সাধারণ কিছু আচরণের ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকা উচিত।
লিখেছেন লিখেছেন তরবারী ১৪ আগস্ট, ২০১৬, ০৩:৫১:১০ দুপুর
আচরণের কিছু বিষয় আছে যা আমরা খেয়াল করি না,অথচ ব্যাপারগুলো অবচেতন মনে এড়িয়ে গেলেও খুব গুরুত্বপূর্ণ এসব।সামনাসামনি এসব বিষয়ের কোন প্রতিক্রিয়া না দেখা গেলেও সামগ্রিকভাবে এ বিষয়গুলো মারাত্মক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে।
প্রথমত,
সরি বা দুঃখিত বলা।
মানুষ মানুষে স্বাভাবিক আচরণ হল সবচেয়ে বড় মানবতা।কোন কাজে কেউ কষ্ট পেটে পারে বা কোন সামান্য ভুল হলে ইগো দেখানো মানুষকে বড় করে না।বরং সরি বলার মাধ্যমে মহত্ত্ব যেমন বাড়ে তেমনি পরবর্তীতে ক্ষোভের উদ্রেক করতে পারে এমন অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত সম্পর্ক ভাঙ্গনের অবস্থা বা অবনতির থেকে এই সরি শব্দ টা উদ্ধার করে স্বাভাবিক মানবিক হতে সাহায্য করে।
দ্বিতীয়ত,
ধন্যবাদ বা থ্যাংক ইউ জ্ঞাপন টা স্বাভাবিক ভাবে খুব সামান্য মনে হলেও এর ইমপ্যাক্ট টা খুব গুরুত্বপূর্ণ।তাতে সৌহার্দ বাড়ে,ভালোবাসা,স্নেহ,শ্রদ্ধা বাড়ে।
আমাদের কালচারে শুধু ছোটরাই এসব প্র্যাকটিস করবে এমন ধারনা প্রচলিত অথচ এটা সকলের জন্য প্রযোজ্য।বরং বাবা মা,শিক্ষক মুরুব্বিরাই বরং এই প্র্যাকটিস বেশী বেশী করা উচিত।তাতে সাম্য প্রতিষ্ঠিত হবে।
তৃতীয়ত,
প্লীজ বা দয়া করে বলা টা কে অনেকেই আত্মসম্মানবোধের সাথে মিলিয়ে ফেলে।আসলে সম্মান এমন এক জিনিষ যা অটো হয়,জোর করে আনা যায় না।জোর করে ভয় দেয়া যায়,সম্মান অর্জন না। ছোট বড় সকলেরই উচিত যে কোন কাজের ক্ষেত্রে প্লীজ ব্যাবহার করা।এতে ছোট হওয়া হয় না বরং এই একটি শব্দ অনেক অসাধ্যকেও সাধন করতে পারে।
চতুর্থত,
আমাদের সংস্কৃতি অনুযায়ী আপনি,তুমি,তুই শব্দের এক বহুল ব্যাবহার আছে।ইংরেজি ছাড়া পৃথিবীর অনেক ভাষায় এরকম ব্যাবহার আছে।অপরিচিত সে যেই হউক তাকে আপনি সম্বোধন করা সাধারণ ভদ্রতা সেই সাথে সম্পর্কের ধরন অনুযায়ী শব্দের ব্যাবহার করা উচিত,সম্পদের বা বেশভূষার উপর নির্ভর করে এই শব্দগুলোর প্রয়োগ মূলত সামাজিক বৈষম্য সৃষ্টি করে যা স্তর বিন্যাসের মাধ্যমে মূলত রেসিজম কে উৎসাহিত করে।আর যে সম্পর্কগুলোতে অটো কিছু অবস্থার সৃষ্টি না করে সেখানে তুমি তুই বলাটা চরম অভদ্রতা।যেমন শিক্ষক ছাত্রকে তুমি,তুই বলে সম্বোধন করবে এটাই চূড়ান্ত।কিন্তু বাইরের কাউকে দেখেই তুমি তুই বলাটা বেয়াদপি এবং অভদ্রতা।
পঞ্চমত,
আমরা অনেকে মোবাইলে নামের সেইভের ক্ষেত্রে একধরনের বেয়াদপি করি।যেমন অমুক কে আমি ভাই ডাকি বা আঙ্কেল বা কিছু একটা ডাকি।কিন্তু মোবাইলে নাম সংরক্ষণের ক্ষেত্রে আমরা ওই ব্যাক্তির শুধু নাম লিখি।যা অত্যান্ত আপত্তিকর।কারণ ওই ব্যাক্তিটি কখনো কোন সময় যদি নিজের নামকে ওই মোবাইলে অভাবে সেইভ করা দেখে তবে সে মনে মনে কষ্ট পায়।আর এটা আসলে এক ধরনের অশালীন আচরণ ও বটে। নামটি সংরক্ষণ করলে ভাই,আঙ্কেল বা যা ডাকি সেই বিষয়টিও এক সাথে সংরক্ষণ করা উচিত।
ষষ্ঠ,
আমরা একজন আরেকজন কে ভাই,আঙ্কেল বা এসব কিছু ডাকি।কিন্তু দেখা যায় ওই ব্যাক্তিটি সামনে উপস্থিত না থাকলে তার নাম ধরে আলোচনা করি।যেমন একজন এর নাম রতন,তাকে আঙ্কেল ডাকি,কিন্তু একটু আড়াল হলেই তার নাম নেয়ার সময় বলি,রতন এইটা করেছে,ওইটা করেছে।এসব ও অশালীন অভদ্র চর্চা।কারণ সম্মান করলে সম্মানের মতই করা উচিত।না করলে সামনা সামনি ভাব দেখিয়ে মুনাফিকি আচরণ করা উচিত না।
সবশেষে,
আমরা মানুষ সম্পর্কে একদিনেই বা একদিক দেখেই মন্তব্য করি।এটা আপন যোগ্যতার দৈন্যতা।মানুষ সম্পর্কে মন্তব্য এর ক্ষেত্রে আমাদের সময় নেয়া উচিত এবং সামগ্রিক বিবেচনায় মতামত দেয়া উচিত।
নিজের পারসোনালিটি কিন্তু নিজের মুখের খই দিয়ে ফুটে না,আপনার প্রতিটা কাজের মাধ্যমেই ফুটে উঠে।
আমাদের বিশেষ করে শিক্ষিত মানুষদের কেই এসব ক্ষেত্রে মুল ভূমিকা পালন করতে হবে।মানুষ যে আমরা সৃষ্টির সেরা জীব তা মানবিক আচরণ দিয়েই প্রমাণ করতে হবে।
বিনয় মানুষকে সম্মানিত করে।
বিষয়: বিবিধ
১০৯০ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
০ ইগো না দেখাতে পারলে মানুষ আপনাকে গনায় আনবে না । সরি আগে বলে ফেললে নিজের ওয়েট কমে যায় ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন