বাস্তবতা-শিক্ষা ব্যাবস্থা আর অবস্থা-১
লিখেছেন লিখেছেন তরবারী ২০ মে, ২০১৭, ০৭:৪৯:২৬ সকাল
বাংলালিংকের একটা বিজ্ঞাপন ছিল
"আড়তদারদের জাল ছিঁইড়া বাইর হইতে পারে নাই আমার বাবা,তার বাবা,তার বাবা"
আবেগঘন বিজ্ঞাপনের তিক্ত সত্য কথার মূর্তিমান আয়না যেন বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যাবস্থা --- যারাই এর ভিতরে ঢুকেছে বা ঢুকছে তারা কেউই বের হতে পারছে না,যেমন বের হতে পারে নি তার বাবা,তার বাবা।
প্রতিষ্ঠিত হতে যে ছেলেটির জীবনের অর্ধেক বা তারও কিছু সময় পার করে দিতে হয় শুধু প্রতিষ্ঠিত শব্দের সিঁড়িতে পা রাখতে তার নিজের জীবনের আপন বলতে আর কি থাকে!
"কুল রাখি না শ্যাম রাখি" এই দ্বিধাতে পরে হয় বিবেকের ঘরে তালা মেরে কালো চশমা পড়ে অথবা বিবেকের সাথে যুদ্ধ করতে করতে নিজেই শামুকের মত পেঁচিয়ে যায় যা খুলতে গেলে শুধু ভাঙ্গন আর নিঃশেষের গল্প লিখা হয়।
কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছেলে মেয়ে যাদের বাবাই একেকটা ছাদ তারা হয়তো পড়াশোনা শেষ করেই বাবার ছাদের নিচে যেয়ে আশ্রয় নেয় তবে ৯০ শতাংশের অধিক ছেলে মেয়ের স্বাভাবিক দেশীয় চাপিয়ে দেয়া শিক্ষা ব্যাবস্থার গণ্ডী পেরুতে বয়স ২৫/২৬ ছুঁইছুঁই করে আর সেই সময়ে বাবা মা যখন ঝাপসা চোখে চেয়ে থাকে ছেলে বুঝি ব্যাজার করে ফিরলো তা আর না হয়ে ছেলেটি বাবার কাছে চিঠি পাঠায়
"আর কয়টা দিন সুবুর করো রসুন বুনেছি" - তাই জমি ও বীজের জন্য আরও কিছু টাকা পাঠাও।রসুন উঠবে বলে ভেবে বাবা,দিতে দিতে কেউ হয়তো ওপারে চলে যায় কেউ সর্বস্বান্ত আর কেউ চাকুরী নামক সোনার হরিণ পেতে পেতে ২৯/৩০।
একদিকে বাবা সর্বস্বান্ত অন্যদিকে ছেলের বয়স হল তো বিয়ে করতে হবে।বাবাকে দেখবে না বিয়ে না ঋণ!তবুও বিয়ে তো আর পিছানো যায় না।ব্যাস শুরু হল শ্যাম আর কুলের ঠুকাঠুকি।আধুনিক সময় এই যুদ্ধে পিতামাতাকে হয়তো বৃদ্ধাশ্রম খুঁজে নেয় ছেলেটি বউয়ের সাথে ঝগড়া আর সন্তানকে বাবার মত করে আগলে রাখার কাজটি করে যায়।
এই সাইকেলে সেও একদিন হয় বৃদ্ধ পিতা আর তার ছেলেও ৩০/৩২ ছুঁয়ে শ্যাম কুলের যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়।
কারো জীবনের সুখ আসার আর ফুসরত পায় না।
মূলত সামগ্রিক শিক্ষার অব্যবস্থাপনাই এর জন্য দায়ী।শিক্ষা যখন বিজনেস আর পুঁথিগত বিদ্যার নামীদামী সার্টিফিকেটের কেনাবেচা তখন ব্যাক্তি অস্থিরতাই তো দূর হয় না দেশ নিয়ে ভাবার মানুষ বা জাতি কিভাবে জন্ম নিবে!
(চলবে)
বিষয়: বিবিধ
৮১৫ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন