যে কারণে বর্তমানের মুসিলম জাতি দাজ্জালকে দাজ্জাল বোলে চিনতে পারছে না

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আসাদ আলী ০৪ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৭:১৯:৫৯ সন্ধ্যা



চৌদ্দশ’ বছর থেকে মুসলিম উম্মাহর ঘরে ঘরে দাজ্জাল সম্বন্ধে আলোচনা চলে আসছে। আল্লাহর শেষ রসুল মানবজাতির ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে যেসব কথা বলে গেছেন, পৃথিবীতে কী কী ঘটনা ঘোটবে সেগুলোর সম্বন্ধে আভাষ ও সরাসরি যা জানিয়ে দিয়েছেন সেগুলোর মধ্যে দাজ্জাল সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণীগুলো যেমন চিত্তাকর্ষক তেমনি গুরুত্বপূর্ণ ও উদ্বিগ্নকর। উদ্বিগ্নকর ও ভীতিপ্রদ এই জন্য যে দাজ্জালের শক্তি, প্রভাব ও প্রতিপত্তি সমগ্র মানবজাতির উপর প্রচণ্ড প্রভাব বিস্তার কোরে ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দেবে, সমস্ত মানবজাতিকে বিপথে চালাবার চেষ্টা করবে। শুধু তাই নয়, বেশ কিছু সময়ের জন্য দাজ্জাল তার শক্তি ও প্রভাব বিস্তার কোরে গোটা মানবজাতিকেই বিপথে পরিচালিত করবে। কাজেই দাজ্জালকে কোনোভাবেই ছোট কোরে দেখার বা অবজ্ঞা করার উপায় নেই।

আল্লাহর রসুলের ভবিষ্যদ্বাণীগুলোকে একত্রে নিলে যা দাঁড়ায় তাহোল, দাজ্জাল মানবজাতিকে বোলবে তাকে রব বোলে মেনে নিতে। তার কাছে জান্নাত ও জাহান্নামের মত দুইটি জিনিস থাকবে। যারা তাকে রব বোলে মেনে নেবে তাদেরকে সে তার তৈরি জান্নাতে স্থান দেবে আর যারা তাকে রব বলে মানবে না তাদেরকে সে তার তৈরি জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে। তার কাছে রেজেকের বিশাল ভাণ্ডার থাকবে। যারা তাকে রব বোলে মানবে তাকে সে সেখান থেকে দান করবে আর যারা তাকে মানবে না তাদেরকে সে তার রেজেকের ভাণ্ডার থেকে দান করবে না। দাজ্জালের আদেশে আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষিত হবে, মাটির গভীর থেকে সম্পদ উপরে উঠে আসবে। পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে কি হোচ্ছে দাজ্জাল তা দেখতে ও শুনতে পারবে। সমস্ত পৃথিবীর এক ইঞ্চি মাটি বা পানি থাকবে না যা দাজ্জালের প্রভাব বলয়ের বাইরে থাকবে। দাজ্জালের ফেতনা যে কতখানি ভয়ানক হবে তা বোঝা যায় তখনই যখন রসুলাল্লাহ নিজেই এই দাজ্জালের ফেতনা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চেয়েছেন।

এখন প্রশ্ন হোচ্ছে এই এত গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপারে আমরা কতটুকু সচেতন? বাস্তব অবস্থা হোল এই যে আমরা মোটেও সচেতন নই। আর সচেতন নই বলেই আমরা বুঝছিনা যে আজ থেকে ৪৭৫ বছর আগেই মানবজাতির মহাবিপদের ঘণ্টা বাজিয়ে মানবতার মহাশত্রু, ইবলিসের চূড়ান্ত রূপ দাজ্জালের জন্ম হয়েছে। বর্তমানে সে তার শৈশব, কৈশোর পার করে যৌবনে উপনীত হয়েছে এবং দোর্দণ্ড প্রতাপে সারা পৃথিবীকে পদদলিত কোরে চলেছে। আমরা এও বুঝছিনা যে সমস্ত পৃথিবীসহ আমরা মুসলিমরাও দাজ্জালকে রব, প্রভু বলে স্বীকার করে নিয়েছি ও তার পায়ে সাজদায় পড়ে আছি। টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী পন্নী পরিবারের সন্তান, ইমামুযযামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী কোর’আন-হাদীস-বাইবেল এবং বিজ্ঞানের আলোকে ষ্পষ্টভাবে প্রমাণ করেছেন যে পাশ্চাত্যের বস্তুবাদী ইহুদি-খ্রিস্টান সভ্যতাই হোচ্ছে রসুলাল্ল­াহ বর্ণিত সেই ভয়ংকর দানব দাজ্জাল। এখানে প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে দাজ্জালকে আমরা কেউ চিনছিনা কেন? আমরা তো নিজেদেরকে মুমিন, মুসলিম, উম্মতে মোহাম্মদী দাবি করি, আমাদের মাঝে লক্ষ লক্ষ কোরানের আলেম রোয়েছেন যারা সারা জীবন ধোরে কষ্ট কোরে ইসলামের অতি সুক্ষাতিসুক্ষ বিষয়ে গবেষণা কোরে পাণ্ডিত্য জাহের কোরছেন। আমাদের মাঝে লক্ষ লক্ষ পীর মুরীদ রোয়েছেন, যারা দিবারাত্রি চব্বিশ ঘণ্টাই তাদের আত্মা পরিষ্কার কোরতে সদা ব্যস্ত থাকেন। তাছাড়াও রোয়েছেন হাজার হাজার আলেম, মাওলানা, মাশায়েখ, মোহাদ্দীস ইত্যাদি ধর্মের ধারক-বাহকরা। তাহোলে এত বড় একটা বিষয়ে তারা নিরব কেনো? তারা কেনো দাজ্জালকে দাজ্জাল বলে চিনতে পারছেন না? সত্যান্বেষী মনে এই প্রশ্ন আসা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে এই প্রশ্নের উত্তর আমাদেরকে দিতে হবে না, স্বয়ং রসুলাল্লাহই এই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিয়েছেন। তিনি বোলেছেন, “দাজ্জালের দুই চোখের মাঝখানে কাফের লেখা থাকবে। শুধু মুমিনরা, বিশ্বাসীরাই তা দেখতে এবং পড়তে পারবে; যারা মুমিন নয় তারা পড়তে পারবে না” [ আবু হোরায়রা (রাHappy, আবু হোযায়ফা(রাHappy এবং আনাস (রাHappy থেকে বোখারী ও মুসলিম]

এই হাদিসটি শুধু অর্থবহ এবং আকর্ষণীয়ই নয়, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণও বটে। মুমিন হোলে লেখাপড়া না জানলেও, নিরক্ষর হোলেও তারা পড়তে পারবেন আর মুমিন না হোলে শিক্ষিত হোলেও, পণ্ডিত হোলেও দাজ্জালের কপালে কাফের লেখা দেখতে ও পড়তে পারবেন না, এই কথা থেকেই বোঝা যায় যে দাজ্জালের কপালের এই লেখা কাফ, ফে, রে এই অক্ষরগুলো দিয়ে লেখা নয়। মুমিনরা নিরক্ষর হোলেও ঐ লেখাগুলো দেখতে ও পড়তে পারবেন। মুমিন কারা? আল্লাহ কোরানে বোলছেন- শুধু তারাই মুমিন যারা আল্লাহ ও তাঁর রসুলকে বিশ্বাস করে, তারপর আর তাতে কোনো সন্দেহ করে না, এবং নিজেদের জীবন ও সম্পদ দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ করে; তারাই হোল খাঁটি।”

এখানে মনে রাখতে হবে আল্লাহ ও তাঁর রসুলকে বিশ্বাস করা অর্থ হোল ব্যক্তিগত এবং জাতীয় জীবনে আল্ল­াহর সার্বভৌমত্বকে বিশ্বাস করা এবং জীবনের কোনো অঙ্গনে আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে না মানা। দাজ্জালকে রব বোলে স্বীকার কোরে নিয়ে, আল্লাহর সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার কোরে দাজ্জালের সার্বভৌমত্বকে মেনে নেওয়ার ফলে মুসলিম দাবীদার এই জাতি কার্যতঃ মুশরিক ও কাফের হোয়ে গেছে। কাজেই বৃহত্তর জীবনে দাজ্জালের কপালের কাফের লেখা অর্থাৎ দাজ্জাল যে সমষ্টিগত জীবনে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব অস্বীকারকারী কাফের এরা তা দেখতেও পাননা সুতরাং পড়তেও পারেন না। তাই আমরা দেখি মুসলিম বোলে পরিচিত এই জাতিটির প্রায় সমস্ত মানুষ দাজ্জালকে রব বোলে স্বীকার কোরে নিয়েছে কিন্তু ওদিকে মহা পরহেযগার, মুত্তাকি। এমন কি এই জাতির মধ্যে কয়েকটি দেশ আছে যাদের শীর্ষস্থানীয় নেত্রীদের কপালে সাজদার কালো দাগ আছে কিন্তু তারা দাজ্জালের আশ্রয়ে থেকে, দাজ্জালের কাছে থেকে অস্ত্রসহ সবরকম সাহায্য নিয়ে তাদের দেশের মধ্যে যারা আল্লাহর সার্বভৌমত্ব, তওহীদ প্রতিষ্ঠা কোরতে চান তাদের বন্দী করছেন, নির্যাতন করছেন, গুলী কোরে ফাঁসী দিয়ে হত্যা করছেন। এর কারণ এসব নেতাসহ মুসলিম বিশ্ব দাজ্জালের শেখানো এই কথা বিশ্বাস করে নিয়েছেন যে ধর্ম ব্যক্তিগত বিষয়, সমষ্টিগত নয়, তাই তারা দাজ্জালের কপালে কাফের লেখা দেখতে ও পড়তে পারেন না।

বিষয়: বিবিধ

৩১১৬ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

158985
০৪ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫১
গোলাম মাওলা লিখেছেন : baijed hoq ponii r dajjal ami poreci .... abar facebook & blog a vevinno jon dajjal sompork tar vevinno mot poson korecen ..... Ke thik Good knows ........ B.H. ponnir Dajjal book a .... Hadis goli r ortho ba vab rokom vabe bolecen

abar onno ra ai sob hadis ar ortho ba vab onno rokom kore bolecen ..... Ja bayjid huq ponni r book ar alochona hote sompourno vinno ....


Amar ai bapare confuse.... Plz plz .... Inform me the right ........
০৪ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:৩৩
113782
মোহাম্মদ আসাদ আলী লিখেছেন : কনফিউজের কোন কারণ নেই, ইমামুয্যামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী যেটাকে দাজ্জাল বলেছেন অর্থাৎ ইহুদি-খ্রিস্টান সভ্যতা- সেটাই দাজ্জাল। ধর্মব্যবসায়ী তথাকথিত- আলেম-মাওলানাদের সাথে না মিলিয়ে বাস্তব পৃথিবীর সাথে মিলিয়ে দেখুন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File