জুনায়েদ
লিখেছেন লিখেছেন তরবারী ২১ মার্চ, ২০১৬, ১২:১২:২১ দুপুর
জুনায়েদ অনেক খারাপ কাজ করেছে,সে ঔদ্ধ্যত্ত দেখিয়েছে,সে হেন করেছে তেন করেছে,ছিঃ ছিঃ আল্লাহ ছেলেটা কি আজব!
এই সব কথার পিঠে কথার মালা চলে গত কয়েকদিন ফেইসবুক জুনায়েদময় হয়ে গেছে,আর হচ্ছে নানা ভিডিও নানা আলোচনা।
কুল গাইজ,কুল !
জুনায়েদ কি করেছে?আর নুরুল্লাহ কেন মাইর খেয়েছে?এটা কি বিশাল বিষয় যখন এই ঘটনা ঘটাবো বলেই আমরা প্রতিজ্ঞা করেছি।জুনায়েদকে শাস্তি দেয়ার জন্য আশা ব্যাক্ত করা হয় কিন্তু এই জুনায়েদদের তৈরি করতে যারা রসদ জুগিয়েছে বা যোগাচ্ছে তাদের বিচার কবে হবে?
জুনায়েদ হল প্রোডাক্ট,প্রডিউসার তো জুনায়েদ না।প্রডিউসার তো সমাজের মাথা আর নীতিনির্ধারকরা।
পাশ্ববর্তি দেশ ভারত যখন আমাদের আকাশ বিনামূল্যে ব্যাবহার করে সংস্কৃতির গায়ে কাফন চড়িয়ে দিয়েছে,তখন বিজাতীয় সংস্কৃতি দেশের প্রতিটি অলি গলি থেকে মানুষের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এমনভাবে প্রবেশ করেছে যে গত কয়েকবছর গার্লফ্রেন্ড আর বয়ফ্রেন্ড নামক বিষাক্ত শব্দগুলো এমন ভাবে আমাদের সমাজে ছড়িয়ে পড়েছে যে এখন আর লুকোচুরির খেলাও বন্ধ হয়ে গেছে।এমনকি এইসব বিষয় বাবা মায়ের সামনে পর্যন্ত আলোচনা করতে বা কে অপরের বাসায় আসা যাওয়া করতে আজকালকার ছেলেমেয়েরা নুন্যতম লজ্জাবোধ অনুভব করে না।
ধর্মের কোন বিষয় যদি না আনি তাহলেও স্যার হুমায়ুন আহমেদ এর উক্তি দিয়ে একটি কথা বলতে পারি
"ছেলে মেয়েদের মধ্যে কখনো বন্ধুত্ব হতে পারে না"
তারমানে এটা পৃথিবীর অসম্ভব একটি বিষয় ছেলেমেয়েদের মধ্যে বন্ধুত্ব,বরং তাদের মধ্যে মানসিক এবং দৈহিক আদানপ্রদানের একটি সম্পর্কই বিরাজমান হবে।সেই সম্পর্ক যেখানে মানুষকে মানুষ থেকে পশুতে রূপান্তর করে বিয়ের পরই সেখানে বিয়ের আগে কিভাবে তাদের ঠাণ্ডা রাখবে।
আর যখন ঠাণ্ডা রাখা অসম্ভব হয়ে যায় তখন নেশা মানুষকে দেয় এক সঙ্গ।এই দুই সঙ্গ মানুষের মুল চরিত্রকেই ধ্বংস করে দেয়।ফলশ্রুতিতে অবৈধ সম্পর্ক,ভ্রূণ নষ্ট,পরিত্যক্ত বাচ্চার পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া একটি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় রূপান্তরিত হয়েছে।
নৈতিক শিক্ষার অনুপস্থিতি,যৌনতার তাড়না বৃদ্ধিকারক উপাদানের ছড়াছড়ি জুব সমাজকে বিকলাঙ্গ করে দিয়েছে।আর এই বিকলাঙ্গতার ফসল হল জুনায়েদ আর নুরুল্লাহ।
এই পিঠ টি যখন প্রবলভাবে আমরা অভাববোধ করছি তখন আরেকটি বিষয় ও অপরাধ প্রবণতাকে উসকে দিচ্ছে এমনকি উৎসাহ দিচ্ছে নিপুণভাবে।
সরকার যারা চালায় তাদের মধ্যে প্রতিদিন যে সকল ঔদ্ধ্যতপনা প্রতিদিন দেখা যায় এবং তার কোন বিচার হয় না তখন আশেপাশের মানুষগুলো অপরাধে পাচ্ছে উৎসাহ।
হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার থেকে শুরু করে গুম,হত্যা,চাঁদাবাজি এইসব কিছু যখন যে যার মত দম্ভ ভরে করে এবং ভিক্টিম কে শাসায় এবং বলে কোন মন্ত্রী এলেও কিছু করতে পারবে না ,কোন বাবা আছে খবর দাও এসব আর তারপর কোন বিচার হয়না তখন আগামিদিনের ওই সব লোকদের জেরক্স কপি হয়ে উঠে জুনায়েদদের মত ছেলেরা।
জুনায়েদদের বিচার অর্থহীন এবং তাদের বিচারের আগে কোন প্রশ্ন ছাড়াই আগে বিচার করতে হবে তাদের উৎসাহদাতাদের।না হলে এই বিচার শুধু আইন কানুন শব্দটিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার এর উপাদান হিসেবেই ব্যাবহৃত হবে।
আর বিচারের নামে একটি দুটি ছেলে দের শাস্তি দেয়ার নাম আইন হতে পারে না বরং আগামী দিনে এইসব ঘৃণ্য অপকর্ম বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দেয়ার নাম ই হবে আইনের প্রথম ও প্রধান কাজ।না হলে এটা রাষ্ট্রযন্ত্রের হাতিয়ার ছাড়া আর কিছুই হবে না এবং দেশ দিন দিন একটি বিকলাঙ্গ অসুস্থ দেশে পরিণত হতেই থাকবে।
বিষয়: বিবিধ
১২৩৩ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন