সরল পথ-
লিখেছেন লিখেছেন আনোয়ার আলী ১১ নভেম্বর, ২০১৩, ১১:৪৭:৪২ রাত
আবহমান কাল ধরে আমাদের দেশের আরবী শিক্ষিত কতিপয় আলেম-ওলামা নামধারী ব্যক্তিরা ইসলামী জীবন ব্যবস্থার যে ব্যাখ্যা দিয়ে এসেছেন, তা এক কথায় বড়ই জটিল এবং চরম কঠিনও বটে। ইসলামকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে খুবই কঠিন একটা ধর্ম হিসাবে। কঠিন বিধি নিষেধ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত কঠিন ও রসকস বিহীন এক জীবন ব্যবস্থা হিসেবে তারা ব্যাখ্যা করে থাকেন। যেটা মানলে জীবনে আরাম আয়েশ বলে কিছুই থাকে না। চোখের সামনে ভাসতে থাকে দাঁড়ি টুপিওয়ালা খটখটে কোন এক গুরুগম্ভীর মানুষ। তাই আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ জীবনের সব কাজ শেষ করে বৃদ্ধ বয়সে ধর্মকর্ম করবেন বলে নিয়ত করে থাকেন। অনেক যুবককেই বলতে শোনা যায়, এটা কি ধর্মকর্ম করার বয়স?
আমার এই লেখাটা ঠিক তাদের জন্যে।
আল্লাহ প্রদত্ত ও মহানবী(দঃ) প্রদর্শিত ইসলামের পথ মোটেই কঠিন কোন পথ নয়। বরং সরল পথ। আল্লাহপাক নিজেই ঘোষনা করেছেন এ পখই সরল পথ। এ পথে চললে দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জাহানেই মিলবে মুক্তি।
ইসলামী পোষাক:
শরিয়ত সম্মতভাবে ছতর ঢাকাই হলো ইসলামী পোষাক। এটা আপনি যে কোন ধরনের পোষাক দিয়ে ঢাকতে পারেন। পায়জামা পাঞ্জাবী, টাই স্যুট, জুব্বা বা যে কোন পোষাকেই পারেন। এর জন্যে নির্দিষ্ট কোন পোষাক নেই। ইসলাম সার্বজনীন। আবহাওয়া অনুযায়ী পোষাক পরতে ইসলামে কোন বাধা নেই। মুসলমান হিসাবে নিজেকে পরিচয় দেয়ার জন্যে মানুষ দাঁড়ি রাখেন, টুপি পড়েন।
ধরা যাক কোন একটা কনফারেন্স চলছে। সেখানে কে ডাক্তার, কে ইঞ্জিনিয়ার, কে আইনজীবী তা এমনিতে বোঝার কোন উপায় থাকে না। কাজেই পরিচয় দেবার জন্যে প্রত্যেককে নিজ নিজ পোষাক পরতে হয়। অন্যের কাছে নিজের পরিচয় দেবার জন্যে বাইরের লেবাসটা জরুরী। দাঁড়ি টুপি দেখে সহজেই মুসলমানকে চেনা যায়। অবশ্য অমুসলিমরাও দাঁড়ি রাখেন, টুপিও পড়েন। তবে এরা সংখ্যায় অতি নগন্য। পৃথিবীতে দাঁড়ি রাখেন টুপি পড়েন এমন মানুষের মধ্যে ৭৫ শতাংশই মুসলমান। মুলতঃ পৌত্তলিকদের থেকে নিজেকে ভিন্ন করার লক্ষ্যে দাঁড়ি রাখার জন্য মহানবী (দঃ)নির্দেশ দিয়েছিলেন মর্মে সহি হাদীস থেকে জানা যায়। কারো মতে দাঁড়ি রাখা মুস্তাহাব কারো মতে সুন্নত। দাঁড়ি না রাখলে আপনি ইসলাম থেকে বেরিয়ে যাবেন এমন নয়। দাঁড়ি রাখা ফরজ বা বাধ্যতামুলক নয়, এটা বলাই বাহুল্য।
এবার আসা যাক টুপি প্রসঙ্গে। টুপি পরার ব্যাপারে কোরআন এবং হাদীসে কিছু নেই। তাই এটা পরার ব্যাপারে কোন বাধ্যবাধকতাও নেই। আগেকারদিনে কোন ব্যক্তি টুপি পড়ে থাকলে অন্যরা বুঝতো যে, ঐ ব্যক্তি মুসলমান। তারা ঐ মুসলিমের উপর বিশ্বস্ত থাকতো। তাই মুসলমানেরা টুপি পড়ে থাকতে ভালবাসতো। পবিত্র কোরআনে টুপি পড়া বা দাড়ি রাখার ব্যাপারে সরাসরি কিছু বলা হয়নি।
আল্লাহর কাছে নিজের পরিচয় দেবার জন্যে দাঁড়ি টুপির প্রয়োজন পড়ে না। আল্লাহপাক অন্তর্যামী। দাঁড়ি-টুপির প্রয়োজন পড়ে পৃথিবীর মানুষের কাছে নিজের পরিচয় তুলে ধরার জন্যে।
নামাজ আদায় করুন খুবই কম সময়ে:
ঈমান আনার পর মুসলমানের প্রথম কাজ হলো নামাজ আদায় করা। মুসলমান আর কাফের-এর মাঝে পার্থক্য হলো নামাজ। এই নামাজই হলো মুসলমানের প্রধানতম এবাদত। নামাজের প্রতিটি উক্তিই এবাদত এবং প্রার্থনা। নামাজ আদায় মোটেই কঠিন কিছু নয়। আপনার যদি সময় না থাকে তাহলে কেবল ফরজ নামাজই আদায় করুন। কেবল ফরজ নামাজ আদায় করতে কয় মিনিট সময় লাগে বলুন তো? সালাম ফেরানোর সাথে সাথেই বেরিয়ে যান যার যার কাজে। ফরজ নামাজ সারাদিনে কয় রাকাত একটু হিসাব করে দেখুন তো! ফজরে দুই, জোহরে চার, আছরে চার, মাগরিবে তিন, এশায় চার রাকাত মাত্র। মুসলমান হতে হলে কোনভাবেই ফরজ নামাজ ছেড়ে দেয়া যাবে না। যেভাবেই পারুন, ফরজটুকু আদায় করুন। এর জন্যে কোন অজুহাত সৃষ্টি করবেন না। কেননা যতকিছুই ভেবে থাকুন না কেন, আজই হতে পারে আপনার জীবনের শেষ দিন। কি জবাব দেবেন আল্লাহর দরবারে?
(চলবে)
বিষয়: বিবিধ
১৭৯৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন