মুমিন জাতির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অপরিহার্য
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আসাদ আলী ০২ এপ্রিল, ২০১৪, ০৬:৩৫:০৯ সন্ধ্যা
একটি সহজ সরল সত্য সকলের জানা জরুরি। আদম (আ) থেকে শুরু কোরে আল্লাহর শেষ নবী মোহাম্মদ (দ) পর্যন্ত সকল নবী ও রসুল যদিও একই তওহীদ নিয়ে এসেছেন কিন্তু তওহীদের উপর ভিত্তি করা দীনুল হক বা জীবনব্যবস্থার বিধানগুলি সকল সময়ে, সকল স্থানে একইরকম থাকে নি। কারণ আগের দীনগুলি (জীবনব্যবস্থা) ছিলো সীমিত পরিসরের জন্য। সেগুলি কোন বিশেষ জাতি, বিশেষ জনগোষ্ঠী, বিশেষ গোত্র, এমন কি একটা বিশেষ পরিবারের জন্যও নির্দিষ্ট করা ছিলো। এই জন্যই যাদের মাধ্যমে আল্লাহ এসলামকে পাঠিয়েছেন, অর্থাৎ নবী-রসুলরা (আ), তাদের সংখ্যা- এক লাখ চব্বিশ হাজার, মতান্তরে দু’লাখ চব্বিশ হাজার- বিরাট সংখ্যা। এই সমস্ত দীনের মূলনীতি, ভিত্তি সব সময়ই একই থেকেছে, সেই দীনুল কাইয়্যেমা এবং সেরাতুল মোস্তাকীম, তওহীদ অর্থাৎ এক আল্লাহ ছাড়া কারো আদেশ, আইন, বিধান না মানা, সালাত প্রতিষ্ঠা করা ও যাকাত দেয়া, ব্যস, এই তিনটি মাত্র (সূরা বাইয়্যেনাহ ৫)। অন্যান্য সমস্ত আইন-কানুন, স্থান-কাল-পাত্র ভেদে বিভিন্ন রকমের এসেছে। যেমন শেষ ইসলামে সালাতের যে প্রক্রিয়া, নিয়ম এসেছে, পূর্ববর্তী ইসলামের এ প্রক্রিয়া ছিলো না- অন্য রকমের ছিলো, সালাতের উদ্দেশ্যে মানুষকে ডাকার জন্যও ঘণ্টা বাজিয়ে, সিংগা ফুঁকে ইত্যাদি বিভিন্ন পদ্ধতি ছিলো। অন্যান্য বিধানও নানারূপ ছিলো। এভাবে চোলতে চোলতে বিবর্তনের পথ বেয়ে মানবজাতি যখন এমন একটা পর্যায়ে এসে পৌঁছলো যে, সেটা বোধশক্তি, বুদ্ধিমত্তা, বিভিন্ন স্থানের জনপদের সাথে যোগযোগ ব্যবস্থায় উন্নতিসহ সব দিকে দিয়েই উন্নতির একটা ছোঁয়া লগলো, তখন আল্লাহ সিদ্ধান্ত নিলেন যে পৃথিবীর আয়ু যতদিন আছে ততদিন পর্যন্ত আল্লাহ আর নবী রসুল পাঠাবেন না। এই সময়টা এসেছ আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে। তিনি এমন একজন নবী পাঠাবেন যিনি হবেন বিশ্বনবী এবং শেষ নবী। পূর্ববর্তী ইসলামের বিকৃত রূপগুলো নিষিদ্ধ কোরে দিয়ে পাঠালেন শেষ নবীকে (দ) ইসলামের শেষ সংস্করণ দিয়ে।
দ্বিতীয়ত, তিনি হলেন সমস্ত দুনিয়ার সমস্ত জাতিসমূহের জন্য নবী। তাঁকে আল্লাহ যে দীনুল হক দান কোরলেন তার অপর নাম দীনুল ফেতরাহ বা প্রাকৃতিক দীন। অর্থাৎ তিনি এমন একটা দীন দিয়েছেন যা সমস্ত দুনিয়ায় সমভাবে কার্যকর হবে, প্রয়োগযোগ্য হবে এবং প্রয়োগ হবে। এর প্রযোজ্যতা পৃথিবীর বাকি আয়ুষ্কাল পর্যন্ত। এই দীনকে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আল্লাহ পাঠালেন তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি আখেরী নবীকে। রসুলাল্লাহ সমগ্র পৃথিবীতে সেই দীনকে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে সংগ্রাম আরম্ভ কোরলেন। আদম (আ) থেকে নিয়ে হাজার হাজার বছর ধোরে- হোতে পারে লক্ষ লক্ষ বছর ধোরে- পৃথিবীর বিভিন্ন জাতিতে, বিভিন্ন স্থানে তার দীন, জীবন-বিধান পাঠাবার লক্ষ্য ছিলো শান্তি প্রতিষ্ঠা; এইবার শেষ জীবনব্যবস্থাটি পাঠাবার উদ্দেশ্য হোচ্ছে, সমস্ত মানবজাতির জন্য এক জীবনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা কোরে মানুষে মানুষে দ্বন্দ্ব, সংঘর্ষ, রক্তপাত, অন্যায় অবিচারকে নির্মূল কোরে সমস্ত মানবজাতিকে এক জাতি কোরে দেয়া। এক আদম-হাওয়া থেকে সৃষ্ট মানবজাতি স্রষ্টার চোখে এক জাতি (কোর’আন- সুরা আল বাকারা ২১৩, সুরা আন নিসা ১, সুরা আল ইউনুস ১৯)। সে পৃথিবীতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে নানা রকম চেহারা ধোরলেও আসলে মাত্র এক জোড়া মানুষের বংশধর, একই রক্ত। পৃথিবীময় ছড়িয়ে যাওয়া মানবজাতিকে আবার এক জাতিতে পরিণত করার মত বিরাট, মহান লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে রসুলাল্লাহ তাঁর সংগ্রাম আরম্ভ করেন এবং উম্মতে মোহাম্মদী নামক একটি জাতি গঠন করেন। যখন আল্লাহ তাঁকে মদীনায় রাষ্ট্রক্ষমতা দিলেন তিনি তখন তাঁর উম্মাহকে সঙ্গে নিয়ে সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু কোরলেন। তিনি আল্লাহ থেকে আদেশ প্রাপ্ত হোয়ে নিজের দায়িত্ব ঘোষণা কোরলেন, আমি আদিষ্ট হয়েছি ততক্ষণ পর্যন্ত সশস্ত্র সংগ্রাম (কেতাল) চালিয়ে যেতে, যে পর্যন্ত না প্রত্যেকটি মানুষ আল্লাহকে তাদের একমাত্র এলাহ হিসাবে এবং আমাকে আল্লাহর রসুল হিসাবে মেনে না নেয় [আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে- বোখারী]। সুতরাং এটা সুস্পষ্ট হোল যে, রসুলাল্লাহর দায়িত্ব সমগ্র মানবজাতির উপরে, পুরো মানবজাতির জন্যই তিনি রহমত, তাই তার উপাধিও আল্লাহ দিলেন রাহমাতাল্লাহিল আলামীন।
রসুলাল্লাহ তাঁর জীবদ্দশায় বিক্ষিপ্ত, বিচ্ছিন্ন, বংশ পরম্পরায় দাঙ্গা হাঙ্গামায় লিপ্ত আরব জাতিকে একটা কঠিন ঐক্যবদ্ধ জাতিতে রূপান্তরিত কোরলেন। সেই জাতি হলো একটা, তাদের জীবনব্যবস্থা ছিল আল্লাহর দেওয়া, তাই তারা ছিলেন মুসলিম জাতি। তারা নবীর উপর আল্লাহর দেওয়া দায়িত্ব অর্থাৎ সর্বাত্মক সংগ্রামের মাধ্যমে এই দীনকে সমগ্র পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা করাকে নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন, তাই তারা ছিলেন উম্মতে মোহাম্মদী। সুতরাং আল্লাহর তওহীদের ভিত্তিতে লৌহকঠিন ঐক্যবদ্ধ এই জাতির সদস্যরা ছিলেন একাধারে মু'মিন, মুসলিম ও উম্মতে মোহাম্মদী এবং সেই জাতির ইমাম হোলেন একজন, স্বয়ং আল্লাহর রসুল (দ)। এইভাবে সমস্ত মানবজাতিকে একটি জাতিতে রূপান্তরিত কোরে একজন নেতার অধীনের নিয়ে আসার আকীদা নিয়ে জাতির সৃষ্টি হোল। তাহোলে বোঝা গেল যে, রসুলাল্লাহর আগমনের পর থেকেই ইসলামের আকীদা হলো এই- সমস্ত বনী আদম হবে একটা জাতি, তাদের জীবনব্যবস্থা হবে একটি, তাদের এমাম হবেন একজন। এখানে কোন সূত্রমতেই জাতির খণ্ড বা বিভক্ত হওয়ার কোন সুযোগ নেই।
মানবজাতিকে একটি জাতিতে রূপান্তরিত করার ঐ লক্ষ্য ও আকীদা নিয়েই রসুলাল্লাহর এন্তেকালের পরে জাতির নেতা অর্থাৎ এমাম হোলেন খলিফা আবু বকর (রা)। তাঁর খেলাফতকালে জাতির মধ্যে শিয়া সুন্নি বা এরকম কোন বিভক্তি বা মাজহাব ছিলো না। তাঁর নেতৃত্বে জাতি বর্ধিত হওয়া শুরু করলো। তারপর ওমর (রা) আসলেন। অর্ধ পৃথিবী তাঁর নেতৃত্বের অধীনে চোলে এলো। তখনও জাতি ছিলো একটা, জাতির কেন্দ্রীয় নেতা বা এমাম ছিলেন একজন। এরপর আসলেন ওসমান (রা)। তখনও এই জাতির মধ্যে কোনরকম মত-পথ বা বিভেদ তৈরি হয় নি অর্থাৎ প্রায় অর্ধ পৃথিবী জুড়ে প্রতিষ্ঠিত ছিল একজন নেতার নেতৃত্বে একটি অখণ্ড মহাশক্তিশালী জাতি, তদানিন্তন বিশ্বের একক পরাশক্তি- উম্মতে মোহাম্মদী। এরপর থেকে জাতির মধ্যে শুরু হোল দুঃখজনক বিভাজন যে ইতিহাস সকলেরই জানা। কিন্তু এটা ঘটা উচিত হয় নি। রসুলাল্লাহর আদর্শ ও শিক্ষা মোতাবেক উচিত ছিল, তাঁর নিজের হাতে গড়া একটি জাতি উম্মতে মোহাম্মদী ঐক্যবদ্ধ হোয়ে সংগ্রামের (জেহাদ) মাধ্যমে সমস্ত পৃথিবীকে আল্লাহর সত্যদীনের অধীনে নিয়ে আসা, তাহোলে রসুলের উপর আল্লাহর দেওয়া দায়িত্ব পূর্ণ হোত, উম্মতে মোহাম্মদী সৃষ্টির উদ্দেশ্য স্বার্থক হোত। এমনি কোরে আজ পর্যন্ত সমস্ত দুনিয়ায় মুসলিম জাতির একজন মাত্র নেতার অধীনে ঐক্যবদ্ধ থাকা উচিত ছিল। এই উম্মতে মোহাম্মদী জাতিকে আল্লাহর রসুল একটি দেহের সঙ্গে তুলনা কোরেছেন। একটি দেহের সকল কর্মকাণ্ড, সকল চিন্তা, সকল অনুভূতির নিয়ন্ত্রণ সাধন করে মস্তিষ্ক। মস্তিষ্ক বিকৃতি মানে দেহের সৌষ্ঠব, শক্তিমত্তা, ক্ষমতা যতই উৎকৃষ্ট হোক না কেন তার কোনই মূল্য নেই। একজন মানুষের যেমন একটিমাত্র মস্তিষ্ক থাকে তেমনি উম্মতে মোহাম্মদীর প্রধান ব্যক্তি অর্থাৎ ইমাম বা নেতা মাত্র একজনই। রসুল যেমন দুইজন নয়, ইমামও কখনও দুইজন হোতে পারবে না, সারা পৃথিবীতে যত লোক নিজেদেরকে মুসলিম দাবি কোরবেন, সর্বসময়ে তারা প্রত্যেকে একজন নেতার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকবেন এবং তার আনুগত্যে অঙ্গীকারাবদ্ধ থাকবেন। যেই সে ঐক্যের বন্ধনী থেকে বহির্গত হবে সেই ইসলামের রজ্জু স্বীয় গলদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন কোরে ফেলবে। এই কথা আল্লাহ ও তাঁর রসুল অসংখ্যবার বোলেছেন। এই ঐক্যের বন্ধনের বাইরে যেন একটিও মানুষ না থাকে সে জন্য বিশ্বনবী (দ) বোলেছেন- যে ব্যক্তি এমামের (নেতার) বায়াত (আনুগত্য) না নিয়ে মারা গেলো সে আইয়ামে জাহেলিয়াতের (অজ্ঞতার যুগের) মৃত্যুবরণ কোরলো (হাদীস- মুয়াবিয়া (রাঃ) থেকে - মসনদে আহমদ ইবনে হাম্বল, চতুর্থ খন্ড, পৃষ্ঠা-৯৬)। একটি দেহ থেকে কোন অঙ্গ কেটে পৃথক কোরে ফেলা হোলে সেটা যেমন সঙ্গে সঙ্গে প্রাণ হারায় তেমনি একক জাতিসত্ত্বার বাইরে কোন ইসলাম নেই; এটাই শেষ জীবনব্যবস্থার নীতি।
এই মহান জাতির অখণ্ড নেতৃত্ব তথা ঐক্য যেন কখনও বিঘ্নিত না হয়, সেজন্য আল্লাহর রসুলের কঠোর নির্দেশ, “তোমাদের নেতৃত্ব এক ব্যক্তির উপর ন্যস্ত থাকা অবস্থায় যে ব্যক্তি তোমাদের দণ্ডকে বিভাগ কোরতে অথবা তোমাদের একতা বিনষ্ট কোরতে আসে তলোয়ার দ্বারা তার ফায়সালা কর [হযরত উরফাজা (রাঃ) থেকে মোসলেম]। কারণ তারা আর এই দীনের অন্তর্ভুক্ত নয়, বরং আল্লাহ ও রসুলের শত্র“। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় যারা স্বীয় দীনকে খণ্ড-বিখণ্ড কোরেছে এবং অনেক দল হয়ে গেছে, তাদের সাথে আপনার কোন সম্পর্ক নেই (সূরা আন’আম ১৫৯)। কোন মো’মেনের কি নবীর সাথে স¤পর্ক ছিন্ন হয়? কখনো না। বরং কাফের মোশরেকদের সাথেই স¤পর্ক ছিন্ন হয়। যারা মাজহাব, ফেরকা, তরিকা, রাজনীতি, মতবাদ, ভৌগোলিক রাষ্ট্র, ভাষাভিত্তিক জাতীয়তা ইত্যাদি বহুভাবে এই দীনকে এবং এই মহাজাতিকে খণ্ড বিখণ্ড কোরেছে তারা মুসলিম না, আল্লাহর রসুল তাদের ইমাম নন। অথচ আজ থেকে ১৩০০ বছর আগেই এই জাতির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব শিথিল হোতে আরম্ভ করে এবং ধীরে ধীরে তা একদম লুপ্ত হোয়ে যায়। বর্তমানের এই বিকৃত ইসলামে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কোন ধারণাই বিদ্যমান নেই, এতে ইমাম বোলতে শুধুমাত্র অর্থের বিনিময়ে মসজিদে যারা নামাজ পড়িয়ে থাকেন তাদেরকেই বোঝানো হয়। যে জাতিকে সৃষ্টিই করা হোয়েছে সমস্ত মানবজাতিকে একটি মহাজাতিতে রূপান্তরিত করার জন্য, সেই জাতি কী কোরে নিজেরা হাজারো ফেরকা, মত, পথ, মাজহাব, তরিকা সৃষ্টি কোরে লক্ষ ভাগে বিভক্ত হোয়েও মোমেন, মোসলেম উম্মতে মোহাম্মদী দাবি কোরতে পারে? তাদের এই দাবি যে সম্পূর্ণ অমূলক তা দুনিয়াময় তাদের অবস্থা দেখলেই প্রতীয়মান হয়।
এই শতধাবিচ্ছিন্ন জনসংখ্যাকে যে আর উম্মতে মোহাম্মদী তো নয়ই এমনকি মুসলিম বা প্রকৃত মু'মিনও বলা যাবে না তার আরও একটি প্রধান কারণ আছে। প্রত্যেক জাতির নেতাও সেই জাতির অন্তর্ভুক্ত। সে হিসাবে বিশ্বনবী (দ) এই জাতির অন্তর্ভুক্ত। তাহোলে বোলতে হয় আল্লাহ নবীদের নেতা, মানব জাতির শ্রেষ্ঠতম মানুষ, স্রষ্টার প্রিয় বন্ধু- তারপরই যার স্থান, তিনি ইউরোপিয়ান খ্রিস্টানদের ঘৃণিত দাসজাতির নেতা? এ অসম্ভব। পৃথিবীর যে কেউ বোলতে পারে বোলুক, আমরা অন্তত বোলি না। কেন বোলতে পারি না এর একমাত্র উত্তর হোচ্ছে তিনি ঐ দাস জাতির নেতা নন এবং ঐ দাস জাতি তাঁর জাতিও নয়। ভবিষ্যৎদ্রষ্টা ঐ নবী (দ) বোলেও গেছেন। তিনি বোলেছেন- সে জাতি কেমন কোরে ধ্বংস হবে যার প্রথমে আমি মধ্যে মাহদী আর শেষে ঈসা। কিন্তু এদের ফাঁকে (অর্থাৎ মধ্যবর্তী) যারা তারা আমার নয় আমিও তাদের নই (হাদীস- জাফর (রা) থেকে রাযিন মেশকাত)। যারা মহানবীর (দ) নয় এবং মহানবী (দ) যাদের নন তারা যে উম্মতে মোহাম্মদী তো নয়ই, মুসলিমও যে নয় তা তো আর ব্যাখ্যার অপেক্ষা রাখে না। বিশ্বনবীর (দ) সঙ্গী (আসহাব) অবস্থায় ও বিশ্বনবীর (দ) পর সংখ্যায় সামান্য হোয়েও, সর্বদিক দিয়ে নগণ্য হোয়েও তাদের চেযে সংখ্যায়, অস্ত্রে, সামরিক শিক্ষায় শ্রেষ্ঠ বহু শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্রতিবার জয়ী জাতিটি ছিলো তার (দ উম্মাহ। তারপর যখন জাতিটি আয়তনে বিরাট হলো, সংখ্যায়, অস্ত্রশস্ত্রে, সম্পদে অতুলনীয় হওয়া সত্ত্বেও তাদের চেয়ে অনেক ছোট ছোট শত্রুর কাছে পরাজিত হোয়ে তাদের ক্রীতদাসে পরিণত হলো, তখন আর সেটা তার (দ) উম্মাহও নেই মুসলিমও নেই। তাই সেই ঘৃণিত দাস জাতির সঙ্গে একই সাথে চিহ্নিত না হওয়ার জন্য তিনি (দ) বোলছেন তারা আমার নয়, আমিও তাদের নই। কিন্তু তিনি (দ) অস্বীকার কোরলে কি হবে, ঐ দাস জাতির অতি মুসল্লী ও ফকীহ, মুফাস্সির, মুহাদ্দিস, মুফতি, পীর, মাশায়েখ, ইউরোপিয়ান খ্রিস্টানদের গোলাম অবস্থায় থেকেই তাঁকে (দ) তাদের নেতা বোলে পরিচয় দিয়ে তাঁকে (দ) অসম্মান, অপমান কোরে আসছে কয়েক শতাব্দী ধোরে। আল্লাহ তাঁর প্রিয় হাবিবকে এইভাবে অপমানের প্রতিশোধ নিতে ছাড়েন নি। এই জাতি এই উম্মাহর জন্য আল্লাহ ও তার রসুল (দ) যে উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নির্ধারণ কোরে দিয়েছিলেন সেই লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হওয়ার শাস্তি কী ভয়াবহ ছিল তা কাউকে বোলে দিতে হবে না। এখনও এই জাতি তাদের প্রাপ্য শাস্তি ভোগ কোরে চোলেছে। খ্রিস্টানদের চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধগুলোতে খ্রিস্টানরা লক্ষ লক্ষ পুরুষ-নারী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা শিশুকে গুলি কোরে, ট্যাংকের তলায় পিষে, আগুনে পুড়িয়ে এমনকি জীবন্ত কবর দিয়ে হত্যা কোরেছে, লাইন কোরে দাঁড় করিয়ে মেশিনগান কোরেছে, আল্লাহ কি এসব দেখেন নি? নিশ্চয়ই দেখেছেন, কিন্তু একটি আংগুল তুলেও সাহায্য করেন নি। কারণ তিনি প্রতিশ্র“তিবদ্ধ শুধু মু'মিনকে, উম্মাতে মোহাম্মদীকে সাহায্য করার জন্য। এই জাতিটি যে তখনও মুসলিম তিনি তাও পরোওয়া কোরলেন না। এই উম্মাহকে পরাজিত কোরে দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করার পর ইউরোপিয়ান জাতিগুলি তাদের যার যার দখল করা এলাকায় তাদের নিজেদের তৈরি আইন ও শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করলো। সেই থেকে এই জাতি আর মুসলিমও রোইল না, কার্যতঃ কাফের ও মোশরেকে পরিণত হোল।
বিষয়: বিবিধ
১২১৮ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 7238
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 764
কালের পরিক্রমায় নেতারও পরিবর্তন হতে পারে। নেতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে রসুল (সঃ) নির্দেশনা আছে সেটা অনুসরন করা উচিত। সমস্যা হলো আমাদের আলেম-ওলামারা এই বিষয়টি উপলদ্ধিই করে না। সবাই গায়ে মানে না আপনি মোড়ল। মতের অমিল হলে নিজে আরেকদল তৈরী করে? নিজেরাই নিজেদের সম্মান করে না, সেখানে আমজনতার সম্মান পাবে কোথায়।
ছুবহানআল্লাহ ছুবহানআল্লাহ
মন্তব্য করতে লগইন করুন