মসজিদের আদব # নামাজের সামনে দিয়ে অতিক্রম প্রসঙ্গে
লিখেছেন লিখেছেন এইচ এম ফজল ১০ নভেম্বর, ২০১৩, ০৫:১৫:১৩ বিকাল
মসজিদ আমাদের মুসলমানদের নিকট অতি পবিত্র স্থান বা ঘর। সেখানে আমরা আল্লাহর ভিবিন্ন ইবাদত-বন্দেগী করে থাকি। বিশেষ করে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সলাত আদায় করি সেখানে। মসজিদে আমরা কখনও পাপ কাজ করার চিন্তাও করি না, তারপরেও মনের অজান্তে বা জ্ঞানের অভাবে পাপ করে ফেলি। মসজিদ আল্লাহর ঘর, তাই সেখানে আমাদের অনেক নিয়ম মেনে আদবের সাথে চলা দরকার। আর সেই নিয়ম কানুন সম্পর্কে আমাদের অনেকেই স্বচেতন নই। আমি এখানে মসজিদের আদব সমূহ থেকে একটি মাত্র আদবের কথা উল্লেখ করবো। আমার দৃষ্টিতে মনে হয় এই আদবটি সম্পর্কে বেশির ভাগ মানুষ সচেতন না থাকার দরুন আমাদের ভুল ভ্রান্তি বেশি হচ্ছে।
আলোচ্য আদবটি হচ্ছে, নামাজরত ব্যক্তির সামনে দিয়ে আসা-যাওয়া করা। এই সম্পর্কে মহানবী সা. এর একটি হাদিস আছে যার সার মর্ম এই- তিনি সাহাবিদের উদ্দেশে বলেন- যদি তোমরা নামাজ আদায়কারির সামনে দিয়ে অতিক্রম করার গোনাহ সম্পর্কে জানতে তাহলে ৭০ হাজার বছর অপেক্ষা করতে তারপরও নামাজের সামনে দিয়ে জাতায়ত করতে না। উক্ত হাদিসে যাতায়াত বা অতিক্রম’’ শব্দের আরবি শব্দটি হচ্ছে ‘’তাজাউজ’’ আর এই অর্থে ইংরেজি শব্দটি হচ্ছে crossing. এই শব্দটির বিশ্লেষিত অর্থ হচ্ছে কোন কিছুর এক পাশ থেকে অন্য পাশে যাওয়া। তাহলে হাদিসে উল্লেখিত পাপের কারণটি হচ্ছে, নামাজরত ব্যক্তির সামনে দিয়ে এক পাশ থেকে অন্য পাশে যাওয়া। তবে পর্দা বা সুতরা থাকলে কোন সমস্যা নেই। ইসলামের পণ্ডিতগণ এই ব্যাখ্যাই দিয়ে থাকেন। সুতরাং উক্ত হাদিসের আলোকে আমরা যা পেলাম নামাজরত ব্যক্তির বরাবর সামনে থাকা অন্য নামাজি তাঁর নামাজ শেষ করে চলে যেতে পারেন। এ ক্ষেত্রে তাঁর পিছনের লোকের নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা জরুরী নয়। তবে অপেক্ষা করা কোন দোষও নহে। বরং মসজিদের পিছনের দিকে বা দরজার নিকটে এই অবস্থা হলে সেখানে বসে থেকে অন্য মুসল্লিদের যাতায়াতের ব্যস্থা করে দেওয়া উত্তম। এখানে আমরা যা করি, পিছনের নামাজি ব্যাক্তির নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে গিয়ে নামাজরত ব্যক্তির মুখমুখি হয়ে চেয়ে থাকি, যা খুবই খারাপ কাজ।
সুতরার বিবরণ।
কোন লোক নামাজ শুরু করার পূর্বে যদি এমন ধরনা করেন যে, তার নামাজ আদায় কালিন সময় অন্য কোন লোক তার সামনে দিয়ে যাতায়াত করতে পারে। তাহলে নামাজ শুরু করার আগে সুতরা স্থাপন করে নিবে। আর সুতরা হচ্ছে ; সুতরা হচ্ছে কমপক্ষে এক হাত পরিমাণ লম্বা ও হাতের আঙ্গুল পরিমাণ মোটা এমন একটা খুঁটি যাহা নামাজি ব্যক্তি নামাজ শুরু করার পূর্বে নিজের সামনে স্থাপন করে থাকেন। তাই সুতরা কখনোই অন্য লোক নামাজরত ব্যক্তির সামনে স্থাপন করতে পারবে না। সুতরা সোজা নাক বরাবর স্থাপন করাও নিষিদ্ধ। ডান বা বাম চোখ বরাবর সুতরা স্থাপন করবে।
বড় মসজিদে বা খোলা মাঠে নামাজ আদায় করলে নামাজি ব্যক্তির সেজদার স্থানের পর থেকে দুই সেজদার সমপরিমাণ জায়গা অন্তরায় রেখে নামাজির সামনে দিয়ে অতিক্রম করা শুদ্ধ আছে। লম্বায় ৫০ হাত ও চওড়ায় ৫০ হাত পরিমাণ মসজিদকে বড় মসজিদ হিসেবে গন্য করা হয়। ‘’আল্লাহ্ হাফেজ’’
বিষয়: বিবিধ
৪৩৬০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন