তেঁতুল শফীর ইউ-টার্ন....................................।
লিখেছেন লিখেছেন জোসনা বিবি ০৪ নভেম্বর, ২০১৩, ০৫:১৮:৫২ সকাল
“মহিলাদেরকে বলছি, আমি মহিলাদেরকে রানীর সাথে তুলনা দিয়েছি। আমি মহিলাদেরকে ফুলের সাথে তুলনা দিয়েছি।”
নারীদের তেঁতুল বলেননি ব্যাখ্যা দিয়ে হেফাজতে ইসলামীর আমির শাহ আহমদ শফী একথা বলেন।
গত ২ নভেম্বর বিকালে চট্টগ্রামের
হাটহাজারী পাবর্ত্য উচ্চ বিদ্যালয়
মাঠে এক সমাবেশে তিনি বক্তব্য
রাখছিলেন। সমাবেশে শফী বলেন,
► “কোন জায়গায় একটা ওয়াজ করেছিলাম। আমার আগের পরের কথা কিছু মনে নাই। শুধু
বলতেছে, মহিলাদেরকে আমি কোনো সুযোগ দেব না। এটা একেবারে মিথ্যা কথা, ভুয়া কথা।”
► “শুধু এ কথা বলেছিলাম, ফুল দেখলে সবাই নাকে লাগাইতে চায়। তার ঘ্রাণ নিতে চায়। সেজন্য
তাদেরকে বলেছি তোমরা উলঙ্গ অবস্থায় এদিক সেদিক ঘোরাফেরা করবে না।”
► “এ কথা বুঝে নাই। সরকারও বুঝে নাই। সরকারের মন্ত্রীরাও আমার কথা বুঝে নাই। আমি মহিলাকে তেঁতুলের মত বলেছি, তেঁতুল বলি নাই। এরা কিছু
বুঝে না।”
► “তেঁতুল গাছের নিচ দিয়ে হেঁটে গেলে ছোট ছোট ছেলেদের তেঁতুল খাইতে দেখলে মুখের মধ্যে লালা আসে।”
► “একজন সাংবাদিক আমার কাছে গিয়ে এ কথা বলেছিল। বলেছি, আপনি বসেন। একটি সুন্দরী মেয়ে আপনার কাছে পাঠিয়ে দেব। তারপর আপনার দিলের কি অবস্থা হয় আমাকে জানাইবেন। একথা বলার সাথে সাথে উনি কোনো জবাব না দিয়ে চলে যান।”
► “মন্ত্রীরা যারা আমার বিরুদ্ধে বলছে তাদের আমার কাছে নিয়ে আসেন। আমি একজন সুন্দরী মহিলা উনার কাছে পৌছাঁয়ে দিব।
দু’চার মিনিট কথাবার্তা বলুক তারা। তারপর মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করব। তুমি যদি পুরুষ হইয়া থাক তাহলে তোমার দিলের অবস্থা বাতাও।”
► “আমার নামে শুধু বদনামি।
আমি মহিলাদেরকে লেখাপড়া করতে দিব না। চাকরি-বাকরি করতে দেব না। এটা সবসময়
বলা হইতেছে।”
► “আমি মহিলাদেরকে লেখাপড়া করানোর জন্য আদেশ দিতেছি। কিন্তু লেখাপড়া করবেন আমার ভগ্নিরা আল্লাহর ওয়াস্তে একটু
পর্দার মাধ্যমে। চাকরি করবেন পর্দার মাধ্যমে, এটাই বলতেছি।”
তার এ বক্তব্যে লক্ষনীয় যে, তেতুল বলার কথা অস্বীকার করার পরেও আবার ‘তেতুলতত্ব’ নিয়ে বেশ কয়েকটি বক্তব্য দেন
যা প্রামাণ করে যে তিনি মিথ্যা বলার চেষ্টা করছেন এবং পূর্বের বক্তব্য ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
► আহমেদ শফীর পূর্বের বক্তব্যটির ‘তেতুলতত্ব’ বিষয়ক অংশটি হবুহ তুলে দিচ্ছি-
“একটি মেয়েকে দেখলে দিলের
মধ্যে লালা বাইর হয়। বিবাহ
করতে ইচ্ছা হয়, লাভ মেরিজ, কোর্ট মেরিজ করতে ইচ্ছা হয়। মহিলাকে দেখলে আমার দিল খারাপ হয় না, পরকীয়া দিলের
মধ্যে আসে না। তাহলে আমি বলবো ভাই, এ বুড়া; তোমার ধ্বজ্বভঙ্গ রোগ আছে। তোমার
পুরুষত্ব নষ্ট হইয়া গেছে। সেজন্য
মহিলাদেরকে দেখলে তোমার মনে অপবাধ আসে না। মহিলা তেতুলের মতো, তেতুলের মতো, তেতুলের মতো। ছোট্ট একটা ছেলে তেতুল খাইতেছে আপনি দেখতেছেন, আপনার মুখ দিয়া লালা বাইর হবে। মার্কেটে যেখানে তেতুল বিক্রি করে, ওইদিকে যদি আপনে যান, আপনার মুখ থেকে লালা বাইর হয়। মহিলা তার থেকেও বেশী খারাপ। আপনার মেয়েকে আজকে স্কুলে, কলেজে,
ভার্সিটিতে লেখা পড়া করাইতেছেন। লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ কইরতেছেন, কিছুদিন পরে আপনার মেয়ে স্বামী একটা নিজে নিজে ধইরে নিবে, লাভ মেরিজ, কোর্ট মেরিজ করে চলে যাবে।
আর এ ক্লাস ফোর, ফাইভ পর্যন্ত
লেখা পড়া করান। হে মহিলারা ঘরের চারদেওয়ালের মধ্যে তোমরা থাকো। ঘরের বাহিরে ঘোরাফেরা করিও না। আপনি স্বামীর ঘরের মধ্যে থাইকা, স্বামীর
আসবাবপত্র এগুলো হেফাজত করিবেন। গার্মেন্টসে কেনো দিছেন আপনার মেয়েকে? ফজরে ৭টা, ৮টা বাজে চলে যায়, রাত ৮টা,
১০টা, ১২টায়ও আসে না। কোন পুরুষের সাথে ঘোরাফেরা কইরতেছে তা তুমি জানো না।”
অথচ শফী আজ তার পূর্বের জঘন্য বক্তব্য ধামাচাপা দেওয়ার জন্য মিথ্যাচার করছেন। এই রকম
ডাহা মিথ্যা দিয়ে কি সত্য ঢাকা যায়? কতো বড় মিথ্যাচার! নাওযুবিল্লাহ। শফী তার পূর্বের বক্তব্যে অনড় থাকতে পারতো অথবা দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে পারতো। তা না করে একবারে অস্বীকার করলেন। মিথ্যাচার করা কি একজন ঈমানদার ব্যক্তির কাজ? শফী কি ঈমানদার? মিথ্যাচার করা কি একজন মুসলমান ব্যক্তির কাজ? শফী কি মুসলমান? নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতা ও টাকার
লোভে ‘তেতুলতত্ব’ কে অস্বীকার করে নতুন ‘ফুলতত্ব’ দিয়ে দিলেন। একেই বলে ধর্মব্যবসা। গণতান্ত্রিক
রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার মানেই
ধর্মব্যবসা। অথচ প্রকৃত মুসলমান ঈমানদার ব্যক্তি কখনোই মিথ্যাচার করে না। টাকার লোভ, ক্ষমতার লোভ, নির্বাচনে জয়ী হওয়া ইত্যাদি কোনো কিছুই
ঈমানদার ব্যক্তিকে মিথ্যা কথা বলাতে পারে না। তাই প্রকৃত ঈমানদার আলেম ওলামা ও সকল
মুসলমান ভাইদের কাছে অনুরোধ, আসুন মিঃ শফীর মতো মিথ্যাবাদী ধর্মব্যবসায়ীদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করি, জাতিকে রক্ষা করি, নিজের ঈমান রক্ষা করি।
বিঃ দ্রঃ- আমারব্লগ.কম থেকে কপিপেষ্ট।
বিষয়: বিবিধ
১৮৭৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন