পড়োবাড়ীর বদ্ধ কুঠিরে........ (দ্বিতীয় পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন ইশতিয়াক আহমেদ ৩০ নভেম্বর, ২০১৪, ০৪:৫৯:৩০ বিকাল
১ম পর্ব
পরদিন গভীর রাত। সারা গ্রামবাসী নিদ্রাকোড়ে শায়িত। কিন্তু অাজীম ও ফারুকের চোখে কোন ঘুম নেই। তারা রাতের নিরবতাকে খান খান করে নির্ভীকভাবে পথ চলছে পড়োবাড়ীর উদ্দেশ্যে। সঙ্গে নিয়েছে ১টি টর্চলাইট, ২টি লাইসেন্সকৃত রিভলবার ও একটি ক্লোরোফরম যুক্ত রুমাল।
নিরাপত্তার জন্য রিভলবার দু'টি তারা সবসময় তাক করে রাখল। বেশ কিছুদূর চলার পর তারা পৌছে গেল পড়োবাড়ীর নিকটে।
ঘন অাঁধারের মধ্যেও বাড়ীর বিশাল দেহটি তাদের অবাক করে দিল। এ-তো সাধারণ কোন বাড়ী নয়, বিরাট এক রাজপ্রাসাদ। চারিদিকে ঘন গাছ-গাছালীতে পরিপূর্ণ। মনে হয় যেন গভীর অরণ্যের মাঝে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে অাছে। মাঝে মাঝে দেয়ালের প্লাস্টার খসে খসে পড়েছে। কোথাও কোথাও দেয়ালের গা ফেটে বেরিয়ে গেছে বৃক্ষের শিকড়।
তারা দুজনে বিড়ালের মত ফেলে চুপি চুপি পৌছে গেল প্রাসাদের প্রধান ফটকে। প্রাসাদটির দরজা অসংখ্য, কিন্তু প্রধান ফটক একটাই। তারা খুব সাবধানে একটি কক্ষের মধ্যে প্রবেশ করল।
মানুষের অাগমনের অাওয়াজে বাদুরগুলো ডানা ঝাপটিয়ে উড়তে লাগল। হঠাৎ বাদুরের চেচামেচিতে তাদের অন্তর ধুকধুক করে উঠল। কিন্তু পরক্ষনেই ব্যাপারটি স্বাভাবিক হয়ে এল।
এরপর তারা অারেকটি কক্ষে প্রবেশ করল। কিন্তু সেখানেও একই ব্যাপার। জনমানবের কোন চিহ্ন নেই।
এভাবে ধীরে ধীরে তারা সমস্ত কক্ষ পরিদর্শন করল। কিন্তু কোথাও সন্ত্রাসী ঘাতকদের খুঁজে পেল না।
অাজীম হতাশ হয়ে পড়ল। কিন্তু ফারুক তার বিশ্বাসে অটল, এখানে কোথাও সন্ত্রাসীদের অাড্ডাখানা অবশ্যই অাছে।
এবার তারা সর্বশেষ যে কক্ষে প্রবেশ করল,সেটা ছিল অন্যান্যগুলী থেকে পৃথক। এ কক্ষে ঝোঁপ-ঝাড়ও অন্যান্য কক্ষের থেকে তুলনামূলক বেশী। সবচেয়ে অাশ্চর্যের বিষয়, এই কক্ষে অন্যান্য কক্ষের মত কোন বাদুর নেই। দেখলেই বোঝা যায়- এই ঘরে সর্বদা মানুষ চলাচল করে। কিন্তু কোন জনমানবের চিহ্ন দেখা গেল না।
হাঁটতে হাঁটতে তারা পৌছে গেল ঘরের একেবারে পুর্বপাশে। হতাশ হয়ে দাঁড়িয়ে গেল একটি পিলারের কাছে। চিন্তা করছিল এখন কি করবে?
এমন সময় হঠাৎ একটি শব্দ কানে এল। পরক্ষণেই পিলারের মধ্য হতে একটি সুড়ঙ্গ পথ উন্মুক্ত হল। সঙ্গে সঙ্গ তারা দুজন নিজেদের কর্তব্য নির্ধারণ করে নিল। পিলারের পাশ থেকে দুজন দু'দিকে ছিটকে পড়ল। রিভলবার তাদের হাতেই তাক করা ছিল। অতিরিক্ত সতর্কতার জন্য পকেট থেকে ক্লোরোফরম রুমাল বের করল।
একটু পরই ঘট ঘট শব্দে একটি লোক সুড়ঙ্গ থেকে বের হল। দেরী করল না অাজীম। ঝাঁপিয়ে পড়ল লোকটির উপর । কোন কথা মুখ থেকে বের হবার পূর্বেই নাকে চেপে ধরল রুমাল। সঙ্গে সঙ্গে সঙা হারাল লোকটি।
ফারুকও ততক্ষণে চলে এসেছে ঘটনাস্থলে। পাশেই পড়ে ছিল একটি রশি । ফারুক হাত-পা বেঁধে ফেলল লোকটির। তারপর তারা লোকটিকে ঝুপড়ির মধ্যে লুকিয়ে রাখল।
অতঃপর অাল্লাহর নাম স্মরণ করতে করতে দুজন নেমে পড়ল সুড়ঙ্গ পথে। কিছুক্ষণ পর পৌছল একটি সমতল ভূমিতে।
(ক্রমশঃ)
বিষয়: সাহিত্য
১১৭৮ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন