চির মুক্তি

লিখেছেন লিখেছেন ইশতিয়াক আহমেদ ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১০:৩০:৪৫ রাত



অন্যদিনের মত আজও সারাদিন কিছু টুকটাক কাজে ব্যস্ত ছিল সুমাইয়া। বেলা পড়ে এল, আম্মার এখনো এলোনা। উদ্বিগ্ন হয়ে সে ঘরে অপেক্ষা করছিল। এমন সময় আম্মার এসে ডাকলেন।

ঃ মা!

ঃ বাছা আমার!

ঃ মা, আমরা মুক্তি পেয়েছি। আমরা কারো দাস নই। সকলেই আল্লাহর দাস।

ঃ কি বলছ বাছা! মা উযযা তোমার ভাল করুন।

ঃ উযযা বলে তো কিছু নেই মা। আকাশ-বাতাস, আমার-তোমার সকলেরই সৃষ্টিকর্তা এক আল্লাহ। তিনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই।

ঃ আস্তে বল বাব। কি খারাপ কথা!

ঃ না মা খারাপ নয়,সত্য কথা। আল-আমিন আল্লাহর তরফ থেকে বাণী নিয়ে এসেছেন। তিনি আল্লাহর রাসূল। আমাদের সকলের মুক্তি এতেই। তিনি কখনো মিথ্যা বলেন না মা।

ঃ আল-আমিন বলেছেন? তিনি তো আমাদের কত আপন! তাকে তো কখনো মিথ্যা বলতে শুনিনি।

ঃ তিনি মিথ্যা কথা বলতে পারেন না মা।

ঃ তিনি কি বলেন?

ঃ লাত,উযযা এগুলো তো পুতুল। এদের কোন শক্তি নেই। দুনিয়ার সবকিছু আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। মানুষও তার সৃষ্টি। সাদা-কালো,গোলাম-মালিক বলতে কোন ফারাক নেই। সকলেই আল্লাহর দাস।

ঃ সুন্দর কথা তো।

ঃ মা,তুমিও আমার মতো মুসলিম হয়ে যাও।

ঃ মুসলিম কী?

ঃ যারা আল-আমিনের কথা মানে,তাদেরকে মুসলিম বলে।

ঃ কি করতে হবে?

ঃ বল- لاالہالله ِمحممدالرسولﷲﷺ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।

অনেক দিন পর ইয়াসির একটু বাইরে গিয়েছিল। কাবা ঘর তাওয়াফ করে কুরাইশদের দরবারে গিয়ে একটু বসল। আল-আমিনের আলোচনা হচ্ছিল। সকলেই বলছিল লোকটা বেদ্বীন হয়ে গেছে। আবু তালিবের ভাতিজা বাপ-দাদার কুৎসা রটাচ্ছে। ইয়াসিরের সে আলোচনায় যোগ দিতে ভালো লাগছিলোনা। সে বেরিয়ে পড়ল। পথে দেখল এক জাগায় জটলা। কয়েকজন সপাং-সপাং করে বেত মারছে একটি লোককে ধরে। জানতে পারলো লোকটি বেদ্বীন হয়ে গেছে। তাই শাস্তি দেওয়া হচ্ছে তাকে।

বিরক্তিতে ভরে গেল ইয়াসিরের মনটা। বাড়ি ফিরে এলো। সুমাইয়াকে বলল-

ঃ মক্কা আর আগের মতো নেই,সুমাইয়া!

ঃ কেন কী হল?

ঃ সবাই বলছে আল-আমিন বেদ্বীন হয়ে গেছেন। কাউকে কাউকে এই অপরাধে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।

ঃ তিনি বেদ্বীন হবেন কেন? এরাই বেদ্বীন।

ঃ তাই তো, আল-আমিনের মত ব্যক্তি বেদ্বীন হতে পারেন নাকি? আমার বড্ড আশ্চর্য লাগছে।

ঃ আম্মার বলল, আল-আমিন আমাদের মুক্তির কথা বলছেন। তাই কুরাইশরা ক্ষেপে গিয়ে বেদ্বীন বলছে তাকে।

ঃ ইয়াসির বলল, তিনি তো মিথ্যা বলেন না কখনো । চল তার ধর্মই আমরা গ্রহণ করি সকলে।

ঃ এর পরিণাম ভেবেছ কখনো?

ঃ পরিণাম কি, মরতে তো একদিন হবেই। দাস হয়ে মরে লাভ কি?

ঃ সুমাইয়া বলল, আবু আম্মার ও আমি তার ধর্ম গ্রহণ করেছি,তুমিও করো। আমার বিশ্বাস আল-আমিনের জয় হবেই।

ঃ হুঁ আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়তে বলছ? স্বপ্নের কথা মনে পড়ছে আমার,আমি যেন আগুনে ঝাঁপ দিচ্ছি।

ঃ আগুন নয়; চির মুক্তি,চির প্রশান্তি। এ আগুনের সামান্য জ্বালা সইতে পারলেই পাওয়া যাবে মহামুক্তি,মহাশান্তি।

বিষয়: বিবিধ

১০৮৫ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

178090
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১০:৪৯
নূর আল আমিন লিখেছেন : অসাধারন লিখছেন ভাই
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:৫১
131490
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : ধন্যবাদ
178140
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১১:৫৬
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : চমত্কার লিখেছেন
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:৫২
131491
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ
178145
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:০২
মেঘ ভাঙা রোদ লিখেছেন : আগুন নয়; চির মুক্তি,চির প্রশান্তি। এ আগুনের সামান্য জ্বালা সইতে পারলেই পাওয়া যাবে মহামুক্তি,মহাশান্তি।
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:৫৩
131494
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : O:-)
178164
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:১৫
শিকারিমন লিখেছেন : পিলাচ পিলাচ।
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:৫৫
131496
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : ধন্যবাদ :-)
178285
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৪:৩২
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : সত্যিকার অর্থে এতেই মুক্তি।
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:৫৭
131498
ইশতিয়াক আহমেদ লিখেছেন : হুম.......... ধন্যবাদ আপনাকে

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File