“প্রতিমা আর ভাস্কর্য এক নয়” ইসলামে ভাস্কর্য নির্মাণ নিষিদ্ধ নয়, মূর্তিপূজা নিষিদ্ধ
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আসাদ আলী ২৬ মার্চ, ২০১৪, ০২:০৪:৩১ দুপুর
এটি ছিল আমার যুক্তি ও প্রমাণ, যা আমি ইব্রাহীমকে তাঁর সম্প্রদায়ের বিপক্ষে প্রদান করেছিলাম। আমি যাকে ইচ্ছা মর্যাদায় সমুন্নত করি। আপনার পালনকর্তা প্রজ্ঞাময়, মহাজ্ঞানী (সুরা আন’আম ৯০)।
মানবজাতির কল্যাণ ও অকল্যাণই শরিয়তের মানদণ্ড আমাদের সমাজে একটি প্রতিষ্ঠিত ধারণা আছে যে, মূর্তি বানানো ইসলামের দৃষ্টিতে না-জায়েজ। আল্লাহ রসুল যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন তারা অধিকাংশই ছিল মূর্তিপূজারী। বর্তমানে সারা দুনিয়াতে যে বিকৃত ইসলামটি প্রতিষ্ঠিত আছে তার আলেম ওলামারাও একচেটিয়াভাবে মূর্তি, ভাস্কর্য নির্মাণের ঘোর বিরোধী। তাদের কেউ কেউ এতটাই চরমপন্থী যে ছবি তোলাকেও হারাম বোলে ফতোয়া দেন। স্বভাবতই তারা মানুষের বা প্রাণীর ছবি অঙ্কনেরও বিরোধিতা করেন পাছে কেউ আবার সেগুলির পূজা না শুরু কোরে দেয়। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য নিয়ে একটি বড় ঘটনাও ঘটে। ভাস্কর্য নির্মাণের আগেই ০৬ জানুয়ারি, ২০১৩ তারিখে ভাস্কর্য নির্মাণের প্রতিবাদ জানিয়ে লিখিত বিবৃতি দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১ জন শিক্ষক। তারা বলেন, “ইসলামের মহান সাধক হযরত শাহজালাল (র) এর নামে প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে মূর্তি স্থাপনের চেষ্টা শাহজালাল (র) তথা গোটা বৃহত্তর সিলেটবাসীর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার শামিল।”
এতে বোঝা যায় ধর্মান্ধ শ্রেণি নয় কেবল, উচ্চ শিক্ষিত বুদ্ধিজীবী শ্রেণির অনেকের মধ্যেও এই বিশ্বাস দৃঢ়মূল যে মূর্তি নির্মাণ ইসলাম বিরোধী কাজ। বাস্তবেও তাই ঘটে, ভাস্কর্যটি নির্মাণের কিছুদিনের মধ্যেই একটি ধর্মান্ধ শ্রেণি সেখানে হামলা চালায় এবং নামফলক ভেঙে ফেলে। এমন ঘটনা আরও বহু ঘটেছে। আফগানিস্তানে তালেবানরা বৌদ্ধ (আ) এর বিশাল মূর্তিগুলি গুড়িয়ে দিয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে এ বিষয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি কি?
ইসলাম যুক্তিময়। যুক্তিহীন কোন নির্দেশ আল্লাহ বা রসুল দেন নি, দিতেও পারেন না। তাই প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক যে, মূর্তি বা ভাস্কর্য নির্মাণ, ছবি অঙ্কন ইত্যাদিকে আল্লাহ কেন নিষেধ কোরেছেন? যুক্তিটা কি?
আল্লাহ তাঁর দীন মানবজাতির প্রতি নাযেল কোরেছেন একটি মাত্র কারণে, আর তা হোল- মানবজাতি যেন অন্যায় অবিচার থেকে বেঁচে একটি শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল সমাজে জীবনযাপন কোরতে পারে। তাই এই দীনের প্রতিটি আদেশ মানুষের সুখের জন্য এবং প্রতিটি নিষেধ মানুষকে ক্ষতি থেকে, অশান্তি থেকে রক্ষা করার জন্য। এমন কোন আদেশ বা নিষেধ ইসলামে থাকা সম্ভব নয়, যেটার সঙ্গে মানুষের ভালো মন্দের কোন সম্পর্ক নেই। যে জিনিষ বা যে কাজ মানুষের জন্য অপকারী তাই আল্লাহ নিষেধ কোরেছেন। এই আলোকে আমাদের জানা দরকার, চিত্রাঙ্কন, ভাস্কর্য বা মূর্তি নির্মাণ মানুষের জন্য ক্ষতিকর কি না। কোন জিনিস ভালো কি মন্দ তা সম্পূর্ণ নির্ভর করে সেই জিনিসের ব্যবহারের ওপর। একটা অস্ত্র দিয়ে ডাকাতি বা খুন করা যায়, সেই অস্ত্র দিয়েই আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ করা যায়, খুনীর বিরুদ্ধে ব্যবহার কোরে অসহায়কে রক্ষা করা যায়। অস্ত্র নিজে দায়ী নয়, যে সেটাকে ব্যবহার কোরবে দায়ী সে। রেডিও টেলিভিশন মানুষকে ভালো অনেক কিছু শিক্ষা দেবার সঙ্গে সঙ্গে হত্যা, সহিংসতা, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে অপরাধ, নগ্ন যৌনতা ইত্যাদি শিক্ষা দিয়ে তাকে পশুর পর্যায়ে নামিয়ে দিচ্ছে। এজন্য কি রেডিও টেলিভিশন খারাপ জিনিস। না, খারাপ হোচ্ছে এগুলির অপব্যবহার।
ভাস্কর্য নিষিদ্ধ নয়, নিষিদ্ধ মূর্তিপূজা
আল্লাহ বলেন, অবশ্যই মদ, জুয়া, মূর্তিপূজা এবং লটারি অপবিত্র ও শয়তানের কাজ। অতএব, তোমরা তা থেকে দূরে থাকবে, যাতে সফলকাম হতে পার (সুরা আল মায়িদাহ - ৯০)। এই আয়াতে আল্লাহ মূর্তিপূজা নিষেধ কোরেছেন, পূজা ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে মূর্তির ব্যবহার নিষেধ করেন নি। মূর্তিকে উপাস্য হিসাবে বিশ্বাস করাও শেরক, অর্থাৎ অংশীবাদ। মহানবী মক্কা বিজয়ের দিন পবিত্র কাবাঘরে যে মূর্তিগুলো ভেঙ্গেছিলেন সেগুলি কী ছিলো? সেগুলি ছিলো লাত, মানাত, উজ্জা, হোবল ইত্যাদির মূর্তি। এই মূর্তিগুলিকে তারা দেবতার আসনে বসিয়েছিল এবং এই বিশ্বাস স্থাপন করেছিল যে, এই মূর্তিগুলি তাদেরকে স্রষ্টার সান্নিধ্য এনে দেবে, স্রষ্টার কাছে সুপারিশ কোরবে এবং ভাগ্য বদলে দেবে (সুরা ইউনুস- ১৮, সুরা যুমার- ৩)। কোনোটা ধন-দৌলত এনে দেবে, কোনোটা যুদ্ধে জয়লাভ করাবে, কোনোটা সন্তান লাভ বা বিবাহের পথ সুগম কোরবে ইত্যাদি। আরবের গোত্রগুলি পরিচালিত হোত এই মূর্তিগুলির পুরোহিতদের সিদ্ধান্ত বা ফতোয়া দ্বারা। পুরোহিতদের প্রতিটি সিদ্ধান্ত ধর্মের বিধান বোলেই স্বীকৃত হোত। এই মূর্তিগুলিকে কেন্দ্র কোরে তাদের নিজস্ব আইন কনুন, দণ্ডবিধি ইত্যাদি প্রয়োগ কোরত। অর্থাৎ এক কথায় ঐ মূর্তিগুলিকে তারা বিধাতার আসনে এবং সমাজ পরিচালক বা এলাহের আসনে বসিয়েছিল।
প্রকৃতপক্ষে মানুষের সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ মানুষের ভাগ্য (কদর), রেযেকের সব ব্যবস্থা করেন। মানুষ কিভাবে চোলবে সেজন্য তিনি বিধান দিয়েছেন, সুতরাং তিনিই বিধাতা এবং তাঁর (আল্লাহর) হুকুমেই বনি আদম পৃথিবীতে খেলাফত কোরবে অর্থাৎ এলাহ বা হুকুমদাতাও তিনি। উপাসনা, পূজা, প্রশংসা বা এবাদত পাওয়ার একমাত্র অধিকারী, হকদার আল্লাহ। কিন্তু মক্কার কাফের মোশরেকরা পবিত্র কাবা কেন্দ্রিক যে মূর্তি স্থাপন কোরেছে সেগুলি কার্যতঃ এলাহ, রব, সুপারিশকারী, ভাগ্যবদলকারীর আসনে বসিয়েছিল; কাজেই মহানবী (দ) এ সমস্ত গুড়িয়ে দিয়েছেন। তবে তারা এসব মূর্তিকে আল্লাহ বা স্রষ্টা বোলে মানতো না। তারা আল্লাহকেই তাদের স্রষ্টা, পালনকর্তা, প্রভু, রেযেকদাতা, জীবন-মৃত্যুদাতা বোলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস কোরত যার ভুরি ভুরি প্রমাণ কোর’আন, হাদিস ও ইতিহাসে ছড়িয়ে আছে। আরবের মোশরেকরা যে আমাদের মতোই আল্লাহয় বিশ্বাসী ছিলো এ কথায় সাক্ষ্য স্বয়ং আল্লাহ। কোর’আনে তিনি তাঁর রসুলকে বোলছেন- তুমি যদি তাদের (আরবের মোশরেক, কাফের অধিবাসীদের) জিজ্ঞাসা করো, আসমান ও যমীন কে সৃষ্টি কোরেছেন? তবে তারা অবশ্যই জবাব দেবে- সেই সর্বশক্তিমান, মহাজ্ঞানী (আল্লাহ) (কোর’আন- সুরা যুখরুফ- ৯)। সেই আল্লাহর হুকুম না মানার কারণেই সেই আরবরা কাফের ও মোশরেকে পরিণত হোয়েছিল।
মোসলেম নামক জনসংখ্যাটি কার্যতঃ কাফের-মোশরেক
আজ মোসলেম নামক এই জাতি কি মক্কার মোশরেকদের মতোই মোশরেক নয়? এরা মূর্তি পূজা করে না ঠিকই কিন্তু দাজ্জাল তথা ইহুদি-খ্রিস্টান সভ্যতার তৈরি বিভিন্ন তন্ত্র মন্ত্রের অন্ধভাবে পূজা কোরছে। এদের সকল সুখ, শান্তি, উন্নতির জন্য এই সব তন্ত্র-মন্ত্রের পুরোহিত ও উদ্গাতা দাজ্জালের কাছে ধর্ণা দিচ্ছে। রেযেকের জন্য, সামরিক সাহায্যের জন্য, জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের জন্য গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, রাজতন্ত্র ইত্যাদি তন্ত্র মন্ত্রের পূজা কোরছে। এরা কি একমাত্র আল্লাহকে এলাহ হিসাবে, রব, মালেক, রেযেকদাতা ইত্যাদি হিসাবে গ্রহণ কোরেছে? করে নি।
এদের পীর নামক একটা স্থুলকায় শ্রেণী অথর্ব, জড় হোয়ে খানকায়, হুজরায় মূর্তির মতো বসে থাকে আর এই জাতির লোক এদের কাছে ধরনা দেয় ভাগ্যবদল, ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতি, রোগবালাই দূর করা ইত্যাদির জন্য এবং শেষ পর্যন্ত আল্লাহর সান্নিধ্য অর্জনের আশায় সেখানে অর্থ দেয়। ঠিক মক্কার কাফেররা মূর্তিকে যে জায়গায় বসিয়েছিল বর্তমানে সেই লাত, মানাত, হাবল, উজ্জা ইত্যাদির জায়গায় গণতন্ত্র, রাজতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, সাম্যবাদ, পূজিবাদ ইত্যাদ তন্ত্র-মন্ত্রের মূর্তি স্থান করে নিয়েছে।
মহামহীম আল্লাহ জানেন যে তাঁর শেষ রসুলের উপর অবতীর্ণ বিধান আল-কোর’আনই কেয়ামত পর্যন্ত মানুষের জন্য তাঁর (আল্লাহর) পক্ষ থেকে পাঠানো জীবনবিধান হিসাবে উপস্থিত থাকবে। এই পবিত্র কোর’আনের কোথাও আল্লাহ পাক বলেন নি যে যারা মূর্তিপূজা কোরবে তারা কাফের, তারা মোশরেক, তারা যালেম কিন্তু তিনি এই কোর’আনে বলে দিয়েছেন যারা আল্লাহর নাযেল করা বিধান অর্থাৎ কোর’আন দিয়ে যারা বিচার ফয়সালা কোরবে না তারা কাফের, তারা যালেম, তারা ফাসেক (সুরা মায়েদা-৪৪, ৪৫, ৪৭)। মহাজ্ঞানী আল্লাহ জানেন যে, এবলিস ভবিষ্যতে তার পরিকল্পনা পরিবর্তন কোরবে। আখেরী নবী এই জাতির মন-মগজ থেকে মূর্তিপূজাকে এমনভাবে চুরমার কোরেছেন যে, এবলিস এই রাস্তা দিয়ে আর এই জাতিকে পথভ্রষ্ট কোরতে পারবে না, সে ভিন্ন রাস্তা বের কোরবে। কাজেই যে দাজ্জালের তৈরি এই সব তন্ত্র মন্ত্রের মূর্তি বানিয়ে মানুষকে ঠিকই পথভ্রষ্ট কোরেছে, আল্লাহর হুকুম থেকে, এবাদত থেকে, খেলাফত থেকে বিচ্যুত কোরেছে। কাজেই ১৪০০ বছর আগে মূর্তি যে স্থানে ছিলো বর্তমানে মূর্তি সেই স্থানে নেই। এখন মূর্তি বাচ্চাদের পুতুল, ড্রয়িং রুমের সৌন্দর্য বর্ধন সামগ্রি, পার্কে বা রাস্তাঘাটের স্থাপনা মাত্র। অথচ আজ প্রায়ান্ধ এই জাতির অতি বিশ্লেষণকারী আলেম, মুফতিদের কাছে চৌদ্দশ বছর আগের সেই মূর্তি পূজাই শিরক, কুফর। বাচ্চাদের জন্য যে পুতুল কিনে দেওয়া হয় সেটা কাঠের হোক, মাটির হোক অথবা প্লাস্টিকেরই হোক সেগুলিও মূর্তি। বাচ্চারা এই মূর্তিগুলিকে পূজা করে না, তারা খেলে। খেলনা হিসাবে পুতুল বা মূর্তি কি অবৈধ? রোবটও এক ধরণের সচল মূর্তি। কিন্তু রোবটের কেউ পূজা করে না, রোবটকে মানুষ উপাস্য মানে না।
ইসলামে বৈধ এবং অবৈধ নিরূপণ
কেবল মূর্তি বা ভাস্কর্য নির্মাণ নয়, নাচ, গান, বাদ্যযন্ত্র, ছবি আঁকা ইত্যাদি সৃষ্টিশীল কর্মকাণ্ড ও শিল্পকলা আল্লাহ কোর’আনে কোথাও নিষেধ করেন নি। তাই গান গাওয়া, ছবি আঁকা, ভাস্কর্য নির্মাণ ইত্যাদি সৃষ্টিশীল কাজকে অবৈধ ফতোয়া দেওয়ার কোন যুক্তি নেই। একটি সরল সত্য হল, ইসলামের বৈধ-অবৈধ নির্দ্ধারণের বেলায় মানদণ্ড হচ্ছে আল্লাহর আদেশ এবং নিষেধ অর্থাৎ আল-কোর’আন। রসুলাল্লাহ জানতেন যে, তাঁর বাণীকে ভবিষ্যতে বিকৃত করা হবে, অনেক বৈধ বিষয়কে অবৈধ ঘোষণার জন্য সেটিকে তাঁর উক্তি বোলে চালিয়ে দেওয়া হবে, তাই তিনি বোলে গেছেন, আমি তোমাদের জন্য সেটাই হালাল কোরেছি যেটা আল্লাহ হালাল কোরেছেন, সেটাই হারাম কোরেছি যেটা আল্লাহ হারাম কোরেছেন। তিনি আরও বলেন, আমার কোন কথা কোর’আনের বিধানকে রদ কোরবে না, তবে কোর’আনের বিধান আমার কথাকে রদ কোরবে (হাদিস)। সুতরাং যে কোন জিনিস হারাম কিনা তা জানার জন্য আমাদেরকে আল্লাহর কেতাব দেখতে হবে। কোর’আনে যা কিছু নিষিদ্ধ করা হোয়েছে সেগুলি ছাড়া আর সবই বৈধ। এখন কোর’আন খুলে দেখুন গান, বাদ্যযন্ত্র, কবিতা, চলচ্চিত্র, নাট্যকলা, অভিনয়, নৃত্য, চিত্রাঙ্কন, ভাষ্কর্য নির্মাণ ইত্যাদি আল্লাহ হারাম কোরেছেন কিনা? যদি না কোরে থাকেন তাহোলে এগুলি নিয়ে বাড়াবাড়ি করা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। আল্লাহ যেটিকে বৈধ কোরেছেন, সেটিকে কোন আলেম, মুফতি, ফকীহ, মোফাসসের হারাম করার অধিকার রাখেন না।
মূর্তিপূজার প্রবণতা
অতীতকালে মানুষের মধ্যে জড় বস্তুর উপাসনা করার প্রবণতা ছিলো। তাই অতীতের নবী-রসুলগণ মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে কঠোর সংগ্রাম কোরেছেন। এব্রাহীম (আ) তাঁর কিশোর বয়সেই রাজার মন্দিরের মূর্তি ভেঙেছিলেন এ ইতিহাস সবার জানা। কিন্তু সেই নবীরও মূর্তি তৈরি কোরেছিল কোরায়েশরা। শেষ নবী আল্লাহর ঘর ক্বাবা থেকে সমুদয় মূর্তি ধ্বংস ও অপসারণ করেন, সেই মূর্তিগুলির মধ্যে এব্রাহীম (আ) এর মূর্তিও ছিলো। রসুলাল্লাহ আজীবন যুদ্ধ কোরে গেছেন শেরকের বিরুদ্ধে। সে সময়ে আরবের শেরক ছিলো মূর্তিপূজা, তাই মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে কোর’আনে ও হাদিসের বহু স্থানে নিষেধাজ্ঞা রোয়েছে। যেমন- রসুলাল্লাহ বলেন, বিচারের দিন ঐ সকল লোক সর্বাপেক্ষা কঠোর শাস্তিভোগ কোরবে, যারা আল্লাহর সৃষ্টির অনুসরণে জীবজন্তুর প্রতিকৃতি অঙ্কন বা নির্মাণ করে।” (আয়েশা রা. থেকে সহীহ বুখারী)। আবার যে গৃহে কুকুর অথবা কোনো প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না। (আবু তালহা রা:. থেকে বোখারী, খ.২/পৃ. ৮৮০)। রসুলাল্লাহ এই কথাগুলি বোলেছেন আরবদের মধ্যে মূর্তিপূজার যে প্রবণতা ছিলো সেটাকে নির্মূল করার লক্ষ্যেই। যে মূর্তিতে বা চিত্রের সঙ্গে পূজার সম্পর্ক নেই, শেরকের সম্পর্ক নেই সেগুলি ধ্বংস করার পক্ষপাতি আল্লাহর রসুল ছিলেন না। তার প্রমাণ নিচের ঘটনাটি।
আল্লাহর রসুল মক্কা বিজয়ের দিন যখন ক্বাবায় স্থাপিত মূর্তিগুলি ভেঙ্গে ফেললেন তখন ক্বাবার দেওয়ালেও বহু ছবি অঙ্কিত ছিলো। একটি ছবি ছিলো এব্রাহীম (আ) এর যেটিতে তিনি হাতে কতগুলি ভাগ্যগণনার তীর নিয়ে বসে আছেন। দেখে রসুলাল্লাহ বোলে উঠলেন, “আল্লাহ তাদের ধ্বংস কোরুন! তারা তাঁকে দিয়ে তীরের সাহায্যে ভাগ্যনির্ণয় করাচ্ছে। এব্রাহীম (আ) তীর নিয়ে কী কোরছেন?” (ধষ-অুৎধয়র ১৮৫৮, ঢ়. ১১১) (চবঃবৎং, গঁযধসসধফ ধহফ ঃযব জবষরমরড়হ ড়ভ ওংষধস, ঢ়ঢ়. ১৪০-১৪১)
ঐ দেওয়ালে আরো দু’টি ছবি অঙ্কিত ছিলো। একটি ঈসা (আ) এর, অপরটি মা মরিয়মের। আল্লাহর রসুল ঈসা (আ) আর মা মরিয়মের ছবি দু’টি বাদ দিয়ে সকল ছবি যমযমের পবিত্র পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে নির্দেশ দিলেন (ঞযব খরভব ড়ভ গঁযধসসধফ নু অ. এঁরষষধঁসব, ঢ়. ৫৫২)।
তাঁর দীর্ঘ তেইশ বছরের প্রচারে ও শিক্ষার ফল কি? অন্যতম ফল হোচ্ছে, আরবের পৌত্তলিক ও মোশরেকরা যখন ইসলামের আলোয় আলোকিত হোল, তাদের হৃদয় থেকে দেবদেবীর মূর্তি, পৌত্তলিকতা, মূর্তিপূজার প্রবণতা একেবারে তিরোহিত হোয়ে গেল। এমনভাবে বিলীন হোল যে কেয়ামত পর্যন্তও কোন মোসলেম দাবিদার কোন মূর্তির সামনে মস্তক অবনত কোরবে এমন দূরতম সম্ভাবনাও রোইল না। রসুলাল্লাহ ওফাতবরণের একমাস আগে ১২ সফর ওহুদ উপত্যকায় শহীদদের কবর যেয়ারতের পর আসহাবদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আমার অবর্তমানে তোমরা মূর্তিপূজারী হোয়ে যাবে এ ভয় আমি কোরি না। কিন্তু আশঙ্কা কোরছি তোমরা একে অপরের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু কোরবে।” বাস্তবেও দেখা গেলো ইসলাম বিকৃত হোয়ে যাওয়ার পর থেকে এ যাবত পর্যন্ত মোসলেম নামক এই জনসংখ্যার ইতিহাস কেবল অন্তর্কলহ, ভ্রাতৃঘাতী, ক্ষমতার দ্বন্দ্ব সংঘাতে পূর্ণ। বিদায় হজ্বের ভাষণেও তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে এইসব জমিনে শয়তানকে কেউ পূজা কোরবে, শয়তান এই আশা চিরতরে পরিত্যাগ কোরেছে। কিন্তু যে সকল কাজকে তোমরা অতি হালকা বোলে মনে করো এ রূপ কাজে তোমরা শয়তানের আনুগত্য কোরবে এবং এতে সে সন্তুষ্ট হবে”। (তিরমিযী, মেশকাত)। রসুলাল্লাহর এ সকল কথায় বোঝা যায় যে, মোসলেম জাতির পক্ষে আর পূজা অর্চনা, দেব-দেবীর উপাসনার কোন সম্ভাবনা নেই। তবে শয়তানের আনুগত্য করা হবে অন্য পদ্ধতিতে। বর্তমানে যে মানবরচিত তন্ত্র মন্ত্র যথা গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ইত্যাদির আনুগত্য আমরা কোরে যাচ্ছি সেটাই হোচ্ছে সমসাময়িক কালে শয়তানের আনুগত্য, যাকে আমরা “অতি হালকা ” বোলে মনে কোরি।
সাহাবারা কেন মূর্তি ধ্বংস করেন নি?
সাহাবায়ে কেরাম যখন সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে আল্লাহর সত্যদীন প্রতিষ্ঠার জন্য দুনিয়ার বুকে বেরিয়ে পড়েছেন তখন যে সমস্ত এলাকা বিজীত হোয়েছিল, ঐ সমস্ত স্থানে অন্যধর্মের লোকদের উপাস্য মূর্তি, ধর্ম উপাসনালয় ধ্বংস কোরেছেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায় না। বরং কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনায় যদি বিধর্মীদের কোন মূর্তির অঙ্গহানীও হোয়ে থাকে, সাহাবীরা সেগুলিও মেরামত কোরে দিয়েছেন। ঐ সমস্ত এলাকার মূর্তিগুলি আর জাতীয় পর্যায়ে বিধাতার আসনে অধিষ্ঠিত ছিলো না কাজেই ঐগুলি ভাঙ্গার প্রয়োজন পড়ে নি। একদিকে ইসলামের নীতি জাতীয়ভাবে চোলবে আল্লাহর হুকুম ব্যক্তিগতভাবে যে যার বিশ্বাস স্থাপন কোরুক তাতে কোনো আপত্তি নেই। ব্যক্তিগত ধর্মবিশ্বাস পরিবর্তনে কোনরূপ জোরাজুরি চোলবে না। এক কথায় ইসলামের নীতি হোল- রাষ্ট্র চোলবে আল্লাহর হুকুম মোতাবেক, কিন্তু ব্যক্তিকে তার ইচ্ছার উপর ছেড়ে দিতে হবে। আজ অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় জাতীয়ভাবে আল্লাহর হুকুম বাদ দিয়ে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, রাজতন্ত্র ইত্যাদি তন্ত্র মন্ত্রের মূর্তির অধীনে বসবাস কোরে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না কোরে, এই সব তন্ত্রের মূর্তিকে চুরমার কোরে আল্লাহর হুকুম প্রতিস্থাপন করার সংগ্রাম না কোরে রাস্তায় নির্মিত স্থাপনার বিরুদ্ধে মিছিল, ওয়াজ-নসীহত, বিক্ষোভ ইত্যাদি কত বড় মূর্খতা, কত বড় অজ্ঞতা তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ জন্যই এই বিকৃত ইসলামের আলেমদের প্রচারের ফলে সাধারণ মানুষকে বোঝানো মুশকিল যে তোমরা শিরক কোরছ, কুফর কোরছ। এটা বোললে তারা বলে, “কিভাবে আমরা মোশরেক, কিভাবে আমরা কাফের, আমরা কি মূর্তি পূজা করি?”
অন্যান্য ধর্মগ্রন্থে মূর্তিপূজা
মূর্তিপূজার ইতিহাস অন্বেষণ কোরলে দেখা যায় এটি মানব ইতিহাসের আদিলগ্নেই এর সূচনা। আল্লাহর বহু নবীকে এই মূতিপূজার বিরুদ্ধে সংগ্রাম কোরতে হোয়েছে। কোন ধর্মেই মূর্তিপূজার বৈধতা দেয় না। কিন্তু ইতিহাসের পরিহাস এই যে, সেই সব নবীদের ওফাতের পর তাদের অনুসারীরা সেই নবীদেরই মূর্তি বানিয়ে তাঁর উপর ঈশ্বরত্ব আরোপ কোরে মূর্তিপূজা আরম্ভ কোরে দিয়েছে। আল্লাহ মুসা (আ)-কে নির্দেশ দিয়েছিলেন, “ণড়ঁ ংযধষষ হড়ঃ সধশব ভড়ৎ ুড়ঁৎংবষভ ধ পধৎাবফ রসধমব, ড়ৎ ধহু ষরশবহবংং ড়ভ ধহুঃযরহম ঃযধঃ রং রহ যবধাবহ ধনড়াব, ড়ৎ ঃযধঃ রং রহ ঃযব বধৎঃয নবহবধঃয, ড়ৎ ঃযধঃ রং রহ ঃযব ধিঃবৎ ঁহফবৎ ঃযব বধৎঃয. ণড়ঁ ংযধষষ হড়ঃ নড়ি ফড়হি ঃড় ঃযবস ড়ৎ ংবৎাব ঃযবস, ভড়ৎ ও ঃযব খড়ৎফ ুড়ঁৎ এড়ফ ধস ভধ লবধষড়ঁং এড়ফ. (ঙষফ ঞবংঃধসবহঃ, ঊীড়ফঁং ২০:৪-৫)
অর্থাৎ- তুমি তোমার জন্য কোন খোদাই করা প্রতিমূর্তি তৈরি কোরবে না, উপরে সেই আকাশ, নিচে এই পৃথিবীতে ও পৃথিবীর নিচে জলরাশির মধ্যে যা কিছু রোয়েছে তার সাদৃশ্যেও কোন কিছুই তৈরি কোরবে না। তুমি তেমন বস্তুগুলির প্রতি প্রণিপাত কোরবে না, সেগুলির এবাদতও কোরবে না, কেননা আমি তোমাদের পরমেশ্বর প্রভু যিনি, আমি এমন ঈশ্বর যিনি কোন প্রতিপক্ষকে সহ্য করেন না।
বনী এসরাঈল আল্লাহর এই হুকুম বার বার অমান্য কোরেছে। পরে আল্লাহ আবার নবী পাঠিয়ে তাদেরকে মূর্তিপূজা থেকে ফিরিয়েছেন। তওরাতে উল্লেখিত আল্লাহর এই নির্দেশে পরিষ্কার বোঝা গেল যে, আল্লাহ ঈশ্বরত্ব আরোপ করার উদ্দেশ্যে, উপাসনা করার উদ্দেশ্যে যে কোন মূর্তি নির্মাণ নিষিদ্ধ কোরেছেন। এই নিষেধাজ্ঞাগুলির কারণে মানুষ ধোরে নিয়েছে যে, মূর্তি তৈরি করাই নিষিদ্ধ, ছবি আঁকাই নিষিদ্ধ।
খ্রিস্টধর্মেও বলা হোয়েছে, “আমরা যখন ঈশ্বরের সন্তান তখন ঈশ্বরকে মানুষের শিল্পকলা বা কল্পনা অনুসারে সোনা, রূপা বা পাথরের তৈরি কোনো মূর্তির সঙ্গে তুলনা করা আমাদের উচিৎ নয়। (অ্যাক্টস ১৭:২৯)। সেই খ্রিস্টানরাও ঈসার (আ ঊর্দ্ধগমনের পর তাঁকে ঈশ্বরের স্থানে বসিয়েছে এবং তাঁর মূর্তি নির্মাণ কোরে তার সামনে নতজানু হোয়ে প্রার্থনা করা এবং গলায় ক্রুশ ঝোলানোর পদ্ধতি চালু কোরেছে। এগুলিও প্রকারান্তরে পৌত্তলিকতা।
প্রাচীন ধর্মগুলির মধ্যে মূর্তিপূজার ব্যাপক প্রচলন রোয়েছে যদিও তাদের ধর্মগ্রন্থগুলিতে মূর্তিপূজা নিন্দনীয় কাজ হিসাবেই উল্লেখিত। যেমন সনাতন ধর্মের মূলগ্রন্থ বেদ প্রচলিত মূর্তিপূজাকে কখনও সমর্থন করে নি বরং বিরোধিতা করেছে। ভগবত গীতায় (৬/৩১) শ্রীকৃষ্ণ (আ) সখা অর্জুনকে বোলছেন, “সর্বভূতস্থিতং যো মাং ভজত্যেকত্বমাস্থিত” – অর্থ: যে সর্ব ভূতে অবস্থিত নারায়ণকে উপেক্ষা করে মূর্তিতে নারায়ণের অর্চনা করে, সে ভস্মে ঘৃতাহুতি দেয়।
সুতরাং প্রতিমাপূজা হিন্দু ধর্মে ছিলো না, পরবর্তীতে মানুষই এর প্রবর্তন কোরেছে। বেদে, মনুসংসিহতায় মূর্তিপূজার কোন উল্লেখ পাওয়া যায় না, তবে যজ্ঞানুষ্ঠানের বহু উল্লেখ পাওয়া যায়। যজ্ঞ আর মূর্তিপূজা সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়।
সিদ্ধান্ত: উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে আমরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারি যে, ইসলামে মূর্তি নিষিদ্ধ নয়, মূর্তিপূজা নিষিদ্ধ। ভাস্কর্য নিষিদ্ধ নয়, প্রতিমা নিষিদ্ধ। ইসলামে মানুষ, জীবজন্তু, প্রাকৃতিক উপাদান কোনকিছুরই চিত্র বা মূর্তি (পোশাকি ভাষায় ভাস্কর্য) নির্মাণ অবৈধ নয়। তবে কেবলমাত্র সেই মূর্তি বা চিত্রকলা যদি অশ্লীল হয়, যদি মানুষের জন্য ক্ষতির কারণ হয়, যদি সেগুলি সম্মানিত কাউকে অসম্মান করার লক্ষ্যে সৃষ্ট হয় তবে সেটা ঐ কারণে অবৈধ হবে। আর উপাসনা বা পূজা করার জন্য মূর্তি, চিত্র যা কিছুই বানানো হোক না কেন সবই নিষিদ্ধ।
(দেশেরপত্র পত্রিকার কলাম)
বিষয়: বিবিধ
৬৪০০ বার পঠিত, ১৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
খৃস্টানরা যেমন তাদের নবী হযরত ঈসা (আঃ)[ উনি আমাদেরও নবী] এর মূর্তি গির্জায় রাখে সেরকম আমাদের নবী হযরত মুহাম্মাদ ( সাঃ) ও তার সাহাবীদের ভাস্কর্য্য যদি মসজিদ ও হজের যাতায়াতের পথে রাখা হয় তাহলে মনে হয় ইসলামের প্রতি মানুষের আকর্ষন তীব্র থেকে তীব্রতর হবে ।
( নাউজুবিল্লাহ)
উত্তর = ভাই মনে হচ্ছে আপনার জানা নাই , ইসলাম কেয়ামত পর্যন্ত বিকৃত হবে না,
কারন= কুরআনের রক্ষক সয়ং আল্লাহ্
ভাই,
এসলাম নয় , হবে ইসলাম
মুহাম্মদ নয় , হবে মুহাম্মদ (সা
আমনে দেহন, দূর্গার দশটি হাত, স্বরসতির কয়েক টি হাত। তাইলে সেই পরিমাণ পায় লাগায় নাই কেন? দুনিয়ার সব কিছুকি হাত দিয়াই হয় পাও দিয়া কিচ্ছু হয় না? শিব হইল ভগবান পুরো দুনিয়ার স্রষ্টা, শিব মন্দিরে ঢুইকা দেখি এতবড় শিবের জন্য লিংগ বানানো হইছে প্রস্তে দুই হাত, উচ্চতায় পাঁচ হাত। আচ্ছা বলুন তো এই লিংগ মানুষেরে দিলে কত মস্ত হইবে আর ভগবানেরে দিলে কত ক্ষুদ্র হইবে। তার মানে হইল যারা মুর্তি বানায় তার আমার চাইতে বড় বে আকল।
কেউ একজন মুর্তি বানাইছিল মনের খায়েশে, গন্ধ মুর্খ আইসা সেই মূর্তিরে দেবী বানাইয়া তার কাছে কিছু চাইতে লাগল, নিচে কুকুর দাড়াইয়া মুর্তির পাও খানা গরম পানি ছিটাইয়া বরবাদ করিল। এসব হাসাহাসির কাজে না গিয়া মাথাকে ভাল কিছু দেও তাতে উপকার হইবে। নতুবা মূর্তির তালে পইড়া গন্ধ মুর্খের সংখ্যাই বাইড়বে।
**** রসুলাল্লাহর এ সকল কথায় বোঝা যায় যে, মোসলেম জাতির পক্ষে আর পূজা অর্চনা, দেব-দেবীর উপাসনার কোন সম্ভাবনা নেই ****
সন্দেহ = এই রকম তথ্য বিভ্রাট প্রমাণ করে আপনি নিজে অমুসলিম কিংবা নতুন মুসলিম,
কারন == মুসলিম জাতি আগেও মূর্তি পুজা করে নাই এখনো করে না,
কিন্তু যখন হিন্দু ছিল, তখন করতো,
বর্তমানে হিন্দুরা মূর্তি পুজা করে,
কিন্তু তারা যদি মুসলমান হয়ে যায় তবে আর করবে না,
যেমন মুসলিম ইসলাম শব্দগুলীর বারটা বাজিয়ে দিচ্ছে ।
মাইনাস
**** সুতরাং প্রতিমাপূজা (ভাস্কর্য)হিন্দু ধর্মে ছিলো না, পরবর্তীতে মানুষই এর প্রবর্তন কোরেছে। বেদে, মনুসংসিহতায় মূর্তিপূজার (ভাস্কর্য) কোন উল্লেখ পাওয়া যায় না **********
প্রশ্ন == ভাই আপনি নিজেই প্রমাণ করলেন কোন ধর্মে মূর্তি (ভাস্কর্য) পূজা জায়েজ নয় ,
তারপরও মানুষ কেন মূর্তিকে (ভাস্কর্য)পূজা করে ???
কারন == *** মূর্তি (ভাস্কর্য) নিষিদ্ধ নয়, মূর্তিপূজা (ভাস্কর্য) নিষিদ্ধ ****
এই ধোঁকা দিয়ে শয়তান এক দল মানুষকে দিয়ে মূর্তি (ভাস্কর্য) বানালো ,
তারপর অপর দল মানুষকে(ভাস্কর্য) পূজা করার জন্য ধোঁকা দিল,
সমাধান = এই জন্যই ইসলাম ধর্মে মূর্তি (ভাস্কর্য) বানানো নিষেধ, (শিরকের আশঙ্কায়)
ভাই পড়ে কি শিখলেন ??
মূর্তি বানানো জায়েজ ????
হাদীসে তো স্পষ্টভাবে বলে দেয়া হয়েছে, "যে ঘরে কুকুর বা কোন প্রাণীর প্রতিকৃতি থাকে তাহলে সে ঘরে রহমতের ফেরেশতা আসবে না।"
"...........আল্লাহ বলেন, অবশ্যই মদ, জুয়া, মূর্তিপূজা এবং লটারি অপবিত্র ও শয়তানের কাজ। অতএব, তোমরা তা থেকে দূরে থাকবে, যাতে সফলকাম হতে পার (সুরা আল মায়িদাহ - ৯০)"
-এই আয়াতে আপনি মূর্তিপূজা কোথায় পেলেন???!! 'আনসাব'শব্দের অর্থ তো মূর্তিপূজা নয়, মূর্তি, মূর্তির বেদী। সুতরাং এই আয়াতের অর্থ যদি বিকৃত না করেন তাহলে তো এই আয়াত থেকেই প্রমাণিত হয় যে, মূর্তি বা ভাস্কর্য নির্মাণ হারাম, তা যে কোন উদ্দেশ্যেই হোক!!!!!
"...............কেবল মূর্তি বা ভাস্কর্য নির্মাণ নয়, নাচ, গান, বাদ্যযন্ত্র, ছবি আঁকা ইত্যাদি সৃষ্টিশীল কর্মকাণ্ড ও শিল্পকলা আল্লাহ কোরআনে কোথাও নিষেধ করেন নি। তাই গান গাওয়া, ছবি আঁকা, ভাস্কর্য নির্মাণ ইত্যাদি সৃষ্টিশীল কাজকে অবৈধ ফতোয়া দেওয়ার কোন যুক্তি নেই।"
-ইসলাম সম্পর্কে কতটুকু মূর্খ হলে এ কথা বলতে পারে,'নাচ, গান, বাদ্যযন্ত্র, ছবি আঁকা ইত্যাদি সৃষ্টিশীল কর্মকাণ্ড ও শিল্পকলা আল্লাহ কোরআনে কোথাও নিষেধ করেন নি!' নাচগান হারাম হওয়ার ব্যপারে শত শত হাদিস আছে। শুধু বোখারী আর মুসলিম শরিফ 'কিতাবুল হাযরি ওয়াল ইবাহাত' খোলে বসলেই তো এই বিষয়ে হাদিসের কোন অভাব হবে না। বরং এক হাদিসে তো বলা হয়েছে, কেউ যদি গান বাজনা শুনে দিলে স্বাদ অনুভব করে তাহলে সেটা কুফুরি হবে।
আপনার পুরোটা পড়ে মনে হচ্ছে, আপনি হাদিসকে ইসলামের প্রমাণ মানেন না। বাংলাদেশে 'ইসলামী সমাজ' নামে নতুন একটা দল বের হয়েছে তারা হাদীস মানে না। আপনি যদি এমন কেউ হয়ে থাকেন তাহলে বলুন, হাদীসের প্রামাণ্যতার উপর কত আয়াত লাগবে ইনশাআল্লাহ বের করে দিবো।
তবে আপনি যে উদ্দেশ্যেই লিখেন না কেন, এটা যদি প্রধানমন্ত্রী বা জাফল ইকবালের নযরে পড়ে তাহলে বড় অংকের বখশিশ পেতে পারেন।।।।
কোন যুক্তিযুক্ত কথা নয়, শুধু শুধু উড়াইয়া দিল।
মন্তব্য করতে লগইন করুন