হেফাজত আসলে কি করা উচিত ?
লিখেছেন লিখেছেন তরবারী ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১১:১৬:৩৯ রাত
হেফাজত নিয়ে ক্ষোভ হতাশা বিরাজ করছে সরকার বিরোধীদের মনে।সাময়িক হতাশা ও কারও মনে ঝেকে উঠছে।প্রত্ত্যাশার পরিমান খুব বেশী হয়ে গেলে এমনটা হতে পারে।তবে কেন এই প্রত্যাশা আর কাদের-ই বা এই প্রত্যাশা ?
বিএনপি অনেক আগ্রহী,শিবির সাপোর্ট চায়,আওয়ামীলীগ মারতে চায়।হেফাজত ?
তারা কি চায় সেটা সরাসরি আমি বললে হয়তো কেউ ক্ষেপে যেতে পারে তবে তারপরেও আমি বলছি,তারা চায় যে কি তা তারা নিজেরাই জানে না।
বিএনপি অনেক আগেই বলেছে হেফাজতের সাথে তারা নাই , নাই মানে ? মানে ১৩ দফার সাথে তারা নাই।
তো ?
১৩ দফার সাথে তারা নেই তাহলে তারা হেফাজতের শুভাকাঙ্খি কিভাবে হয় ? আসলে শুভাকাঙ্খি না,তারা চায় এসব আলেমরা ঢাকায় আসুক,কিছু মরেছে আরও মরবে,সাধারন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা কাঁদুক,আওয়ামী বিরোধী ইমেজ গড়ে উঠুক।
তখন বিএনপি নেতৃবৃন্দ দাঁত কেলিয়ে ক্যামেরার সামনে এসে বলবে,দেখেছেন এই সরকারের নির্যাতনের চিত্র।জনগনের সামনে বিএনপি ছাড়া কোন উপায় নেই।তারপর সিটি কর্পোরেশনের মত জাতীয় সংসদ জিতে এসে বলবে জনগন খালেদা কে চায়,তারেক কে চায় !!!
আসলে কি,তাই?
শিবির চায় হেফাজত সামনে আসুক,তারা ইসলামের প্রতিষ্ঠায় ঝাপিয়ে পরুক,এবং চির বৈরী থেকে এক সাথে পথ চলে চির বন্ধু হয়ে একটি ইসলামী সমাজ কায়েম করতে।তবে তাদের সাথে মতপার্থক্য এখনও যথেষ্ট বিদ্যমান।তাই সরাসরি হেফাজত তাদের পক্ষে বলতে পারছে না,আবার রাজনৈতিক কারনে শিবির জামাত ও হেফাজতের সাথে এক মঞ্চে আন্দোলনে উঠতে পারছে না।তবে সামগ্রিক সব অবস্থায় সাপোর্ট দেয়ার সমস্ত চেষ্টা করে যাচ্ছে বলে আমার কাছে থাকা তথ্য আমাকে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এবার দেখি হেফাজতের অবস্থান কি ?
তারা আসলে ধর্মীয় এক গোষ্ঠী থেকে উঠে এসে হঠাত রাজনীতির ময়দানে খেই হারিয়ে ফেলছে।কি করবে কি না করবে,কিভাবে করবে তার কোন কূলকিনারা করতে পারছে না।
তাতে আসলে হচ্ছে কি ? আসলে হুঙ্কার ঢুঙ্কার গুলু শেষ মেশে হাসির খোঁড়াক হয়ে যাচ্ছে।কিন্তু তারা কি যা করছে তার কোন ভিত্তি আছে ?
নাহ।তারা কেন সমাবেশের ডাক দিলো ? তার কি কোন দরকার ছিল ?অবশ্যই না।৫ই মে যে সমাবেশ হবার হয়েছে।এখন তার থেকে শিক্ষা নেবার সময় হয়েছিল।ইসলামী আন্দোলন কোন উতসবের নাম না।হঠাত ৫ মাস ৬ ময়াস পর পর একেকটা সমাবেশ ঘোষণা দেয়ার মানে কি ?
আসলেই পুলিশের গুলি খেয়ে বিনা প্রতিরোধে মরতে হবে,এটা নিশ্চিত।এটা কি ইসলাম বলে ?
আন্দোলন সেই কোন ওয়াজের নাম না।কোন জায়গা বেছে কিছুক্ষন শরীর গরম করা না,এটা একটা গতিশীল পন্থার নাম।
এতদিন কোথায় ছিলেন ? সেখানেই থাকুন, থেকে দাওয়াতি কাজ করুন,লিফলেটিং করুন।৫ ই মের ঘটনা জনগনের সামনে তুলে ধরেন,এ সরকারের ইসলাম বিরোধী কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন,ইসলাম মানা আর প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব তুলে ধরেন,ব্যাপক গণসংযোগ করুন।
দেখবেন এলাকা ভিত্তিক প্রতিবাদ উঠবে,আর সেই প্রতিবাদের মধ্যে কিছু লোক ইসলামের ছায়াতলে এসে ইসলামকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে নিজেকে উৎসর্গ করবে,পাশাপাশি বাঁধা দানকারিরা যখন আক্রমন করবে তখন মানুষের মনেও যেমন আপনারা ঠাই নিতে পারবেন নিজেদেরকে গড়ারও সুজুগ পাবেন।
কিন্তু শুধু শুধু ঢাকায় সমাবেশ করতে এসে নিরস্ত্র বেহুদা নিশ্চিত মৃত্যুর মুখে পতিত হবার নাম শাহাদাত হলেও তার সুধা কি খুব গৌরবের?তার ফলাফল কি সুদূরপ্রসারী?
তাতে অনেক জীবন যাবে,আবার ৬ মাস পরে এক হবেন।তাতে শয়তানের মসনদের কি হবে ?
আর একটা জিনিষ মনে রাখবেন,ইমানদার হল তারাই যারা হাত দিয়ে প্রতিরোধ করতে পারে।
আর নিন্মস্তর হল অন্তরে ঘৃণা পোষে বসে বসে মুরগীর রানে একটা একটা কামড় দেয়া।
তাই তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ যেমন আছে তেমনি কৌশলী হওয়ার প্রয়োজন ও খুব গুরুত্বপূর্ণ।
সমাবেশ নয় সংযোগ আর সন্নিবেশ করতে হবে।হুঙ্কার নয়,প্রতিরোধ গড়তে হবে,গুলির মুখে ঠায় দাড়িয়ে নয়,তার বিরুদ্ধে লড়তে লড়তে মরতে প্রস্তুতি নিতে হবে।
আল্লাহ্ আমাদের সকল কাজ কে সহজ করে দিক এবং তার রহমতে পরিপূর্ণ করে দিক।আমীন।
বিষয়: বিবিধ
১৪৯০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন