::তোমরা যারা আওয়ামীলীগ করো::
লিখেছেন লিখেছেন ইশতিয়াক আহমেদ ১৭ জুলাই, ২০১৪, ১০:০২:০৮ সকাল
রাজনৈতিক দল পছন্দ করা আপনার
অধিকার। সেই
হিসেবে আপনি আওয়ামীলীগ,
বি,এন,পি, জামায়াত যেটাই করুন,
তার জন্য আপনাকে দোষারোপ
করবো না। কিন্তু আপনি যখন
নিজেকে মুসলিম হিসেবে দাবি করবেন,
তখন আপনার ওই পছন্দ
হতে হবে ইসলামের আলোকে।
সেক্ষেত্রে আপনার পক্ষে ইসলামের
সাথে সাংঘর্ষিক কোনো আদর্শ
বা ভাবনা বা কর্মের
সমর্থনকারী হওয়া হারাম।
যদি ইসলামের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ
হয় তবে সেক্ষেত্রে আপনি আপনার
পছন্দকে অনুসরণ করতে পারেন।
এখন চলুন, ইসলামের
আলোকে সেক্যুলাররিজম সমর্থন
করা যায় কিনা।
সেক্যুলাররিজম এর অর্থ অনুবাদ
করলে সঠিক হবে, "ধর্ম
বিচ্ছিন্নতা মতবাদ". সেক্যুলারিজম
এর মূল বাণী ইংলিশে বলা হয়,
"Separation of state
affairs from religious
affairs" যার বাংলা অর্থ
হলো "রাষ্ট্রীয় ব্যাপার সমূহ ধর্ম
থেক বিচ্ছিন্ন থাকবে".
Separation শব্দের অর্থ
নিরপেক্ষতা নয়, এর অর্থ
হচ্ছে বিছিন্নতা বা আলাদাকরণ।
সোজাসুজি বললে, রাষ্ট্রের আইন-
কানুন, ন্যায়-নীতি সবকিছু ধর্মের
আইন থেকে আলাদা হতে হবে বা ধর্ম
সেখানে কোনো প্রভাব
ফেলতে পারবে না। অন্যকথায়
বলতে গেলে, ধর্ম থাকবে মন্দিরে,
মসজিদে, গির্জায় আর রাষ্ট্র
চলবে মানুষের গড়া আইন দিয়ে।
"ধর্মনিরপেক্ষতা" বলে অনুবাদ
করা হয়েছে মূলত একটা চালাকির
জন্য। চালাকিটা হচ্ছে, যেহেতু
বাংলাদেশের ৯০% মানুষ মুসলিম,
আর ইসলামী শরীয়ায় ব্যবস্থায়
একটা বড় প্রিন্সিপাল হচ্ছে বিচার
হতে হবে নিরপেক্ষ
বা পক্ষপাতমুক্ত, সে মুসলিম হোক
আর হিন্দু হোক। বিচারের ফল
মুসলিমের বিরুদ্ধে-ও
যেতে পারে আবার হিন্দুর
বিরুদ্ধে যেতে পারে। এখন যেহেতু
৯০% মানুষ মুসলিম তাই
"ধর্মবিচ্ছিন্নতা" অনুবাদ
করলে ভোট ব্যাংকে ভাটা পড়বে, তাই
চলো অনুবাদ করি 'ধর্ম
নিরপেক্ষতা" আর যদি কেউ
কোনো প্রশ্ন তোলে, তখন
ব্যাখ্যা দেয়া হবে ইসলামী শরিয়ার
বিচার ব্যবস্থার ওই নিরপেক্ষ
প্রিন্সিপাল দিয়ে, তাতে সাপ-ও
মরবে, লাঠি-ও ভাঙ্গবে না। সাপ
বলতে বুঝাচ্ছি,
বিদেশী প্রভুদেরকে সেক্যুলারিজম
বলে আর্থিক, রাজনৈতিক সকল
স্বার্থ হাসিল, আর লাঠি ভাঙবে না,
অর্থ হচ্ছে সরল সাধারণ
বাংলাদেশী মুসলমানদের ভোট ব
ব্যাংক না হারানো।
নিরপেক্ষতাকে ইংলিশে বলা হয়
"Neutrality"
অথবা বলা যেতে পারে "Non-
discrimination"
অথবা বলা যেতে পারে,
"Regardless". যার বিপরীত
হচ্ছে "Discrimination"
বা Partiality বা পক্ষপাতদুষ্ট।
তাহলে আওয়ামীলীগের বুদ্ধিজীবীদের
এই চালাকির উত্তরে বলছি,
ইসলামী বিচার ব্যবস্থা পক্ষপাত
মুক্ত সেটা সকল মুসলমান জানে।
আচ্ছা, ধরে নিলাম
আপনারা ইসলামী বিচার ব্যবস্থার
ওই প্রিন্সিপালকে সমর্থন করছেন,
এখন আমার প্রশ্ন শুধু
একটা প্রিন্সিপালকে কেন আদর্শ
করে নিচ্ছেন?
পুরো ইসলামকে ধরে আদর্শ
করে নিন, আল কোরআন ও
সুন্নাহকে সংবিধান করুন, আর বলুন
যে আপনারা ইসলামী দল, তাহলেই
তো শেষ হয়ে গেলো। কিন্তু না,
সেটা আপনারা করবেন না, কারন
তারপরের দিন থেকে দিল্লি থেকে,
নিউইয়র্ক থেকে, ইসরাইল
থেকে ডলারের বস্তা পাবেন না,
সমর্থন-ও পাবেন না। ইসলামের
বিরুদ্ধে গেলেই ওই গুলো পাবেন।
সেক্যুলারিজমকে "ধর্ম নিরপেক্ষতা:
বলে চালিয়ে দেয়া একটি অনুবাদগত
ধুর্তমি। বাংলাদেশের মানুষ লেখা-
পরা শিখতে শুরু করেছে, আল্লাহর
রহমতে ইসলামী মিডিয়া এসেছে যার
মাধ্যমে মানুষ ইসলামী জীবন
ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে পারছে,
বেশি দিন এই ধুর্তমি আওয়ামীলীগের
টিকবে না। তোমরা আল্লাহর
প্রতি ঈমান তুলে দিচ্ছো, কোরআনের
ডাইরেক্ট আয়াত (সুরা নিসাআ,
আয়াত ১১) বিরোধী আইন করছো।
আল্লাহ বলছে পরিচয় তোমাদের
মুসলিম, আর তোমরা সেই পরিচয়
তুলে সেক্যুলার পরিচয় নিচ্ছো।
রাছুলুল্লাহ (স বলছেন সবকিছুর
পূর্বে বিসমিল্লাহ দিয়ে শুরু
করতে আর তোমরা বিসমিল্লাহ
তুলে দিতে চাচ্ছো। এর পর-ও
মানুষকে কি বলবা, তোমাদের
সেক্যুলারিজম মানে ইসলামী বিচার
ব্যবস্থার ওই পক্ষপাতমুক্ত নীতি?
মানুষকে কি একেবারে বোকা পেয়েছো?
এখনো সময় আছে, আল্লাহকে ভয়
করো। জামায়াতের
সাথে শত্রুতা করো,
হেফাজতকে গালি দাও,
ইসলামী ঐক্যজোটকে তামাশা করো,
সেটা এক ধরনের অপরাধ, আর তার
চেয়ে হাজার হাজার গুন বড় অপরাধ
হচ্ছে ইসলামের সাথে শত্রুতা করা,
আল্লাহ ও
রাছুলকে নিয়ে তামাশা করা। নমরুদ,
ফেরাউন, আদ জাতি, ছামুদ
জাতি থেকে শিক্ষা নাও, তোমাদের
বাড়া-বাড়ি এখন এমন
পর্যায়ে চলে গেছে যে আল্লাহ সহ্য
করবেন না। আল্লাহ রাব্বুল
আলামীন তার
রাচুলকে জানিয়ে দিয়েছেন, মজলুমের
দুআ আর আল্লাহর আরশের
মধ্যে কোনো পর্দা নেই, মজলুমের
দুআ শুধু কন্ঠ থেকে বের হবে আর
আল্লাহ তার দুআ কবুল করবেন।
তোমাদের প্রতি অনুরোধ করছি,
হয়ত কোনো মুসলমানের
ঘরে তোমাদের জন্ম, আল্লাহ ও
রাছুলকে নিয়ে তামাশা করো না,
তওবা করো, সেক্যুলারিজম
একটি কুফরী আদর্শ, এটা বাদ
দিয়ে ইসলামকে দ্বীন
বা জীবনব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ
করো। কোরআনে বার বার আল্লাহ
বলছেন ইসলাম হচ্ছে তোমাদের দ্বীন,
তোমাদের জীবন ব্যবস্থা। আল্লাহ
বলছেন, তিনি ইসলামকে পরিপূর্ণ
করেছেন, জীবন চলার পথে যা কিছু
লাগে সবকিছু আল্লাহ বয়ান
করে দিয়েছেন, তোমাকে ইউরোপ
আমেরিকা থেকে তাদের আদর্শ আইন
ধার করে নিয়ে আসতে হবে না।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন
হুশিয়ারী দিয়েছেন,
যদি তোমরা ইসলামের কিছু অংশ
গ্রহণ করো, আর কিছু অংশ
প্রত্যাখান করো, তাহলে এই
দুনিয়াতে হবে অপমানিত আর
আখিরাতে রয়েছে ভয়ঙ্কর আযাব।
আওয়ামীলীগ সমর্থনকারীদের বলি,
তোমাদের সাথে আমাদের
কোনো শত্রুতা নেই,
শত্রুতা তোমাদের আদর্শের সাথে,
ইসলামী আদর্শ গ্রহণ করো, দ্বীনের
ভাই বলে সব
ক্ষমা করে দিয়ে বুকে নেবো, আর
যদি কুফরী আদর্শকে প্রতিষ্ঠা করার
জন্য লড়াই করতে থাকো,
তাহলে জেনে রেখো নিজের মায়ের
পেটের ভাই হলে-ও তোমাদের
সাথে দেখা হবে জিহাদের মাঠে।
পৃথিবীর কোনো মোহ, ভালবাসা,
রক্তের সম্পর্ক আমাদের
যাত্রাকে থামাতে পারবে না, আমাদের
গন্তব্যস্থল আল্লাহর জান্নাত,
তাই সেই পথে বাঁধা দিতে আসলে হয়
আমরা মরবো,
নইলে তোমাদেরকে মেরে কালিমার
পতাকা তুলবো। এখনো সময়
আছে তওবা করো।
বিষয়: বিবিধ
১৫৭৫ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন