বিডিআর হত্যাকান্ড নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ও মিথ্যাচার
লিখেছেন লিখেছেন নকিব মাহমুদ ০৩ নভেম্বর, ২০১৩, ০৮:২১:৪৪ রাত
আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা তার প্রতিটি জনসভায় এক তরফা ভাবে মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। আজ ৩ নভেম্বর রবিবার রাজধানীর সোহরাওয়াদীর্ উদ্যানে জনসভায় চরম মিথ্যাচার করলেন। আজ তার এই মিথ্যাচারে জাতি বেশ সংকিত। একজন প্রধানমন্ত্রী যদি এভাবে মিথ্যাচার করে যান তাহলে দেশ কোথায় যাচ্ছে?
তিনি বললেন, বিডিআর হত্যাকান্ডের সাথে নাকি বিরোধী দলের অনেক সাবেক মন্ত্রী ও খালেদা জিয়া জড়িত। খালেদা নাকি ষড়যন্ত্র করে এই বিডিআর হত্যা কান্ড ঘটিয়েছিলেন। এই হত্যা কান্ডের শিকার নাকি ৩৩ জন সেনা অফিসার ছিলেন আওয়ামী ঘরানার। এসব তথ্য বিডিআর হত্যা মামলায় বেরিয়ে এসেছে।
তাহলে একজন সচেতন মানুষ হিসেবে আমার প্রধানমন্ত্রীকে কিছু প্রশ্ন ? তখন সেনাবাহিনীর অনেক অফিসার চেয়েছিলেন বিডিআর বিদ্রোহীদের দমন করার জন্য বিডিআর সদর দপ্তরে ভিতরে প্রবেশের অনুমতি। কিন্তু তাদের উনি কোন অনুমতি দিলেন না কেন? কেন পরদিন জিয়া আন্তরজাতিক বিমান বন্দরে কয়েকজনকে চলমান রানওয়ে থেকে তুলে নেয়া হল? এরা কারা ছিল? এই হত্যা কান্ড ঘটার আগে কেন তোরাব আলীর বাসায় বৈঠক করা হল। আর এই বৈঠকে কেন, বিডিআর হত্যাকান্ডের কুশীলব যাদের নাম তদন্ত রিপোর্ট এসেছে আওয়ামী লীগ এম.পি মির্জা আজম, হাজী সেলিম, জাহাঙ্গীর কবীর নানক, ফজলে নূর তাপস এবং মহীউদ্দীন খান আলমগীর বেশ কয়েকটি বৈঠকে মিলিত হলেন এবং তোরাব আরী বিডিআর জওয়ান ও তাপস, নানক, আজম ও সোহেল তাজের মধ্যে সংযোগ রক্ষা করেন।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে পড়ুন-- নিচের লিংকটিতে
http://bdrmutiny.com/?page_id=99
বিডিয়ার হত্যাকান্ডের একজন প্রত্যক্ষ সাক্ষীর জবানবন্দীর কিছু অংশ পড়লেই ব্যাপারটি আরো ক্লিয়ার হবে আপনারা।
সাক্ষী সিপাহী (ব্যান্ড ) আলমগীর
..নং ..৫৯১০০ ..
৩৯ রাইফেল ব্যাটালিয়ান,
সংযুক্ত আরটিসিএন্ডএস (ব্যান্ড) ….
গত ১ ফেব্রুয়ারী ২০০৯ তারিখে ডিএডি জলিল প্রথমে বিদ্রোহের পরিকল্পনার কথা জানায়। ওই দিন আমাদেরকে বলা হয় দরবার যেদিনই হোক , সেদিনই অফিসারদের জিম্মি করা হবে এবং আমাদের দাবি দাওয়া প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হবে। দাবি দাওয়া পূরণ করে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করলে অফিসারদের ছেড়ে দেওয়া হবে।
পরে ২২ ফেব্রুয়ারী ০৯ তারিখে রোল কলের পর আমরা বাইরে একটি বাসায় ২ জন সংসদ সদস্যের সাথে দেখা করি। সেখানে অন্যানদের মধ্যে ব্যারিস্টার ফজলে নুর তাপস ও আরেকজন সংসদ সদস্যের সাথে সাক্ষাত করে আমাদের দাবি দাওয়া সম্পর্কে জানালে তারা আমাদের পরিকল্পনার কথা শুনেন এবং সম্মতি দেন।
এটি স্পস্ট যে ওই বাসাটি ছিল আওয়ামীলীগ এমপি ফজলে নুর তাপসের। একজন সামান্য বিডিয়ার কিভাবে একজন সংসদ সদস্যের সাথে দেখা করতে পারেন। যখন তাদেরকে এই পরিকল্পনার কথা জানালেন তারা কেন বাধা না দিয়ে দাবির সাথে সম্মতি জানালো ? তাহলে এটি স্পস্ট যে সরকার আগে থেকেই প্লান করে এই কাজ করিয়েছিল।
আর এক সিপাহীর জবানবন্দি-
নং ৫৯১০০
সিপাহী (ব্যান্ড) মো: আলমগীর শেখ
৩৯ রাইফেল ব্যাটেলিয়ান, সংযুক্ত আরটিসিএন্ডএস
এপ্রিল ২০০৯
জবান বন্দী:
গত ১১ জানুয়ারী ২০০৭ জরিউরী অবস্থা জারীর পর থেকে বিভিন্ন সময় আমাদের দাবী দাওয়া পূরণের জন্য অফিসারদের বিরুদ্ধে কোন না কোন পরিকল্পনা চলতে থাকে।আমাদের দাবী দাওয়া পূরণের লক্ষে হাজারীবাগ এলাকার পরিচিত আইনজীবী ব্যারিস্টার ফজলে নুর তাপস-এর সাথে যোগযোগ করা হয়। তিনি তখন আশ্বাস দেন যে,তাকে ভোট দিয়ে জয় যুক্ত করলে সে বিডিআর-এর সমস্ত দাবি দাওয়া পূরণ করবে। গত ৯ জানুয়ারী ২০০৯ তারিখে দাবী দাওয়া পূরণের জন্য অফিসারদের ইম্মি করা হবে বলে জানতে পারি।
১৯ ফেব্রুয়ারী ২০০৯ তারিখের বৈঠকে এ সকল দাবী দাওয়া ও প্রস্তাব ২২ ফেব্রুয়ারী ২০০৯ তারিখে স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার তাপসকে জানাও হবে বলে আমাদেরকে জন্য হয়।এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২২ ফেব্রুয়ারী ২০০৯ সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার তাপসের উপস্থিতিতে অবসরপ্রাপ্ত বিডিআর সদস্য তোরাব আলী (সন্ত্রাসী লেদার লিটনের পিতা) বাসায় বৈঠকে অনুষ্ঠিত হয়।বৈঠকের সময়সীমা ছিল আনুমানিক ১৯৩০ থেকে ২১০০ ঘটিকা।
বৈঠকে আমাদের দাবী দাওয়া এবং পরিকল্পনার কথা মাননীয় সংসদকে জানানো হয়।তিনি আমাদের পরিকল্পনার কথা শুনেন এবং তাতে সম্মতি দেন। তিনি আমাদেরকে বেশি অফিসারকে না মেরে ২/১ জনকে হত্যা করার সম্মতি দেন। সে বৈঠকে ব্যারিস্টার তাপসের সাথে আরেকজন সংসদ সদস্য (মোচওয়ালা,কোকড়ানো চুল, চশমা পরিহিত,ফর্সা রঙ-এর)উপস্থিত ছিল
আমার জানামতে সিপাহী তারেকের সাথে সংসদ সদস্য তাপসের যোগাযোগ ছিল। এমপি তাপসের মাধ্যমে সে তার একজন অত্তীয়কে চাকুরীর দেওয়ার ব্যবস্থাও করে।
পরিকল্পনা মোতাবেক সকাল ৯টা থেকে সোয়া ৯টার মধ্যে আমি আমার দলের অন্যান্য সদস্যসহ দরবার হলের পিছনে অবস্থান নেই। সিপাহী মইনুল, সিপাহী তারেক(সদর ব্যাড)সর্ব প্রথম দরবার হলে ঢুকে পরিকল্পনা মাফিক অস্ত্র নিয়ে ডিজির পাশে অবস্থান নেয়। কিন্তু সিপাহী মইনুল হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে সিপাহী তারেক কিছুক্ষণের জন্য বাহিরে চলে আসে এবং এর সাথে সাথেই সিপাহী তারেকসহ ৪৪ আইফেল ব্যাটালিয়নের নায়েক ফরহাদ ও সিপাহী তোতা মিয়া সদর ব্যান্ডের সিপাহী জসিম ও আরটিসি এন্ড এসের ব্যান্ডের সিপাহী শাহাবুদ্দিন এসএমজি নিয়ে দরবার হলে প্রবেশ করে। সিপাহী তারেক এর পর সব অফিসারকে দরবার হলের বাহিরে গিয়ে লাইনে দাড়াতে বলে। এসময় অনেকে চিত্কার করতে থাকে সেনাবাহিনী ও র্যাব পিলখানায় প্রবেশ করেছে বিডিআরদের মেরে ফেলার জন্য। সিপাহী তারেক এ সময় ডিজিকে লক্ষ্য করে বার্স্ট ফায়ার করে। সাথে সাথে আমি এবং সিপাহী শাহাবুদ্দীন সহ আরো অনেকে লাইনে দাড়ানো অফিসারদের গুলি করা শুরু করি।
এরপর রাতের বেলায় আমি শুনতে পাই অফিসারদের পরিবারদের কেন্দ্রীয় কোয়ার্টার গার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং তাদের সাথে দুর্ব্যাবহারও করা হয়েছে।এ কাজে জড়িত ছিল সিপাহী তারেক।
বিভিন্ন সময় ধরে সমগ্র পিলখানায় জয়বাংলা স্লোগানটি শুনতে পাই এবং আমাদের পিছনে সরকারের সমর্থন আছে বলে সিনিয়র বিডিআর সদস্য কর্তিক আশ্বস্ত হই।
বিডিআর হত্যাকান্ডের নেপথ্যে কারা জড়িত তা ইতোমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে তাই প্রধানমন্ত্রীকে নতুন করে আর কিছুই বলার নাই। এতে কারা জড়িত আর কারা জড়িত নয়। আসলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলতে চান ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাই না।
ঘটনার ঘটার পর অনেক সেনাসদস্য তা দমন করার জন্য সেনা প্রধানের কাছে অনুমতি চেয়েছেন । কিন্তু প্রধান তা করতে পারেননি সরকারের সৎ মনোভাবের কারণে। কারণ এই হত্যা কান্ড ছিল একটা সুদুর প্রসারী পরিকল্পনা। এতে হাত ছিল ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা র' এর। তারাই তা বাস্তবায়ন করার জন্য সহায়তা করেছিল।
আপনারা দেখেছেন ঘটনার দিন অনেক নওজোয়ান মুখোশ পরে ছিল। তারা সাহস করেই বিডিআর হত্যা কান্ডের কথা বলছিল। কিন্তু মুখোশ খোলেনি। আসলে তারা কারা ছিল?
দেশের একটা বাহিনীর অফিসারদের হত্যা করা হচ্ছে আর সরকার তা দমনের নামে আলোচনার নাটক সাজালেন কেন?
কেন নানক তাদের আলোচনার জন্য বসতে বললেন?
আর এই আলোচনায় যা যা আলোচনার হয়েছে তাতে বেশ চিপায় পড়েছিলেন এই আওয়ামী সভাপতি শেখ হাসিনা।
কিন্তু এই সময়ে চলে যায় দেশের শ্রেষ্ঠ ৫৭রের অধিক সন্তান। যারা বাংলাদেশকে প্রতিনিয়ত শক্রুর হাত থেকে রক্ষার জন্য ছিলেন সদা ব্রত।
আসলে সেদিনের ব্যাপারটি হয়েছিল এমন-এক বাজারে আগুন লেগেছে । এই আগুনের কথা চারদিক ছড়িয়ে পড়ল। তখন আগুন লাগার কথা শুনলেন বাজার কমিটির সভাপতিও। তিনি তখন সিদ্ধান্ত নিলেন আগুন নেভানো এখন হবেনা। এখন বাজারের সকল দোকানীকে ডাকা হবে তারপর আগুন নেভানো হবে। দেখা গেল বাজারের সব মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে আলোচনা শেষ হওয়ার পরে। সেই্ দশা হয়েছিল তখন আওয়ামী লীগের। তারা বাজার কমিটি অর্থ্যাৎ বিডিআর নেতাদের ডাকল আলোচনার নাটক করা জন্য কিন্তু তার আগেই সব শেষ।
তাই প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলতে চাই সাবধান!
একদিন কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় আসবেই । তখন কিন্তু ঠিকই দেশে এ্ই বিডিআর হত্যার বিচার হবে । তখন আপনি আর আপনার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় কি রক্ষা পাবেন? আওয়ামী লীগের যারা জড়িত ছিলেন তারা কি বাচবে?
কেন এত মিথ্যাচার? কেন হত্যাকান্ড উসকে দিয়ে বিরোধী দলকে দায়ী করছেন?
দেশবাসী জানে তা মিডিয়ার বদৌলতে দেখেছে ও জেনেছে বিডিআর হত্যাকান্ডের সাথে কারা জড়িত। তাই মিথ্যাচার করে কোন লাভ হবে না।
ভোটের পাল্লা ভারি হবেনা, আওয়ামি লীগকে আর মানুষ ক্ষমতায় আনবেনা।
উইকিলিক্সের গোপন নথিতে বেরিয়ে এসেছে এই হতাকান্ড যে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা র' ই ঘটিয়েছে। তারা মুলত প্রতিশোধ নিতে ও বাংলাদেশের প্রতিরক্ষাকে দুর্বল করতেই বিডিয়ার হত্যাকান্ড ঘটায়।
২৫ ফেব্রুআরির পিলখানায় নারকিয় সেনা হত্যাযঙ্গের কথা আজও ভুলতে পারেনি জাতি। কি হয়েছিল সেদিন? কারা বা কাদের নির্দেশে এই হত্যাযঙ্গ সংগঠিত হয়েছিল?? উইকিলিকসের সেই কথাটিই ব্লাসট করে দিল।
সেনা হত্যা নিয়ে সেনাবাহিনীর গঠিত তদন্ত রিপোর্টে মোটামুটি উঠে এসেছিল সব কিছু। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হাসিনা সে তদন্ত রিপোর্ট বাতিল করে দিয়েছে। তবে অনলাইনের কল্যানে জনগণ সব জেনে গেছে ভেতরের গোপন কথা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিটি সৈনিক ও অফিসার জানে – কেনো, কোন্ পরিকল্পনায়, কারা পিলখানায় ৫৭ সেনা অফিসার হত্যা করেছে। সেটাই সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরা হলো।
১. RAW: ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘R&AW’এর পরিকল্পনায় ও ব্যবস্থাপনায় ”পিলখানা হত্যাকান্ড” ঘটে। এর মূল লক্ষ ছিল- পাদুয়া ও রৌমারীর ঘটনার বদলা নেয়া এবং বিডিআর বাহিনী ধংস করে দেয়া। ২০০১ সালের এপ্রিল মাসে কুড়িগ্রামের রৌমারীতে বিডিআর-বিএসএফ যুদ্ধে ১৫০ জন বিএসএফ নিহত হয়। এর আগে পাদুয়ায় নিহত হয় ১৫ বিএসএফ। বিডিআর ডিজি মেজর জেনারেল এএলএম ফজলুর রহমানের নির্দেশে ঐ যুদ্ধে অংশ নেয় বিডিআর। ঐ ঘটনার পরে ভারতীয় ডিফেন্স মিনিষ্টার জসবন্ত সিং উত্তপ্ত লোকসভায় জানান, ”এ ঘটনার বদলা নেয়া হবে।” লক্ষ করুন, ১৯৭১ সালে যে সব শর্তে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারত সামরিক সাহায্য দেয়, তার অন্যতম শর্ত ছিল “Frontier Guards will be disbanded” (CIA Report SC 7941/71). অর্থাৎ বাংলাদেশের কোনো বর্ডার গার্ড থাকবে না। কিন্তু স্বাধীনতার পরে নানা কারনে পাকিস্তান রাইফেলস বালাদেশ রাইফেলসে (বিডিআর) রূপ নেয়। বিডিআর বাহিনীটি ছিলো আধাসামরিক বাহিনী, যার মূল কমান্ড ও ট্রেনিং ছিলো সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের মত। অন্যদিকে ভারতের বিএসএফ ছিলো সিভিল বাহিনী, যাদের ট্রেনিং, জনবল সবই ছিলো নিম্নমানের। এসব কারনে বর্ডারে কোনো যু্দ্ধ হলে তাতে বিডিআর সামরিক পেশাদারিত্ব দিয়ে বিজয়ী হত।
পাদুয়া-রৌমারীর বদলা নেয়ার জন্য বিডিআর বাহিনী ধংস করার পরিকল্পনা করে ভারত। এ লক্ষে ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারী সময়টিকে বেছে নেয়া হয়- যখন হাসিনার নতুন সরকারের ক্ষমতা গ্রহনের পর পর নাজুক সময়। অনেকেই মনে করেন, ভারতীয় পরিকল্পনায় নির্বাচন ছাড়া অপ্রত্যাশিত পদ্ধতিতে হাসিনাকে ক্ষমতায় বসানোর নানা শর্তের মধ্যে একটি গোপন শর্ত থাকতে পারে “বিডিআর ধংস করা।” চুড়ান্ত রিস্ক থাকা স্বত্ত্বেও হাসিনাকে তা মেনে নিতে হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী বিডিআর সৈনিকদের দাবীদাওয়ার আড়ালে মুল প্লানটি বাস্তবায়নের জন্য মোট ৬০ কোটি রুপী বরাদ্দ করে ভারত। এর মধ্যে পিলখানায় ১৫ থেকে ১৭ কোটি টাকা বিলি হয়, যাতে প্রতিটি অফিসারের মাথার বদলে ৪ লক্ষ টাকা ইনাম নির্ধারন করা হয়। ১৯ ও ২১ ফেব্রুয়ারী ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার বাছাই করা ১৫ জন শুটারকে বাংলাদেশে প্রবেশ করানো হয়, যারা পশ্চিম বঙ্গ সরকারের পাঠানো (প্রেমের নিদর্শন) ১ লক্ষ মিষ্টির সাথে বাংলাদেশে ঢুকে। একজন বেসামরিক দর্জি’র কাছ থেকে বিডিআর এর পোশাক বানিয়ে বিডিআর সপ্তাহ উপলক্ষে পিলখানায় উপস্থিত থাকে শুটাররা। তাদের দায়িত্ব ছিলো লাল টেপওয়ালা (কর্নেল ও তদুর্ধ) অফিসারদের হত্যা করা। তারা একটি বেডফোর্ড ট্রাক ব্যাবহার করে ৪ নং গেইট দিয়ে প্রবেশ করে ২৫ তারিখ সকালে। ঘটনার দিন সকাল ১১টায় বাংলাদেশের কোনো সংবাদ মাধ্যম জানার আগেই ভারতের “২৪ ঘন্টা” টিভিতে প্রচার করা হয় জেনারেল শাকিল সস্ত্রীক নিহত। অর্থাৎ মূল পরিকল্পনা অনুসারেই খবর প্রচার করে ভারতীয় গণমাধ্যম!
পরিকল্পনা ব্যর্থ হলে বা আর্মির পদক্ষেপে শেখ হাসিনার জীবন বিপন্ন হলে তাকে নিরাপদে তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভারতীয় ৩০ হাজার সৈন্য, ছত্রীবাহিনী ও যুদ্ধবিমান আসামের জোরহাট বিমানবন্দরে তৈরী রেখেছিলো ভারত। বিদ্রোহের দিন ভারতের বিমান বাহিনী IL-76 হেভি লিফ্ট এবং AN-32 মিডিয়াম লিফ্ট এয়ারক্রাফট নিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে পূর্ণ সহায়তা দিতে পুরোপুরি প্রস্তুত ছিলো। ঐসময় প্রণব মুখার্জীর উক্তি মিডিয়ায় আসে এভাবে, “এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে সব ধরণের সহায়তা দিতে ভারত প্রস্তুত। … আমি তাদের উদ্দেশ্যে কঠোর সতর্কবাণী পাঠাতে চাই, যারা বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে, তারা যদি এ কাজ অব্যাহত রাখে, ভারত হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না, প্রয়োজনে সরাসরি হস্তক্ষেপ করবে।”
বিডিআর হত্যা কান্ড সমন্ধে জানার জন্য পড়ুন-
http://bdrmutiny.com/?page_id=193
এই লিংটিই পড়লেই বুঝতে পারবেন আসলে এই বিডিআর হতাকান্ডের সাথে কারা জড়িত।
বিষয়: বিবিধ
২৫৬৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন