হালাকু খান- পথভ্রষ্ট মোসলেমদের প্রতি আল্লাহর শাস্তি

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আসাদ আলী ২৪ মার্চ, ২০১৪, ০১:৪৯:০৭ দুপুর



রসুল তাঁর নিজ হাতে গড়া জাতিটির উদ্দেশ্যে সর্বশেষ যে ভাষণটি দান করেন তা ইতিহাসে বিদায় হজের ভাষণ হিসেবে খ্যাত। এই ভাষণটি ছিলো মূলত উম্মাহর উদ্দেশ্যে শেষ নবীর সর্বশেষ সাবধানবাণী। তাঁর অনুপস্থিতিতে এই জাতিটির যেসকল ভুল-ভ্রান্তি হবার সম্ভাবনা আছে সেসব থেকে সাবধান করাই ছিল ভাষণের বিষয়বস্তু। আর তাই ইতিহাসে দেখি- তিনি এই ভাষণটিতে বারবার জাতির ঐক্যের তাগাদা দিয়েছেন; যে সকল কাজে জাতির ঐক্যের হানি ঘটতে পারে বোলে আশঙ্কা রোয়েছে তিনি সেসব বিষয়ে শেষ বারের মতো জাতিকে সতর্ক কোরেছেন। এটাই স্বাভাবিক। কারণ, বছরের পর বছর অনবরত সংগ্রাম কোরে, বহু বাধার প্রাচীর ডিঙিয়ে, বহু দুর্গম-বন্ধুর পথ অতিক্রম কোরে, শত অন্যায়-যুলুমকে তুচ্ছ জ্ঞান কোরে কেউ যখন কোনো একটি জাতি গঠন কোরবেন তখন তাঁর সবচেয়ে বড় ভয় থাকবে জাতির ধ্বংস হওয়া নিয়ে। তিনি কখনই চাইবেন না যে, জাতিটির মধ্যে সরিষার দানা পরিমাণ বিভেদ বজায় থাকুক যার পরিণামে জাতির ধ্বংস ত্বরান্বিত হয়। রসুলাল্লাহ তাই তাঁর শেষ ভাষণে ঐক্যের তাগাদা দিয়েছেন। তিনি জানতেন, ঐক্য ভঙ্গের অন্যতম মাধ্যম হোল দীনের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও দীন নিয়ে বাড়াবাড়ি। আর তাই তাঁকে বোলতে শুনি- ‘দীন নিয়ে বাড়াবাড়ি কোরবে না।’ শুধু যে বিদায় হজের ভাষণেই তিনি এই সাবধানবাণী উচ্চারণ করেছেন তাই নয়। তাঁর নবী জীবনের প্রতিটি মুহূর্তই তিনি এই বিষয়ে সচেতন ছিলেন। কোন সাহাবি কোর’আনের কোন আয়াত নিয়ে মতভেদ কোরলে বা তর্কাতর্কি কোরলে তিনি কঠিনভাবে রেগে যেতেন। তাছাড়াও ইতিহাসে পাওয়া যায়- কেউ তাঁকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে প্রশ্ন কোরলেও তিনি রেগে লাল হোয়ে যেতেন। যে মানুষটি নবী জীবনের শত-সহস্র অন্যায়-অত্যাচার, অপমান, নির্যাতন মুখ বুঁজে সহ্য কোরেছেন, কাউকে অভিশাপ পর্যন্ত দেন নি সেই মানুষটি যখন রেগে লাল হোয়ে যান তখন বুঝতে হবে বিষয়টি কোনো সাধারণ বিষয় নয়। এটি জাতির বাঁচা-মরার প্রশ্ন। হোয়েছেও তাই। জাতি পরবর্তীতে সেই বাঁচা-মরার প্রশ্নের সম্মুখীন হোয়েছে। আর জাতিকে এই কঠিন পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছেন ধর্মের আলেম-মাওলানা দাবিদার পুরোহিত শ্রেণি। জাতির ঐক্যহীনতার জন্য দায়ী যে ধর্মীয় মতভেদ এবং অতিরিক্ত মাসলা-মাসায়েল তার সূচনা হোয়েছে এদের মাধ্যমে। রসুলের সাবধানবাণীকে উপেক্ষা করে তাদের অত্যাধিক ফতোয়াবাজী এবং মাসলা-মাসায়েলের জটিল জালে আবদ্ধ হোয়ে জাতি বিভ্রান্তির চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এই শ্রেণিটি তাদের হীন কাজকে সঠিক প্রমাণ করার জন্য এই দীন নিয়ে বাড়াবাড়ি, দীনের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ, মাসলা-মাসায়েল আর ফতোয়াবাজীকেই দীনের মুখ্য এমনকি একমাত্র কাজ হিসেবে জাতির সম্মুখে উপস্থাপন কোরেছে, রসুলের সাবধানবাণীকে কণা পরিমাণ দাম দেয় নি। ফল হোয়েছে এই যে, ১৬০ কোটির মোসলেম জাতি এখন ভৌগোলিকভাবে অর্ধ-শতাধিক রাষ্ট্রে বিভক্ত, রাজনৈতিকভাবে বহু দল-উপদলে, এবং ধর্মীয় ফতোয়াবাজী কোরে শিয়া-সুন্নী, হানাফি, হাম্বলী ইত্যাদি শত শত ফেরকা মাজহাবের জটিল জালে আটকে আছে, একে অপরকে কাফের আখ্যা দিয়ে ভ্রাতৃঘাতী হত্যালীলায় মত্ত রোয়েছে। ফলশ্র“তিতে রসুলের উপর আল্লাহর অর্পিত দায়িত্ব এবং পরবর্তীতে রসুল কর্তৃক তাদের (জাতির) উপর অর্পিত দায়িত্ব, তথা সমস্ত পৃথিবীকে সত্যদীনের অধীনে এনে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা আর এদের দ্বারা সম্ভব হোচ্ছে না।

জাতির এই যে অধঃপতন, এটা একদিনে হয় নি। মোসলেম নামধারী এই জাতিটি জাতি হিসেবে জেহাদ ছেড়ে দিয়েছিলো রসুলের ওফাতের প্রায় ৫০/৬০ বছর পরেই। তারপর তারা আদর্শ ভুলে সমসাময়িক রাজা-বাদশাহদের মতো রাজত্ব কোরতে শুরু করে। বিপুল অর্থ-সম্পদ ও ভূ-খণ্ডের অধিপতি সেজে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্বকে পুরোপুরি ভুলে যায়। লক্ষ শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত ভূ-খণ্ড তারা রাজার হালে ভোগ কোরতে থাকে। এভাবেই চলে শত শত বছর। এর মাঝে জাতির মধ্যে লক্ষ লক্ষ হাফেজ এসেছে, মাওলানা-মোহাদ্দেস এসেছে, পীর-মুরিদ এসেছে, কিন্তু সেই উম্মতে মোহাম্মদী আর আসে নি। রসুলের অসমাপ্ত দায়িত্ব কেউ হাতে তুলে নেয় নি। শুধু যে নেয় নি তাই নয়, ওটাকে অপ্রয়োজনীয় হিসেবে দীন থেকেই বাদ দেওয়া হোয়েছে। জেহাদ থেকে রক্ষা পাবার জন্য দীনের ধ্বজাধারী আলেমরা বের কোরেছেন যে, আত্মার বিরুদ্ধে জেহাদই হোল জেহাদে আকবর; প্রকৃত সুন্নাহ অর্থাৎ দীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম থেকে বাঁচার আশায় চালু কোরেছেন- সুন্নাহ সংগ্রাম নয়, সুন্নাহ হোল দাড়ি রাখা, মোচ কাটা, ডান কাতে শোওয়া, খাবার পর মিষ্টি মুখে দেওয়া, মেশওয়াক করা ইত্যাদি রসুলের ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের বিষয়। এগুলোই প্রধান, এগুলোই এসলাম। এগুলো কোরলেই জান্নাত নিশ্চিত। কাজেই প্রকৃত উম্মতে মোহাম্মদীর মতো অমন সর্বস্ব কোরবান কোরে জেহাদ করার কোনো দরকারই নেই, ওগুলো হোল দুনিয়াদারি।

এই জাতিবিনাশি বিষ ছড়ানোর জন্য তথাকথিত আলেমরা বহু সময় পেয়েছেন। তারা বছরের পর বছর যাবৎ মাদ্রাসা-মক্তবে, মসজিদে, খানকায়, হুজরায় এই বিকৃত আকিদা প্রচার কোরেছেন, সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিশ্বাস কোরিয়েছেন। অতঃপর শুরু হোল জাতির চূড়ান্ত পতনের কাল। আল্লাহর নির্দেশ ও রসুলের সাবধানবাণী উপেক্ষা করার শাস্তি হিসেবে একের পর এক শাস্তি আসতে লাগলো জাতির উপর। আল কোর’আনে আল্লাহ বোলেছেন- তোমরা যদি অভিযানে বের না হও, তাহলে আমি তোমাদের কঠিন শাস্তি দেব এবং তোমাদের স্থলে অন্য কোন জাতিকে মনোনীত কোরব। তোমরা তাঁর (আল্লাহর) কোনই ক্ষতি কোরতে পারবে না কারণ তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান (সুরা-আত তওবা ৩৯)। এবারে আল্লাহর এই বাণী বাস্তবায়িত হোল। শুরু হোল জাতির ধ্বংসের কাল। আল্লাহর পক্ষ থেকে একের পর এক শাস্তি আসতে শুরু কোরল। এরই ধারাবাহিকতায় একদা বিরাট একটি আযাব হিসেবে তথাকথিত মোসলেম নামধারী এই জাতিটির উপর আছড়ে পড়লো মোঙ্গল অধিপতি হালাকু খান। সেই ইতিহাস এখনও মুছে যায় নি। এই জাতির শাস্তির নিদর্শন হিসেবে আজও তা ইতিহাসের পাতায় জায়গা দখল কোরে আছে।

বাগদাদ নগরীতে যেদিন হালাকু খান হামলা কোরেছিল সেদিন আলেমদের মধ্যে তুমুল বাহাস চোলছিল। মিসওয়াক ডান মাড়ী থেকে শুরু করা সুন্নত- এ বিষয়ে সবাই একমত হলেও উপরের মাড়ী না নিচের মাড়ী এ বিষয়ে চলছিল তুলকালাম কান্ড। এ সমস্ত বাহাস প্রতিযোগিতার আড়ালে মোসলেমদের গাফেল কোরে রাখা হোয়েছিল। ফলে সাধারণ জনতা হামলা সম্পর্কে জানতেই পারেনি। আর জানলেও কিছু করার সাধ্য তাদের ছিলো না। খুব বেশি হোলে জান নিয়ে পালানো সম্ভব হোত। কিন্তু সেটাও সম্ভব হোল না। হালাকু খান বাগদাদ নগরীর অভ্যন্তরে প্রবেশ কোরে খলিফা ও তার আÍীয়-পরিজনসহ নগরীর অসংখ্য নরনারীকে হত্যা করে। প্রাণভয়ে ভীত বাগদাদের অগণিত নারী-পুরুষের করুণ আর্তিকে উপেক্ষা করে মোঙ্গলবাহিনী বীভৎস হত্যালীলা ও অত্যাচারের একটি নতুন উদাহরণ সৃষ্টি করে। মোঙ্গল শাসক হালাকু খান কর্তৃক বাগদাদ আক্রমণ ও ধ্বংস একদিকে যেমন মোসলেমদের জন্য পাওনা ছিলো, অপরদিকে ঘটনাটি ছিলো ইতিহাসের একটি বেদনাদায়ক অধ্যায়। পারস্যের গুপ্তঘাতক সম্প্রদায়ের ক্ষমতা বিলোপ করার পর ১২৫৬ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে হালাকু খান বাগদাদ অবরোধ করেন। এ সময় বাগদাদের খলিফা (কার্যত খলিফা নামধারী বাদশাহ) ছিলেন আল-মুস্তাসিম বিল্লাহ। হালাকু খান বাগদাদের বহিঃপ্রাচীর ধ্বংস করে খলিফাকে অবিলম্বে আÍসমর্পণের নির্দেশ দেন। খলিফা এতে কর্ণপাত না করলে বাগদাদ নগরী অবরুদ্ধ হয়। মোঙ্গলবাহিনী একযোগে পূর্ব ও পশ্চিম দিক হতে আক্রমণ চালায়। কথিত আছে- মুস্তাসিম বিল্লাহর সৈন্যবাহিনী ছিল প্রায় পাঁচ লাখেরও বেশি। অথচ সেই তুলনায় হালাকু খানের আক্রমণকারী সৈন্যের সংখ্যা ছিল নগন্য। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো মুস্তাসিম বিল্লাহ তার বিশাল বাহিনীকে ব্যবহার করেন নি। তিনি বরং বাহিনীকে ব্যবহার না কোরে বাগদাদের বিজ্ঞ ও বড় বড় আলেম-মাওলানাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, ‘তোমরা আল্লাহর কাছে মসজিদে, খানকায় ও হুজরায় দোয়া করো।’ তার এই ভ্রান্ত নীতি দ্বারাই প্রমাণ হয় যে, মোসলেমদের অধঃপতন কোন পর্যায়ে পৌঁছেছিল। যাই হোক, খলিফার বিশাল সেনাবাহিনী হালাকু খানের ক্ষুদ্র সেনাবাহিনীর হাত থেকে বাগদাদ রক্ষা করতে ব্যর্থ হোলে খলিফাপুত্র পরিজন ও অনুচরসহ জীবন রক্ষার জন্য আÍসমর্পণ কোরতে বাধ্য হন। কিন্তু এতে বাগদাদ নগরী হালাকু খানের প্রমত্ত ধ্বংসকাণ্ড হতে পরিত্রাণ পায়নি। হালাকু খান বাগদাদ নগরীর অভ্যন্তরে প্রবেশ কোরে খলিফা ও খলিফার আÍীয়-পরিজনসহ নগরীর অসংখ্য নর-নারীকে হত্যা করে। প্রাণভয়ে ভীত বাগদাদের অগণিত নারী-পুরুষের করুণ আর্তিকে উপেক্ষা কোরে মোঙ্গলবাহিনী বীভৎস হত্যালীলা ও অত্যাচারের একটি নতুন উদাহরণ সৃষ্টি করে। শুধু জীবননাশের মধ্য দিয়েই মোঙ্গলবাহিনীর অত্যাচার শেষ হয়নি। তাদের হাতে যুগ যুগ ধরে লালিত মোসলেম সাহিত্য-শিল্প ও সংস্কৃতিরও বিলুপ্তি ঘটে। তাদের আক্রমণের প্রচণ্ডতায় মোসলেম জাতির গৌরবকীর্তি, মোসলেম জ্ঞান-বিজ্ঞান ও শিক্ষা-সংস্কৃতির উজ্জ্বলতম নিদর্শন বাগদাদ নগরী এক মহাশ্মশানে পরিণত হয়। মোঙ্গলদের নিষ্ঠুর আক্রমণে অসংখ্য মসজিদ, প্রাসাদ, অট্টালিকা প্রভৃতি নিশ্চিহ্ন হয়। শুধু তিনদিন ধরে শহরের পথে রক্তের স্রোত প্রবাহিত হোয়েছিল। আলেম-মাওলানাদের এত ওয়াজ-নসীহত, এত এবাদত, এত আধ্যাত্মিক তরিকা এবং কেরামতির শক্তি সেদিন মোঙ্গলদের তরবারির সামনে নিশ্চিহ্ন হোয়ে গিয়েছিলো। লক্ষ লক্ষ ধর্মীয় গুরুরা সেদিন নিজ ধর্ম দূরে থাক বাসস্থান পর্যন্ত রক্ষা কোরতে চরমভাবে ব্যর্থ হোল। আল্লাহর রাস্তায় নিবেদিতপ্রাণ মো’মেন-মোজাহেদদের পবিত্র রক্তের বিনিময়ে অর্জিত ভূ-খণ্ড এই তসবীহধারী আলেম-ওলামারা বিজাতির হাতে তুলে দিলেন। এটি যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে আযাব না হয়, তাহোলে আযাব বোলে আর কিছুই নেই।

মূলতঃ রাষ্ট্রশক্তি কেবল তাদেরই সাজে যারা সংগ্রাম কোরতে জানে। ঘরমুখো-অন্তর্মুখী জাতির জন্য রাষ্ট্রশক্তি নয়। ইতিহাসে এরও যথেষ্ট দৃষ্টান্ত বিদ্যমান। তেমনই একটি ঘটনা এখানে বর্ণনা কোরছি।

তখন উম্মতে মোহাম্মদীর বিস্ফোরণকাল। মরুর বুক থেকে উজ্জ্বল আলোকচ্ছটার মতো বেরিয়ে এসে একের পর এক অভূতপূর্ব বিজয় অর্জন কোরে চোলেছে মোসলেম বাহিনী। তারা যেন অপ্রতিরোধ্য এক মহাটর্নেডো। কোন বাধা-ই তাদের চলার পথে বিঘœ ঘটাতে সমর্থ নয়। আপ্রাণ সংগ্রামের ফলে একের পর এক ভূখণ্ড তাদের হাতে আসতে শুরু কোরল। তারা সেগুলো দখল কোরে ন্যায়-সুশাসন ও শান্তি প্রতিষ্ঠা কোরল। এরই অংশ হিসেবে মোসলেম বাহিনী একদিন অগ্রসর হোল খ্রিস্টানদের পবিত্র নগরী জেরুজালেমের পথে। হাস্যকর বিষয় হোল- আজকের মোসলেমদের মতো ঐ খ্রিস্টানরাও তখন ঈসার (আHappy আনা দীনের উদ্দেশ্য ও মর্মবাণী ভুলে ওটার মাসলা-মাসায়েলের তর্কাতর্কি তুলে নিজেদের মধ্যে বিভেদ ও ফেরকা সৃষ্টি কোরেছিল। মোসলেম বাহিনী যখন জেরুজালেম আক্রমণের অপেক্ষায়, ঠিক তখন জেরুজালেমে খ্রিস্টান পাদরী, যাজক ও আলেমদের কনফারেন্স ও বাহাস হোচ্ছিল। বিষয়বস্তু ছিলো- ঈসা (আHappy এর পায়খানা-প্রশাব পবিত্র না অপবিত্র তা নির্ণয় করা। তারাও তখন বাইরের শত্র“ নিয়ে কোন মাথা ঘামাতো না, যতটা মাথা ঘামাতো এই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিষয়াবলি নিয়ে। ফল ঐ একই। মোসলেম বাহিনী জেরুযালেম আক্রমণ কোরে দখল কোরে নিলো। পরে ঐ মোসলেমরাই আবার যখন আসল কাজ বাদ দিয়ে ঐ খ্রিস্টানদের মতো চূলচেরা বিশ্লেষণ, ফতোয়াবাজী আর কোর’আনের আয়াতের গুপ্ত অর্থ বের করার কাজে ব্যস্ত হোয়ে পড়লো, রেবাতগুলি যখন খানকায় রূপান্তরিত হোয়ে পড়লো, তখন খ্রিস্টানরা এসে সমস্তটাই দখল কোরল- ঠিক উল্টোটা হোল। এরকম ইতিহাস আরও আছে। কিন্তু সেগুলোর বর্ণনা না দিয়ে মূল মর্মটিকে যদি এক লাইনে বলতে চাই তাহোলে এটাই বোলতে হয় যে, মূল শিক্ষাকে ছেড়ে দিয়ে খুঁটিনাটি নিয়ে তর্কাতর্কি ও বাহাস যখন যেই জাতিই কোরেছে আবশ্যম্ভাবীরূপে তাদের মধ্যে অনৈক্য বাসা বেঁধেছে এবং শত্র“র গোলামি কোরতে বাধ্য হোয়েছে। এই চিরন্তন সত্যটিই রসুলাল্লাহ বারংবার জাতির সামনে তুলে ধরেছেন, সাবধান কোরেছেন, কিন্তু দুর্ভাগ্য এই মোসলেম নামধারী জাতির- তারা ঐ ভুলটিই কোরেছে।

বিষয়: বিবিধ

২০০৩ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

197044
২৪ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০২:০৫
সুশীল লিখেছেন : আপফেনের কইছে?
197080
২৪ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০৩:১৬
জেদ্দাবাসী লিখেছেন : উন্নতমানের লেখাটার জন্য আন্তরিক শুকরিয়া ।আপনি জামানর খুব গুরুত্ত পূর্ন বিষয় পোস্টে তুলে এনেছেন ।
"ঐক্য ভঙ্গের অন্যতম মাধ্যম হোল দীনের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও দীন নিয়ে বাড়াবাড়ি। আর জাতিকে এই কঠিন পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছেন ধর্মের আলেম-মাওলানা দাবিদার পুরোহিত শ্রেণি।
জাতির ঐক্যহীনতার জন্য দায়ী যে ধর্মীয় মতভেদ এবং অতিরিক্ত মাসলা-মাসায়েল তার সূচনা হোয়েছে এদের মাধ্যমে। "
তবে হকপন্তি আলেম-মাওলানরা ও ছিল আছে, থাকবে ইনশাল্লাহ! ইবনে তাইমিয়া থেকে আবুল-আলা মউদুদি, এবং ড. জাকির নায়েক ।

মোসলেম শব্দটাকে কেমন যেন অধরাই লাগে । পারলে ওটাকে মুসলিম করে দিন । আর "কোরেছিল,কোরতে,বোলে,বোলেছিল,রোয়েছে," এই শব্দগুলিতে ো 'রের এত ছড়াছড়ি পাঠকদের বিরুক্ত করতে পারে । ধন্যবাদ ।

যাজ্জাকাল্লাহ খায়ের



আবুল-আলা মউদুদি । ইসলাম পরিপূর্ন জীবন বিধান, এই কথাটা তাহার কাছ থেকেই আমরা প্রথম জানতে পারি ।


197102
২৪ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৪:০০
আল্লাহর সন্তুষ্টি লিখেছেন :
আল্লাহর নির্দেশ ও রসুলের সাবধানবাণী উপেক্ষা করার শাস্তি হিসেবে একের পর এক শাস্তি আসতে লাগলো জাতির উপর। আল কোর’আনে আল্লাহ বোলেছেন- তোমরা যদি অভিযানে বের না হও, তাহলে আমি তোমাদের কঠিন শাস্তি দেব এবং তোমাদের স্থলে অন্য কোন জাতিকে মনোনীত কোরব। তোমরা তাঁর (আল্লাহর) কোনই ক্ষতি কোরতে পারবে না কারণ তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান (সুরা-আত তওবা ৩৯)
197116
২৪ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৪:৩৩
আল্লাহর সন্তুষ্টি লিখেছেন : জাতির এই যে অধঃপতন, এটা একদিনে হয় নি। মোসলেম নামধারী এই জাতিটি জাতি হিসেবে জেহাদ ছেড়ে দিয়েছিলো রসুলের ওফাতের প্রায় ৫০/৬০ বছর পরেই। তারপর তারা আদর্শ ভুলে সমসাময়িক রাজা-বাদশাহদের মতো রাজত্ব কোরতে শুরু করে। বিপুল অর্থ-সম্পদ ও ভূ-খণ্ডের অধিপতি সেজে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্বকে পুরোপুরি ভুলে যায়
197117
২৪ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৪:৩৪
আল্লাহর সন্তুষ্টি লিখেছেন : রসুলের অসমাপ্ত দায়িত্ব কেউ হাতে তুলে নেয় নি। শুধু যে নেয় নি তাই নয়, ওটাকে অপ্রয়োজনীয় হিসেবে দীন থেকেই বাদ দেওয়া হোয়েছে। জেহাদ থেকে রক্ষা পাবার জন্য দীনের ধ্বজাধারী আলেমরা বের কোরেছেন যে, আত্মার বিরুদ্ধে জেহাদই হোল জেহাদে আকবর; প্রকৃত সুন্নাহ অর্থাৎ দীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম থেকে বাঁচার আশায় চালু কোরেছেন- সুন্নাহ সংগ্রাম নয়, সুন্নাহ হোল দাড়ি রাখা, মোচ কাটা, ডান কাতে শোওয়া, খাবার পর মিষ্টি মুখে দেওয়া, মেশওয়াক করা ইত্যাদি রসুলের ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের বিষয়। এগুলোই প্রধান, এগুলোই এসলাম। এগুলো কোরলেই জান্নাত নিশ্চিত। কাজেই প্রকৃত উম্মতে মোহাম্মদীর মতো অমন সর্বস্ব কোরবান কোরে জেহাদ করার কোনো দরকারই নেই, ওগুলো হোল দুনিয়াদারি
197121
২৪ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৪:৪৬
আল্লাহর সন্তুষ্টি লিখেছেন : জাতির এই যে অধঃপতন, এটা একদিনে হয় নি। মোসলেম নামধারী এই জাতিটি জাতি হিসেবে জেহাদ ছেড়ে দিয়েছিলো রসুলের ওফাতের প্রায় ৫০/৬০ বছর পরেই। তারপর তারা আদর্শ ভুলে সমসাময়িক রাজা-বাদশাহদের মতো রাজত্ব কোরতে শুরু করে। বিপুল অর্থ-সম্পদ ও ভূ-খণ্ডের অধিপতি সেজে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্বকে পুরোপুরি ভুলে যায়

জেহাদ থেকে রক্ষা পাবার জন্য দীনের ধ্বজাধারী আলেমরা বের কোরেছেন যে, আত্মার বিরুদ্ধে জেহাদই হোল জেহাদে আকবর; প্রকৃত সুন্নাহ অর্থাৎ দীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম থেকে বাঁচার আশায় চালু কোরেছেন- সুন্নাহ সংগ্রাম নয়, সুন্নাহ হোল দাড়ি রাখা, মোচ কাটা, ডান কাতে শোওয়া, খাবার পর মিষ্টি মুখে দেওয়া, মেশওয়াক করা ইত্যাদি রসুলের ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের বিষয়। এগুলোই প্রধান, এগুলোই এসলাম। এগুলো কোরলেই জান্নাত নিশ্চিত
197122
২৪ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৪:৪৭
আল্লাহর সন্তুষ্টি লিখেছেন :
আল কোর’আনে আল্লাহ বোলেছেন- তোমরা যদি অভিযানে বের না হও, তাহলে আমি তোমাদের কঠিন শাস্তি দেব এবং তোমাদের স্থলে অন্য কোন জাতিকে মনোনীত কোরব। তোমরা তাঁর (আল্লাহর) কোনই ক্ষতি কোরতে পারবে না কারণ তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান (সুরা-আত তওবা ৩৯)।

এবারে আল্লাহর এই বাণী বাস্তবায়িত হোল। শুরু হোল জাতির ধ্বংসের কাল। আল্লাহর পক্ষ থেকে একের পর এক শাস্তি আসতে শুরু কোরল
197349
২৪ মার্চ ২০১৪ রাত ১১:২১
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ধন্যবাদ সুন্দর বিশ্লেষনটির জন্য।
আলেমরা যখন বিক্রি হয়ে যান অর্থের কাছে তখন এই পতন অবশ্যম্ভাবি।
হালাকু খানের দাদা চেঙ্গিস খান যখন মুসলিম উম্মাহর কেন্দ্র বাগদাদের দিকে অগ্রসর হচ্ছিলেন তখন তাদের সামনে প্রবল বাধা দিয়েছিলেন খাওয়রিজম এর সুলতান জালালউদ্দিন মোঙ্গবর্নি। উল্লেখ্য এই সালতানাতের অধিনে তখন মধ্যএশিয়ার অধিকাংশ অঞ্চল ছিল। কিন্তু বাগদাদের খলিফা মুসতানসির এর উপদেষ্টা এবং আলেমরা ফতোওয়া দিয়েছিলেন যে খাওয়ারিজম এর শাহ কে সাহাজ্য করা যাবেনা। এমনকি তৎকালিন দিল্লির সুলতান ইলতুতমিশ এর কাছেও এই ফতোয়া পেীছান হয়। আর যখন হালাকু খান বাগদাদের পথে তখনও তথাকথিত আলেম রা ছিলেন বিতর্কে লিপ্ত।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File