কোথায় হারিয়ে গেল সেই অতীত !!!

লিখেছেন লিখেছেন ইশতিয়াক আহমেদ ১৩ জুন, ২০১৫, ০১:৫২:৪৫ দুপুর



আমি যখন ছোট তখনও আমাদের বাপ চাচা ৫জন গ্রামের বাড়ীতে এক চালের নিচে থাকতেন। এক পাত্রে ৫ ফ্যামেলীর ভাত রান্না করা হতো । মানুষও ছিলাম প্রচুর। সারা গ্রামের মানুষ আমাদের পরিবারকে বাহ্বা দিত বাপ চাচারা একান্ন পরিবার ছিলেন বলে। তখনই সারা গ্রামে আমার জানা মতে একটা পরিবারও ছিল না যে ২ভাইয়ের ফ্যামেলী এক । খাওয়া দাওয়া এক। যদিও থেকে থাকে তাহলে এক দুটা পরিবার ছিল। কিন্তু ৫ ভাই একসঙ্গে এমন পরিবার ছিল না।

আমাদের পরিবারের লোক সংখ্যাও ছিল অনেক। বড় চাচার ৬ছেলে ২মেয়ে, মেঝো চাচার ৫ছেলে, তারপর আমরা ৩ভাই ২ বোন, তারপর সেঝো চাচার ১ছেলে ২মেয়ে তারপর ছোট চাচার ২ছেলে ২মেয়ে। তখন দাদীও ছিলেন। পরিবারটাকে আমরা বাচ্চারা সবসময় মাতিয়ে রাখতাম। অন্য রকম এক হাসি আনন্দের সময় ছিল সেটা। খাওয়ার সময় হলে দাদী তার ছেলেদের মানে আব্বু চাচাদের নিয়ে বসতেন এক সঙ্গে ফ্লোরে চাটাই বিছিয়ে। আব্বু চাচাদের সাথে বসতাম আমরা বাচ্চারা। একসঙ্গে খেতে বসতাম সবাই।

কিন্তু সময়ের ব্যবধানে আজ আমরা একেক পরিবার একেক জায়গায়। দাদী মারা যাওয়ার পরই পৃথক হয়ে গেছি আমরা। কেউ শহরে কেউ গ্রামে। আগের আনন্দটাও পৃথক হয়ে গেছে। আজ গ্রামে গিয়েও খুঁজে পাইনা সেই আনন্দ । এখন নেই সেই বড় টিনের ঘরটাও।

ভাবছেন আজ হঠাৎ কেন বলছি এসব! হ্যাঁ কারন আছে। আজ সকালে বড় চাচা হঠাৎ ফোন করে বললেন তুই আয় তো গ্রামে, একটা বকরী জবাই করেছি এরা সবাইও (চাচাতো ভাই বোনরা) বাড়ীতে এসেছে। তুইও চলে আয়।

ছোটবেলা থেকেই আমি সবার কাছে খুব আদরের ছিলাম। কারণ কথা বলা শিখার পর থেকেই নাকি পাঁকা পাঁকা কথা বলতাম। তাই সবার অন্য রকম ভালোবাসার নজরেও ছিলাম। সব চাচারাই খুব ভালোবাসতেন। সত্যি বলতে কি আমি আব্বুর ভালোবাসা খুব কম পেয়েছি। কেননা, আমার জন্মের পরই আব্বু সৌদী চলে গেছিলেন। সবসময় কাছে পেতাম না। বছরে ২-৩বার আসতেন। কিন্তু চাচাদের ভালোবাসটা সবসময় পেয়েছি।

আজও চাচারা ফ্যামীলী নিয়ে বড় কিছু খেল বা কোন আয়োজন করলে এই আমি থাকতেই হবে। না গেলে রাগ করে কথাই বলবেনা কতোদিন।

ঠিক তেমনি আজ বড় চাচার ডাকে এতো বৃষ্টির মাঝেও ভিজে শহর থেকে চলে আসলাম গ্রামে। সারাদিন যাবৎ খুব বৃষ্টি। কিন্তু বৃষ্টি আমাকে আটকাতে পারেনি। ছুটে এসেছি আমি। চাচাতো ভাইরাও একেকজন একেক জায়গায় থেকে পড়া লেখা করে কেউ বা শিক্ষকতা করে। আজ তারা সবাইও বাড়ীতে। এখন তাদের সাথে একসঙ্গে বসে গল্প করছি। অতীতের সেই দিনগুলীর কিছুটা আনন্দ খুঁজে পাচ্ছি। চাচার চেহারার মাঝেও দেখছি অন্য রকম একটা উল্লাস……

বিষয়: বিবিধ

১২৮৮ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

325550
১৩ জুন ২০১৫ দুপুর ০২:০৪
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো
জিবিকার জন্য পরিবার বিচ্ছিন্ন হতে পারে। কিন্তু এভাবে ভালবাসার বন্ধন যেন অটুট থাকে।
১৩ জুন ২০১৫ দুপুর ০২:১২
267672
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : ভালোবাসার বন্ধন অটুট থাকবে ইনশাল্লাহ চিরকাল। ধন্যবাদ
325551
১৩ জুন ২০১৫ দুপুর ০২:০৮
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু ভাইয়া! আপনার আনন্দের মাঝে আমিও কিছুটা আনন্দ পেয়েছি! কারন আমাদের পরিবারও এক সময় যৌথ পরিবার ছিলো তবে এখনো আমার দাদি আমাদের সাথেই থাকেন আলাদা হয়েছে চাচারা! কিন্তু বাসায়ই সবচেয়ে আসেন চাচা ফুপুরা তখন ভালোই লাগে! ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
১৩ জুন ২০১৫ দুপুর ০২:১৭
267678
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : ওয়ালাইকুম আসসালাম আপু। হুম , আসল কথা কি, চাইলেও যৌথ পরিবারে থাকা যায়না বেশি দিন। যখন সবারই সন্তানাদি বেড়ে যায় , বড় হয়ে যায় তখন আলাদা হতেই হয়।

ধন্যবাদ আপনাকে। Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck
325582
১৩ জুন ২০১৫ বিকাল ০৪:৪২
আলোকিত ভোর লিখেছেন : যৌথ পরিবারের মজাটাই আলাদা। এখন আর দেখা যায় না!!!
১৩ জুন ২০১৫ রাত ১১:০৭
267792
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : হুম। ধন্যবাদ
325650
১৩ জুন ২০১৫ রাত ১০:১২
আবু জান্নাত লিখেছেন : সত্যিই মজার দিনগুলো দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। ভালো লাগলো। ধন্যবাদ
১৩ জুন ২০১৫ রাত ১১:০৮
267793
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : আপ্নাকেও ধন্যবাদ
326028
১৫ জুন ২০১৫ রাত ১১:১৬
আফরা লিখেছেন : আমার কাছে যৌথ পরিবার ভাল লাগে তবে আবার বেশি মানুষ একসাথে থাকলে কিছু সমস্যাও হয় ।ধন্যবাদ ভাইয়া ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File