বেশ কিছু মেথড প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এসব মেথডের গুরুত্বকে খাটো করে দেখার উপায় নেই। তবে এর কোনটাই জীবন ধারনের মেথড বা পদ্ধতি নয়। এ রকমটা যারা বলে তারা নিঃসন্দেহে মানুষকে কৌশলে ধোঁকা দিচ্ছেন। এগুলোকে বরং বলা যায়, মানুষের মনকে পজিটিভ করার কিছু কৌশল মাত্র। জীবন ধারনের পদ্ধতি অবশ্যই নয়। জীবন ধারনের পরিপূর্ণ পদ্ধতি হলো ইসলাম। কোরআন ও সুন্নাহর উপর অটুট বিশ্বাস থাকলে মন এমনিতেই সঠিক পথে পরিচালিত হবে। এর জন্যে বিশেষ কোন পদ্ধতির প্রয়োজন পড়ে না।
মনকে পজিটিভ পথে পরিচালিত করার কথা ইসলামই বলে। কুচিন্তা ও ভীরুতা থেকে মুক্তির কথা ইসলামেই আছে। কোরআন-সুন্নাহ মনকে নিয়ন্ত্রণ করার মহৌষধ। এরপরও মানুষ নানা ধোঁকায় পড়ে বিভ্রান্ত হয়।
তবে বড়ই বিচিত্র জিনিস এই ‘মন’। পজিটিভ থাকা সত্বেও অনেক সময় শয়তানের প্ররোচনায় মন দ্রুত নেগেটিভ পথে হাঁটা শুরু করে দেয়। যে বিশ্বাস এতোদিন তার মধ্যে শক্তি যুগিয়েছে, সেই মনই আবার সবকিছু ভেঙ্গে চুরমার করে দিতে সময় নেয় না। মনের গতি প্রকৃতি নির্ণয় করা তাই কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়।
কিন্তু এসব আমার এখনকার আলোচ্য বিষয় নয়। আলোচ্য হলো, মনের শক্তি বিশ্বাস। এই বিশ্বাস মানুষকে কিভাবে শক্তি যোগায় তার একটা বাস্তব ঘটনা শুনুন।
হাজার বছর ধরে মানুষ ৪ মিনিটে ১ মাইল দৌড়ানোর বহু চেষ্টা করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিল যে, মানুষের দৈহিক গঠনের কারনে সেটা একেবারেই অসম্ভব। মানুষের ফুসফুসের গঠন এবং হাঁড়ের কাঠামোর জন্যে মানুষ কখনোই ৪ মিনিটে ১ মাইল দৌড়াতে সক্ষম হবে না। দু’হাজার বছর কেটে গেলো এভাবেই। তারপর একদিন এলো শুভ দিন। বিশেষজ্ঞরা গবেষনা করে জানালেন, আগের ধারনা ভুল। এবার ঘটলো আরো চমকপ্রদ ঘটনা। রজার ব্যনিষ্টার নামের এক দৌড়বিদ ৪ মিনিটে ১ মাইল দৌড়ে প্রথম বিশ্ব রেকর্ড স্থাপন করলেন। এর ৬ সপ্তাহের মধ্যে জন ল্যান্ডি নামের আরেক দৌড়বিদ আরো ২ সেকেন্ড কম সময়ের মধ্যে ১ মাইল দৌড়ে রজার ব্যনিষ্টারের রেকর্ড ভেঙ্গে দিলেন। সেই শুরু। এরপর হাজারেরও বেশী দৌড়বিদ ৪ মিনিটের কম সময়ে ১ মাইল দৌড়েছেন। এতে একটা বিষয় সুষ্পষ্ট হয়েছে যে, যখন মানুষ বিশ্বাস করেছে সে পারবে না তখন পারেনি। আর যখনই বিশ্বাস করেছে সে পারবে তখন ঠিকই পেরেছে।
মানুষকে তার নিজের বিশ্বাসের শক্তি সম্পর্কে বোঝাবার জন্যে আমাদের দেশের কোয়ান্টাম মেথডে এই বিষয়টা ফোকাস করা হয়।
নেতিবাচক বা ইতিবাচক বিশ্বাসগুলো মানুষের মনে বাল্যকাল থেকেই গেঁথে যায় তথা ইনষ্টল হয়ে যায়। অনেকটা কম্পিউটারের সফটওয়ার ইনষ্টলের মতোই। বেশ কিছু নেতিবাচক সফটওয়ার আমাদের অজান্তে আমাদের অবচেতন মনেও কাজ করে। যার কারনে আমরা অহেতুক ভয়ে ভীত থাকি। কিছু কুসংস্কার ও ভীতি মনে ইনষ্টল হয়ে যাবার কারনে মন পজিটিভ কাজ করার সাহস পায় না।
আমাদের মুরব্বীদের অজ্ঞতার কারনে আমরা অনেকেই বাল্যকাল থেকেই পীর ফকির ও মাজারের অলৌকিক ও কল্পিত ক্ষমতায় বিশ্বস্ত হয়ে পড়ি। যার কারনে কোন বিপদ আপদে মাজারে বা পীর ফকিরের দরবারে নানাজাতের মানত করে থাকি। কিন্তু আমরা জানি না যে, এগুলো সরাসরি শির্ক। এসব শির্ক যারা করে তাদের পরিনাম জাহান্নাম ছাড়া আর কোথাও নয়। নানা কুসংস্কার যেমন হাঁচি দেওয়া বা খালি কলসী দেখা কিম্বা কুকুরে ডাকা অনিষ্টের লক্ষণ বলে মনে করার বিষয়গুলো বাল্যকাল থেকেই মনের মধ্যে ইনষ্টল হয়ে যায়। আর এই ভুল সফটওয়ারগুলোই আমাদেরকে সারাজীবন পরিচালিত করে ভুল পথেই। নিজের অজান্তেই আমরা ধাবিত হই জাহান্নামের পথে। ভ্রান্ত সফটওয়ারে ভ্রান্ত বিশ্বাসে জীবনটা ভ্রান্তির মধ্যেই কেটে যায়।
খেয়াল করুন, সার্কাসে জঙ্গলের দুরন্ত এবং বিশাল শক্তিসম্পন্ন একেকটা হাতিকে কিভাবে পোষ মানিয়ে ছাগল বাঁধার একটা খুঁটির সাথে বেঁধে রাখলেও সে আর পালাতে পারে না। বাচ্চা হাতিকে যখন ধরে আনা হয়, তার পায়ে শিকল দিয়ে শক্ত করে বেঁধে রাখা হয়। দুরন্ত এই বাচ্চা হাতি শিকল ছেঁড়ার জন্যে প্রানান্ত চেষ্টা করে। কিন্তু তার ছোট্ট শরীর দিয়ে এই বাচ্চা হাতিটা সে শিকল ছিড়তে পারে না। উল্টো তার পা কেটে রক্তাক্ত হয়ে যায়। সে আবার চেষ্টা করে। রক্তাক্ত পা আরো রক্তাক্ত এবং বিষাক্ত হয়ে পড়ে। শিকল ছেঁড়া তার জন্যে আরো বেশী কঠিন হয়ে যায়। এভাবে অনেক চেষ্টা করে এক সময় সে হার মানে। বন্দিত্বের এই ছয়ফুট গন্ডিকেই তার নিয়তি হিসেবে মেনে নেয়। ধীরে ধীরে এই সফটওয়ারটা তার মধ্যে ইনষ্টল হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে এই বাচ্চা হাতিটা বিশাল দেহের ও শক্তির অধিকারী হলেও ছাগল বাঁধার একটা খুঁটির সাথে তাকে বেঁধে রাখলেও সে আর তা ছিঁড়ে পালাবার সাহস করে না। পায়ে শিকলের টান পড়লেই বুঝে নেয় তার সীমানা শেষ। এমনও হয়েছে, সার্কাসে আগুন লাগায় সবাই পালিয়ে গেলেও হাতির পায়ে শিকলের টান পড়ায় সে আর পালাবার চেষ্টা করেনি। আগুনে পুড়ে মারা গেছে। অথচ নেতিবাচক সফটওয়ারটা তার মধ্যে না থাকলে সে ইচ্ছে করলেই সবকিছু তছনছ করে পালাতে পারতো। কেবল সার্কাসের হাতি নয়, মানুষ থেকে শুরু করে পৃথিবীর সমস্ত প্রাণী এরুপ ইতিবাচক বা নেতিবাচক সফটওয়ার দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। মনোবিজ্ঞানীরা নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা দ্বারা তার প্রমাণ পেয়েছেন।
খেয়াল করে থাকবেন, কিছু মুসলমান নামধারী ব্যক্তি একদিকে নামাজও পড়েন, আবার মাজার বা পীরের উপরও বিশ্বাস রাখেন। আবার নিজের কল্যানের জন্য আল্লাহর কাছে নয়, পীর ফকির এবং তাবিজ কবজের আশ্রয় নেন। বাল্যকালে এসব ভুল সফটওয়ার তার মধ্যে ইনষ্টল হওয়ার কারনে সে এমন ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছে। আল্লাহর উপর অটুট বিশ্বাস যদি তার মধ্যে ভালভাবে ইনষ্টল হতো, তাহলে পৃথিবীর কোন কিছুই তাকে টলাতে পারতো না। আমি অনেক পীর এবং আলেমকে দেখেছি যারা কোরআন হাদীসে অনেক বিশেষজ্ঞ বটে, কিন্তু বাল্যকালের শেখানো ভুলগুলো তারা শেষ বয়সে এসেও শুধরাতে পারেননি। মাথার মধ্যে ভুল সফটওয়ার ইনষ্টল থাকায় কোরআন-হাদীসের কথাগুলো ভালমত আমল করতে পারছেন না। আল্লাহকে পেতে হলে কোন পীর দরবেশের মাধ্যমের প্রয়োজন নেই। এরকম মাধ্যম খুঁজতে গেলে শির্কের মধ্যে লিপ্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যাবে। আল্লাহর উপর অটুট বিশ্বাস এবং ইতিবাচক মনোভাব ছাড়া মনকে সরল ও সঠিক পথে পরিচালিত করা সম্ভব নয়।
একটা 'সংসার'-এর গল্প
এটা সোনার বাংলাদেশ ব্লগে লিখেছিলাম ০৯ মার্চ ২০১২, রাত ০৮:১৪ টায়। দুঃখ হতাশার সাথে কিছুটা রিলেটেড বিদায় এখানে দেবার লোভটা সংবরন করতে পারলাম না।
সামান্য সামান্য বিষয় নিয়ে স্ত্রীদের সাথে যাদের ঝগড়া ফ্যাসাদ হয়, এ গল্পটা তাদের জন্যে। আপনি একজন অনেক বড় দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। প্রচুর কাজ করতে হয় আপনাকে। কিন্তু ঘরে এসে সামান্য একটা বিষয় নিয়ে স্ত্রীর ঘ্যানর ঘ্যানর আপনার মেজাজকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এ সামান্য বিষয়েই সংসারে দীর্ঘদিন অশান্তি, কাহাতক সহ্য করা যায় ?
যাক, এবার গল্পটা শুনুন।
এক ব্যবসায়ী তার ছেলেকে ব্যবসার বসানোর আগে কিছু শেখার জন্যে এক পীর (গুরু, শিক্ষক)-এর কাছে পাঠালেন। ঐ ব্যবসায়ীর যুবক পুত্র অনেক কষ্টে নদী পেরিয়ে, পাহাড় ডিঙ্গিয়ে সেই পীরের দরবারে হাজির হলো। পীরের দরবার গিয়ে সে সেখানে কোন ব্যবসায়ীকে দেখতে পেলো না। দেখলো, সেখানে অনেক সুখী লোকের সমাগম। সবাই যার যার ইচ্ছে অনুযায়ী একেক রকমের কাজে ব্যস্ত। বেশীর ভাগই আনন্দ ফুর্তিতে মশগুল। অনেক কষ্টে তিনি পীরের দেখা পেলেন। পীর সাহেব তাকে একটা ছোট্ট চামুচে দুই ফোঁটা তেল দিয়ে বললেন, এই তেল যেন পড়ে না যায়। এরপর পীর সাহেব তাকে পুরো মহল ঘুরে আসার জন্যে বললেন। ছেলেটি তা-ই করল। দুই ফোঁটা তেল সহ চামুচটা পীর সাহেবকে ফেরত দিয়ে বলল, গুরুজী আপনার কথা মত আমি পুরো মহল ঘুরে এসেছি।
পীর সাহেব সামান্য হাসলেন। বললেন, 'আমার এই মহল কয়েকশত কোটি টাকা ব্যয়ে মার্বেল পাথরে নির্মিত।এই পাথরের চমৎকারিত্বই আলাদা। এখানে যে কার্পেটগুলো রয়েছে, তা পৃথিবীর আর কোথাও নেই। এখানে আছে পৃথিবীর দামী দামী সব পেইন্টিং। বাইরের এবং ভেতরের ঝর্ণাগুলোর বৈশিষ্ট্য পৃথিবীর অন্যসব থেকে আলাদা। এসব তুমি লক্ষ্য করেছ?'
ছেলেটি বলল, ‘জ্বি না। আমি তো এসবের কিছুই খেয়াল করিনি। চামুচের দুই ফোঁটা তেলের দিকে লক্ষ্য রাখতে গিয়ে আমি সেসব দেখতে পারিনি।’
পীর সাহেব আবারও চামুচে দুই ফোঁটা তেল দিয়ে তাকে মহল দেখতে পাঠালেন। ছেলেটি এবার খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে মহলের সৌন্দর্য্য উপভোগ করলো। তার বেশ ভালই লাগলো। পুরো মহল ঘুরে এসে পীর সাহেবকে চামুচটা ফেরৎ দিয়ে বলল, হ্যা, এবার আমি ভাল করেই সবকিছু দেখেছি।
পীর সাহেব চামুচের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘সেকি, তেল কোথায়?’
ছেলেটি মহল দেখতে গিয়ে তেলের দিকে আর লক্ষ্য রাখেনি।
পীর সাহেব বললেন, তোমার কাজে আমি খুশী হইনি। তুমি প্রথমে তেলের দিকে লক্ষ্য রাখতে গিয়ে এতো সুন্দর মহলটা খেয়ালই করলে না। এখন আবার মহল দেখতে গিয়ে তেলটা ফেলে দিলে। এই দুই ফোঁটা তেল হলো তোমার সংসার। আর মহলটা হলো তোমার কাজ আর পুরো পৃথিবী। কোনটাকেই এখানে খাটো করা যাবে না। সামান্য দুই ফোঁটা হলেও তেলের দিকে লক্ষ্য যেমন রাখতে হবে, তেমনি মহলটাও ভাল করে উপভোগ করতে হবে।
পাঠক, উপরের গল্প থেকে ঈশপের গল্পের মত করে একটা উপদেশ আমরা পেতে পারি। তাহলো- সংসারের কোন ব্যাপার সামান্য হলেও, তাকে গুরুত্ব দিন। কেননা ছোট ছোট দুঃখ কষ্ট মানুষের পুরো জীবনকে বিষিয়ে তুলতে পারে।
নামাজ যেভাবে মনে প্রশান্তি আনে-
সুরা রা’দ-এর ২৮নং আয়াতে বলা হয়েছে-
الَّذِينَ آمَنُواْ وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكْرِ اللّهِ أَلاَ بِذِكْرِ اللّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ
যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর যিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর স্মরন দ্বারাই অন্তর সমূহ শান্তি পায়। Those who believe (in the Oneness of Allâh - Islâmic Monotheism), and whose hearts find rest in the remembrance of Allâh, Verily, in the remembrance of Allâh do hearts find rest.
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানীরাও এখন এই একই কথা বলছেন। ১৯৮২ সালে লন্ডনে অনুষ্ঠিত ‘ নিউ ডাইরেকশন ইন হেলথ’ শীর্ষক এক কনফারেন্স-এ প্রফেসর বেনসন দীর্ঘদিন যাবৎ বোষ্টনের ‘বেথ ইজরেল হসপিটাল’-এ হার্টের রোগীদের উপর প্রার্থনাসহ শিথিলায়ন পদ্ধতির প্রভাব বিষয়ে পরিচালিত তার গবেষনার উপর ভিত্তি করে শ্রোতাদের অবাক করে বলেন, প্রত্যেহ সকাল বিকাল (খাবারের পূর্বে)একটা শান্ত ও আরামদায়ক পরিবেশে গড়ে ২০ মিনিট করে প্রার্থনার একটা পবিত্র বানী, শব্দ বা শব্দগুচ্ছ (যেমন আল্লাহ, আল্লাহু আকবর, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ ইত্যাদি) নিঃশব্দে জপার অভ্যাস করলে তা টেনশন বা স্নায়ুবিক চাপের সময় সৃষ্ট অতিরিক্ত হরমোন (হরমন নরএড্রিনাল) কমিয়ে ফেলে। নরএড্রিনাল হচ্ছে আড্রিনাল মেডুল্লা কর্তৃক নিঃসৃত এক ধরনের হরমোন যা রক্তচাপ ও হার্টবিটের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। (তথ্যসুত্র: ঘুম অপেক্ষা প্রার্থনা শ্রেয়, প্রফেসর আবদুন নূর, লোকপ্রশাসন বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়)
সুরা বাকারায় আল্লাহপাক বলে,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اسْتَعِينُواْ بِالصَّبْرِ وَالصَّلاَةِ إِنَّ اللّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ
হে মুমিন গন! তোমরা ধৈর্য্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চিতই আল্লাহ ধৈর্য্যশীলদের সাথে রয়েছেন। (আয়াত 153)
O you who believe! Seek help in patience and As-Salât (the prayer). Truly! Allâh is with As-Sâbirin (the patient ones, etc.).
মহানবী হযরত মুহম্মদ (দঃ) যখনই কোন সংকটের মুখোমুখী হতেন, তিনি নামাজে দাড়িয়ে যেতেন ( আবু দাউদ)। তিনি বলেছেন, ‘যখন তোমরা (দুঃখ বা রাগের কারনে) উত্তেজিত হবে, তখন ওজু কর এবং দু’রাকাত নামাজ আদায় কর, এটা তোমাদের উত্তেজনা শীতল করবে এবং এতে তুমি শান্তি এবং সন্তুষ্টি পাবে’ (বোখারী ও মুসলিম)।
সুরা বাকারার ১৫২নং আয়াতে বলা হয়েছে,
فَاذْكُرُونِي أَذْكُرْكُمْ وَاشْكُرُواْ لِي وَلاَ تَكْفُرُونِ
সুতরাং তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদের স্মরণ রাখবো এবং আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর; অকৃতজ্ঞ হয়ো না। Therefore remember Me (by praying, glorifying, etc.). I will remember you, and be grateful to Me (for My countless Favours on you) and never be ungrateful to Me.
সুতরা মনে প্রশান্তি পেতে আল্রাহর শ্মরনাপন্ন হওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই।
আল্লাহ ছাড়া আর কেউই বা আর কোন পদ্ধতিই আপনার মনে প্রশান্তি আনতে পারবে না। মানুষ তো শান্তির অন্বেষায় কত কিছুই করে। চটকদার অনেক পদ্ধতির পিছু ছুটে বেড়ায়। কিন্তু প্রকৃত শান্তি খুঁজে পায় না।
সুরা বনী ইসরাইলের ৫৬ নং আয়াতে বলা হয়েছে,
قُلِ ادْعُواْ الَّذِينَ زَعَمْتُم مِّن دُونِهِ فَلاَ يَمْلِكُونَ كَشْفَ الضُّرِّ عَنكُمْ وَلاَ تَحْوِيلاً
বলুনঃ আল্লাহ ব্যতীত যাদেরকে তোমরা উপাস্য মনে কর, তাদেরকে আহবান কর। অথচ ওরা তো তোমাদের কষ্ট দুর করার ক্ষমতা রাখে না এবং তা পরিবর্তনও করতে পারে না। Say (O Muhammad SAW): ”Call unto those besides Him whom you pretend [to be gods like angels, Iesâ (Jesus), ’Uzair (Ezra), etc.]. They have neither the power to remove the adversity from you nor even to shift it from you to another person.”
আল্লাহর জিকিরেই মনে প্রশান্তি আসে।
الَّذِينَ آمَنُواْ وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكْرِ اللّهِ أَلاَ بِذِكْرِ اللّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর যিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তর সমূহ শান্তি পায়। সুরা রা’আদ, আয়াত ২৮) Those who believe (in the Oneness of Allâh - Islâmic Monotheism), and whose hearts find rest in the remembrance of Allâh, Verily, in the remembrance of Allâh do hearts find rest.
ধৈর্য্য ধারণ ও সালাত:
বিপদ আপদে আল্লাহপাক মুমিনকে ধৈর্য্য ধারন করতে বলেছেন। আর আল্লাহর সাহায্য কামনা ও সালাত আদায় করতে বলেছেন। আল্লাহপাক বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اسْتَعِينُواْ بِالصَّبْرِ وَالصَّلاَةِ إِنَّ اللّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ
হে মুমিন গন! তোমরা ধৈর্য্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চিতই আল্লাহ ধৈর্য্যশীলদের সাথে রয়েছেন। (সুরা বাকারা, আয়াত ১৫৩) O you who believe! Seek help in patience and As-Salât (the prayer). Truly! Allâh is with As-Sâbirin (the patient ones, etc.).
তিনি আরো ইরশাদ করেছেন, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا اصْبِرُوا وَصَابِرُوا وَرَابِطُوا وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
'হে মুমিনগণ, তোমরা ধৈর্য ধর ও ধৈর্যে অটল থাক এবং পাহারায় নিয়োজিত থাক। আর আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা সফল হও।'. আলে-ইমরান : ২০০।
উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন,
مَا مِنْ مُسْلِمٍ تُصِيبُهُ مُصِيبَةٌ فَيَقُولُ مَا أَمَرَهُ اللَّهُ إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ اللَّهُمَّ أْجُرْنِى فِى مُصِيبَتِى وَأَخْلِفْ لِى خَيْرًا مِنْهَا. إِلاَّ أَخْلَفَ اللَّهُ لَهُ خَيْرًا مِنْهَا. قَالَتْ فَلَمَّا مَاتَ أَبُو سَلَمَةَ قُلْتُ أَىُّ الْمُسْلِمِينَ خَيْرٌ مِنْ أَبِى سَلَمَةَ أَوَّلُ بَيْتٍ هَاجَرَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم-. ثُمَّ إِنِّى قُلْتُهَا فَأَخْلَفَ اللَّهُ لِى رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم-.
'যে ব্যক্তি কোনো বিপদে পড়ে আল্লাহ যা নির্দেশ দিয়েছেন অর্থাৎ إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ পড়বে এবং বলবে, হে আল্লাহ, আমাকে আমার বিপদের প্রতিদান দিন এবং আমাকে এর চেয়ে উত্তম কিছু দান করুন। আল্লাহ তাকে তার চেয়ে উত্তম কিছু দান করবেন।' উম্মে সালামা বলেন, আবূ সালামা মারা গেল। আমি ভাবলাম, আবূ সালামার চেয়ে উত্তম মুসলমান আর কে হতে পারে? তাঁর ঘরেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বপ্রথম হিজরত করেছেন। আমি মনে মনে এ কথা ভাবলাম আর আল্লাহ তা'আলা আমাকে স্বয়ং রাসূলুল্লাহকেই স্বামী হিসেবে দান করলেন।'মুসলিম : ২১৬৫।
আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, مَنْ يُرِدِ اللَّهُ بِهِ خَيْرًا يُصِبْ مِنْهُ.
'আল্লাহ যার ভালো চান, তাকে বিপদ দেন।( বুখারী : ৫৬৪৫; আহমদ, মুসনাদ : ৭২৩৪)
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, مَا مِنْ مُصِيبَةٍ تُصِيبُ الْمُسْلِمَ إِلاَّ كَفَّرَ اللَّهُ بِهَا عَنْهُ حَتَّى الشَّوْكَةِ يُشَاكُهَا.
'মুমিনকে যেকোনো বিপদই স্পর্শ করুক না কেন আল্লাহ তার বিনিময়ে তার গুনাহ মাফ করে দেন। এমনকি (চলতি পথে) পায়ে যে কাঁটা বিঁধে (তার বিনিময়েও গুনাহ মাফ করা হয়।)' (বুখারী : ৫৬৪০; মুসলিম : ৬৭৩০)
আবূ মুসা আশআরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, إِذَا مَرِضَ الْعَبْدُ ، أَوْ سَافَرَ كُتِبَ لَهُ مِثْلُ مَا كَانَ يَعْمَلُ مُقِيمًا صَحِيحًا.
'যখন কোনো ব্যক্তি অসুস্থ হয় অথবা সফর করে, তার জন্য সে সুস্থ্য ও ঘরে থাকতে যেরূপ নেকি কামাই করতো অনুরূপ নেকি লেখা হয়।' (বুখারী : ২৯৯৬; আহমদ, মুসনাদ : ১৯৬৯৪)
এক বুযুর্গ বলেন, لولا المصائب لوردنا يوم القيامة مفاليس
'যদি দুনিয়ার বিপদাপদ না থাকতো তাহলে আখিরাতে আমরা রিক্ত অবস্থায় উপনীত হতাম। (শায়খ মুনাজ্জিদ, ইলাজুল হুমূম)
আপনার সমস্ত দুঃখ কষ্ট দুর করে আপনার মনে প্রশান্তি আনতে পারে কেবল আল্লাহ কাছে আত্মসমর্পন ও আল্লাহর দেখানো পথে চলা । নামাজ আপনাকে পথ দেখাবে, আপনার দুঃখ কষ্ট দুর করবে, আপনার মনে আনবে প্রকৃত শান্তি।
দোয়া কবুলের শর্ত
দোয়া আমরা সবাই করি, কিন্তু ক’জন দোয়া কবুলের শর্ত মেনে চলি সেটাই বড় কথা। দোয়া কবুলের প্রধানতম শর্ত হলো, নিজেকে সম্পূর্ণ শির্ক মুক্ত করে আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে দোয়া করা। আমরা অনেকেই না জেনে কিছু শির্ক করে থাকি। বিশেষ করে সুদুর অতীতকাল থেকে এদেশের আর্থ সামাজিক পরিবেশ যেভাবে গড়ে উঠেছে, তাতে অনেক শির্ক আমাদের অজান্তেই মুসলিম সমাজে ঢুকে পড়েছে। ইতিহাসবিদদের মতে, বাংলার সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহের আমল থেকেই এদেশের মুসলমানদের মাঝে শির্ক ও বিদআতের অনুপ্রবেশ ঘটে। তিনি শ্রী চৈতন্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে অন্য ধর্মের কিছু জিনিস রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পালন করে মুসলমানদের বিভ্রান্ত করেন। পরবর্তীতে মুগল সম্রাট বাদশাহ আকবর কয়েকটি ধর্মের সংমিশ্রনে তার মনগড়া ধর্ম দীনে ইলাহী চালু করে ইসলাম ধর্মের মর্মমুলে কুঠারাঘাত করেন। সেই থেকে শুরু। পরবর্তীতে মুসলিম সমাজের অশিক্ষা কুশিক্ষা ও অজ্ঞতার সুযোগে এর শাখা-প্রশাখা আরো প্রসারিত হয়েছে।
আমরা নিয়মিত নামাজ কালাম করি, আবার তাবিজ কবজও ধারন করি। আল্লাহর সাহায্য চাই, আবার পীরের মাজারে মানতও করি। আল্লাহকে পাবার আশায় পীরের পিছে পিছে ঘুরি। আল্লাহর আইনের কথা বলি, আবার দেশের প্রচলিত আইনকে বৈধ বলে মেনে নিই। আমরা একবারও ভেবে দেখি না আমরা কি জঘন্য শির্কের মধ্যে ডুবে আছি। শির্ক মুক্ত না হলে মুমীন হওয়া যাবে না, আর মুমীন না হলে দোয়া কবুলের কোনই সম্ভাবনা নেই। শির্ক, যা আল্লাহ কক্ষনো ক্ষমা করবেন না। শির্ক এর সাথে অনুষ্ঠিত কোন সৎকাজ আল্লাহ তা‘আলা কবুল করেন না। দোয়া কবুলের প্রধানতম শত হলো শির্ক মুক্ত হওয়া।
আমাদের দেশে প্রচলিত কিছু শির্কের বিবরণ এখানে তুলে ধরা হলো।
১। আমরা অনেকেই জানি না যে, দেশে প্রচলিত মানুষের তৈরী আইনকে বৈধ মনে করে মন থেকে তা গ্রহন করা শির্কের পর্যায়ভূক্ত। যেহেতু আমাদের দেশে ইসলামী সরকার ব্যবস্থা চালু নেই, সেহেতু আল্লাহর আইন চালু করার জন্যে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আমাদেরকে প্রচেষ্টা চালাতে হবে। অর্থাৎ এর জন্যে নিজের হক আদায় করলেই আমরা নিজেরা শির্ক মুক্ত হবো। দেশে ইসলামী আইন চালু হলো কি হলো না সেটা আমার আপনার একার দায়িত্ব নয়।
২। আরেকটা জঘন্যতম শির্ক হলো, আল্লাহ ছাড়া আর কেউ রিজিকদাতা, পালনকর্তা ও রক্ষাকর্তা বলে মনে করা।
৩। মাজারে মানত করা, মাজারে কোন পশু জবাই দেয়া, মাজারের অলী আওলিয়াদের কাছে কিছু চাওয়া, তাদেরকে গায়েব মনে করা, পীর বুজুর্গ অলী আউলিয়ার উছিলায় দোয়া করা-এর সবই শির্কের পর্যায়ভূক্ত। মুসলমানদেরকে অবশ্যই এ থেকে সাবধান হতে হবে।
৪। পীর আওলিয়াকে আল্লাহর ন্যায় ভালবাসা, বরকত লাভের উছিলায় তাদের কবরে যাওয়া, তাদের কবর প্রদক্ষিণ করা, তাদেরকে মালিকুল মুলক শাহানশাহ বলে আখ্যায়িত করা, তাদের দেয়া সিদ্ধান্ত শিরোধার্য বলে গ্রহন করা, আল্লাহকে পাবার জন্যে পীর ধরা জরুরী মনে করা, পীরের শরনাপন্ন হওয়া ইত্যকার সমুদয় বিষয়ই শির্কের পর্যায়ভূক্ত। তবে কোরআন-হাদীস জানার জন্যে কোন হাক্কানী পীরের শরনাপন্ন হওয়া ভিন্ন কথা। এখানে পীর বলতে শিক্ষক বুঝাবে। আমাদের দেশে প্রচলিত তথাকথিত পীর-মুর্শিদ নয়।
৫। কোন রকম কুসংস্কারে বিশ্বাস করা, আল্লাহ ব্যতীত কোন বস্তু বা মানুষ কারো উপকার বা ক্ষতি করতে পারে বলে বিশ্বাস করা। ঝাড়ফুক, তাবিজ কবজ, পাথরের গুন, গনকে বিশ্বাস করা।
৬। কোরআন ও হাদীসের কোন আইনকে অবজ্ঞা করা, তা নিয়ে ঠাট্টা মশকরা করা, তা বে-আইনী বা ন্যায় বিচারের পরিপন্থী বলে মনে করা সরাসরি শির্ক।
৭। বিপদে আপদে আল্লাহ ব্যতীত আর কারো সাহায্য চাওয়া।
উপরোক্ত শির্ক থেকে মুক্ত হয়ে দোয়া করার তৌফিক আল্লাহ আমাদের দান করুন। মনে রাখতে হবে, জীবন বিপন্ন হলেও শির্ক করা যাবে না। শির্ককারীরা চির জাহান্নামী। শির্ক মিশ্রিত ঈমান কখনোই ঈমান হিসাবে গ্রহনযোগ্য হবে না। ছোট বা বড় সব ধরনের শির্কই ঈমানকে ধ্বংস করে দেয়। সদা সতর্ক না হলে, শির্ক অনেক সময় নিজের অজান্তেই আপনার আমার জীবনে ঢুকে পড়তে পারে। এছাড়াও দোয়া কবুলের জন্যে হালাল রোজগার, সত্যের উপর অটল থাকা, পরিবার পরিজনদের হক্ক আদয় করা, প্রতিবেশীর হক্ক আদায় করা, কাজে ফাঁকি বা গাফিলতি না করা, পিতা মাতার হক্ক আদায় করা, হালাল টাকার পোষাক পরিধান করে দোয়া করা ইত্যাদিও উল্লেখযোগ্য।
বি:দ্র: কোরআনের আয়াতসমুহ এবং বঙ্গানুবাদ অনলাইন থেকে নেয়া হয়েছে।
বিষয়: বিবিধ
৩৭৭৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন