আলহাজ্ব,হাজী ও তারপর !!
লিখেছেন লিখেছেন তরবারী ১৬ অক্টোবর, ২০১৬, ০২:৪৪:৫২ রাত
আচ্ছা ---
নবিজীর নামের আগে আলহাজ্ব লাগানো উচিত না !!!
(দুঃখিত কেউ ধৃষ্টতা হিসেবে নিবেন না,আগে বুঝুন তারপর মন্তব্য করুন)
হজ্বে গিয়েছেন,তাই নামের আগে আলহাজ্ব লাগিয়েছেন,কোন যুক্তিতে? নবিজী লাগিয়েছিলেন বা দলীল আছে?
যদি হজ্বে গেলে আলহাজ্ব হয়
তবে নামাজ পড়লে
নামাজি মোঃ যদু মদু কেন হবে না?
বা তাহাজ্জুদি শেফালী বেগম কেন হবে না?
আপনার ইবাদত অনেক বড় তাই?
কোন দিক দিয়ে?পয়সা খরচ করে গিয়েছেন এই জন্য? কোন দলীল আছে?
যারা নিজের নামের আগে আলহাজ্ব লাগান তাদেরকে বলছি,আল্লাহ্ কে ভয় করুন।
আর যারা নিজে লাগান না অন্য কেউ লাগিয়ে দেয় তাদের বলছি তেল মেরে তেল লাগিয়ে ইসলামিক শো করা যায়,তবে আল্লাহ্র প্রিয় হওয়া যায় না।
আর আপনি যদি বলেন যে আপনি লাগান নাই,লোকজন লাগিয়ে দিয়েছে তবে আপনি কি তাদের বুঝিয়েছেন,না করেছেন?
আমার দাদি একটা কথা বলতো,
মক্কা গেছে হজ্ব করতে,নাম দিয়েছে হাজী
ব্রহ্মপুত্র নদী পার হতেই,যেই পাজি সেই পাজিই।
মনের পঙ্কিলতা দূর না করলে,হজ্ব করলেই কি হবে?
যাই হউক নীচের টুকু পড়বেন প্লীজ ---
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
“আমি তোমাদের ব্যাপারে ছোট শিরক থেকে খুব ভয় করছি। সাহাবীরা বললেন – ইয়া রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম! ছোট শিরক কি? রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তা হলো “রিয়া” বা লোক দেখানো ইবাদত। যেদিন আল্লাহ তাআ’লা বান্দাদের আমলের পুরস্কার প্রদান করবেন, সেদিন রিয়াকারীদেরকে বলবেনঃ যাও, দুনিয়াতে যাদেরকে দেখানোর জন্য আমল করতে, তাদের কাছে যাও। দেখো তাদের কাছ থেকে কোনো পুরস্কার পাও কিনা?”
মুসনাদে আহমাদ, সহীহ ইবনে খুজায়মা, হাদীসটি সহীহ – শায়খ আলবানী।
আল্লাহ্ বলেন,
“(আমি ছাড়া অন্যের সন্তুষ্টির জন্য) তারা যেসব আমল করবে, আমি তাদের কৃতকর্মের প্রতি মনোনিবেশ করব, অতঃপর সেইগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করে দেব।”
সুরাহ আল-ফুরকানঃ ২৩।
কিয়ামতের দিন ‘রিয়াকারী’ বা লোক দেখানো আমলকারীর বিচার সবার প্রথম হবেঃ
কিয়ামতের দিন প্রথমে যেসব লোকের বিচার করা হবে তাদের মধ্যে একজন হচ্ছে ‘শহীদ’ ব্যক্তি। তাকে উপস্থিত করে আল্লাহ তাঁর নেয়ামতসমূহ স্মরণ করিয়ে দিবেন। সে তা স্বীকার করবে। অতঃপর, আল্লাহ তাকে জিজ্ঞেস করবেন আমার দেয়া নেয়ামতের বিনিময়ে তুমি কি আমল করেছ? উত্তরে সে বলবেঃ আমি আপনার দেওয়া নেয়ামতের বিনিময়ে আপনার রাস্তায় জিহাদ করে শহীদ হয়েছি। আল্লাহ বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলছে; বরং তুমি এই উদ্দেশ্যে জিহাদ করে শহীদ হয়েছিলে যাতে করে লোকেরা তোমাকে শহীদ বলে আখ্যায়িত করে। পৃথিবীতে তা বলা হয়ে গেছে। অতঃপর তাকে মুখের উপর উপুড় করে টেনে হিঁচড়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
অতঃপর, এমন একজন ‘আলেমকে’ উপস্থিত করা হবে যে দ্বীনি ইলম অর্জন করেছে এবং মানুষকে তা শিক্ষা দিয়েছে এবং কুরআন পাঠ করেছে। অতঃপর তাকে আল্লাহর নেয়ামতসমূহ স্মরণ করানো হবে। সেও তা স্বীকার করবে। আল্লাহ তাকে জিজ্ঞেস করবেনঃ আমার দেয়া নেয়ামতের বিনিময়ে তুমি কি আমল করেছ? সে বলবেঃ আমি আপনার দেওয়া নেয়ামতের বিনিময়ে দ্বীনি ইল্ম অর্জন করেছি, অন্যকে তা শিক্ষা দিয়েছি এবং আপনার জন্যে কুরআন পাঠ করেছি। আল্লাহ বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলছো; বরং তুমি এই জন্যে বিদ্যা শিক্ষা করেছিলে যাতে করে মানুষ তোমাকে আলেম বলে। আর এই জন্যে কুরআন পাঠ করেছিলে যাতে লোকেরা তোমাকে কারী বলা হয়। পৃথিবীতে তোমাকে এই সব বলা হয়ে গেছে। এরপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপের আদেশ দেয়া হবে। অতঃপর নাক ও মুখের উপর উপুড় করে তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
এরপর ঐ ব্যক্তিকে আনা হবে যাকে আল্লাহ নানারকম ধন-সম্পদ দান করেছিলেন। আল্লাহ তাকে জিজ্ঞেস করবেন, আমার দেয়া নেয়ামতের বিনিময়ে তুমি কি আমল করেছ?
সে বলবেঃ আপনি যেসমস্ত পথে খরচ করা পছন্দ করেন তার কোন পথই আমি বাদ দেইনি, সকল পথেই খরচ করেছি। আল্লাহ বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলছো; বরং তুমি এই জন্য খরচ করেছো যাতে করে মানুষ তোমাকে ‘দানশীল’ বলে। পৃথিবীতে তোমাকে তা বলা হয়ে গেছে। অতঃপর তাকে মুখ ও নাকের উপর উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপের আদেশ দেয়া হবে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
সহীহ মুসলিমঃ কিতাবুল ইমারাহ।
রাসূলে আকরাম (সাঃ) বলেছেনঃ
“কিয়ামাতের দিন যখন আল্লাহ তায়ালা তাঁর সত্ত্বার কিয়দংশ উন্মোচিত করবেন, তখন ঈমানদার নারী-পুরুষগণ সকলেই তাঁর সম্মুখে সিজদায় পড়ে যাবে। তবে সিজদা থেকে বিরত থাকবে কেবল ঐ সমস্ত লোক, যারা দুনিয়াতে মানুষকে দেখানোর জন্য ও প্রশংসা পাওয়ার জন্য সিজদা (সালাত আদায়) করতো। তারা সিজদা করতে চাইবে বটে, কিন্তু তাদের পিঠ ও কোমর কাঠের তক্তার মত শক্ত হয়ে যাবে।”
বুখারী, মুসলিম, মিশকাতঃ ৫৩০৮।
বিষয়: বিবিধ
১০৭৬ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন