ফেসবুকের বিকল্প ও জনপ্রিয় হচ্ছে ভিকে
লিখেছেন লিখেছেন মুক্তআকাশ ০৫ ডিসেম্বর, ২০১৫, ১০:০৭:০১ রাত
দেশের সার্বিক নিরাপত্তার (?) কারণ দেখিয়ে গত বুধবার ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ, লাইন, ট্যাংগো ও হ্যাংআউটসহ সামাজিক যোগাযোগের কয়েকটি মাধ্যম ও অ্যাপস বন্ধ করে দেয় সরকার। কিন্তু অনেকেই প্রক্সি কিংবা ভিপিএন ব্যবহার করে ঢু মারছে এসব মাধ্যমে। বিশেষ করে ফেসবুকে। তবে ব্যবহারে ধীর গতি বা পুর্ণাঙ্গভাবে ফেসবুক ব্যবহার করতে না পারায় অনেকেই খুজছে বিকল্প পথ। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারিদের কাছে অনেকটাই ফেসবুকের বিকল্প হয়ে উঠতে শুরু করেছে ‘ভিকে ডটকম’।
ভিকে বর্তমান ভার্চুয়াল যুগের একটি জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এই মাধ্যমটির সার্বিক ডিজাইন দেখতে প্রায় ফেসবুকের মতো। লাইক, কমেন্ট, শেয়ার, পোষ্ট ও মেসেজ চ্যাটসহ কাজ সবই প্রায় ফেসবুকের মতো। অনেকে প্রথম দেখায় ফেসবুক বলে ভুলও করে বসে। কিন্তু আসেলে এটা ফেসবুক না। সরকারি নিষেধাজ্ঞার পর ফেসবুকের বিকল্প মাধ্যম হিসেবেই ব্যবহার করছে বাংলাদেশের মানুষ।
ইতিমধ্যে বাংলাদেশীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এই মাধ্যমটি। জনপ্রীয় হয়ে উঠতে শুরু করেছে শহর থেকে গ্রামাঞ্চলের ব্যবহারকারিদের মধ্যেও।
খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কম্পিউটার সাইন্সের ৪র্থ সেমিস্টারের
ছাত্রী সুমাইয়া জামান সোখি ভিকে চ্যাটের মাধ্যমে বলেন, আমার ভাইয়ার মাধ্যমে ভিকের সন্ধান পেয়েছি। এটা মোটামুটি ভালো । তবে ফেসবুকের মতো অতটা ভালো না বলে মনে হয়।
ঝিনাইদহের মাহতাবউদ্দিন কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ও ভিকের নতুন ব্যবহারকাভদ মাহবুবুর রহমান বলেন, ভিকের সন্ধান পেয়েছি আমার বন্ধুর কাছ থেকে। শুক্রবার আমি অ্যাকাউন্ট করেছি। কতটা ভালো হবে সেটা এখনই বলা সম্ভব না। তবে ভিকে ব্যবহার করে অনেক মজা পাচ্ছি।
পিরোজপুর থেকে ভিকে চালানো তানহা নামের এক ব্যবহারকারি বলেন, এক কথায় ভালো। হয়তো ফেসবুকের মতোই হবে। ফেসবুক বন্ধ থাকায় এটা চালাতে পেরে ভাল লাগছে। আশা করি কয়েকদিনের মধ্যে অনেক জনপ্রিয় হবে।
রতিডাঙ্গা শৈলকুপা, ঝিনাইদহ থেকে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ও ভিকের নতুন ব্যবহারকারি মো. আসাদুজ্জামান অনিক বলেন, ফেসবুক প্রক্সি সার্ভারের মাধ্যমে চালাচ্ছিলাম। প্রক্সিতে ফেসবুক চালালে স্পীড অনেক কম থাকে। হঠাৎ দেখি একজন ভিকের লিংক শেয়ার করেছে। যথরীতি লিংকে প্রবেশ করে এখন নতুন অ্যাকাউন্ট করেছি। ব্যবহার করছি। খুব ভালো লাগছে। তবে ফেসবুকের বিকল্প হয় না। দেখি সামনে আরো কয়েকদিন যাক।
টাঙ্গাইল থেকে মীর ইকরাম নামের এক ব্যবহারকারি বলেন, আমি এক বছর আগে অ্যাকাউন্ট খুলেছিলাম। কিন্তু ফেসবুকের কারণে এখানে খুব বেশী আশা হত না। ফেসবুক বন্ধ হওয়ার কারণে ভিকেতে প্রবেশ করতে গিয়ে দেখি পাসওয়ার্ড ভুলে গেছি। পরে নতুন একটা আইডি খুলে চালাচ্ছি। ভিকে কে ফেসবুকের বিকল্প বলা যায়।
সোহানা ইসু নামের এক নারী ব্যবহারকারি বলেন, ভিকের বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবো না। কেমন হবে তাও জানিনা। তবে এটা আমার বন্ধুদের কাছ থেকে জানতে পেরে নতুন একটা অ্যাকউন্ট খুলেছি।
পটুয়াখালী সরকারী কলেজের বিবিএ ১ম বর্ষের ছাত্রী ও ভিকের ব্যবহারকারি লিপি বিশ্বাস বলেন, আমি কারো কাছ থেকেই পাইনি। ইন্টারনেট নিয়ে ঘাটতে ঘাটতে এমনি এমনিই পেয়েছি। তবে খারাপ লাগছে না।
[b]এক নজরে ভিকে:
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ভিকে.কম। ভিকে অর্থাৎ ভি কন্টাক্ট। এটি ২০০৬ সালের ১০ অক্টোবর ভিকন্ট্রাক্ট লিমিটেডের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রধান কার্যালয় রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে। প্রতিষ্ঠাতারা হলেন- পাভেল ডরভ, ইয়াশিলাভ মেবিলাশভিলি, লিভ বিনজুমোভিস লেভিভ ও নিকোলাই ডরভ। ৯ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটির সিইওর দায়িত্ব পালন করছেন বরিশ ডব্রোদেভ।
এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি দেখতে অনেকটা ফেসবুকের মতো। ফেসবুকের লগো এবং অন্যান্য রং সাধারণত নীল রঙের। অপর দিকে ভিকের রং অন্ধকার নলীলের মতো। এটা বেশী জনপ্রিয় রাশিয়া, ইউক্রেন, কাজাকিস্তান, মলদোভা এবং বেলারুশে। বর্তমানে এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির ব্যবহারকারি ৩০০ মিলিয়নের উপরে।
মাধ্যমটিতে অ্যাকাউন্ট খোলা একেবারে সোজা। ফেসবুকের মতোই নিয়মকানুন। ভিকে ডটকম দিয়ে সার্চ করে, সাইন আপে গিয়ে নিয়মানুযায়ী অ্যাকাউন্ট খোলা যায় সহজেই। মোবাইল নম্বর অথবা ইমেইলের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়। তবে মোবইল নম্বর দিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলা বেশী সহজ। ফেসবুকের মতই অন্যান্য তথ্য দিতে হয় অ্যাকাউন্ট করার সময়। এই লিংকে গিয়ে ভিকেতে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন- http://vk.com/
বিষয়: বিবিধ
২০০৪ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সাউদি আরবে কি তবে এ সাইট বন্ধ???
মন্তব্য করতে লগইন করুন