কোরবানি-হজ্ব এর ত্রাণ

লিখেছেন লিখেছেন তরবারী ১৯ আগস্ট, ২০১৭, ০২:১৫:০৩ রাত

আজ কয় তারিখ !!

১৫ই আগস্ট বন্যা পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছিল,আর আশঙ্কা তার আগে থেকেই করা হচ্ছিল যে ২০০ বছর এর রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে এবারের বন্যা।

বন্যার ত্রাণ আর জীবিত মানুষের বাঁচানোর দাবী যেখানে মুখ্য সেখানে সেইদিন হাজার হাজার গরু জবাই করে বিরিয়ানির উল্লাস যখন করা হচ্ছিল তখন গরু প্রেমী বা প্রাণী প্রেমীদের কাউকেই দেখি নাই।

তো হঠাত কুরবানির গরু কোরবানি নিয়ে মায়াকান্নার কারণ কি!

নাহ,কোনই কারণ নেই,বিগত কয়েক বছর ধরেই এই কাহিনী চলে আসছে,কোরবানি বন্ধ করার ছুতো।এইবার বন্যাকে সামনে রেখে ছুতোর নতুন বাহানা পেয়ে গেছে তারা।

কিছু লোকজন হজ্ব এ না যেয়ে তাও দান করতে বলেছে।বেশ,চমৎকার।

কারা তারা !

এরা তারাই যাদের নাম মুসলিম মুসলিম মনে হয়,কিন্তু ইসলাম সম্পর্কে তাদের ধারণ এতোটুকুই যে "ইসলাম শান্তির ধর্ম",নাহ ইসলাম সম্পর্কে এদের স্টাডি আছে না প্রাকটিস।কোরআন কোনদিন ব্যাখ্যা সহ তো দূরের কথা অর্থও সহ ওঁ কখনো এরা পরে দেখেনি কিন্তু নিজেকে ইসলামিক স্কলার ওঁ দাবী করে।যাই হউক প্রসঙ্গ তা না।

ত্রাণ দেয়া নাকি কোরবানি ওঁ হজ্ব বন্ধ করার দাবী এদের মুখে?

প্রথমত কোরবানি যে করে সে গোশত খাওয়ার জন্য না,হজ্ব যে করে সে পিকনিক করতেও যায় না।কিন্তু কারা করে এই দুইটা?

যাদের সামর্থ্য আছে,তাই না?

তো যে সকল লোক কোরবানি করতে পারে ত্যাগের জন্য তারা ত্রাণ ওঁ দিতে পারে মুক্ত হস্তে কারণ তারা ত্যাগ এর মানে শিখেছে।

কিন্তু যারা এই ব্যাপারে কথা বলছে তারা?

৮৪ হাজার কোটি টাকা যখন দেশ থেকে লুট হয়ে যায় তখন তারা দাবী জানায় না কেন যে এই ৮৪ হাজার কোটি টাকা এনে বন্যার্তদের সাহায্য করা হউক?

২ হাজার কোটি টাকাকে যে অর্থমন্ত্রী মামুলি বলে সে কেন ২০০ কোটি টাকা এনে দিচ্ছে না বন্যার্তদের?

বড় পয়সাওয়ালা সাল্মান এফ রহমান! কই ঘোষণা দেয় আন কেন ৫০০ কোটি টাকা দিয়ে দিবো ?

জয় এর কথা বলছি,কত বেতন নেয়? সে কেন ঘোষণা দেয় না যে এতো কোটি টাকা আমি দিয়ে দিলাম?

শেখ রেহানা কোটি টাকা ঘুষ নিয়ে যে সকল পদ পদবী দেয় সে কেন কয়েক কোটি টাকা দিচ্ছে না?

৩৫০ মানুষ নিয়ে যখন সাধারণ মিটিঙয়ে যায় প্রধানমন্ত্রী সেখানে মাত্র ৩০ জন নিয়ে গিয়ে বাকী টাকা কেন দান করে না?

এটিএন এর চ্যারম্যান তার বউকে নিজের টাকায় পুরষ্কার দিতে ইন্ডিয়া গিয়ে নিজেই অনুষ্ঠান আয়োজন করে বেহুদা টাকা খরচ না করে সেই টাকা কেন দান করে না?

শাহবাগে দিনের পর দিন বিরিয়ানি না খাইয়ে সেই টাকা কেন দানের কাতারে যায় না?

এরকম হাজার হাজার কথা বলা যাবে,কিন্তু দানের ক্ষেত্রে এসব না বলে কোরবানি আর হজ্ব কাদের মাথায় ঘুম হারাম করার ঝিঁঝিঁ শব্দ করে?

তারা বড় গলায় নিজেদের মুসলমান পরিচয় দেয় কিন্তু খুব সুশীল সেজে তারা শুধু হিজাব বন্ধ,কোরবানি বন্ধ,মসজিদে আজান বন্ধ আর হজ্ব বন্ধই তাদের মূল এজেন্ডা।

যদি তাই নাই হয় তবে প্রাণী মমতার অংশ হিসেবে মোড়ে মোড়ে বার্গার আর চিকেন শপ বন্ধের জন্য তো তো তাদের কোন দৌড় দেখি না,

শোক দিবসে হাড়ির পর হাড়ি বিরিয়ানির সময় তাদের কান্না দেখি না,বিয়ের পার্টিতে মুরগীর রোস্ট আর গলদা চিংড়ির সময় তাদের মায়া মমতা আর ভালোবাসা কই থাকে?

যে দাদাদের কথায় ৩০০ বছর ধরে তারা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর সমস্ত রকম চেষ্টা করে যায় বা যাচ্ছে তাদের বলির পাঠার ব্যাপারে তাদের মায়া মমতা কোথায়?

প্রাণ শুধু গরুর আছে আর বাকী সব কিছু প্রাণহীন জড় পদার্থ?তবে কাল থেকে প্রাণীর সংজ্ঞা পরিবর্তন করে সকল বই ছাপানো হউক।

বিষয়: রাজনীতি

১২৬৭ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

383814
১৯ আগস্ট ২০১৭ সকাল ১১:৪৪
হতভাগা লিখেছেন : বাংলাদেশী মুসলমানদের ঈমান বেশ নড়বড়ে । এসব মুসলমান নামধারী ইসলাম বিদ্বেষীরা এটা জানে । তাই এরকম কথা বলে মুসলমানদেরকে একটা কনফিউশনে ফেলে দেবার সুযোগ তারা হাড়ছাড়া করে নি ।

ত্রান কার্য পরিচালনা করা সরকার ও সরকারের প্রশাসন যন্ত্রের কাজ । এটা উনারা জেনেও না জানার ভান করছেন ।

যারা এরকম লোক দেখানো মহানূভবতা দেখাচ্ছেন তারা পরকালে সামর্থ্য থাকার পরও হজ না করার কি কারণ দেখাবেন?

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File