ইহুদী ষড়যন্ত্র ও আমাদের পরাধীনতা - ২
লিখেছেন লিখেছেন তরবারী ১৬ জুলাই, ২০১৪, ০৮:৪০:২২ রাত
ইহুদী ধর্মের একটি বড় দুর্বলতা হল হিন্দু ধর্মের মতই এটা একটা গোত্রীয় ধর্ম । ইহুদী বা হিন্দু পরিবারের জন্মগ্রহন ছাড়া , এ দুটি ধর্মে প্রবেশ করার কোন উপায় নেই। এজন্য এই দুটি ধর্মের লোক মানসিক ভাবে অনেক সংকীর্ণ হয় ।
যা হউক আগেই উল্লেখ করেছি এরা পৃথিবীতে কীভাবে ছড়িয়েছে , তবে যেখানেই গেছে শেখানেই তাহারা ঘৃণার পাত্র হয়েছে , কোন কোন সময় হয়েছে নির্মমভাবে বিতাড়িত । তবে ফরাসী বিপ্লব ইহুদীদের জন্য মুক্তির পয়গাম নিয়ে এসেছে। ইহুদীদের রচিত বিশ্বব্যাপী চক্রান্তের পরিকল্পনা পুস্তক protoukol (এর তরজমা পুস্তকের দ্বিতীয় খণ্ডে ) এ তারা উল্লেখ করেছে যে , ফরাসী রাষ্ট্রবিপ্লবের পরিচালনা ও পরিকল্পনায় ইহুদী ষড়যন্ত্রকারীদেরই হাত ছিল। যা হউক এ বিপ্লবের ফলে উনিশ শতকের শেষাংশে ফ্রান্স , ইংল্যান্ড, জার্মানি ,হল্যান্ড, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, নরওয়ে, অস্ট্রিয়া এবং সুইজারল্যান্ড ইহুদীদের পুরনাঙ্গ নাগরিক অধিকার দান করে। কিন্তু তখনও পূর্ব ইউরোপে এরা ঘৃণার পাত্র ছিল । অস্ট্রিয়ার ইহুদী সাংবাদিক থিউদর হার্টজেল সর্বপ্রথম ইহুদীদের মধ্যে আযাদির প্রেরনা সৃষ্টি করে। এ কারনে তাকে ইহুদিবাদের জনক বলা হয়।
প্রথমদিকে থিউদর ইংরেজদের পরামর্শে পূর্ব আফ্রিকায় একটি আযাদ ইহুদী রাষ্ট্র স্থাপন করতে আগ্রহী থাকলে অন্যান্য ইহুদী নেতা তার আগ্রহকে ফিলিস্তিনের দিকে নিবন্ধন করতে উতশাহিত করলে সে কার্য্য সিদ্ধির জন্য পৃথিবী চষতে শুরু করে । ৫ কোটি টাকার অর্থ সাহায্য দান করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক সঙ্কট দূরীকরণের আশা দিয়ে তুর্কীর সুলতান আব্দুল হামিদ ( দ্বিতীয় ) কে অনুরুধ করলে তা প্রত্ত্যখাত হলে ইংরেজদের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে ১৮৯৭ সালের ২৯ আগস্ট সুইজারল্যান্ডে আহবান কৃত বৈঠকে বিভিন্ন ফয়সালা গৃহীত হয়।
কৃষি ও ব্যবসা ক্ষেত্রে নিজেদের উন্নিত করার জন্য পরিকল্পনা গ্রহন করে,আন্তরজাতিক ও স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিষ্ঠা , জাতীয় চেতনা ও অনুভুতি জাগরনের লক্ষে বিভিন্র্ কর্সমচী গ্রহন করে ।আঞ্চলিকতা , জাতিয়তাবাদ ইত্যাদি সস্তা ও মুখরুচক শ্লোগান মুসলমানদের মধ্যে ঢুকিয়ে আরব তুর্কী সম্পর্ককে নষ্ট করে শুরু হয় ইহুদীদের মরন কামড় । কামাল পাশা ২৫,০০০ ধর্মপ্রাণ মানুষ কে হত্যা করে ইহুদীদের প্রভাবান্নিত পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে মদ্ধপ্রাচ্চে ইহুদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করে।
ফিলিস্তিনে ইহুদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দলনের অংশ হিসেবে ১৬১৬ সালে world zionist organaisation ব্রিটেনের পররাষ্ট্র দফতরের সঙ্গে আলোচনায় লিপ্ত হয় এবং এর ফলে ১৯১৭ সালে ব্রিটিশ সরকার কুখ্যাত "ব্যলফর" ঘোষণায় ফিলিস্তিনে ইহুদীদের জাতীয় আবাস ভুমি স্থাপনের দাবি সমর্থন করে। এই কুখ্যাত "ব্যলফর" ঘোষণায় ফিলিস্তিনে ১৯১৮ সালে ইহুদী সংখ্যা যেখানে ছিল মাত্র কয়েক হাজার সেখানে ১৯৪১ সালে তা গিয়ে দাড়ায় ২,৫০,০০০ এ।
পরবরতিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর লক্ষ লক্ষ যুদ্ধ বিধ্বস্ত গৃহহীন লোকদের (যেখানে বিপুল সঙ্খক) পুনর্বাসনের সমস্যা দেখা দিলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মিঃ ট্রুম্যান তার সমসাময়িক ব্রিটিশ উযিরে আযম মিঃ এতলির সঙ্গে পত্রালাপ করে ফিলিস্তিনে এক লক্ষ যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইহুদীদের বসবাসের ব্যবস্থা করার জন্য অনুরুধ করলে দুই দেশের প্রতিনিধিদের সমন্নয়ে একটি কমিটি গঠিত হলে তারা ১৯৪৬ সালের ৩০ শে এপ্রিল এক রিপোর্ট এ ফিলিস্তিনে ইহুদীদের বসবাসের ব্যবস্থার পক্ষে মত প্রকাশ করে । কানাডা , অস্ট্রেলিয়া , দক্ষিন অ্যামেরিকাতে এসব ইহুদীদের বসবাসের ব্যবস্থা সম্ভব থাকলেও বা ট্রুম্যান আমারিকাতে এদের স্থান দিতে রাজি হয়েও ব্রিটেনের কারনে ৬ লাখ ইহুদিকে আরব প্রতিবাদ সত্ত্বেও ফিলিস্তিনে এনে বসান হয়।
১৯৪৭ সালের ২৮ শে এপ্রিল জাতিসঙ্ঘের সাধারন পরিষদে ইহুদী রাষ্ট্র স্বীকৃতির লক্ষে বিশেষ অধিবেশন হয় । তুমুল বিতর্কের পর ২৯-৩৩ ভোটে ফিলিস্তিন বিভক্তির প্রস্তাব পাশ হয় । কিন্তু সাধারন পরিষদে দুই তৃতীয়াংশ ভোটে প্রস্তাব পাশ না করায় ২৬ শে নভেম্বর প্রস্তাবটি বিবেচনা করা হবে বলে স্থির করা হয়।২৯ শে নভেম্বার ৩৩-১৩ ভোটে প্রস্তাব পাশ হয় । ফিলিস্তিন বিভক্ত হয়ে গেল। শুরু হল অত্যাচারের ষ্টীম রোলার । ১০০ দিনের মধ্যে ১৭ হাজার মুসলিম নিহত।২০ শে এপ্রিল ১৯৪৮ প্রস্তাবটি সাধারন পরিষদে স্তগিত করা হয় সাময়িকভাবে । ১৪ ই মে ইহুদী নেতা বেন গুরিয়ান স্বাধীন ইহুদী রাষ্ট্র ঘসনা দেয় কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই । এর এক মিনিট পর আমেরিকা দেয় তাদের স্বীকৃতি ।
ভউগলিক ভাবে এর অবস্থান হল মদ্ধপ্রাচ্চে মেদিতেরিনান সাগরের পূর্ব পার্শে , উত্তরে লেবানন,উত্তর পূর্বে সিরিয়া, পূর্বে জর্ডান ও ওয়েস্ট ব্যাংক, গাজা এবং মিশর ঘিরে আছে দক্ষিণপূর্ব অঞ্চল জুড়ে ।
পৃথিবীর একমাত্র ইহুদী রাষ্ট্র এটি, নাম সংসদীয় গনপ্রজাতন্ত্রি দেশ ইসরাইল । রাজধানী হল জেরুজালেম ,যদিও তা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত না।এটি একটি গনতান্ত্রিক দেশ হিসেবে নিজেদের পরিচালনা করে। প্রধানমন্ত্রী সকল ক্ষমতার প্রধান। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এর জনসংখ্যা ৭,৭৫১,০০০ যেখানে ৫,৮১৮,২০০ হল ইহুদি,বাকিরা খ্রিস্টান মুসল্মান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।
এটি একটি উন্নত দেশের অংশ।GDP খুবি-ই শক্তিশালী ।GDP এর দিক থেকে বিশ্বের ৪২ তম শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ হচ্ছে ইসরাইল।
চলবে...............
আগের লিখার লিঙ্ক : http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/7640/onia/49308
বিষয়: বিবিধ
১৬৪৪ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন