অামাদের শীত...
লিখেছেন লিখেছেন ইশতিয়াক আহমেদ ০৮ নভেম্বর, ২০১৪, ১২:১০:০৩ রাত
শীতকাল অাসলে একটি ভদ্রকাল। কেননা, শীতের কল্যাণে মানুষ স্যুট-জ্যাকেট পরে রীতিমত সাহেব বনে যায়। পান্জাবীর উপর কটি ইত্যাদি পরেও সুদর্শন ভাব অানা হয়। সেই সাথে শীতের পিঠা, খেজুর রসের পায়েস, সবকিছু মিলিয়ে এটি একটি মজার ঋতুই বটে।
খেজুর রসের প্রতি অামি ছোটবেলায় ভীষণ দূর্বল ছিলাম। এই রস নিয়েই অামার জীবনে অাছে একটি রসাত্মক ঘটনা।
শীতকালে একবার নানু বাড়ীতে বেড়াতে গেলাম। বাড়ীর পাশেই ডোবার ধারে ছিল একটি খেজুর গাছ। একদিন সকালে সেখানে গিয়ে দেখি - গাছ থেকে টপটপ করে রস পড়ছে । অামি উপরের দিকে তাকিয়ে হা করে রইলাম। এক ফোঁটা রস মুখে পড়ে তো তিন ফোঁটা জামায়। কিন্তু সেদিকে অামার কোন খেয়াল নেই। অামি মনের সুখে কিছুক্ষণ রস গিললাম।
শীতকাল বলে সেদিন গোসল করা হয়নি। এর মাশুল দিতে হলো রাতে। যখন পিঁপড়ার কামড়ে ঘুম ভাঙ্গলো, তখন মনে পড়লো জামায় লেগে থাকা রসের লোভেই পিঁপড়া মহাশয়দের অাগমন। কী অার করা, এভাবে রস খাওয়ার জন্য মনে মনে নিজেকে গাল দিলাম।
কিন্তু পরদিন সকালে যখন অাবার খেজুর গাছের নিকট গেলাম, তখন নিজেকে অার ধরে রাখতে পারলাম না। ভুলে গেলাম গত রাতের কথা। অাবার গিয়ে গাছের নিচে হা করে রইলাম।
অাজ রসের ফোঁটাগুলো সহজে মুখে পড়ছেনা। বাতাসের কারণে এদিক-সেদিক উড়ে যাচ্ছে। অামিও উপর দিকে তাকিয়ে ফোঁটার সাথে সাথে দৌড়াতে লাগলাম। বীর বিক্রমে ফোঁটাগুলো মুখে পুরতে লাগলাম।
হঠাত একটি ফোঁটা ধরতে গিয়ে অামি পড়লাম একেবারে ডোবার পানিতে। ভাগ্যিস শীতকাল বলে পানি ছিল অল্প। তাই ডুবে মরতে হয়নি।
কিন্তু যে অবস্থা হলো, তা-ই বা মরার চেয়ে কম কিসের ! একেতো প্রচন্ড শীত, তার উপর গায়ে ছিলো জ্যাকেট,সব ভিজে ঢোল হয়ে গেল। শরীরটাকে একমন ভারী মনে হলো।
অনেক কষ্টে ডোবা থেকে উঠলাম। কাঁপতে কাঁপতে বাড়ী ফিরলাম।
সব শুনে অাম্মু অাচ্ছা করে ধোলাই দিলেন। সাথে ফ্রি বকুনি তো ছিলই।
এই ঘটনার পর অাজ অনেক বছর পার হয়ে গেল । এখনও খেজুর গাছ/রস দেখলে ঘটনাটি মনে পড়ে অার একা একা হাসি।
বিষয়: সাহিত্য
১২৪২ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আর বলতে পারছিনা।
অনেক ধন্যবাদ সুন্দর পোষ্টটির জন্য।
মন্তব্য করতে লগইন করুন