আংকেল খুব ভাল মানুষ ছিল
লিখেছেন লিখেছেন মুক্তআকাশ ১১ এপ্রিল, ২০১৫, ১১:০৬:৪৭ রাত
কেমন আছে কামারুজ্জামানের পরিবার। পেশগত দায়িত্বের কারণে মঙ্গলবার সকালে খোজ নিতে গিয়েছিলাম তার মিরপুর সাংবাদিক কলোনির বাড়িতে। বাড়ির সামনে গিয়ে দেখি শুনশান নিরবতা। অনেকটা জনমানবহীন বললে ভূল হবে না।
ক্যামেরা নিয়ে বাড়ি ও বাড়ির গেটের ছবি তুলতেই একে একে কয়েকটি কিশোর এগিয়ে এলো। কেউ ‘ক্লাস সেভেন’ কেউবা ‘ফাইভে’ পড়ে। আংকেল আপনারা কি এই ছবি পত্রিকায় দিবেন?
আগ্রহভরেই উত্তর দিলাম হ্যাঁ পত্রিকায় দেব। সমস্বরে দুই থেকে তিন জনের আবদার, বাড়ির সামনের আম গাছটাও যেন পত্রিকার ছবিতে দেই। কারণ তাদের সঙ্গে কামারুজ্জামানের কিছু স্মৃতি জড়িত আছে এই আম গাছ নিয়ে। ইতিমধ্যে তারা আচ করতে পারছে তাদের প্রিয় আংকেলের জীবনে আর বেশী সময় বাকি নেই।
এরই মধ্যে তারা একে অপরের মধ্যে কথা বলছে- ‘এই আংকেলের বিরুদ্ধে যারা সাক্ষি দিয়েছে তাদের মনে হয় ঘুষ ঠুষ দিয়েছে তাই না? অপর জন উত্তর দেয়, দিতে পারে! তা না হলে এত ভাল মানুষকে ফাঁসি দেয় কেমনে?’
এমন কথোপকথন শুনে আগ্রহের ভঙ্গিতে ছেলে গুলোর সাথে বন্ধত্ব জমালাম। জানতে চাইলাম তোমাদের আংকেল কেমন ছিল। কোন প্রকার সঙ্কা ছাড়াই সোজা সাপটা উত্তর- খুব ভাল মানুষ ছিল। কিভাবে? আমরা এই আম গাছ থেকে আম পড়তাম। আংকেল দুই তলা থেকে দেখতো, কিন্তু কিছু বলতো না। শুধু তাকিয়ে থাকতো। আর মাঝে মাঝে আংকেলের ছোট মেয়েটা আমাদের ছোট ছোট পাথর ছুড়তো।
এছাড়া বাহিরে যখন আংকেলের সাথে আমাদের দেখা হতো তখনো আমাদের আদর করতো।
ততক্ষণে পাশের একটি স্কুলের ভ্যান নিয়ে ছাত্রদের নিতে এসেছে এক চালক। আমাদের পাশে ভ্যান নিয়ে অপেক্ষা করায় কামারুজ্জামানের বিষয়ে অনেকক্ষণ কথা বলার সুযোগ হয় তার সঙ্গেও।কেমন ছিল লোকটি(কামারুজ্জামান) সে সম্পর্কে তেমন কিছু বলতে পারেনি। তবে তাকে যখন জানানো হল ঘটনার সময় তার বয়স ছিল ১৭ বছর। তখন সে বলে ‘এইডা কেমনে সম্ভব? ১৭ বছরের সময় আমি কি করছি। বড় জোর খেলা ধুলা করে বেড়ায়ছি এলাকায়। এই বয়সের একটা পোলার পক্ষে এত বড় কোন কাজ করা সম্ভব না। এইডা সম্পূর্ণ অবিচার।’
ফাঁসির মুখোমুখি থাকা এই জামায়াত নেতাকে ২০১০ সালের জুলাই মাসে গ্রেপ্তার করা হয়।পরে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত হন গত বছরের নভেম্বরে। তখনই রাতারাতি রায় কার্যকর নিয়ে নাটকীয়তার পর রিভিউয়ের সুযোগ পান। পরে সোমবার সকালে মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ।
বিষয়: বিবিধ
১৫৪২ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যা চোখ দিয়ে সামনে দেখি আমরা
তা কিন্তু পুরো ঘটনা নয়......
সামনে কিছু মানুষ হারলেও
পেছনে তাদের জয়!!
জীবন যুদ্ধে রক্ত নয়
দাম শুধু নিঃশ্বাসের....
মরে গেলে দেহ নয়
কথা রয়ে যায় বীরের...।
বেদনার ক্রন্দন নয়
রক্তের অমিয় শিশির,
একদিন আসবে হেসে হেসে
ভরবে জান্নাতের তীর।
এর চেয়ে বেশী কিছু
কি আর বলো দরকার?
দুনিয়ার প্রভাব ক্ষণস্থায়ী
চাহি আখেরাতে ন্যায় বিচার।
বিচারের বাণী কাঁদে নীরবে
কিছু পশুত্বের আত্ম চিৎকার!
মহান রবের নিকটে আমাদের
চাওয়া আমাদের আলো আঁধার।
মন্তব্য করতে লগইন করুন