দেশেরপত্রের নেত্রকোনা জেলা কার্যালয় উদ্বোধন করলেন যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আসাদ আলী ১২ এপ্রিল, ২০১৪, ১১:২৯:৪৫ সকাল
‘জাতির মূল সমস্যা চিহ্নিত হয়েছে’- যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী
১৬ কোটি বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করে শক্তিশালী জাতি হিসেবে পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছে দৈনিক দেশেরপত্র। আর এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে দেশেরপত্রের কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল নেত্রকোনায় উদ্বোধন করা হয় দেশেরপত্রের জেলা ব্যুরো কার্যালয়। জেলা সদরের নাগড়া (নাগড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন), তালুকদার মার্কেটে ব্যুরো কার্যালয়টি উদ্বোধন করেন গণপ্রজান্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় এম.পি। এই উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় যামানার এমাম, এমামুয্যামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, ‘তিনি টাঙ্গাইলের করটিয়ার ঐতিহ্যবাহী পন্নী পরিবারের সন্তান। তিনি জ্ঞানে, প্রজ্ঞায়, চারিত্রিক উচ্চতায়, আভিজাত্যে অসাধারণ ছিলেন। এমনই একটি ঐতিহ্যবাহী পরিবারের সুযোগ্য কন্যা দেশেরপত্রের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী। আমি তার উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আপনি যে অসম সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে ধর্মব্যবসা ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছেন, আপনার এই সেন্টিমেন্টকে আমি স্বাগত জানাই এবং আপনাদের কাজের সঙ্গে আমরা একমত আছি। তবে আপনাদের এই পথ সহজ নয়, বরং অতি কণ্টকাকীর্ণ। আমরা বাঙালি জাতি অতীতে বহু বিজয় অর্জন করেছি। কিন্তু সেই বিজয়কে আমরা অটুটভাবে ধরে রাখতে পারি নি। ’৫২-তে, ’৬৯-এ, ’৭১-এ আমরা বিজয়ী হয়েছি। কিন্তু সে বিজয়কে আমরা পূর্ণ ফলপ্রসূ করতে পরি নি কেন? এই কেন’র জবাব আমরা এতদিন খুঁজে পাই নি। বিগত ৬৭ বছরেও জাতির মূল সমস্যা আমরা চিহ্নিত করতে পারি নি, যা আজ দেশেরপত্রের মাধ্যমে, জনাব বায়াজীদ খান পন্নীর মাধ্যমে চিহ্নিত হয়েছে। আমরা বুঝতে পেরেছি আমাদের মূল সমস্যা কোথায়। আমাদের মূল সমস্যা হচ্ছে ধর্মব্যবসায়ীদের অপপ্রচার। ধর্মব্যবসায়ীরাই আমাদের অর্ধশতাধিক বছরের অর্জনকে ম্লান করে দিয়েছে। আমরা আশ্বাস দিচ্ছি, দৈনিক দেশেরপত্রের মাধ্যমে যামানার এমামের প্রস্তাবকে মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দেওয়ার জন্য, সমাজের সকল নেতৃবৃন্দ, প্রশাসনিক ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ আমার এলাকার ৩০ লক্ষ মানুষকে সচেতন করার জন্য নেত্রকোনায় যত রকরের সহযোগিতা প্রয়োজন তা আমরা করব। আমি রাজনৈতিক সকল নেতা-কর্মীকে আহ্বান করছি, আপনারা দেশেরপত্রের সঙ্গে থেকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যান। আজকে আমাদের এই জাতি যখন নানামুখী সঙ্কটে নিপতিত, এমন সময় দেশেরপত্রের এই উদ্যোগ অত্যন্ত সময়োপযোগী ও জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ।’
উপমন্ত্রী দেশেরপত্রের মাধ্যমে চলমান জনসচেতনতা কার্যক্রমের মধ্যে শিক্ষামূলক প্রামাণচিত্রও অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জ্ঞাপন করে বলেন, ‘আমাদের নেত্রকোণার ৩৭% মানুষ ছাড়া সবাই শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। আপনারা আপনাদের কাজে শিক্ষামূলক বিষয়বস্তু যোগ করলে নেত্রকোণাবাসী আরও উপকৃত হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মহানবী ১৪০০ বছর আগে আইয়ামে জাহেলিয়াতে নিমজ্জিত আরববাসীকে যে প্রকৃত ইসলামের মাধ্যমে অপ্রতিদ্বন্দ্বী উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন সেই ইসলামকে বিকৃত করে ফেলেছে ধর্মব্যবসায়ীরা। এই ধর্মান্ধ শ্রেণি ধর্মীয় লেবাস পরে ইসলামের অবমাননা করছে, ইসলামকে নিয়ে ব্যবসা করছে। আজকে সময় এসেছে তাদেরকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করার।’ তিনি এই ধর্মব্যবসায়ীদের কবল থেকে জাতিকে উদ্ধার করার জন্য রাষ্ট্রশক্তি ও মিডিয়ার সম্মিলিতভাবে কাজ করার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন এবং এ বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
তিনি কবি নজরুলের কবিতার দু’টি চরণ আবৃত্তি করে বলেন, ‘পৃথিবীর সকল মহৎ কাজেই নারী ও পুরুষের সমান অংশীদারিত্ব রয়েছে। দেশেরপত্রের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক একজন নারী। আমি তার সর্বাঙ্গীন সাফল কামনা করি। আমি তাকে বলতে চাই, আপনি নির্ভীকভাবে এগিয়ে যান, আমরা আপনার সঙ্গে আছি।’ তিনি বর্তমানের ইহুদি নিয়ন্ত্রিত বিশ্বব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ইহুদিরা ধর্মব্যবসায়ীদেরকে অর্থ দিয়ে জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটায়। তাদের সৃষ্ট এই অশান্তিতে বিশ্ব আজ নিমজ্জিত। ধর্মের দোহাই দিয়ে যারা সহিংসতা করে দেশের ক্ষতিসাধন করছে, মানুষ হত্যা, লুটপাট, ভাঙচুর, জ্বালাও পোড়াও করছে, তাদের কাছে আমি প্রশ্ন রাখতে চাই, আপনারা যে পেট্রোল বোমা মেরে নিরীহ মানুষকে হত্যা করছেন, এই ইসলাম আপনাদেরকে কে শিখিয়েছে? প্রকৃত ইসলাম যদি শিখতে চান তবে দেশেরপত্র পড়ুন।’
দেশেরপত্রের নেত্রকোনা জেলা ব্যুরো প্রধান মো. আল আমিন মির্জার সভাপতিত্বে আয়োজিত উক্ত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, দেশেরপত্রের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী, উপদেষ্টা মসীহ উর রহমান, নেত্রকোনা জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি আ: গফুর প্রমুখ, সদর থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো: আইয়ূব আলী, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো: আ: মতিন খান, সাবেক জেলা ডেপুটি কমান্ডার মো: ইখলাস উদ্দিন, জেলা অটো শ্রমিক সংগঠনের সেক্রেটারী মো: সোলেমান মিয়া, সদর উপজেলা তরুণলীগের সভাপতি মো: রোমেজ রাজা, জেলা তরুণলীগের সভাপতি মো: মনিরুল ইসলাম মনির, আটপাড়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো: মেহেদী হাসান চৌধুরী, আলোকিত বাংলাদেশ পত্রিকার সাংবাদিক মো: খাইরুল ইসলাম, দৈনিক ইনকিলাবের সাংবাদিক একেএম আব্দুল্লাহ, নেত্রকোনার ডিএসবি রেফায়েত উল্লাহ প্রমুখ।
বিষয়: বিবিধ
৯৬৮ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন