বাংলাদেশের চলমান সংকট নিরসনে সৎ ও চরিত্রবান শাসকের প্রত্যাশা ইসলামী দল থেকে।

লিখেছেন লিখেছেন এইচ এম ফজল ০৮ নভেম্বর, ২০১৩, ০৫:২৩:৩০ বিকাল



বাহু শক্তি দিয়ে যা করা যায় না, ক্ষমতার শক্তি দিয়ে তা করা যায়। আবার ক্ষমতার শক্তি দিয়ে যা করা যায় না, চরিত্র-মাধুর্য দিয়ে তা করা সম্ভব। তাই বলা যায়- উৎকৃষ্ট চরিত্র শক্তি ও খমতার অনেক উপরে। যার জলন্ত প্রমাণ মহানবী সা. পূর্ণ জীবন। তিনি সা. সেকালে আরবের পাষাণ হৃদয়ের মানুষ গুলোকে উত্তম চরিত্র ও আদর্শের মাধ্যমেই পরাজায় করেছিলেন। এবং তাঁর সা. আনিত জীবন ব্যবস্থা ইসলামকে বিজয়ী ভেসে প্রতিষ্ঠিত করে ছিলেন। তাই আল্লাহ পবিত্র কোরানে বলেন- তাঁর সা. মধ্যেই রয়েছে তোমাদের জন্য উত্তম আদর্শ। মূলত চরিত্র বলেই ইসলামের বিজয় হয়েছিল।

ইতিহাস থেকে জানতে পারি খোলাফায়ে রাশেদিনের জমানায় হজরত ওমর রা. অর্ধ পৃথিবী শাসন করেছিলেন। আর তা সম্ভব হয়েছিল শুধুমাত্র ন্যায় প্রতিষ্ঠা, মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতি শাসকদের দায়িত্বভোধ। অন্য কথায় সেই সমাজের শাসকগণ ছিলেন জনগণের রাখাল। তাই সেকালে শাসকগণ রাতে জাগ্রত থেকে জনগণকে পাহারা দিতেন আর জনগণ আরামে ঘুমাতেন। আর বর্তমানে বাংলাদেশে তথা গোটা বিশ্বের শসকগন জনগণের টাকায় বাড়ি-গাড়ি করে নিশ্চিন্তে ঘুমায় আবার ঘুমের ব্যাঘাত যেন না হয় সেই জন্য নিরাপত্তা দিচ্ছে এমন এক বাহিনী যারা জনগণের টাকায় পরিচালিত তাদেরই নিরাপত্তার জন্য গঠিত হয়েছিল।

অন্যদিকে জনগন খাদ্য, বস্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ও নিরাপত্তা হীনতার অভাবে ছটফট করে কাতরাচ্ছে।

এই অবস্থায় আবার নির্বাচনের সময় আসলে নেতারা জনগণের কাছে কাছে গিয়ে ধরনা দিচ্ছে, সাথে নিয়ে যাচ্ছে এক বস্তা দাবী আদায়ের প্রতিশ্রুতি। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন; ক্ষমতায় যাওয়ার পর এই দাবিগুলো পুরন করবে তো/ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এদেশের ক্ষমতায় অনেক নেতাই আসছে আর গেছে কেউই তাঁদের পূর্ব প্রতিশ্রুতি পূরণ করেনি। তাই জনগন আজ নেতাদের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। তারা এখন এমন একজন নেতা খুঁজছে যিনি তাঁদের অধিকার আদায়ে যথাযত ভুমিকা রাখবেন। মোট কথা বাংলাদেশের জনগন এমন একদল নেতার কাছে দেশের ক্ষমতা দিতে চায় যারা হবেন সৎ, চরিত্রবান, নিতিবান, আমানতদার ও প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারী।

অতঃপর জনগন তাদের কাঙ্ক্ষিত নেতাদের খুজে পেতে লাগল ইসলামী দলগুলো থেকে। ২০০১ সালে বি এন পি নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোট ক্ষমতায় আসলে, ইসলামী দলও আংশিক ক্ষমতায় আসে। জেনে রাখা দরকার, কোন দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকা কালিন সময় সাধারণ মানুষ কখনই জানতে পারে না যে সরকার ও সরকারের আমলারা কি পরিমানের দুর্নীতি করছে। তা জানার জন্য অপেক্ষা করতে হয় নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার পর্যন্ত।

গত ফখরুদ্দীন সরকারের দুই বছরের ক্ষমতার মাধ্যমে সাধারণ মানুষ দেখতে পেরেছে বি এন পির প্রায় সব সিনিয়ার নেতাদের দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করে দিনের পর দিন রিমান্ড দিয়েছে দুদক। তখনও জামাতের দুই মন্ত্রীসহ সব নেতারাই খোলাখুলি ভাবে সভা-সমাবেশ করে বেড়াচ্ছেন। পুলিশ যখন গ্রেফতারী নামা হাতে নিয়ে বিএনপির ক্ষমতাধর নেতাদের খুঁজছে তখনও ইসলামী দলের নেতারা পুলিশের সামনে দিয়েই চলাফেরা করছে। ফখরুদ্দীন সরকারের আমলে জমাতসহ ইসলামী দলের নেতাদের কি এমন পাওয়ার ছিল যার কারণে দুদক তাদের বিরুদ্দে কোন অভিযোগ আনতে পারেনি। এ হল সততার পাওয়ার। ফখরুদ্দীন সরকারের আমল থেকে আওয়ামী লীগ দুটি শিক্ষা অর্জন করেছে। ১/ ইসলামী রাজনীতি বন্ধ করতে হবে ২/ নির্দলীয় তত্বাবধায়ক সরকারকে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া যাবে না।

১ আওয়ামী লীগ দেখেছে যদি ইসলামী দলের উপর সাধারণ মানুষের আস্থা জন্মে যায় তাহলে তাদের ক্ষমতায় আসা দুরহ ব্যপার হয়ে যাবে। তাই আওয়ামী সরকার ভিবিন্ন কলা-কৌশলের মাধ্যমে ইসলামী রাজনীতি বন্ধ করতে চায়। ওরা দেখেছে ইসলামী দল গুলর মধ্যে জামাত সাংগঠনিক দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে তাই জামাতের নেতাদের ভিবিন্ন অপবাদ দিয়ে তাদের জনপ্রিয়তা নষ্ট করার চেষ্টা করছে। এমন কি এক পর্যায়ে জামাতের নিবন্ধন বাতিল করে দিয়েছে। অন্য সকল ইসলামী দলের প্রতি আমার পরামর্শ হিসাবে বলী- জামাতের নিবন্ধন বাতিলের দরুন আপনাদের খুশির বিষয় নায়। আপনাদের সাথে জামাতের যে বিরোধ সেই কারণে কিন্তু জামাতের নিবন্ধন বাতিল করা হয় নি। ২ যে কোন দলীয় সরকারের নির্ধারিত সময়ের পরে যখন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার আসে তখন দুটি কাজ হয়। ১ সুষ্ঠু নির্বাচন ২ বিগত সরকারের ভিবিন্ন দুর্নীতি বিচার করা। আওয়ামী সরকার বুঝতে পেরেছে যে, যদি নির্দলীয় সরকারের হাতে দেশের ক্ষমতা দেওয়া হয়। তা হলে আমাদের দুর্নীতির কুৎসিত চেহারা জনগণের কাছে উন্মোচন করে দিবে। ফলে সাধারণ মানুষের কাছে আওয়ামী নেতাদের ইমেজ নষ্ট হয়ে যাবে। তাই আজ আওয়ামী সরকার নির্দলীয় সরকারের বিপক্ষে গিয়ে দেশকে এক অরাজগতার দিকে ঠেলে দিয়েছে।

পরি শেষে বলতে পারি বর্তমান বাংলদেশের প্রধান সংকট একজন সৎ যোগ্য, দেশপ্রেমিক ও ন্যয়নিষ্ঠ নেতার অভাব। আর জনগন এটার প্রত্যাশা করছে ইসলামী দল সমুহের থেকে। ''আল্লাহ হাফেজ''

বিষয়: রাজনীতি

১৩৭২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File