বাংলা ভাষার সমৃদ্ধি
লিখেছেন লিখেছেন ইশতিয়াক আহমেদ ০৭ নভেম্বর, ২০১৪, ০১:৩৭:৪১ রাত
হায়রে আধুনকিতার অপব্যবহার ! হায়রে সংস্কৃতরি বিনাশ ! কি ঘটছে বাংলা ভাষায়? কী-ই বাঙ্গালীদের বিশ্ব জয়ের লক্ষ্য?
বাঙ্গালীরা যে ভাষা রক্ষার্থে বিলিয়ে দিয়েছিল নিজের অাপন তাজা প্রাণ, অাজ তাদেরই ছেলেরা সেই ভাষাই বিলিয়ে মাগছে ইংরেজীর দান । যেই বাঙ্গালীদের অাত্মত্যাগের একমাত্র লক্ষ্য ছিল বঙ্গভাষা , যাদের উত্সারিত প্রাণের প্রকাশিত অালোকে অালোকিত হয়েছে বিশ্ব, যাদের ত্যাগের স্বীকৃতিতে মাথা নুয়ায়ে দিয়েছে পৃথিবী, যাদের জন্য বাংলা ভাষাকে ঘিরে অান্তর্জাতিক ভাষা দিবস পালনে মর্যাদায় স্থান দিয়েছে বিশ্ববাসী, অাজ সেই বাঙ্গালীদেরই বীজগুলো অাপন মাতৃভাষাকে প্রথমে ভক্তি দেখিয়ে তারপরে দিচ্ছে জলান্জলী ।
এ কি অবস্থা বাঙ্গালীদের, মুখে তাদের মমতা সহ সোনার বাংলার সুর, অথচ ভিতর ভিতরে বাংলঅ ভাষার প্রতি বিতৃষ্ণা দেখিয়ে দৈনন্দিন কথাবার্তার প্রতিটা বাক্যে স্থান দেয় ইংরেঝী ভাষাকে। এরপর কি করে অহংকার করে বিশ্বজয়ী মাতৃভাষাকে নিয়ে?
জানিনে, কি তাদের উদ্দেশ্য , কী-ই বা তাদরে আশা। তাদরে ইচ্ছা কি ভাষাকে সমৃদ্ধশালী করা নাকি ভাষাের জলান্জলী দেয়া? যদি তাই না হবে তবে কেন তারা করছে উদ্দেশ্য`র স্থানে `টার্গেটে`র যথাসাধ্য ছড়াছড়ি ? কেন জায়গা দিচ্ছে অতিথি বা মেহমানের স্থানে গেস্টকে? কেন তারা সামলাতে না বলে মেইনটেন বলে বেড়াচ্ছে? কেন পরিবারকে বিসর্জন দিয়ে ফ্যামেলীর অাবির্ভাব ঘটাচ্ছে ? কেন উপহারের না দিয়ে দেয়া হচ্ছে সারপ্রাইজ বা প্রেজেন্টেশন ? কেন কেনাকাটা বা বাজার না করে করা হচ্ছে শপিং? কেন এখন মানুষ হৃদক্রিয়া বন্ধের পরিবর্তে হার্টফেল করে? কেন রকমের জায়গায় অাইটেম না হলেই নয়? কেন তারা কোন কাজে সাফল্য না পেয়ে পান সাক্সেসফুল? কেন পরিকল্পনার জায়গায় করা হয় প্ল্যান?
যদি এসব প্রশ্ন সমাজের মাঝে স্থাপন করি , তাহলে নিশ্চয়ই ভদ্র মানুষ সবাই বিদ্রুপের হাসি হেসে জানিয়ে দিবেন অারে বোকা ! এগুলো ব্যবহার করা হয় তো ভাষার সমৃদ্ধির জন্য। কিন্তু যদি বলি , অপ্রয়োজনে কতগুলো ইংরেজি শব্দ বাংলার মাঝে স্থান দিয়ে এ ভাষার গৌরবময় মানকে ক্ষুন্ন করেছেন তাহলে কি মিথ্যা বলা হবে?
যেখানে হাতের প্রচুর চাহিদা থাকা সত্ত্বেও হেন্ডের ছড়াছড়ি, যেখানে হচ্ছে কলমের জায়গায় পেন দিয়ে লেখা, যেখানে মিস্টার না ডেকে জনাব ডাকলে হন মনক্ষুন্ন, যেখানে কাগজ কিন্তে গিয়ে দোকানদারের কাছে চাইতে হয় পেপার, যেখানে শাহজাদা নাম না রেখে রাখা হয় প্রিন্স, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে ইউনিভার্সিটি মানুষ বেশী চিনে, যেখানে সুগন্ধির পরিবর্তে পিরফিউম এর চলাচল, যেখানে উপাধির স্থানে টাইটেল না হলেই নয়, সেখানে বাঙ্গালিদের মাতৃভাষা চর্চার অভিলাস এবং তাদের অানন্দিত বসবাস নিশ্চয়ই অাশ্চর্যের বিষয়।
অামি মানি, প্রয়োজনের তাগিদে কোন বিদেশী শব্দ দিয়ে লিখা দোষের নয়। কিন্তু তা তো কেবল প্রয়োজনে। কিন্তু অপ্রয়োজনে অযথা কেন এত বাড়াবাড়ি?
হে বাঙ্গালি ! তোমার কি ইচ্ছা হয়না বাংলা ভাষাকে পরিপূর্ণরুপে চর্চা করার এবং তা বিশ্বের মাঝে মেলে ধরার? অাজ তুমি তো খুব ইংরেজি শিখেছো, অামাকে জানাও তো ইংরেজ লেখকরা তোমার ভাষাকে তাদের ভাষাতে কতটুকু স্থান দিয়েছে? কয়টি বাংলা শব্দ লিখেছে তাদের সুবৃহত রচনায়? অামি জানি তোমার মুখে রা ফুটবে না। কারণ , তুমি দুর্নীতিপরায়ণ। তুমি অধম। তুমি নিজ মাতাকে পরিত্যাগ করে শাশুড়ী নিয়ে অামোদ-অাহ্লাদে করছ। তুমি মায়ের ভাষাকে পরিত্যাগ করে বৈদেশীয় সংস্কৃতির অপব্যাবহার করছো। তুমি নিচ। ছিঃ শত ধিক তোমায়। তুমি লোভী। তুমি স্বার্থপর।
তোমার ভাষাকে তুমি কিভাবে সম্মানিত করবে তা তোমারই উপর পূর্ণ নির্ভরশিল। অামার কামনা, তোমার বোধ জাগুক। অামার বিশ্বাষ , তোমার সঠিক ঙানে তুমি চাইবে ভাষার বিশ্বজয়। হে বাঙ্গালী ! অামি তোমাকে জানালাম। অাশাকরি-তুমি সন্বিত ফিরে পাবে।
বিষয়: সাহিত্য
১৩৯৬ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আধুনিকতার মেকী-খোলসে নিজেকে সাজিয়ে নিতে নির্বোধদের এমন আত্মঘাতী আচরণ!
মানষিকতার আমুল পরিবর্তন না হলে এ থেকে পরিত্রাণ সহজে মিলবে না!
সচেতন মুলক নান্দনিক পোস্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে!
মন্তব্য করতে লগইন করুন