মানুষ গুলো সব ছাই হয়ে যাক, দূর দেশেতে পালিয়ে বেড়াক।
লিখেছেন লিখেছেন সায়িদ মাহমুদ ১৮ জানুয়ারি, ২০১৬, ১১:১৩:৫১ সকাল
পরিবেশ এবং মানুষের মৃত্যুঝুকি ও স্বাস্থ্য ক্ষতির ভয়ে যে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প সুন্দরবনের পাশে না করার প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল । সে একই রকম আরেকটি প্রকল্প যখন মহেশখালীর মতন একটা জনবহুল এবং ইউনিক কৃষি ভূমীতে স্থাপন করা হচ্ছে তখন আর এই ব্যাপারে দেশের সমাজর্কমী এবং পরিবেশবাদিদের কোন উল্লেখযোগ্য প্রতিবাদ হচ্ছে না কেন? হয়তো এখানে কোন আঞ্চলিক বৈষাম্যর ব্যাপার স্যাপার জড়িত আছে। সুন্দরবনের মতন মহেশখালীতেও ম্যানগ্রোভ বন আছে। আছে পাহাড়, নদী, খাল, ছরা, এবং মিঠা ও লোনা পানির কৃষি ভূমীর অনন্য প্রাকৃতিক মিলন । এখানকার প্রতি ইঞ্চি জমিতে, ধান,সবজি,মিষ্টি পান, লবণ এবং গলদা চিংড়ি সহসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছের প্রজনন হয়। এছাড়াও আছে বঙ্গপসাগর থেকে আহরিত প্রাকৃতিক মাছের ভান্ডার। যার বাৎসরিক আর্থিক মূল্য দাড়ায় প্রায় পাচশত কোটি টাকা।
আরো দুঃখের ব্যাপার হচ্ছে; আমাদের মহেশখালীতে স্বজ্ঞানে একটা অলিক স্বপ্ন ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে; এখানে যদি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র হয় তাইলে নাকি মহেশখালীটা আর মহেশখালি থাকবেনা এটা তখন হয়ে যাবে সিঙ্গাপুরের মতন সমৃদ্ধ শহর। যদিও পৃথিবীর যেখানে যেখানে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র হয়েছে তার আশপাশে প্রতিবছর গড়ে ২৪,০০০ (ছব্বিশ হাজার) মানুষ #হাফানি, #নিউমোনিয়া র মতন শাস্বকষ্ট ও কিডনি জনিত অসুখে মারা যাচ্ছে। ২০০৪ সালের একটা রির্পোট এইখানে http://goo.gl/42weSw লিখা আছে ।
সরকারি প্রচারণা বিশ্বাস করে আমাদের বাপ’চাচারা ধরেই নিয়েছে সিঙ্গাপুর না হলেও অন্তত এই মফস্বল শহরটা কক্সবাজার শহরের মতন হলেও একটা টাউন হবে। কিন্তু বাস্তব কাহিনি হচ্ছে দুনিয়ার যেখানে যেখানে কয়লা বিদ্যুৎ ফ্যাক্টোরি হয়েছে সেসব অঞ্চলের মানুষ এবং ভূমী দুটাই নাইট্রোজেন অক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইডের দূষণে পড়ে মানুষ হারিয়েছে তার সু’স্বাস্থ্য এবং প্রকৃতি হারিয়েছে তার সৌর্ন্দয্য। কোন একটা পত্রিকায় পড়েছিলাম; অষ্ট্রেলিয়া এবং আমেরিকায় যেখানে কয়লা বিদ্যুৎ ফ্যাক্টোরি করা হয়েছিল তার চারপাশের কম করে হলেও ৫০ কিলোমিটারে কোন জনবসতি রাখা হয় নি। অতচ্ এই কয়লা স্তুপের ৫ কিলোমিটারের মধ্যেই পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত ও বাংলাদেশের সবচেয়ে স্বাস্থকর জায়গা কক্সবাজার সি-বিচের অবস্থান। এতে করে কক্সবাজার হারাবে বিদেশী স্বাস্থ্যসচেতন পর্যটক। যদিও এখন পৃথিবীর প্রায় সব দেশ থেকে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে কারণ এর পরিবেশ এবং মানবিক বিপর্যয়ের ভয়াবহতা লাভের চেয়ে ক্ষতি লক্ষগুণ বেশি। কিন্তু বাংলাদেশে ইকো হার্মফুল এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলা করা হচ্ছে, তাও
কয়লা বিদ্যুত ফ্যাক্টোরির জন্য সরকারের কাছে ৫, হাজার একর মতন কৃষিজমি বেচার টাকায় অনেক সরল কৃষক লাখপতি, আবার কেউ কেউ কোটিপতি হওয়ার সুখ স্বপ্নে ভাসছেন । কিন্তু এই সরলমনা মানুষগুলোর এতটুকু বোধদয় হয়নি; এই আবাদি জমি বেচে যে পরিমাণ টাকা আমরা পাইবো এই টাকা দিয়ে এই অসুখের দেশে থেকে দূরে কোথাও বসত গড়ার জন্য নতুন ভিটেমাটি কিনে একটা বাড়ি করার মতন অত টাকা আদতে আমাদের হাতে থাকবেতো ? যেখানে কক্সবাজার শহরেই এখন জমির দাম গন্ডা প্রতি ২৫ লাখ থেকে কোটি টাকা পর্যন্ত চলছে। চিটাং ঢাকার জমির দাম নাহয় বাদই দিলাম।
কয়দিন আগে কোন একটা জরিফ সংস্থার রির্পোটে পড়েছিলাম বাংলাদেশে প্রতিবছর ৬৪ লাখ মানুষ দরিদ্র হচ্ছে শুধুমাত্র নিজেদের চিকিৎসার খরচ মেটানোর প্রয়োজনে । কয়লা বিদ্যুৎ নিসৃত যেসব রোগ অসুখ আমার মাহেশখালীবাসি বহন করবো তা নিরাময়ের অত খরচাপাতি জমী বেচার ওই টাকা থেকে খেয়ে পরে জমা থাকবেতো?
তাছাড়া এই জমি থেকে যে পরামাণ লবণ আর মাছ লোকাল ডিমান্ড পূরণ করে। ডমেষ্টিক বাজারের চাহিদা পূরণ করছে এই পরিমাণ লবণ আর গলদা ছিংড়ি যোগান দেয়ার মতন দ্বিতীয় প্রাকৃতিক কৃষিভূমি কি বাংলাদেশেরর আছে? অথবা বিদেশ থেকে এই কৃষজ পণ্য গুলো কিনে এনে ডাবল দামে কিনে খাওয়ার সামর্থ্য এই বাংলাদেশে কয়জনের থাকবে?
আমরা বলছিনা যে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের দরকার নাই। আমরা বলতে চাইছি যে বিকল্প সিষ্টেম থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হোক । যেখান থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হলে পরে মানুষ; এবং মানুষের বাসযোগ্য এই সুন্দর বসুন্ধরা নিরাপদ থাকবে। আপনারা যারা ব্লগার আছেন, আপনারা সমজের প্রতিভাবান মুখপাত্র এই রকম একটা ন্যাশনাল কনর্সাণের ব্যাপারে আপানাদের সোচ্চার হওয়া উচিত। কারণ এই ব্যাপারটাতে কম করে হলেও ২৫, লক্ষ মানুষের জীবন মৃত্যু জড়িয়ে আছে।
ধন্যবাদ আপনাকে।
বিষয়: রাজনীতি
১৪১৮ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন