যে দুর্গতি শেষ হবার নয়!!
লিখেছেন লিখেছেন আবরারুল হক ০৭ মার্চ, ২০১৪, ০৯:৫৯:২৭ রাত
বাংলাদেশের মানুষের কপাল থেকে দুর্গতি যেতে বোধ হয় আরো দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হবে।
আমাদের দেশের মূল চালক রাজনীতিবিদরা যে কি পরিমাণ অসৎ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাদের মধ্যে খুব কম ব্যক্তিই আছেন, যারা নিজেদের দুর্নীতি বা অসৎ পন্থা অবলম্বন থেকে নিজেদের বিরত রাখার চেষ্টা করেছেন। ব্যক্তিস্বার্থের ব্যাপারের তাদের কঠোর নীতি এবং রাষ্ট্রীয় স্বার্থের ব্যাপারে তাদের একেবারে গা-ছাড়া ভাব দেখলেই বুঝা যায় দেশের প্রতি ভালবাসা, দেশের মানুষের সেবা করার উদ্দেশ্যে নয়, বরং ব্যবসার ভাল একটা উপায় হিসেবে তারা রাজনীতি করেন এবং ক্ষমতায় যাবার চেষ্টা করেন। মজার বিষয় হচ্ছে বর্তমান সময়ে যারা রাজনীতি করছেন, তাদের বৃহৎ অংশই পেশায় ব্যবসায়ী। সেটা হোক মাদক ব্যবসা, নারী ব্যবসা, মানুষ পাচারের ব্যবসা অথবা বৈধ কোন ব্যবসা। এ কারণে তারা যা ব্যক্তি লাভের উপরে কিছুই প্রাধান্য দিবেন না বা দিতে চাইবেন না, তা বলাই বাহুল্য।
রাজনীতিবিদদের একটা বড় অংশ অশিক্ষিত। এখানে শিক্ষিত শব্দ দ্বারা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার কথা বলা হচ্ছে। আমাদের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এডভোকেট একটি "A+" সংবর্ধনায় বলেছিলেন "আমি যদি তিনবার এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হতে পারি, তাহলে নিশ্চয়ই তোমরা করতে পারবে না এমন কাজ এই পৃথিবীতে নেই"। আর যারা শিক্ষিত আছেন, তাদের অবস্থা তো আরো ডেঞ্জারাস। কোটি মানুষের মাথার ঘাম পায়ে ফেলা কষ্টার্জিত টাকা তার নিজের নামে করে নেন কেবল এক সিগনেচার মেরে। শেখ মুজিবুর রহমানের সেই চোরের খনি দিন দিন এত বেশি চোর সাপ্লাই দিচ্ছে আমাদের সমাজে, যে এই তলাবিহীন ঝুড়ির তলা তো গেছে আগেই, এখন পার্শ্বও চলে যাচ্ছে।
শুধু রাজনীতিবিদদের দোষারোপ করলেও ভূল হবে। বড় দোষ আমাদের, আম জনতা বা ম্যঙ্গোপিপলের। আমরা নির্বাচনের সময় নিজের বিবেক বিক্রি করে যে বলদ ইউপি মেম্বার হওয়ার যোগ্যও নয়, তাকে সংসদ সদস্য পদে ভোট দেই। বিনিময়ে নেই ৫০ টাকা। এই ৫০ টাকার বিনিময়ে আমরা এক বলদের কাছে জিম্মা দেই দেশের মানুষের শিক্ষা, চিকিৎসা, উপার্জন, অন্ন এবং সর্বোপরি দেশের মানুষের জীবনের। যে রাজনীতিবিদ নামের অমানুষ ভোট কিনে নির্বাচনে জয়ী হল, তার প্রথম চিন্তা থাকবে তার নির্বাচনী খরচ উসুল করার। সুতরাং সে শুরু করে দিবে উসুল করা। জনগণের টাকা খেয়ে খেয়ে সে যখন দেখবে কেউ তার দিকে চোখ তুলে তাকানোর সাহস করছে না, তখন সে নির্ভয়ে বীরদর্পে দেশের মানুষের সম্পদ খেয়ে যাবে। আর আমাদের দেশের তথাকথিত দুর্নীতি দমন কমিশন ব্যস্ত থাকবে সরকারের পা চাটা এবং ছিচকে চোরের সন্ধানে।
আমরা রাস্তায় পুলিশকে ১০ টাকা ঘুষ খেতে দেখে নীতিবাক্য ছাড়ি। কিন্তু যারা হাজার হাজার কোটি টাকা ডাকাতি করে নিয়ে যাচ্ছে, তাদেরকেই আবার ভোট দেই। এই মানসিকতা পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কপালের ফুটো ভরাট করা সম্ভব নয় কোন সুপারম্যানের পক্ষেও।
বদলাতে হবে আমাদের। আমরা যখন বদলে যাব, বদলে যাবে দেশটাও। দেশকে বদলাতে চান? এখনই শুরু হোক যাত্রা!!!!
বিষয়: বিবিধ
১০৯৩ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন