এসকে সিনহাঃ টক অফ দা কান্ট্রি।

লিখেছেন লিখেছেন তরবারী ২৩ আগস্ট, ২০১৭, ০৪:৪২:১৬ বিকাল

ষোড়শ সংশোধনী আর সাংসদ দের প্রকৃত অবস্থা এই দুই নিয়ে এসকে সিনহা টক অফ দা কান্ট্রি।

অতি উৎসাহী হওয়ার আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখা যায় কি !

খাদ্যমন্ত্রী আজকে বলেছে,প্রধামন্ত্রী নিজে বলেছে এবং ধমক দিয়েছে,উবায়দুল কাদের,আবুল মাল আব্দুল মুহিত সহ সকল আওয়ামীলীগ এর নেতাকর্মীরাই এসকে সিনহার নিয়োগ যে দলীয় এবং আনুগত্যের পুরষ্কার তা বারবার উল্লেখ করেছে।

তাদের উল্লেখ খুব বেশী বিবেচ্য না।এটা খুব সহজেই অনুমিত কিন্তু তার আগে একটা জিনিষ খুব স্পষ্ট আছে যে এই পদটি খুব সাধারণ কোন পদ না।পাশাপাশি বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতের নাক গলানো শুধু ভোটের ক্ষেত্রে না বিগত ৮ বছরে তা গুরুত্বপূর্ণ পজিশনে লোক নিয়োগের ক্ষেত্রেও সরাসরি ইচ্ছা অনিচ্ছার উপর হয়েছে এবং হচ্ছে।

আমার এক বন্ধুর একটি লিখায় সে উল্লেখ করেছে তার এক ছোট ভাইয়ের জজ হিসেবে নিয়োগ আটকে যাওয়ার ইতিহাস কিংবা বিসিএস এ উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও দুঃসম্পর্কের আত্মীয় বিএনপি বলে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স না পাওয়ায় ৮৩ জনের নিয়োগ না পাওয়ার কথা।শুধু মাত্র সাধারণ বিসিএস এর ক্ষেত্রে এতো কঠোরতা অবলম্বন যে সরকার করেছে সে সরকার এর কতটা আস্থাভাজন হলেই যে একজন প্রধান বিচারপতি হওয়া যায় তা বোধকরি ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন নেই।

তাহলে এসকে সিনহা কি ইউ টার্ন মানে আঞ্চলিক বাংলায় বললে পলটি মারলো নাকি নাটক?ব্যাপারটা একমাত্র আল্লাহ্‌ বা এসকে সিনহার ভগবান ছাড়া আর যারা জানতে পারে তারা হল এসকে সিনহা নিজে,শেখ হাসিনা এবং ভারত।তাই সিদ্ধান্ত নয় একটু আলোচনা করছি মাত্র।

প্রথমত,

সরকার নিজেও জানে তারা অবৈধ ভাবেই ক্ষমতায় টিকে আছে কিন্তু সরাসরি স্বীকার করা সম্ভব না আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যাবস্থা যেহেতু আর নাই তাই বিএনপি আসবে না যা বহির্বিশ্বে একটি সাধারণ নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে আর সরকারও তত্ত্বাবধায়ক দিবে না বলে যে পণ করেছে তার থেকে বের হয়ে এসে বিএনপির দাবী মেনে নিলে সরকার নিজেই নিজের চপেটাঘাত খাবে তাই এমতাবস্থায় খুবই স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ অথচ আওয়ামীলীগের বিপক্ষে যায় এমন দুইটি সিদ্ধান্ত প্রধান বিচারপতিকে দিয়ে দেয়ার মাধ্যমে বিরোধী দলের আস্থাভাজন করিয়ে প্রধান বিচারপতিকে সংসদ ভেঙ্গে যাবার পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার করে দিলে বিএনপি তখন টু শব্দটি করতে পারবে না এবং নির্বাচনে এসে নীলনকশায় চরম ভরাডুবি যখন হবে তখন আওয়ামীলীগ বৈধভাবে সরকার গঠন করে বলতে শুরু করবে ২০১৪ একটা ভুল ছিল কিন্তু উন্নয়ন আর জনগণের পাশে থাকায় জনগণ অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে তাদেরকে আরও বেশী ভালোবাসা দিয়েই আবার ক্ষমতায় এনেছে যেন তারা জনগণের সেবা করতে পারে।এতে করে বহির্বিশ্বে বৈধতা যেমন পাবে তেমনই বিরোধী দল তথা বিএনপিকে একেবারে শেষ করে দেয়া যাবে।

দ্বিতীয়ত,

এমনও হতে পারে যে ভারতের প্রেসক্রিপশনে এসকে সিনহা সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নিজেই ক্ষমতা দখলের মাধ্যমে দেশে অন্যরকম একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে যাতে করে গৃহযুদ্ধ সৃষ্টি হয়ে যেতে পারে এবং এই সুযোগে ভারতকে এদেশে সরাসরি আসার আমান্ত্রন জানানো হতে পারে যেন তারা এসে দেশের আভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি রক্ষা করতে সাহায্য করে।এ ক্ষেত্রে বুদ্ধিজীবীরা সবচেয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে কারণ তাদের মাথা ইতিমধ্যেই কিনে নিয়েছে ভারত।আর এই সুযোগে পরোক্ষভাবে যে নিয়ন্ত্রণ চলছে তা প্রত্যক্ষ্যভাবে ভারত নিয়ন্ত্রিত হয়ে যাবে।

তৃতীয়ত,

এমনও হতে পারে যে এসকে সিনহার সংসদ নিয়ে দেয়া রায়ের পর নিজেই তত্ত্বাবধায়ক সেজে পরিকল্পনামাফিক বিএনপিকে ক্ষমতায় এনে দিবে।কারণ এই মুহূর্তে পাবলিক সাপোর্ট মুটামুটি থাকলেও বিএনপির নেতৃত্ব টালমাটাল অবস্থায় এবং নেতৃবৃন্দ নিজেদের মধ্যেই আস্থার বিশাল সঙ্কটে ভুগছে যার ফলশ্রুতিতে একটি জনসমর্থনপুষ্ট কিন্তু নেতৃত্বের কোন্দলে দুর্বল সরকারে পরিণত হবে যখন মাঠ পর্যায়ে আওয়ামী ক্ষোভের বিস্ফোরণে দেশে একটা অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে যেখানে প্রশাসনে নিয়োগপ্রাপ্ত আওয়ামীলীগ এর লোকজন পুরোদমে সরকার কে সাহায্য না করে মূলত গৃহযুদ্ধ বাধাতে সাহায্য করবে।এর মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশ ও আর্মিতে কর্মরত ভারতীয় লোকজন ও 'র এর কর্মকর্তারা প্রত্যক্ষ মদদ দিবে আর তখনই ভারতীয় সরাসরি হস্তক্ষেপ আসবে প্রতিবেশী দেশকে বাঁচাতে।কারণের ভারতের কাছে আওয়ামীলীগ বা বিএনপি গুরুত্বপূর্ণ না,গুরুত্বপূর্ণ এই দেশ।এর মাধ্যমে ভারত তার ৭০ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম কে পরিপূর্ণভাবে পূর্ণতা দিবে।

চতুর্থত,

এইসব ক্যাচালের মাধ্যমে আপাতত ২০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ও ভয়াবহ বন্যার পরিস্থিতিকে আড়াল করে সম্ভাব্য ক্ষতির আলোচনাকে সামনে যেন না আনা হয় কারণ এই বন্যা সম্পূর্ণ ভারত সৃষ্ট যা প্রমাণিত তাই হয়তো চেষ্টা করা হচ্ছে।কারণ বাংলাদেশীরা এক কাহিনী বেশিদিন চালায় না এটা হাসিনা আর ভারত কিংবা সিনহা সাহেব ভালো করেই জানে।দুইদিন পর এটাও ভুলে যাবে,বন্যাও ততদিনে কিছুটা স্বাভাবিক হলে হাসিনা চোখের জল মুছে খাঁটি দেশপ্রেমিক হয়ে যাবে।যা তার রাজনীতির আয়ু দির্ঘায়িত করবে।

পঞ্চমত,

"ঘর পোড়া গরু,সিঁদুরে মেঘ দেখলে ডরায়" এ থেকে বের হয়ে অতি আশাবাদীদের (যারা ৮ বছর ধরেই ক্ষমতার আশায় ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে শুধু আশাই করে যাচ্ছে) কথায় যদি সত্যি দেবদূতের মত সিনহার উত্থান হয়ে থাকে তবে তাকে সত্যিই মিরাকলই বলতে হবে কারণ বাংলার ইতিহাসে এমন মানব যেহেতু কখনো আর দেখা যায় নাই।

গত ৮ বছরে আওয়ামীলীগ রাজনৈতিক ভুল কোনটাই করেনি বরং বারেবারেই নানারকম ভানুমতীর খেল দেখিয়ে ভেল্কিবাজি করে গেছে।অতএব ঘটনা যাই হউক না কেন সাধু সাবধান।অতীত থেকে শিক্ষা নিন মানে অনেক আগের অতীত না,আওয়ামীলীগের আমলে প্রতিটি গতকালই একটি মহামূল্যবান শিক্ষণীয় অতীত।

অতি উৎসাহী এর আগেও বিএনপি জামায়াত বারবার হয়েছে।কিন্তু ফলাফল কি?

বিষয়: রাজনীতি

১১৮৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File