ধর্মদ্রোহীদের প্রতি আমাদের করনীয় আসলে কি?

লিখেছেন লিখেছেন তরবারী ০১ ডিসেম্বর, ২০১৪, ১০:১১:৩৪ সকাল

ছোট মানুষ ছোট চিন্তা,তবে ভেবে দেখে নিলাম অনেক।যা হউক ভূমিকা বা ভণিতা বেশী করার ইচ্ছা নেই,সরাসরি শুরু করে দেই।দ্বিমত থাকলে আগে বাড়েন,পারলে যুক্তি এবং চিন্তার বিকাশ করুন।

বাংলাদেশের রাজনীতির মোড় অনেক বেশী উল্টে গেছে,রাজনীতিতে ধর্ম নিয়ে কাড়াকাড়ি মারামারি এক ব্যাপক আকার ধারণ করেছে,করাটাই স্বাভাবিক,কারণ যেখানে ৯০ শতাংশ মুসলমানের দেশ,সেখানে নাস্তিকদের উৎপাত এত বেশী হয়ে গেছে যে সাধারণের অস্তিত্ব নিয়ে টান পড়ে গেছে।

রাজীব,লতিফ সিদ্দিকি,সৈয়দ আশরাফ,হুমায়ুন আজাদ,তসলিমা নাসরিন,নানা প্রকার ব্লগার রাজনীতিবিদ সবাই ধর্মকে গ্রাস করে ফেলছে বা ফেলতে চাচ্ছে,চাচ্ছে ধর্মের মূলোৎপাটন করে সমাজকে একটি ধরমবিহিন রাষ্ট্রে পরিণত করতে।

প্রায় প্রতিদিন ধর্মের বিরুদ্ধে অনেক কথা আর ধর্মকে নষ্ট বানানোর অনেক কার্যক্রম চোখে পড়ছে।

আমরা তথা ইসলামী দলগুলো তাঁদের বিরুদ্ধে বাটি মিছিল লাঠি মিছিল করছি,ফাঁসীর দাবীতে উত্তাল করে তুলছি দেশ।বক্তৃতা,সেমিনার,প্রেস কনফারেন্স থেকে শুরু করে ফেইসবুকের মত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম এ এই নিয়ে চলছে তুমুল ঝড় আর পাল্টাপাল্টি।

কেউ ফতোয়া দিয়ে দিচ্ছেন কল্লা কেটে নিতে,কেউ ধরে শেষ করে দিতে আবার কেউবা গালিগালাজ করে ধর্মদ্রোহীদের চৌদ্দগোষ্ঠী করছেন উদ্ধার।

এটা অবশ্যই চরম প্রতিক্রিয়া দেখানোর মত জিনিষ,কারণ আপনার পরম অনুভূতিতে চরম আঘাত লাগলে আপনার গরম গরম প্রতিক্রিয়া অটোম্যেটিক্লি বের হয়ে আসবে সেটাই স্বাভাবিক।

আর হচ্ছেও তাই।

তবে !!!!

একজন ইসলাম পন্থী দলের কট্টর ইসলামিক কর্মী হয়ে আপনি কি আসলেই ইসলামের জন্যই এসব করছেন নাকি সমসাময়িক রাজনীতির বলি হচ্ছেন আপনি,ইসলাম এসেছে মানবজাতির জন্য আর আল্লাহ সেই মানবজাতির মধ্যে এমন কিছু লোক সিলেক্টেড করে দিয়েছেন যারা মানবাজাতির কল্যাণের জন্য মানুষকে ইসলামের প্রতি আহবান করবে,মানুষকে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আনতে ইসলামী শিক্ষায় দীক্ষিত করার জিহাদ করবে,কল্যাণের দিকে আহবান করে কল্যাণমুখী একটি জাতি গঠনের মাধ্যমে দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য একটি বাগান রচনা করবে,সেই সাথে নিজে জাহান্নামের আগুণ থেকে বাঁচিয়ে অন্যকে জাহান্নামের আগুণ থেকে রক্ষা করার প্রচেষ্টা চালাবে।

সেই ব্যক্তির কথার চেয়ে আর কার কথা উত্তম হবে যে আল্লাহ‌র দিকে ডাকলো, সৎ কাজ করলো এবং ঘোষণা করলো আমি মুসলমান। {হা-মীম আস সাজদাহঃ ৩৩ }

এবং তাদের জন্য আল্লাহ‌ বড়ই সম্মানজনক প্রতিদানের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। হে নবী! আমি তোমাকে পাঠিয়েছি সাক্ষী বানিয়ে, সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারী করে আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাঁর দিকে আহ্বানকারীরূপে এবং উজ্জ্বল প্রদীপ হিসেবে। {আল আহযাবঃ ৪৫-৪৬}

এই সিলেক্টেড মানুষরা হলেন নবী রাসুলগন,সাহাবীগন,তাঁবে-তাবেঈন থেকে যুগে যুগে প্রত্যেক সময়ের ইসলামী আন্দোলনের নেতা কর্মীগণ।যারা মানুষকে সত্যের দিকে আহবান করবে মানুষের জন্য রবের দরবারে কাঁদবে,হেদায়েতের জন্য বিনিদ্র চেষ্টা করবে।

কিন্তু আমরা?

লতিফ সিদ্দিকি বা ব্লগারদের ফাঁসী দাবী করলেই কি ইসলাম কায়েম হয়ে যাবে বা তাদেরকে গালি দিলে কি ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠা বা ইমানের দাবী প্রতিষ্ঠা হয়ে যাবে?

রাসুলুল্লাহ (সঃ) কোথায় গালিগালাজ করেছেন বা কতল করার ঢালাও হুকুমাত জারি করেছেন?

বরং উনি নামাজে দাঁড়িয়ে দোয়া করেছেন হজরত উমার(রাঃ) বা আবু জেহেলের জন্য,কেঁদেছেন মানুষের হিদায়াতের জন্য।

আমরা দাওয়াত না দিয়ে আল্লাহর দরবারে না কেঁদে শুধু ফাঁসী আর নাস্তিক ঠেকাও যে আন্দোলন করছি তা তো নিতান্ত রাজনীতির ভাষায় সমসাময়িক রাজনীতির শয়তানী চাল ছাড়া কিচ্ছু না,কারণ এতে করে কি হচ্ছে?আমাদের ইমান আমল না বাড়ছে না হিদায়েতের পথে মানুষকে আহবান করার যে দায়িত্ব আমাদের দেয়া হয়েছে তার কিছু হচ্ছে।

আবার আরেকটি দিক হচ্ছে আপনি ইসলাম কায়েম করতে হলে একজন উমর (রাঃ) এর মত লোকের প্রয়োজন,হয়তো এসব নাস্তিকদের মাঝে দাওয়াতি কাজ করলে একজন উমর(রাঃ) ইনাদের মাঝখান থেকেই আসবে অথবা ইসলামের সঠিক জ্ঞানের দাওয়াত না পাওয়ায় এরা বেপথে গিয়েছিল কিন্তু আপনার দোয়া আর দাওয়াতে এরাই সঠিক পথে ফিরে এসে ইসলামের ঝাণ্ডা কে বাংলার মাটিতে এরাই সদর্পে প্রতিষ্ঠা করার কাজে মনোনিবেশ করবে।

তবে তার মানে এই নয় যে আপনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না করতে বা ইসলামকে কটাক্ষ করলে চুপ থাকতে বলছি।অবশ্যই শক্ত ভাষায় অপশক্তিকে ধ্বংস করতে প্রচেষ্টা চালাতে হবে, তবে গালিগালাজ করে নয়।

আগে হেদায়েতর দোয়া করতে হবে,দিতে হবে দাওয়াত,সঠিক শিক্ষার পথে তাকে বিচরণের উন্মুক্ত মাঠ দিতে হবে।তারপর যদি তার কপালে হেদায়েত না থাকে তবে তার বিরুদ্ধে The extreme Jihad ঘোষণা করতে হবে।

বিষয়: রাজনীতি

১০৯০ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

290169
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:২৬

A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: Undefined offset: 10348

Filename: views/blogdetailpage.php

Line Number: 764

"> মুক্তিযুদ্ধের কন্যা লিখেছেন : আগে হেদায়েতর দোয়া করতে হবে,দিতে হবে দাওয়াত,সঠিক শিক্ষার পথে তাকে বিচরণের উন্মুক্ত মাঠ দিতে হবে।তারপর যদি তার কপালে হেদায়েত না থাকে তবে তার বিরুদ্ধে The extreme Jihad ঘোষণা করতে হবে।

ইসলামের হেদায়েত বেশি পেয়ে গেলে আল কায়দা, আইসিস, বোকোহারাম, বাংলাভাই, হামাস........... এরাই শুধু উর্বর হয়।
290176
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:৫৫
তরবারী লিখেছেন : ইসলামের সঠিক জ্ঞানের স্বল্পতাই আপনার এই মন্তব্যের কারণ এবং সেই সাথে আপনার ইতিহাসের জ্ঞানের পরিমাণ ও যে খুব নাজুক সেটাও স্পষ্ট।হামাস বা আল কায়েদা আর আইসিস বা বাংলা ভাই এরা এক জিনিষ না।হামাস এর বা আল কায়েদার ইতিহাস আপনার জ্ঞান সীমানার অনেক বাইরে।
290177
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ১১:০২
যা বলতে চাই লিখেছেন : ভালো লাগলো ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ।
290197
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০১:৪২
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : খুব সুন্দর লিখা ,পড়ে ভালো লাগলো

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File