একটি সোনালী প্রভাত
লিখেছেন লিখেছেন ইশতিয়াক আহমেদ ২৭ নভেম্বর, ২০১৪, ১২:০৭:৪৯ দুপুর
পাখ-পাখালীর কিঁচিরমিঁচির ধ্বনি। মৃদ-মন্দ সমীরন বয়ে যাচ্ছে। ভোরের শবনম লতা-পাতা সিক্ত করছে । পরিবেশ অত্যন্ত মনমুগ্ধ কর। নিচু নিচু মানব ধ্বনি বাতাসে উড়ে বেড়াচ্ছে। কাক কা,কা,করে ডাকছে। ছোট খোকারা মধুর সুরে কাঁদছে। আশপাশের লোকেরা ঘুমের নীড় ভেঙে চোখ কচলিয়ে জাগছে।
অন্য দিকে আযানের আল্লাহু আকবার ধ্বনি কর্ণ কুহরে বেজে উঠলো। আরামের শয্যা ত্যাগ করে অযু করে মসজিদে গেলাম। ফযরের নামাজ পড়ে বাড়ীর দিকে রওয়ানা হলাম। পথিমধ্যে স্নিগ্ধ শীতল সমীরন আমাকে স্নেহ ভরে বুকে জড়িয়ে আমার হৃদয় গহীনে আনন্দের বন্যা বয়ে দিলো। সে আনন্দের মিষ্টি পরশ নিয়ে বাড়ী ফিরলাম। চা নাস্তা খেয়ে একটু হাঁটা হাটির জন্য পুকুর পাড়ে গেলাম। পাখির কলরব ধ্বনিতে পরিবেশ মুখরিত হয়ে উঠেছে বাতাসের হিল্লোলে একটা উদাস ভাব চলে আসল । মুগ্ধতার আবেশে আমি বিভোর হলাম।
ভাবতে লাগলাম কে সে জন,যিনি দিয়েছেন এদের মাঝে এতো মুগ্ধতা,দিয়েছেন পেলবতা,সুষমতা? কে সে জন যিনি এতো সুন্দর সুশ্রী ও মুগ্ধকর করেছেন এদের সৃজন? সহসা কর্ণ কুহরে বেজে উঠলো কুহু,কুহু এক মাধুরী কাকলি।আমি আচ্ছন্য মনে প্রাণ ভরে শুনলাম সে মধুর তান। তখন হৃদয় সাগরে তরঙ্গ রুপে ভেসে উঠলো, কে সে জন যিনি রেখেছেন তার কন্ঠে এত মধুরিমা,এবং শিখিয়েছেন তাকে কুহু,কুহু গান।
হঠাৎ একটি স্নিগ্ধ শীতল বায়ূ আমার শরীরে কোমল পরশ বুলিয়ে গেল। আমি স্বস্তি ফিরে পেয়ে হাঁটতে লাগলাম। ক্ষানিকটা সামনে যেতেই শুনতে পাই, দোয়েল শ্যামার শ্রি,শ্রি গান, ঘুঘু পাখির ঘূ ঘূ ডাক,পাপিয়ার পিউ পিউ ধর, তাল গাছে বাবুই পাখির কলকাকলি। এদের কলতানে মনে প্রফুল্লের সীমা নেই। অন্তরে প্রশান্তি উপভোগ করতে করতে পুকুরের উত্তর পাড়ে কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে গিয়ে বসলাম। শীতের আগমনে লালশাড়ী পরে নববধূর ন্যায় সাজ সাজ রব। লাল কুসুমের লালিমা প্রকৃতিকে করে তোলেছে অত্যন্ত মনোরম।
তার অপূর্ব দৃশ্য দেখে আমার নয়নযুগল শীতল হলো, সিক্ত হলো আমার প্রাণ। ভাবতে লাগলাম কে সে জন যিনি কৃষ্ণচূরাকে এতো সুন্দর করে সাজিয়েছেন এবং রক্তমাখা গহনা পড়িয়েছেন? তার পাশে একটি বকুল ফুলের গাছ। প্রকৃতিকে করে তোলেছে সুবাসিত এবং শুভ্র ফুলের সুগন্ধী আভা পরিবেশকে করে তুলেছে সুরভিত। তখন আমার স্মৃতিপটে ভেসে উঠলো কে সে জন যিনি বকুলের মাঝে নিহিত রেখেছেন এত সুবাস, এত সৌরভ? কে সে জন যিনি এতো শুভ্রতা,মাধুর্যতা রেখেছেন তার সৃজনে? ভাবতে ভাবতে নিরব-নির্জন এক স্থানে গিয়ে প্রকৃতিকে নিয়ে চিন্তায় মগ্ন হই।
সহসা আমার মুখ থেকে বের হয়ে আসলো, আল্লাহ গো! তুমি আমাদের জীবনকে এবং আমাদের পরিবারের সবার জীবনকে প্রকৃতির ন্যায় সবুজ,উদ্ভিদের মত শ্যামল,পাখির ন্যায় মুখরিত,ফুলের মত সুবাসিত,নদীর ন্যায় গতিময়,ঝর্ণার মত উচ্ছল,চাঁদের মত জ্যোতিময়,সূর্যের ন্যায় আলোকময় করে দাও। আল্লাহ গো! তুমি আমার এই প্রার্থনাটুকু কবুল করো। সুন্দর এই সোনালী প্রভাতে আমার হৃদয়ের এটাই অভিলাষ।
বিষয়: সাহিত্য
২২৮৭ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
চমৎকার শব্দায়োজনে বর্ণনার নান্দনিকতায় স্বপ্নীল সোনালী প্রভাত এসে দাড়িয়েছে সামনে!
মহান রবের পরাক্রমশালীতায় 'সুবহানাল্লাহ' আওয়াজ বেরোয় অন্তর থেকে!
অনেক ধন্যবাদ ও জাযাকাল্লাহ জানাচ্ছি!!
ভড়াভড়ের মথঈ বালো লিকা। ফিলাছ ধিলাম
মন্তব্য করতে লগইন করুন