ঘুরে এলাম আল্লাহর সৃষ্টি অপরুপ সুন্দর পৃথিবীর দৃশ্যের একটি দৃশ্য চা-বাগান

লিখেছেন লিখেছেন ইশতিয়াক আহমেদ ০১ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০১:২৭:৪৪ দুপুর



হবিগন্জ জেলার ১টি থানার নাম বাহুবল। সেই থানারই অনেকটা জায়গা জুড়ে রয়েছে চা-বাগান,রাবার বাগান। আপনারা সবাই হয়তো বাংলাদেশের বিখ্যাত “ইস্পাহানী মির্জাপুরী” চা চিনেন। সেই চা-বাগানটিও ওখানেই। তারপর আরেকটি বিখ্যাত চা-বাগানের নাম হলো “বৃন্দাবন”। আলহামদুলিল্লাহ ২টি চা-বাগানই মোটেমুটি দেখে এসেছি।

বাসা থেকে রওয়ানা হওয়ার পরও ভাবিনি চা-বাগান দেখবো। জরুরী কাজে ঐদিকে গিয়েছিলাম। চা-বাগান এলাকায় আমার এক আপন চাচাতো বোনের বাড়ী। প্রায় ১০ বছর আগে উনার বিয়ে হয়েছে কিন্তু কোন সময় যাওয়া হয়নি এই বোনের বাড়িতে। এমনকি বিয়েতেও যাইনি।

কিন্তু গতকাল কিভাবে যেন জেনে ফেললো আমি ঐদিকে গিয়েছি। তারপরই ফোন দিয়ে বললো যদি তার বাড়িতে না যাই তাহলে সারাজীবনের জন্য আমার সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন। এ কথা বলার পর আর না গিয়ে থাকতে পারিনি।

দুপুরে আপুর ওখানে গিয়ে খেলাম। ওখানে গিয়ে চাচাতো ভাই মানে ঐ আপুর আপন ছোট ভাইকে (সমবয়সী) পেয়ে গেলাম। ঐ ভাইয়ের সাথে বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক।

খাওয়া-দাওয়ার পর বিদায় চাইলাম। কিন্তু নাহ, হলো না। আপু,দূলাভাই কেউই আসতে দিলোনা। বরং আরও লোভ দেখালো চা-বাগানের। আমি জানতামই না যে তাদের বাড়ির পাশেই চা-বাগান। এটা জানার পর আমারও লোভ লেগে গেল। থেকে গেলাম।

কতক্ষণ পরই আসরের আযান পড়লো। মসজিদে নামায পড়ে দু-ভাই বের হয়ে গেলাম। সাথে দুলাভাইও।

কতক্ষণ হাঁটতেই শুরু হলো ছবির মতো অপরুপ দৃশ্য। মুগ্ধ হয়ে গেলাম আল্লাহর এতো সুন্দর সৃষ্টি দেখে। ভাবতে লাগলাম দুনিয়ায় যদি এতো সুন্দর দৃশ্য হয় তাহলে জান্নাতে না জানি কত সুন্দর দৃশ্য।

উঠলাম গিয়ে এক পাহাড়ে। তখনই WhatsApp এ এক ছোট বোন মেসেজ দিল। তাই হেঁটে হেঁটে দৃশ্য দেখতে লাগলাম এবং বোনকে মেসেজ দিতে লাগলাম। পাহাড় ঘুরে দেখতে অনেক সময় লাগলো। ঘুরে ঘুরে অন্য দিক দিয়ে গিয়ে নামতে লাগলাম। নিচে নামছি এবং বোনকে মেসেজ দিচ্ছি। হঠাৎ পা পিছলে যায় ! সাথে সাথে ১টি চা-গাছে ধরি পাশ থেকে চাচাতো ভাই এবং দুলাভাইও ধরে। নিচে পড়লে হয়তো মরেই যেতাম। আল্লাহ বাঁচিয়েছেন। (এটা এমন একটা স্মৃতি যা মনে থাকবে সারাজীবন)

নিচে নেমে সামনে হাঁটতে লাগলাম। হাঁটতে হাঁটতে চা ফ্যাক্টেরীতে চলে গেলাম।



ঘুরে ঘুরে দেখলাম। বিশাল জায়গা জুড়ে এই ফ্যাক্টেরী।

তারপর গেলাম কুলিদের কাছে বিভিন্ন কথা-বার্তা জানলাম ওদের কাছ থেকে। অনেক কথা হলো ওদের সাথে। নানান বিষয়ে প্রশ্ন করে জেনে নিলাম তাদের থেকে।



হঠাৎ শুরু হলো প্রচন্ড বাতাস। চতুর্দিক অন্ধকার হয়ে আসলো। তাড়াতাড়ি পিছনে ফিরতে লাগলাম।

পিছন ফিরতে গিয়ে বুঝলাম কতো জায়গা এসেছি !

ছোট ছোট বৃষ্টির ফোঁটা পড়ছে। দৌড়াতে লাগলাম। কতক্ষণ পর মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলো। দৌড়ে গিয়ে উঠলাম বাগানের ভিতরে ছবির মতো সুন্দর অচেনা এক বাড়ির বারান্দায়। একটু পরই মাগরীবের আজান পড়লো। একেতো বাড়ীটি বাগানের ভিতর , তার মাঝে অাবার সন্ধ্যা। ধীরে ধীরে চতুর্দিক অন্ধকার হয়ে অাসছে। ভিতরে ভিতরে কিছুটা ভয় পেলাম। কিন্তু প্রকাশ করিনি।

কিছুক্ষণ পর ঘরের দরজা খুলে বেরিয়ে অাসলেন একজন মধ্য বয়সী মহিলা। পলকহীনভাবে কতক্ষণ তাকিয়ে থাকলেন অামাদের দিকে। যেন তিনি অামাদের ভিতরটা পড়লেন। তারপর বললেন ভিতরে এসে বসুন অাপনারা। অামরা অস্বস্তিবোধ করলাম। কিন্তু তিনি অনেক জোড়াজোড়ি করে নিলেন ভিতরে। গেলাম ভিতরে। বাহির থেকে যেমন সুন্দর করে সাজানো দেখা যায়, বাড়ীর ভিতরটাও তেমনি সুন্দর করে সাজানো। মহিলার সাথে পরিচয় হল। কথা চলল কিছু সময়। একটু পর ভিতর থেকে একটা মেয়ে চা নিয়ে অাসলো। মেয়েটিও দৃশ্যের মতই সুন্দর। মহিলা পরিচয় করিয়ে দিলেন যে, তার মেয়ে। তারা অবসর সময় কাটাতে অাসেন বাড়ীটিতে।

কতক্ষণ পর গাড়ীও এসে গেল। ফোন করে গাড়ী আনিয়েছি। বাড়ি থেকে বের হয়ে গিয়ে উঠলাম গাড়িতে। তারপর সেদিনের মতো চলে আসলাম সেখান থেকে।

পরদিন অাবার, সকাল ৬টা ৩০ এ বের হয়ে ১১টার দিকে ফিরে এসেছিলাম। শুধু ঘুরেছি অার দেখেছি অাল্লাহর সুন্দর সৃষ্টি। এ পাহাড় থেকে ওপাহাড়, এভাবে ঘুরে ঘুরে শুধু দেখেছি অার মুগ্ধ হয়েছি।

বিষয়: সাহিত্য

২৯৭০ বার পঠিত, ২৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

290201
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০১:৪৯
তোমার হৃদয় জুড়ে আমি লিখেছেন : চমৎকার বর্ণনাশৈলি আর সুন্দর উপস্থাপনসহ ছবিগুলো দেখতে ভালো লাগলো।
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০১:৫৩
233964
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : পড়ে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ও ধন্যবাদGood Luck Good Luck Good Luck Good Luck
290211
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০২:০৬
মোহাম্মদ আবদুর রহমান সিরাজী লিখেছেন : হায়রে ভাই, বৃন্দাবন চা বাগান থেকে ঘুরে আসলেন আর একটু সামনে গেলেই তো দেশের সবচেয়ে বড় পিকনিক স্পট কামালের বাগানের'গ্রীন প্লানেট রিসোর্ট' দেখে আসতে পারতেন।
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০২:১২
233967
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : দেখেছি ভাই। তবে বাহির থেকে। ভিতরে যেতে দেয়নি।
290233
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০২:৪৩
কাহাফ লিখেছেন :
আপনার সুন্দর সাবলীল বর্ণনা আর চমৎকার ছবি সংযোজনে দারুণ হয়েছে এই ভ্রমন আয়োজন!দেখার আগ্রহ জাগছে!
Thumbs Up Thumbs Up Thumbs Up
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০৩:৫১
233997
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : ধন্যবাদ ভাই। জাযাকাল্লাহ। Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck
দেশে অাসার পর ঘুরতে চলে অাসবেন অামাদের সিলেটে। Love Struck
০২ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০৪:১৩
234126
কাহাফ লিখেছেন :
ইনশা আল্লাহ!
সিলেট জকিগন্জে আমার কয়েক জন বন্ধু আছে!একবার ওখানে গিয়েও ছিলাম!
দেশে আসলে আসছি সিলেটে......।Good Luck Good Luck
০২ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ১১:৪০
234188
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : শুধু অাপনারা বন্ধুরা নয়, অামরাও অাছি। সিলেটে স্বাগতম অাপনাকে। Good Luck Good Luck
০২ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:১৭
234201
কাহাফ লিখেছেন :
আমি আগের কথা বলেছি ভাই!
দেশে আসার পর প্রথম ভ্রমন সিলেটই হবে ইনশা আল্লাহ!
আপনাদের সাথে সাক্ষাৎ করবো!
ভাল থাকার শুভ কামনা রইল!!!Good Luck Applause Applause Applause
০৩ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ১২:১৩
234390
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : শুকরিয়া।Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck
290235
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০২:৪৭
নাছির আলী লিখেছেন : মনোমুগ্ব্দকর বর্ণনা অপুর্ব সুন্দর উপস্থাপনা পাঠকে
পঠনে উপভুগ করবে। ভালো লাগলো ।যাযাকাল্লাহ
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০৩:৫২
233999
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : শুকরিয়া। Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck
290247
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০৩:৩৯
আফরা লিখেছেন : ছবি আর বর্ণনা দুটো ই ভাল লাগল ।
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০৩:৫২
234000
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : ধন্যবাদGood Luck Good Luck Good Luck Good Luck
290260
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৪:২৩
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : খুব ভাল লাগল। আল্লাহর রহমতে দুটি বাগানেই আমি গিয়েছি প্রায় নয় বছর আগে। তখন সপ্তাহে অন্তত একবার হলেও চাকুরির জন্য বাগানগুলির পাশ দিয়ে যাওয়া হতো। মাঝে মাঝে গাড়ি থেকে নেমে এই অপরুপ সৈীন্দর্য উপভোগ করতাম।
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ১০:০৮
234087
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : সত্যিই জায়গাগুলী দেখা ভাগ্যের ব্যাপার ভাই। অাপনি তো তাহলে অামাদের সিলেটের অনেক কিছু দেখেছেন। পড়ে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদGood Luck Good Luck Good Luck
০২ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:৪৭
234183
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : হ্যাঁ ভাই। আল্লাহর রহমতে সিলেত বিভাগের সবগুলি থানা এবং বেশিরভাগ ইউনিয়ন এ গিয়েছি।
০২ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ১১:৪১
234189
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : তাই নাকি!! কি কাজ করতেন ভাই?
290270
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৪:৫৪
সূর্যের পাশে হারিকেন লিখেছেন : ছবি আর বর্ণনা দুটো ই ভাল লাগল Good Luck Good Luck Good Luck অনেক ধন্যবাদ আপনাকে Rose Rose
০১ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ১০:১০
234088
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : অনেক দিন পর অামার ব্লগ বাড়ীতে অাপনার অাগমণ দেখে ভালো লাগলো। পড়ে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ও ধন্যবাদ। Good Luck Good Luck Good Luck
290538
০২ ডিসেম্বর ২০১৪ দুপুর ০২:৫২
ইসলাম কখনো মাথা নত করেনা লিখেছেন : এই বর্ণনাটি অনেক ভালো লাগলো। এবং আরো ভালো লাগলো যে মাঝে মাঝে আল্লাহর প্রশংসা করে এবং আল্লাহর কথা মনে করেছেন।
০৩ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ১২:১৩
234389
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : অামার ব্লগ বাড়ীতে অাপনাকে স্বাগতম। ধন্যবাদGood Luck Good Luck Good Luck
290748
০৩ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ১২:১৯
টিপু এসডি দেব লিখেছেন : ভালো লাগলো । আমি ও এইসাইটে থাকি ।তবে হবিগঞ্জ না । শেরপুরে ।সিলেটে আরো আছে চা বাগান , মৌলভীবাজারে আছে প্রেমবাজার চা বাগান । আরো আছে শমসের নগরে ।
০৩ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ১২:২৩
234392
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : অাপনি তো তাহলে অামার বিভাগের মানুষ। অাপনাকে দরকার অাছে। ধন্যবাদ Good Luck Good Luck Good Luck
০৩ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০২:১৭
234442
টিপু এসডি দেব লিখেছেন : মৌলভীবাজার জেলা । সিলেট বিভাগ ।
১০
291605
০৬ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০২:১৭
বৃত্তের বাইরে লিখেছেন : চমৎকার ছবিসহ সুন্দর সাবলীল বর্ণনা। ভালো লাগলো Thumbs Up Good Luck Rose
০৬ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০৯:২৪
235399
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File