সরকার ও বিরোধী দল কালবিলম্ব না করে যথাযথ পদক্ষেপের মাধ্যমে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে দেবে এই প্রত্যাশা সবার।

লিখেছেন লিখেছেন কিছু ৩১ অক্টোবর, ২০১৩, ০১:০৯:৫৭ দুপুর

হরতাল বা অবরোধের কারণে দেশের অর্থনৈতিক খাতে কী ধরনের বিপর্যয় নেমে আসে তা আর নতুন করে বলার কিছু নেই। আমদানি-রফতানিতে স্থবিরতাসহ ব্যবসা-বাণিজ্যে যে ধরনের স্থবিরতা নেমে আসে তা একটি উন্নয়নশীল দেশের জন্য কোনোভাবেই মঙ্গলজনক নয়। এ ধরনের কর্মসূচি নানাভাবে সরাসরি দেশীয় অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। দেশি-বিদেশি কোনো কর্মকাণ্ডেই নির্ধারিত সময়সূচি ঠিক রাখা সম্ভব হয় না। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে ইতোমধ্যে বিভিন্ন অর্থনৈতিক খাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ স্থগিত হয়ে গেছে। সড়ক-মহাসড়কে পণ্য সরবরাহসহ যে কোনো চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় স্বাভাবিক জীবন প্রবাহ যেমন বাধাগ্রস্ত হয় পর্যাপ্ত সরবরাহের অভাবে, তেমনি পণ্যের দাম হয়ে ওঠে আকাশছোঁয়া। তাছাড়া হরতালের নামে বছরব্যাপী যেভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও জানমালের ওপর হামলা চালানো হয়েছে তা কোনো সভ্য সমাজের চিত্র বহন করে না। রাজনৈতিক যে কোনো কর্মসূচি পালন করা প্রতিটি রাজনৈতিক দলের অধিকার হলেও নাগরিক নিরাপত্তার বিষয়টিকে উপেক্ষা করে তা হতে পারে না। কিন্তু বিগত দিনগুলোতে এই বিষয়টি বারবার উপেক্ষিত হয়েছে। হরতালে সহিংসতার কারণে একাধিক প্রাণহানি, অঙ্গহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আর এর শিকার হয়েছে সাধারণ মানুষ। সর্বশেষ হরতালেও একই চিত্র দেখা গেছে। পরবর্তীকালে অবরোধের মতো কর্মসূচি দেয়া হলে তা যে জনজীবনকে একেবারেই বিপর্যস্ত করে তুলবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আলোচনার বিষয়ে সরকারের আন্তরিকতার ওপর আস্থার অভাবই মূলত বিরোধী দলকে এ ধরনের কর্মসূচির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তবে জনগণকে জিম্মি করে রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করা সমর্থনযোগ্য নয়। দাবি আদায়ে এর বিকল্প খুঁজে বের করতে হবে রাজনীতিবিদদেরই। তাছাড়া নির্দিষ্ট এজেন্ডায় অনড় থাকলে আলোচনা হবে কী নিয়ে? সুতরাং এ ক্ষেত্রে ছাড় দিতে হবে। আলোচনার ব্যাপারে বিরোধী দলের সব ধরনের সন্দেহের অবসান ঘটিয়ে যে কোনো ধরনের বিরূপ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে জনস্বস্তি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারি দলের। একই সঙ্গে দায়িত্ব রয়েছে বিরোধী দলেরও। ভুলে গেলে চলবে না, তারাও জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি। যে কোনো উদ্যোগে জনগণকেই প্রাধান্য দিতে হবে। সে লক্ষ্যে পারস্পরিক সন্দেহ, দ্বন্দ্ব ও অবিশ্বাস থেকে বেরিয়ে এসে সুচিন্তিত উদ্যোগ নিতে হবে উভয় দলকেই। আলোচনার মাধ্যমেই সব সমস্যা থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে বের করতে হবে। সরকার ও বিরোধী দল কালবিলম্ব না করে যথাযথ পদক্ষেপের মাধ্যমে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে দেবে এই প্রত্যাশা সবার।

বিষয়: বিবিধ

১১২৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File