বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক ৫ খাবার
লিখেছেন লিখেছেন বিন গণি ০১ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৭:৫১:৫৭ সন্ধ্যা
মানুষ বেঁচে থাকার জন্য খাবার খায়। কিন্তু সেই খাবারই মাঝে মাঝে জীবননাশের কারন হয়ে দাড়ায়। সুস্বাদু এমন অনেক খাবার আছে যা অনেকেই নিয়মিত খেয়ে থাকেন কিন্তু তা ভয়ঙ্কর। তার কয়েকটি আজ জেনে নেয়া যাক-
১. ঝিনুক: পশ্চিমা দেশগুলোতে ঝিনুক অনেক সুস্বাদু খাদ্য হিসাবে পরিচিত। কিন্তু স্বাদের পাশাপাশি ঝিনুক খাদ্য হিসেবে বিপদজনকের তালিকায় প্রথম স্থানে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মতে কাঁচা ঝিনুক খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। কারণ এতে বিদ্যমান নরোভাইরাস ও ভাইব্রিও নামের দুটি ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করে গ্যাসট্রনটেরিটিস ও কলেরায় আক্রান্ত করে। এছাড়াও চামড়ায় ক্ষত, পচনশীলতা ও মারাত্মক সেপটিসিমিয়্যার সৃষ্টি করে।
২. আকী: এটা বুটের একটি প্রজাতি। দেখতে নাশপাতির মত। অত্যন্ত সুস্বাদু একটি ফল হিসেবে আকী পুরো বিশ্বে পরিচিত। কিন্তু এই ফলটিও হতে পারে মৃত্যুর কারণ, যদি না একে সঠিক উপায়ে খাওয়া হয়। কাঁচা কিংবা আধপাকা আকী ফলে একটি কামড় আপনার মৃত্যুর কারণ হতে পারে। আকী ফলের বিষাক্ত কালো বিচি বমি ও হৃদরোগের কারণ হয়ে দাড়ায়। ফলটি না পাকা পর্যন্ত পুরো ফলে এই বিষ ছড়িয়ে থাকে। পুরোপুরি পেকে টুকটুকে লাল বর্ণ ধারণ করলে ফলের ভেতরের স্পঞ্জি মাংসল অংশ বিষাক্ত বিচি থেকে আপনাআপনি ছেড়ে আসে ও খাওয়ার উপযোগী হয়। জামাইকার জাতীয় খাবার ‘ভয়িলা’ আকী ফল দিয়ে তৈরি। একটি পরিপূর্ণ পাকা ফলের মাংসল অংশ সিদ্ধ করে নোনতা মাছের সাথে পরিবেশন করা হয় এই আকী ফলটি।
৩. সান্নাকজি: স্বাদের দিক থেকে অসাধারণ হলেও কোরিয়ান যে খাবারটি বিপজ্জনক খাদ্য হিসেবে নাম লিখিয়েছে সেটি বাচ্চা অক্টোপাস দিয়ে তৈরি। ভয়ংকর ব্যাপার হচ্ছে জীবিত অবস্থায় এই অক্টোপাসগুলো খাওয়া হয়। বিপদজনক এই খাবারটি খাওয়ার সময় সামান্য অসাবধানতায় মারা যেতে পারেন যে কেউ। জীবিত অক্টোপাসের বাচ্চা থেকে এদের শুঁড় (কর্ষিকা) কেটে নেয়া হয় এবং তিল ও তিলের তেলের সাথে মিশিয়ে পরিবেশন করা হয়। খাবার সময় একটু অসাবধানতায় শুঁড়ের স্যাকসন কাপ জোকের মতো গলার ভেতরে আটকে গিয়ে শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যে কেউ মারা যেতে পারে। বলা হয় এটি মুখের ভেতর নিয়ে অন্তত ১০০ বার চিবিয়ে তারপর গিলে ফেলা ভালো। অন্যথায় মুহূর্তে ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে খাদকের জীবন।
৪. টুনা মাছ: টুনা মাছ ব্যাপকভাবে সমাদৃত এর স্বাদের জন্য। টুনা মাছ আমাদের দেশের বাজারে দেখা যায় না। কিন্তু বাজারে ক্যানে করে টুনা মাছ পাওয়া যায়। অনেকে স্যান্ডউইচ কিংবা খাবারে ওয়েস্টার্ন স্বাদ আনতে টিনজাত টুনা মাছ ব্যবহার করেন। কিন্তু টুনা মাছের রয়েছে ভয়াবহ স্বাস্থ্য ঝুঁকি। প্রতি বছর শত শত মানুষ টুনা মাছ খাবার কারনে অসুস্থ হয়ে পড়েন। টুনা মাছ বাজারজাত করার সময় অসাবধানতায় স্ক্রমবোটক্সিন নামক প্যাথোজেন দ্বারা আক্রান্ত হয় যা শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্থ করে ও অন্যান্য মরণব্যাধি তৈরি করে। রোগের লক্ষণ দেখা যায় কথা জড়ানো, মাথাব্যাথা ও ডায়রিয়া থেকে। পরে এটি দৃষ্টি শক্তি পর্যন্ত নষ্ট করে দিতে পারে।
৫. মাশরুম: মাশরুম অত্যন্ত সুস্বাদু ও পুষ্টিকর একটি খাবার হিসেবেই পরিচিত। এর প্রায় ১৪,০০০ প্রজাতির মধ্যে বেশীরভাগই খাওয়ার অনুপযোগী। কারণ এগুলো বিষাক্ত। কিছু কিছু মাশরুমের নামই এর ভয়াবহতার পরিচয় বহন করে। যাদের মধ্যে ডেথ ক্যাপ ও ডেস্ট্রয়িং অ্যাঞ্জেল অন্যতম। এছাড়াও মাশরুমের অনেক প্রজাতি আছে যারা সহজলভ্য কিন্তু স্বাস্থ্য ঝুঁকি অনেক বেশি। যে মাশরুমগুলো খাওয়ার উপযোগী ও পুষ্টিকর সেগুলো বর্তমানে চাষ করা হচ্ছে। বাদ বাকি মাশরুম খাওয়া এড়িয়ে চলাই ভালো।
Link
বিষয়: বিবিধ
১৭৮১ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সুন্দর
-
মন্তব্য করতে লগইন করুন