ইচ্ছা হয় প্রতিটা মুহূর্ত মায়াবী হাসির দর্শক হয়ে থাকার

লিখেছেন লিখেছেন ইশতিয়াক আহমেদ ০৯ মার্চ, ২০১৪, ১২:২৩:২৫ রাত

শায়লা বেগম দ্বিতীয় বারের মত ছেলের রুম থেকে ঘুড়ে এলেন। দুইবারই ছেলের রুমে গিয়ে তিনি ভিশন ভাবে চম্কেছেন। চমকে যাওয়ার পিছনে কারন আছে। তার ছেলে যথেষ্ট ত্যাঁদড়, সারাদিন ঘর মাতিয়ে রাখে। চেহারায় হাসি লেগে থাকে সারাক্ষণ, কিন্তু গত দুই দিন ধরে লক্ষ করছেন তার ছেলে কেমন মন মরা থাকে। কারো সাথে তেমন একটা কথা বলে না। সারাদিন রুমের ভিতর। আজ তো তার ছেলে সব মাত্রা অতিক্রম করে তার ছেলেকে কাঁদতে দেখেছেন। কোনও টেন পড়ুয়া ছেলে রুমে ঢুকে বালিশ জড়িয়ে কাঁদছে, বিষয়টি ভালো দেখায় না। শায়লা বেগম তার রুম থেকে উঠে ছেলের রুমের দিকে হাটা ধরলেন। আর চুপ করে থাকা যায় না, ছেলের কান্নার কারন জানতে হবে কান্না থামিয়ে ফ্রেশ হয়ে পড়ার টেবিলে বসল অন্তু। পড়া হচ্ছে না, বারবার চোখ গুলো ঝাপসা হয়ে আসছে। বুকের ভিতর কেমন যেন শুন্য মনে হচ্ছে। লামিয়া অন্তুর বান্ধবী, কেমন বান্ধবী অন্তু জানে না। তবে অন্য বান্ধবী থেকে একটু বেশি বন্ধুত্ব। তারা রাত জেগে ফেসবুকে চ্যাট করে, মোবাইলে ম্যাসেজিং। দিনে মাঝে মাঝে কথা হয়, স্কুলে গেলে চলে আড্ডা। একে অন্যের কথা শুনে। সিরিয়াস কথা, লামিয়ার ভাষায় "ফাও কথা" ফাও কথা অন্তুর শুনতে ভালো লাগে। অন্তু মনযোগ দিয়ে শুনতে থাকে। বন্ধুরা বলে লামিয়া অন্তুর জিএফ। মানতে চাঁই না, রাগ দেখায় কিন্তু মনে ঠিকই খুশি হয়। ক্লাসের সবচেয়ে সুন্দর দুরন্ত মেয়েটি তার জিএফ ভাবলেই যেন মন আকাশে উড়ে। কিন্তু বন্ধুদের ধারনা সব ভুল। লামিয়া অন্তুর শুধুই বন্ধু। এই কথা অন্তু বলেনি, লামিয়া বলেছে। লামিয়ার বয়ফ্রেন্ড আছে। লামিয়ার বয়ফ্রেন্ড অনেক বড়, কলেজে পড়ে। কলেজ পড়ুয়া বড় ভাইটির সাথে লামিয়ার অনেক ভাব। আগে জানন্ত না, আজ জেনেছে। লামিয়ায় নিজেই অন্তুকে বলেছে। অন্তু কিছু বলেনি। চুপ করে শুনছিল। শুধুই বন্ধুদের সব কিছু বলতে নেই। কথা গুলো ভাবতেই অন্তুর চোখের আবার জল গড়িয়ে পড়ে। অন্তু মুছার চেষ্টা করতে থাকে। তার কান্না যাবে না, মা জানলে বকবে। বাবাকে ও বলতে পারে। শায়লা বেগম ছেলে অন্তুর পাশে বসে আছেন। কি বলবেন ভেবে পাচ্ছেন না। অন্তু বইয়ের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। - অন্তু - হুম্ - পড়ালিখা কেমন চলছে? - ভালো - স্কুল কি বন্ধ? - না মা - টিচার বকেছে? - না - তাহলে দুই দিন স্কুলে যাওনি কেনো?? - এমনি - এমনিতে কেউ স্কুল গ্যাপ দেয় না। অন্তু মায়ের প্রশ্নের কি উত্তর দিবে ভেবে পাচ্ছে না। শায়লা বেগম উত্তরের অপেক্ষায় ছেলের দিকে তাকিয়ে আছেন। উত্তর না পেয়ে হতাশ হয়ে আবার বললেন - অন্তু - হুম্ - "হুম্" কোনও শব্দ না, কেউ ডাকলে "জ্বি" বলতে হয় - আচ্ছা - তোমার কি মন খারাপ? - না মা - বন্ধুদের সাথে ঝগড়া হয়েছে? অন্তুর কিছু না বলে চুপ করে থাকে। এই প্রশ্নের কোনও উত্তর নেই তার কাছে। - কিছু বলছো না কেনো? - মা আমি কিছুক্ষণ একা থাকি??? ছেলে অন্তুর কথা শুনে শায়লা বেগম কিছুটা অবাক হলেন। তার ছেলে এমন ব্যবহার করে না। কিছু একটা বলতে গিয়েও থেমে গেলেন। এখন কিছু না বলায় ভালো। সময় হলে অন্তু নিজেই এসে বলবে লামিয়া স্কুল বারান্দায় দাড়িয়ে গেটের দিকে তাকিয়ে আছে সে কখন থেকে, অন্তু এখন আসেনি। অসুস্থ কিনা জানার জন্য ফোন দিয়েছিল শয়তান টা ফোন ধরেনি। অন্তু টার প্রতি মাঝে মাঝে বিরক্ত লাগে তার। কাজের সময় পাওয়া যায়। আজ অন্তু না আসলে ঝামেলায় পরতে হবে। আজ সোহেল ভাইয়ার বার্থডে। সোহেল ভাই লামিয়ার বয়ফ্রেন্ড। জন্মদিনের গিফট দিতে হয়। লামিয়া গিফট এনেছে, দেওয়া হইনি। অন্তুকে দিয়ে দিতে হবে। স্কুলে এসে লামিয়ার সাথে কথা না বলে ক্লাসে ঢুকে পরে অন্তু। সে ঠিক করেছে লামিয়ার সাথে কথা বলবে না। একজন শুধুই বন্ধু লামিয়ার সাথে কথা না বললে লামিয়ার বেশ চলবে। অন্তুর চেহারার দিকে তাকিয়ে হা হয়ে গেল লামিয়া। অন্তুর হয়েছেটা কি?? কথা বলছে না কেনো তার সাথে? ভাবতে ভাবতে অন্তুর পাশে গিয়ে বসে লামিয়া - ভাব দেখাস? - কিসের ভাব? - দেখেও না দেখার ভান করে চলে গেলি - খেয়াল করিনি - হুম্ - দুই দিন আসিসনি কেনো? - ইচ্ছে করেনি। - তোকে আমার একটা হেল্প করতে হবে - আমার কাজ আছে, পারবো না অন্তুর না বলা শুনে চমকায় না লামিয়া। অন্তুকে রাজি করার বুদ্ধি সা জানে। লামিয়া অন্তুর দিকে তাকিয়ে মুখ কাচুমুচু করে বলল - আজ সোহেল ভাইয়ের জন্মদিন। অন্তু ভেবেছিল উত্তর দিবে না। শেষে না পেরে বলল - তো আমি কি করবো? - আমাকে একটু নিউমার্কেট নিয়ে যাবি? - কেনো? - সোহেল আসবে, তাকে গিফট গুলো দিবো কথা গুলো শুনে অন্তু রাগ হয় খুব। চেহের স্বাভাবিক রেখে বলল - আমি পারবো না লামিয়া চেহারা আরো কালো করে অনুরোধের সুরে বলল - প্লিজ , প্লিজ এই শেষ বার হেল্প টুকু কর। লামিয়ার কালো হয়ে যাওয়া চেহারা দেখে অন্তুর বুকে মোচর দিয়ে উঠে। না বলতে যেয়েও রাজি হয়ে যায় লামিয়ার পাশে বসে আছে অন্তু। চলন্ত রিকশার চারপাশ থেকে ভেসে আসা বাতাসে লামিয়ার চুল উড়ছে। অন্তু মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে লামিয়ার দিকে। লামিয়ার চেহারায় হাসি। এই মায়াবী হাসিটির জন্য টান অনুভব করে অন্তু। ইচ্ছে হয় প্রতিটা মুহূর্ত মায়াবী হাসির দর্শক হয়ে থাকার। মুগ্ধ হয়ে সাই হাসি উপভোগ করার। অন্তু জানে লামিয়ার এই হাঁসির কারণ. অন্ত না,অন্যজন। শুধুই বন্ধুরা মায়াবি হাসি দেখার সৌভাগ্য হয় না।তারা শুধুই বন্ধু হয়ে থেকে যায়।

ইহা একটি স্কুল লাইফের কোনো ছেলের ছ্যাঁকা খাওয়ার আজাইরা গল্প। বাস্তবের সাথে ইহার কোন মিল নাই।

বিষয়: বিবিধ

১৩০৪ বার পঠিত, ২০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

189126
০৯ মার্চ ২০১৪ রাত ১২:৫২
প্রবাসী মজুমদার লিখেছেন : গল্পটি সুন্দর। আপনি একবারে লিখে পোষ্ট করে দিয়েছেন। আমি একটা লিখা লিখে কয়েকবার রিভাইজড দেই। প্রতিবারেই কিছুনা কিছু ভূল পাই। অগোছালো বাক্য পাই। পাঠকরা পড়ার সময় শব্দ ভূল বা বাক্য অমিল দেখলে গর্পের রস হারিয়ে ফেলে। আপনার লিখাটা দু দিন পরে দিলে কি হত। ধরুন এটাই হতে পারত এইট শ্রেষ্ঠ গল্প। কবি নজরুল রবীন্দ্রণাত প্রথমবারে আপনার মত ও লিখতে পারেনি।

কাজেই যেন তেন ভাবে লিখে নিজেকে অবমুল্যায়নের কোন মানে হয়না। ভাল লিখতে পারেন। কিন্তু সিরিয়াস নয়। তবুও ধন্যবাদ।
১০ মার্চ ২০১৪ রাত ১১:৩৫
141149
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম। ধন্যবাদ আপনাকে ,আমার ভুলগুলি ধরিয়ে দেওয়ার জন্য। সামনে থেকে বিষয়গুলা লক্ষ্য রাখবো ইনশাল্লাহ। ধন্যবাদ
১১ মার্চ ২০১৪ রাত ০২:২১
141214
প্রবাসী মজুমদার লিখেছেন : মন খারাপ করার মত কিছু বলিনি। তবুও দুঃখিত। আপনার মত অনেক ব্লগার ভাল লিখক হয়েছে। যে পারেনা বলে তাকে পারতে দেখেছি। সিরিযাসনেস দরকার। আমি আশাবাদী আপনি পারবেন।
১১ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৭:১১
141271
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : কি বলছেন আপনি! আমি মন খারাপ করবো কেন? আপনি তো আমার ভালোর জন্যই বলেছেন। আর সামনেও আশা করি ভুলগুলিয়ে দেখিয়ে দিবেন ।ধন্যবাদ
189181
০৯ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৮:৪০
টাংসু ফকীর লিখেছেন : অনেক সুন্দর জনাব, অনেক ধন্যবাদ
১১ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৭:১২
141272
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ
189211
০৯ মার্চ ২০১৪ সকাল ১০:০০
বাংলার দামাল সন্তান লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম, জাজাকাল্লাহুল খাইরান, অনেক সুন্দর পোস্ট
১১ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৭:১৩
141273
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : ওয়ালাইকুম আসসালাম।
ধন্যবাদ
189242
০৯ মার্চ ২০১৪ সকাল ১১:০৭
সিটিজি৪বিডি লিখেছেন : আপনি ভাল গল্প লিখতে পারেন।
১১ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৭:১৫
141274
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : তাই নাকি?
189257
০৯ মার্চ ২০১৪ সকাল ১১:২৮
সজল আহমেদ লিখেছেন : গল্পটা ভাল লাগল।
১১ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৭:১৬
141275
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : ধন্যবাদ
189356
০৯ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০৩:০০
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : বানানের দিকে অবশ্যই খেয়াল রাখা দরকার।
১১ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৭:১৭
141276
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : অবশ্যই খেয়াল রাখবো। ধন্যবাদ
189441
০৯ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:০৫
ফাতিমা মারিয়াম লিখেছেন : আপনি বেশ ভালো লিখতে পারেন। ধন্যবাদ Rose Rose Rose
১১ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৭:১৮
141278
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ
189605
০৯ মার্চ ২০১৪ রাত ১০:১৮
গ্যাঞ্জাম খানের খোলা চিঠি লিখেছেন : যতই স্বাদ লাগুগ গে, এতো লুম্বা পেয়ারা (প্যারা পড়নের) খাওনের দর্য্য নেই মোর।
১১ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৭:২০
141279
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : এতো গ্যাঞ্জাম নিয়া পড়বেন কিলা?
190530
১১ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৪:১১
ভিশু লিখেছেন : Rolling Eyes Rolling Eyes Rolling Eyes
Broken Heart Broken Heart Broken Heart
গল্প ভালো...Happy Good Luck
১০
207629
১৪ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০১:০২
অজানা পথিক লিখেছেন : ভাল্লাগছে

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File