‘ব্রিটেনের নির্বাচন কমিশন রূপকথার গল্পের মতো’

লিখেছেন লিখেছেন মুক্তআকাশ ০৮ মে, ২০১৫, ০৩:২৬:৫৭ দুপুর



বাংলাদেশের নির্বাচনে দলীয় প্রভাব ঠেকাতে নির্দোলীয় নির্বাচন কমিশনার ও কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রের আশপাশে কঠোর পাহারার ব্যবস্থার পরো মোকাবেলা করা সম্ভব হয় না। রিটার্নিং কর্মকর্তারা কোন দলের হবে এটা তো কল্পনাই করা যায় না।

তবে ব্রিটেনের নির্বাচন কমিশনারদের কয়েকজন রাজনৈতিক দলের নির্বাচিত সদস্য। ডিস্ট্রিক বা জেলার নির্বাচিত চেয়ারম্যান, মেয়র বা ডিসি'রা রির্টানিং অফিসারসহ এমন অনেক তথ্য আছে যা বাংলাদেশের সঙ্গে পর্যালোচনা করলে ‘রূপকথার গল্পের’ মতো মনে হবে।

এক নজরে ব্রিটেনের ইলেকশন কমিশন:

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন কমিশন দশ সদস্য বিশিষ্ট একটি বডি। নাম ‘ইলেক্ট্ররাল কমিশন’। কমিশনের বর্তমান প্রধান(চেয়ারম্যান)একজন নারী। নাম ‘জেনি ওয়াটশন’। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্যে দেখা যায় তিনি অন্যান্য কয়েটি সংস্থার সঙ্গেও জড়িত রয়েছেন।

বাকী ৯ জন কমিশনার অল্প সময়ের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত। এই কমিশনারদের মধ্যে ৪ জনই চারটি রাজনৈতিক দল থেকে এসেছেন। এরা হলেন-ব্যারোনস্ ব্রাওনিং ‘কনজার্ভেটিভ পার্টির’, ডেভিড হাওয়ার্ট ‘লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির’, লর্ড কেনেডি ‘সাউথওয়ার্ক লেবার পার্টির’ এবং জর্জ রিড ‘স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির’।

নিয়ম অনুযায়ী প্রধান তিন দল থেকে স্পিকারের মাধ্যমে তিনজন প্রতিনিধি দেয়া হয়। যারা সে দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা কিন্তু ভোটে দাড়াননি। ছোটদল থেকেও প্রতিনিধি আসতে পারে, তবে ছোট দল থেকে আসা নির্বাচন কমিশনারদের মেয়াদ বড় দল থেকে আসা কমিশনারদের চেয়ে কম হবে।

কমিশনারদের মেয়াদ চাইলেই বাড়ানো হয়। দল থেকে আসা এই নির্বাচন কমিশনাররা দলীয় পদে এসময় থাকবেন, কিন্তু দলীয় কর্মকান্ডে অংশ নিতে কিছু বাধা আছে। আর বাকী পাচঁজন যারা কমিশনার হয়েছেন তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রের এক্সপার্ট মানুষ।

কমিশনারদের সবাই স্বেচ্ছামূলক কাজ করবেন। তবে তাদের জন্য নির্দিষ্ট ভাতা রয়েছে।

ব্রিটেনের নির্বাচন কমিশন স্বাধীন সংস্থা হলেও পার্লামেন্টের কাছে তারা দায়বদ্ধ।

এই কমিশনারদের জন্য যে ‘কোড অব কন্ডাক্ট’ দেয়া আছে তাতে দেখা যায়, নির্বাচন কমিশনাররা ইম্পারশিয়াল থাকবেন (নিউট্রাল শব্দটি ব্যবহার করা হয়নি)। বোর্ড মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত বাইরে জানানো যাবে না। ফেসবুক বা টুইটারে কোন দলের প্রতি পক্ষপাতমূলক কিছু লেখা যাবে না। কোনো গিফট বা আতিথেয়তা গ্রহণে তাদের সতর্ক থাকতে হবে ইত্যাদি।

কমিশনারদের কেউ গিফট দিলে তা নেয়ার ক্ষেত্রে ওই গিফট নিলে কোনো ব্যক্তি বা দল তার দ্বারা লাভবান হওয়ার চান্স আছে কিনা সেটা কমিশনারকেই বিচার করতে বলা হয়েছে কোড অব কন্ডাক্টে। এক্ষেত্রে যদি লাভবান না হয় তাহলে 'গিফট' তিনি নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে কমিশনের অন্যান্য সদস্যদের অনাপত্তি থাকতে হবে এবং তা কমিশনের ওয়েব সাইটে জানিয়ে দিতে হবে।

তাদের কমিশন ওয়েব সাইটে কমিশনারদের ভাতা ও খরচ গুরুত্বসহকারে দেয়া আছে। প্রধান কমিশনারের প্রায় প্রতিদিনের খরচের হিসাব ওয়েবসাইটে আপলোড করা আছে।

এমনকি কমিশনাররা কোথায় কোন কাজে গেছেন, তার গাড়ি ভাড়া (বাস ট্রেনের নামসহ), কি খেয়েছেন (খাবার মূল্যসহ), কোথায় থেকেছেন রুম ভাড়াসহ সব লেখা রয়েছে।

ব্রিটেনের নির্বাচনে 'রিটার্নিং অফিসার' নির্বাচন কমিশনের কেউ থাকেন না। এছাড়া, নিজস্ব লোকবল তাদের খুবই কম। ডিস্ট্রিক বা জেলার নির্বাচিত চেয়ারম্যান, মেয়র বা ডিসিরা রির্টানিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন। অবশ্য সব জায়গার রির্টানিং অফিসারের দায়িত্ব এক নয়। স্কটল্যান্ড-আয়ারল্যান্ডের রির্টানিং অফিসারের দায়িত্ব পালনে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে।

উল্লেখ,সেদেশে নির্বাচনের সময় ব্যালোট পেপারে কোন ছিল নয় নাম প্রতীকের পাশে 'কাটা চিহ্ন' দিতে হয়।



এছাড়া, সেদেশের রাজনীতিবীদদের কথা বা প্রতিশ্রুতি জনগণ শুনতে চায় না।তারা আগে থেকেই প্রার্থীদের সম্পর্কে জানে।



বিষয়: বিবিধ

১৫৯১ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

318855
০৮ মে ২০১৫ দুপুর ০৩:৪৫
খন্দকার মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ লিখেছেন : ভালো লাগলো
318858
০৮ মে ২০১৫ বিকাল ০৪:০৩
হতভাগা লিখেছেন : এক সময়ের লুটেরারা লুট করতে করতে সবাইকে শেষ করে এখন ভাল মানুষ হয়ে গেছে ।

তাদের বংশধরেরা এখন তাদের পূর্ব পুরুষদের লুটের মালের উপর আয়েশী জীবন যাপন করে যাচ্ছে । কারও সাথে আগের মত দখলবাজিতে যায় না বলে এখনকার জেনারেশন খুব ভাল , সভ্য বলে বিবেচিত হচ্ছে ।

বৃটেনদের সফেদ কাপড়ের আস্তিন একটু আগল করলে দেখা যাবে যে উপমহাদেশসহ অন্যন্য করতলগত দেশের মানুষের আহাজারি ।

এদের ধন সম্পত্তির প্রায় সবই শোষিত রাজ্য থেকে লুটে আনা ।

সেই চোর ডাকাতের দেশ বৃটেনের দালালি করতে করতে আমরা নিজেদের এতটাই নিচে নামিয়ে এনেছি যে ভুলে যাই এরা কিই না করেছিল আমাদের পূর্ব পুরুষদের উপর , আমাদের সুজলা সুফলা দেশটাকে কিই না তছনছ করেছিল । ভাইয়ে ভাইয়ে দ্বন্দ্ব লাগিয়ে রাজ করেছিল এইসব স্বীকৃত মহা লুটেরারা ।

এদের চামচামি করতে পারাকে আমরা এখন আধুনিকতার এবং নিরপেক্ষতার সিম্বল হিসেবে নেই ।

বাংলাদেশের এখন যে অবস্থা চলছে তা ঐসব সাধু দেশেও এক সময়ে হয়েছিল । চুরি করতে করতে যখন আর কারও থাকে চুরি করার মত কোন কিছুই বাকী ছিল না তখন চুক্তির নামে পালিয়ে নিজেদের সাধু স্ট্যাটাসে নিয়ে গেছে ।

আমরাই তো বলি পশ্চিমা দেশ থেকে আমরা ৫০০ বছর পিছিয়ে আছি । চিন্তা করুন ঐ সব পশ্চিমা দেশ ৫০০ বছর আগে কেমন ছিল ?

আগামী ৫০০ বছর পরে না হয় বাংলাদেশ এখনকার বৃটেনের স্ট্যাটাসে যাবে তখন না হয় কমপেয়ার করেন দু দেশের মধ্যে এখনকার বৃটেনের ইলেকশন কমিশনের সাথে বাংলাদেশেরটা ।

বাংলাদেশও যদি বৃটেনের মত এরকম লুটপাট করতো আশে পাশের অন্যান্য দেশের থেকে তাহলে বাংলাদেশকেও আজকের বৃটেনের মত সভ্য দেশ সবাই বলতো । আমরাও সবাই খুব লাক্সারীতে চলতাম অন্যদেশ হতে লুটে আনা টাকা দিয়ে এখন যেমন বৃটেনের মানুষেরা করে যা্ছে ।

অভাবে মানুষের স্বভাবকে নষ্ট করে দেয় । বৃটেন এক সময়ে অভাবে ছিল বলে তারা লুটে নিয়েছে । এখন সেই লুটের ফলে তারা সভ্য । কিন্তু এতে কি তাদের সেই কৃত অপরাধ মুছে তাদের এখনকার ভালো মানুষীর জন্য গুন গান গাইতে হবে ?

বাংলাদেশের দূর্ভাগ্য যে এ দেশের মানুষ সবাই কোন না কোন দেশের দালাল । চাই সেসব দেশ এক সময়ে বাংলাদেশকে যতই শোষন করুক না কেন ।
০৮ মে ২০১৫ বিকাল ০৫:০৩
260050
মুক্তআকাশ লিখেছেন : আপনার চিন্তা অনেক ভালো। ধন্যবাদ। তবে লুট করলেও এখন তো তাদেরটা অনুকরণীয় হতে পারে। আমরা যেহেতু জানি তারা লুট করেছিল। খারাপ করেছিল। তাহলে সেই খারাপটা একজন ভালমানুষ বা ভাল জাতি হিসেবে বাদ দিয়ে ভালোটা নিতে পারি তো। তা না হলে তাদের মধ্যে আমাদের মধ্যে পার্থক্য থাকবে কোথায়?
০৮ মে ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৪৯
260069
শেখের পোলা লিখেছেন : তাদের লুটপাট দেখিনি শুধু কানেই শুনেছি আর মানুষ লেখা বইয়ে পড়িছি, পাকিদের লুটপাটও বইয়ে পড়ি কানে শুনি, তবে বাস্তবে তা দেখিনি৷ আর বর্তমানে স্বাধীনতার পক্ষের ধোয়া তুলসীপাতা লোকদের লুটপাট চোখে দেখছি আর দেখেই চলেছি, এরাকি কোনদিন অনুকরনীয় হবে বলে হতভাগা সাহেবের মনে হয়?
০৮ মে ২০১৫ রাত ১০:২৪
260096
হতভাগা লিখেছেন : আপনি কি পেলের খেলা দেখেছেন বা ম্যারাডোনার খেলা ? তারা যে ফুটবল খেলেছে সেটা আপনি কি বাস্তবে দেখেছেন @ শেখের পোলা ?

@ মুক্ত আকাশ : চোরের কাছ থেকে ভাল মানুষি শিখতে হবে !!!!!

এদের অনুকরণ করেই তো আমাদের মুসলিম সমাজ আর ধ্বসের মুখে ? লিভ টুগেদার কাদের কাছ থেকে এসেছিল বা বিকিনি পরিধান ?
০৯ মে ২০১৫ রাত ১০:২২
260230
মুক্তআকাশ লিখেছেন : খারাপ মানুষের মধ্যেও কিছু ভাল গুণ থাকতে পারে। সেগুলো গ্রহন করা দোষের কিছু না।
১০ মে ২০১৫ সকাল ০৮:৪৬
260285
হতভাগা লিখেছেন : সেসব ''ভাল মানুষ'' কি ঐসব খারাপ মানুষদের আনা চুরির মাল ভোগ করা থেকে বিরত ছিল বা আছে বা এর জন্য ওরা দুঃখ প্রকাশ করেছে + লুন্ঠিত মালামাল ও সম্পদ ফিরিয়ে দিয়েছে বা দেবার ব্যবস্থা করেছে ?

আপনার বাবার কাজে আপনি লজ্জিত কিন্তু তার কাজের বেনিফিট আপনি ভোগ করা ছাড়তে পারেন না - ভালই ।
318861
০৮ মে ২০১৫ বিকাল ০৪:১৪
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
318866
০৮ মে ২০১৫ বিকাল ০৪:২৪
পললব লিখেছেন : ভোট দিতে গিয়ে দেখলাম দুজন মহিলা অফিসার বালট পেপার আর ভোটারদের একটা ঠিকানার লিষ্ট নিয়ে বসে আছে। ঠিকানা জিজ্ঞাসা করল বললাম হাতে ব্যালট পেপার ধরিয়ে দিল। নাম জন্ম তারিখ এমনকি আইডিও দেখতে চাইল না! বড়ই অদ্ভুত লাগল! আমার গিন্নিতো হতভম্ব!এটাই হলো এখানকার কমিশনারদের প্রতি মানুষের বিশ্বস্ততা। ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।
318869
০৮ মে ২০১৫ বিকাল ০৪:৩৯
মাজহারুল ইসলাম লিখেছেন : এই রকম নির্বাচন কমিশনের জন্য আরো কয়েক যুগ অপেক্ষা করতে হবে বাঙ্গালী জাতির এরপরে যদি পাওয়া যায়।
318878
০৮ মে ২০১৫ বিকাল ০৫:৫৩
লেন্দুপ দর্জি লিখেছেন : আমাদের রকিপ কম কিসে?

সেও কি কম নিরেপক্ষ!

সে মূলত-

নিজে রেপ (হবার ভয়ে) (এক) পক্ষ=নিরেপক্ষ।
318883
০৮ মে ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৫১
শেখের পোলা লিখেছেন : হ্যাঁ ভাই স্বপ্ন বলেই মনে হয়৷ কানাডাতে কয়েকবার ভোটদিয়ে আমারও তেমনই মনে হয়েছে৷ ধন্যবাদ৷
318889
০৮ মে ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:২১
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : শিক্ষনিয় পোষ্টটির জন্য অনেক ধন্যবাদ।
এই রকম ইলেকশন কমিশন এর জন্য দাবি জানালে আমাদের দেশে সবার আগে প্রতিবাদ আসবে সরকারি কর্মকর্তা এবং তথাকথিত শিক্ষিত ও সুশিল সমাজ থেকে।
০৯ মে ২০১৫ রাত ১০:২৪
260231
মুক্তআকাশ লিখেছেন : আমাদের কমিশন তাদের চেয়ে অনেক বেশী শক্তিশালী। সমস্যা হল দালালির কারণে স্বদিচ্ছা নাই।
318920
০৮ মে ২০১৫ রাত ১১:৪৯
নিমু মাহবুব লিখেছেন : ভালো লাগল,ধন্যবাদ Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Rose Rose Rose Rose

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File