একটি ধর্ষনঃ অতঃপর ?
লিখেছেন লিখেছেন ইশতিয়াক আহমেদ ১৩ মার্চ, ২০১৪, ০৮:৫২:০৪ রাত
পাশের রিকশায় লুবনার মত একটা মেয়েকে দেখে চমকে ওঠে রাব্বী ।বন্ধুদের কাছে শুনেছে লুবনার অনেক ছেলেরসাথে রিলেশান।কিন্তু লুবনাকে রাব্বী চেনে।সুন্দরী বলেই এত অপবাদ । পরীক্ষা করে প্রমানপেয়েছে অনেকবার ।মেয়েটার দোষ নেই ।জ্যামে পড়ে পাশের রিকশায় লুবনার স্বরশুনে ভড়কে যাবার পর রাব্বী খানিকটা অসহায়বোধ করতে থাকে । ৫ বছরের রিলেশান ওদের ।ক্লাস নাইনে থাকতে লুবনা আর রাব্বী একই কোচিং সেন্টারে যেত । প্রায় দিন পাশাপাশি সিএনজিতে বসতো ।রাব্বী খানিকটা লাজুক প্রকৃতির । তাই একটু সরে বসতো । ফান বা অন্য যাই উদ্দেশ্যেই হোকঃ লুবনা চেপে বসতো আরো।সেটা অন্যকারো সাথে করতো না । ছোট বেলার বন্ধু বলেই এতটা চিনতো রাব্বীকে ।একদিন হাতটাও ধরেছিলো । আর রাব্বী অবাক হয়ে হাতটা অন্য হাতে ধরে রেখেছিলো । বুকেরমধ্যে বান ডেকেছিলো ভালোবাসার।রাব্বীই প্রপোজ করে লুবনাকে । কয়েকদিন ঝুলিয়ে রাজি হয় লুবনা।ভালো রেস্টুরেন্টে খাওয়া আর শপিং পাগলমেয়েটার পিছে টাকা উড়াতেই বেশি পছন্দকরতো রাব্বী। লুবনা বাঁধা দিতো । বলতো এতআস্কারা দিয়ো না ।প্রথম চুমু ক্যাফের আলো আঁধারীতে।পারিবারিকভাবেই বিয়ে ঠিক দুজনার। এমনকি ফিজিক্যাল রিলেশানও আছে।তবু ?রাব্বী আর ভাবতে পারে না ।পকেটের ফোন বের করে লক খুলে ওয়ালপেপারে দেয়া লুবনার মুখটা দেখে কষ্টলাগে।নিশ্চিত হতে ফোন দেয়।পাশের রিকশায় ফোন বাজে ।হ্যাঁ , লুবনার ফোন বাজছে । কারন রিংটোনটা চেনা ।লুবনা পাশের ছেলেটিকে বলেঃছাড়ুন।আর্তনাদ করে লুবনা ।ছেলেটা হয়তো থামতে চায় না ।আহ করে একটা অস্ফুট শব্দকরে লুবনা বলেঃ কি হচ্ছে এসব !আপনি আমাকে প্লিজ স্পর্শ করবেন না এভাবে।আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে !রাব্বী ফোন রেখে দেয়।লুবনাকে সে ভালোবাসে ।সন্দেহও করতে গিয়েওপারে না।কারন জানে লুবনা এমন নয় ।ভাবে হয়তো অন্য কেউ হবে।লুবনার অনেক সাহস ।সে এমন অন্যায় সহ্য করবে না ।ততক্ষণে জ্যাম ছেড়ে রিকশা এগিয়ে চলছে বহুদুর ।দু"মাস পরের ঘটনাঃলুবনার স্ক্যান্ডাল ভিডিও বেরিয়েপড়ে ।সাথে খবরঃ লুবনা প্রেগনেন্ট ।সব ভুলে গিয়ে রাব্বী আবার লুবনাকে ফোন দেয় ।লুবনা ফোন ধরে না প্রথমে ।কয়েকবার রিং হবার পরে ধরে।কাঁপা কন্ঠে বলেঃ-
হ্যালো । তুমিও কিছু বলবে ? বলো।
তুমি প্রেগন্যান্ট ?
- হ্যাঁ ।
আমি যদি সন্তানটার বাবার পরিচয় দিতে চাই,রাজি হবে ?
- না ।
ক্যানো ?
কারন সন্তানটা তোমার নাও হতে পারে ।
প্লিজ ।- আমি ভুল করেছি আর তুমি উপহাস করছো?: আমি আসছি । তুমি লাল শাড়ি পড়ে থাকো ।- আমি জানি তুমি আসবে না । বড্ডদেরী করেছি আমি।তোমায় অনেক কিছু বলার ছিল। তোমায় ভালোবাসতে পারি নি । প্লিজ ক্ষমা করো না আমায়, অভিশাপ দিয়ো ।বলেই ফোন কেটে দেয় ।
গুছিয়ে লাল শাড়ি পড়ে।বড় করে টিপ দেয় লুবনা ।কয়েক ঘন্টা পর রাব্বী আসে । এসে দেখে অনেকভীড় ।
এম্বুলেন্সের শব্দ আর ভীড় ঠেলে যেতে শোনে ছাদ থেকে মেয়েটা লাফিয়ে পড়েছে ।লাল শাড়িটা রক্তে ভিজে আরো লাল হয়েছে।হাতের মুঠোয় ধরা একটা চিঠি পায়ঃ
প্রিয়তম মেষু ,
কয়েকজন কলিগ অফিসের একটা পার্টিতে আমায় ধর্ষণ করে ক্যামেরায় ধারণ করেছিলো নগ্ন দৃশ্য ।আমি শরীর দিতে বাধ্য হয়েছি । শুধু তাদেরকেই না অনেক মানুষকে।আমি সেই সন্তানকে তাই পিতার পরিচয় দিতে পারি না ।আমায় ক্ষমা করো দিয়ো ।ইতিলুবনা ।
রাব্বীর হাত থেকে চিঠিটা পড়ে যায় ।চোখে ভাসে মেয়েটার মিষ্টি হাসি।সাহসী মেয়েটার লাশ নিয়ে যায় লাশকাটা ঘরে।রাব্বী কিছুই করতে পারে না ।
রাতের আঁধার নামতেই শপথ নেয় রাব্বী । যে করেই হোক সে লুবনার সাথে অন্যায়ের বদলা নিবে।একটা একটা করে খুন করবে ঐ পিশাচদের।শখের বশে শেখা শ্যুটিং প্রাকটিসকাজে দিবে তাকে ।একটা একটা করে পশুকে সে পাঠাবে লাশকাটা ঘরে ।জোছনা করেছে খুব ।রাব্বী এলোমেলো পা ফেলে হাঁটে ।চিত্কার করে বলতে চায়ঃ লুবনা আমায়ক্ষমা করে দিয়ো ।লুবনা কি শুনছে ?
[[ গল্পটি লিখার পর নিজের চোখেরপানি ধরে রাখতে পারি নাই । ]]
বিষয়: বিবিধ
১৩৪৭ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন